পশ্চিমা মিডিয়া বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত রাশিয়া সম্পর্কে সারা বিশ্ব কে জুজুবুড়ির ভয় দেখিয়ে এসেছে। তারা রাশিয়াকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছে, তাতে মনে হতো সেখানে ডাইনোসর প্রজাতির মানুষ বাস করে। তারা রাশিয়ান কালচার, সোসাইটিকে সারা বিশ্ব থেকে ভিন্ন প্রকৃতির দেখাতে উৎসাহ পেয়েছে । রাশিয়া সম্পর্রকে পশ্চিমা মিডিয়ার প্রচারিত নেকড়ে খড়গোশের গল্প দেখে আমাদের তখন মনে হতো গর্বাচেভরা অরজিনাল গর্দভ।
পশ্চিমা ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রি খ্যাত হলিউড মুভিতে রাশিয়ান যুদ্ধ টেকনোলজিকে সব সময় ভিলেন অথবা কখনো কখনো দানব আকারে দেখানো হয়। নব্বই দশকে কোল্ড ওয়ারে আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়া কে টুকরো টুকরো করে জোড়ে জোড়ে ধম নিয়েছে। রাশিয়া ধমে যাওয়ার কারণে আমেরিকা সারা বিশ্বকে এক হাতে নিয়ে একাই পুতুল খেলা খেলেছে। তারা ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া কে বিনাশ করে কার্জাই মার্কা পুতুল সরকার বসিয়েছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যে তুলনামূলক একটি স্থিতিশীল দেশ সিরিয়াকে বগলদাবা করতে চেয়েছিল। তারা কিছুটা সফলতা দেখালেও মাঝখানে পুতিন এসে গুটির চাল উল্টোপাল্টা করে দেয় । সিরিয়ায়র মাটিতে আমেরিকা মাঝেমধ্যে হাঁকডাক ছাড়ার পর কিছুক্ষণ পর মিউমিউ করে থেমে যায়। এযেন শক্তের ভক্ত নরমের ঝম। এখন আমেরিকা নিজে কিছু করতে না পেরে পালিত ইস্রাইল দিয়ে গোলান হাইটসে ঘেউ ঘেউ শব্দ করে। এই শব্দ সাময়িক। কথা অন্য দিকে চলে যাচ্ছে।
অন্যদিকে চায়নারা যখন অলিম্পিক গেম আয়োজন করেছিলো তখন পশ্চিমা মিডিয়া এই রকম ভয় সারা বিশ্ব কে দেখিয়েছে। চায়না কতৃক অলিম্পিক আয়োজনের সময় পশ্চিমারা চায়নাদের সম্পর্কে কথিত "ইঁদুর বিড়াল ম্যারাথনের" গুজব রটায়। কিন্তু অলিম্পিক গেম সফলভাবে আয়োজনের পর পশ্চিমাদের সাদা মুখের বুলি এবং চোখের নজর এখন চায়নাদের নকল পন্যের দিকে সরে গেছে।
অনেকে চায়না আর ইন্ডিয়ার তুলণা করে আত্মতৃপ্তি লাভ করে। তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথা বলতে চাই, চায়নারা যে বছর অলিম্পিক গেম আয়োজন করে সে বছর ইন্ডিয়া কমলওয়েলথ গেম আয়োজন করে হাস্যরসের পাত্র হহয়েছিলো। ভারতীয়রা এ সেক্টরে পদে পদে অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। সে সময় হনুমান সেনাদের অর্তকিত আক্রমনে বনি আদম সন্তানেরা ছিলো নাজেহাল। মানুষের বুঝতে হবে সামরিক উন্নয়ন এক কথা, আর সামগ্রিক উন্নয়ন আরেক কথা। এদিকে আর যাব না।
অনেকে বলতে পারেন, রাশিয়া আর চায়নাদের সম্পকে পশ্চিমারা এরুপ প্রচারণা চালায় কেন? উত্তর সোজা, রাশিয়ার সামরিক প্রযুক্তি আমেরিকা বা পশ্চিমাদের সাথে পাল্লা দিয়ে টিকে আছে। অপর দিকে চায়নার উদয়ীমান অর্রথনীতি এবং সস্তা প্রযুক্তি আমেরিকা ও পশ্চিমাদের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
আমরা ফুটবল নিয়ে লাফাই। কিন্তু ফুটবলে আমাদের জোরজার কতটুকু। এই তো হাটুর নিচে। তবে আশার কথা হলো, আমাদের দেশের ছেলেরা ১৫ টাকার সিট ভাড়া এবং ৩৫ টাকার খাবার খেয়ে যে লাফানি দেয়, যদি ছেলেদের একটু ভালোমানের থাকার ব্যবস্থা ও পুষ্টিমানের খাবার দিয়ে তাদের কে ফুটবলমাঠে নামে যেত তাহলে তারা নিশ্চিত বিশ্বকাপের মাঠ মাতিয়ে তুলতো।
আজকে ফাইনাল খেলা দেখে যা মনে হয়েছে, ছোটদের কে ভাগ্য সব সময় হতাশ করে। ক্রোশিয়া হারার পেছনে ভাগ্য কিছটা দায়ী ছিলো । তার পরেও তারা ভালো খেলেছে। অপর দিকে ফ্রান্সের তরুণ তুর্রকীদের পারফরমেন্স ছিলো নজর কারা।
ফ্রান্স বিশ্বকাপ জিতলেও ক্রোয়েশিয়া জিতেছে মানুষের মন।
শেষের আগে,বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজন করার জন্য রাশিয়া এবং পুতিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
পরিশেষ, সামু পরিবারের পক্ষ থেকে এবারের ফুটবল বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স কে অভিনন্দন। ক্রোয়েশিয়ার জন্য সমবেদনা। এক হালি খাইছে। আশেপাশে আরজিতিনা'র সাপোর্টার নাই তো?
.........ফ্রান্স-৪: ২ ক্রোশিয়া........।
ছবি : অনলাইন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ৭:৫৫