জীবন নাকি উপভোগের জন্য! কিন্তু উপভোগের আগে যদি কেউ অন্যের ভোগে (অপরের জন্য নিজ জীবনে কে উৎসর্গ করা) চলে যায় তাহলে তার ক্ষেত্রে কি অবস্হা হতে পারে সেটা অনুমানের বিষয়।
'দুনিয়াটা আপনার জন্য অথবা দুনিয়ার জন্য আপনি।'
কিছু মানুষ কর্মের দ্বারা এই নীতি উল্টাতে পারলেও অধিকাংশ মানুষ তা সহজে চেতন অথবা অবচেতন মনে মেনে নেয়। এটা কত তাড়াতাড়ি মেনে নেওয়া হবে তা নির্ভর করে সময়, পারিপার্শ্বিক অবস্হা এবং পরিবেশের উপর।
ধর্ম মতে জীবন (রুহ) অবিনশ্বর। রুহ সময়ের পরিবর্তনের সাথে তার অবস্হান পরিবর্তন করে। অর্থাৎ সে প্রথম অবস্হায় খোদার কাছে সংরক্ষিত থাকে। তারপর সেখান থেকে মাতৃগর্ভে (অর্ধলৌকিক) ট্রান্সফার হয়। সেখান থেকে আবার পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ(লৌকিক) আকারে দেহ সহকারে আত্মপ্রকাশ করে। তারপর আবার খোদার কাছে পুনরায় ফিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পরলৌকিক জগতে প্রবেশ করে কোন একটি যায়গায় অবস্হান করে। এখানে দেখা যাচ্ছে আত্মা স্হির নয় বরং চলন্ত (পরিভ্রমণকারী)। তাই আত্মাকে এক জায়গায় স্হির রেখে জীবনের হিসাব নিকাষ করা ঠিক না।
আবার রুহের বিভিন্ন স্হান ভ্রমণের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্হান হলো পৃথিবী। কারণ রুহ পৃথিবীতে আগমনকালীন সময়ে দেহের উপস্হিতি এবং আকৃতি উপলদ্ধি করতে পারে এবং সে পরিপূর্ণ বিকাশিত হয়, এবং একমাত্র এখানে (পৃথিবীতে) সে অধিকাংশ ক্ষেত্র নিজের মত করে পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো তার ভ্রমণ কালীন সময়টা চাইলে সে লিপিবদ্ধ করে অন্যের কাছে প্রদর্শন করতে পারে। আর এটাই আত্মার বড় সার্থকতা।
ব্যতিক্রম ছাড়া পৃথিবীতে থাকার জন্য রুহের সব সময় তাড়না থাকে। এই তাড়না প্রবল থাকে যখন দেহ তার চালিকা শক্তি ক্রমান্বয়ে হারাতে থাকে। দেহ যখন নিশ্চিত মৃত্যুর মুখামুখি হয় তখন-
১। খারাপ মানুষের আত্মাগুলো পৃথিবীর আদি উন্মাদনা (পাপ কাজ) উপভোগ করার মানসে অতিরিক্ত তাড়ন সৃষ্টি করে। ফলে তার দেহ নিষ্কিয়তা করা কষ্ট কর হয়।
এবং
২। ভালো মানুষের আত্মাগুলো পৃথিবীর চরম সুখের উল্লাসে উদ্ভাসিত (ভালো কাজ করা) হওয়ার কারণে স্বাভাবিক থাকে। ফলে দুনিয়াবি মায়া ত্যাগ করা তার জন্য সহজ হয়। এতে দেহ সহজে নিষ্ক্রিয়তা অর্জন করতে পারে।
এই আদি উন্মাদনার আকাঙ্ক্ষা বা আদি চরম সুখ পাওয়া নির্ভর করবে আপনার অতীত কৃত কর্মের উপর। তাই আসুন আমাদের কর্মটাকে এমনভাবে গড়ে তুলি যাতে আত্মার বিদায়কালীন সময়টা দেহের জন্য স্বাভাবিক এবং সহজ হয়। নচেৎ আমাদের আফসোস করে মরা ছাড়া দ্বিতীয় কোন উপায় থাকবেনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:০৬