somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তেহরান সিটি ও ঢাকা নগরীর পার্থক্য

০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকার সঙ্গে তেহরান শহরের তেমন কোন তুলনা চলে না। অনেক কিছুতেই অমিল। এখানকার সমাজ-সংস্কৃতি এবং সামাজিক নিরাপত্তা ঢাকার থেকে সম্পূর্ণ রকমের ভিন্ন। বলা হয়- তেহরান হচ্ছে ধনী মানুষের শহর। সত্যিই তাই। তেহরানের পথে-ঘাটে; অফিস-আদালতে কিংবা দোকান-পাটে তার ছাপচিহ্ন সুস্পষ্ট। সব জায়গায় বেশ আভিজাত্যের ভাব।



সবকিছুই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন; অনেকটা সাজানো গোছানো পরিপাটি। এ শহরের মানুষের দামি খাবার দাবারের প্রতি যতটা ঝোঁক তার চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণ রুচিশীল কেনাকাটায়; সাজ-সজ্জায় অনেক বেশি মনোনিবেশ তাদের। তার ছাপ পড়ে নগরীর রাস্তা-ঘাটে, পার্কে-সব জায়গায়। কেউ শহরের রাস্তা-ঘাট, ফুটপাত নোংরা করবে না। ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য রাস্তার পাশে পার্কে দোকানের সামনে সব জায়গায় ছোট ছোট ডাস্টবিন রাখা আছে। মজার বিষয় হচ্ছে- সেসব ডাস্টবিনে ময়লা জমিয়ে রাখা হয় না এবং তা থেকে কোন দুর্গন্ধও ছড়ায় না।

তেহরান নিয়ে অনেক কিছুই বলা যায়। তবে আজকে এখানকার সামাজিক নিরাপত্তা নিয়েই মূল কথাটা বলতে চাই। আসলে রাজধানী তেহরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে অবাকই হতে হয়। এখানে নেই কোন মারামারি, নেই চুরি-ছিনতাই, নেই গোলাগুলি-অস্ত্রবাজি। প্রতিদিনের পত্রিকায় কিংবা টেলিভিশনের খবরে খুন-হত্যাকাণ্ডের খবর ‘মাস্ট আইটেম’ হিসেবে থাকে না যা অনেক বড় উন্নত দেশেও কল্পনা করা যায় না। এখানে মানুষ অনেক বেশি নিরাপদে পথ চলে। সে নিরাপত্তা দিনে-রাতে একই রকম। রাতের আঁধার নামার সঙ্গে সঙ্গে এখানে ভয় নেমে আসে না। নিশ্চিন্তে পথ চলা যায় একাকী। ভাবতেও হয় না- ‘কেউ জানতে চাইবে কাছে কী আছে!’

বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে- এই নিরাপত্তা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য সমান। একজন নারী কিংবা তরুণী যদি একাকী রাতের বেলায় পথে হেঁটে যায় তাকেও আলাদা করে ভাবতে হয় না নিরাপত্তার কথা। পথ চলতে গেলে ডাকাত-ছিনতাইকারীর সামনে পড়ার ভয় নেই। কোন উটকো মাস্তান বা রাস্তার ছেলেরা ‘ইভ টিজ’ করবে না। কেউ পথ আগলে দাঁড়াবে না, কেউ অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি বা শিস দেবে না। এ এক অন্যরকম সমাজ; সামাজিক নিরাপত্তাই যার বড় বৈশিষ্ট্য। সামাজিক এ নিরাপত্তা আসলে ইরানকে নিয়ে গেছে অন্যরকম উচ্চতায়। যেখানে আমেরিকা, বৃটেন কিংবা কানাডার মতো উন্নত ও ধনী দেশে সামান্য সময় বিদ্যুতের অনুপস্থিতিতে খুন, ডাকাতি, রাহাজানি, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হয় অবলীলায়; সেখানে ইরানে এগুলো কল্পনাই করা যায় না।

বিশ্বের বহু দেশ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন ইরানে এমন ধরনের নিরাপত্তা একেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার। এ নিরাপত্তার কারণ হতে পারে- দীর্ঘ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ধর্মীয় চেতনা এবং উন্নত সভ্যতা।

শহরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে মহল্লার ভেতরের রাস্তাগুলোর কোথাও বাতি বন্ধ থাকে না। বিদ্যৃতের এই সার্বক্ষণিক উপস্থিতি এখানকার নিরাপত্তাকে করেছে আরো সুসংহত। কখনো তেমন বিদ্যুতও যায় না। হঠাৎ যদি কখনও বিদ্যুৎ যায় তাহলে তা খুবই স্বল্প সময়ের জন্য। হয়তো কোন মেইনটেইন্যান্সের কাজ হচ্ছে; কিছুক্ষণের মধ্যে আবার বিদ্যুৎ হাজির হবে। বিদ্যুতের লোডশেডিং কী জিনিস জানে না ইরানের লোকজন। জানবে কেন? ইরান নিজেই তো এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করে।

সুত্রঃ মানব জমিন

ভাবতেই অবাক লাগে একটি নিষেধাজ্ঞা কবলিত দেশ কিভাবে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে আর সেখানে আমরা বাইরের বিভিন্ন দেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবার পরও সব দিক থেকেই পিছিয়ে পড়ছি। বিশেষ করে সামাজিক অবক্ষয় আর রাজনৈতিক অস্থিরতা আমাদের ১ নম্বর সমস্যায় পরিণত হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×