স্বাভাবিক ভাবে নগর বলতে আমাদের কল্পনায় জগতে যে চিত্র ভেসে ওঠে তা হল কংক্রিটে মোড়ানো, বাতাসে উচ্চমাত্রায় কার্বনযুক্ত এক ব্যাস্ত জনবসতি যেখানে গাছ-পালা পাখ-পাখালির কলতানকে বিদায় জানানো হয়েছে, যেখানে সর্বত্রই দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
কিন্তু আমাদের এই ধারনা সম্পূর্ণরুপে পাল্টে দিতে চীন নির্মাণ করছে বিশ্বের প্রথম দূষণমুক্ত শহর!
এই শহরের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফরেস্ট সিটি’ অর্থাৎ সবুজ বৃক্ষে ঘেরা এক অপরূপ শহর।
২০২০ সালের মধ্যেই এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে দেশটি।
বায়ুদূষণ থেকে জনগণকে বাঁচাতে এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে চীন।
চীনের দক্ষিণাঞ্চলের লিউজিয়াং নদীর তীরবর্তী পার্বত্য অঞ্চলে গুয়াংশিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই নগরের নকশা করছে ইতালির স্থাপত্য সংস্থা স্তেফানো বোয়েরি আর্কিতেত্তি। এ নগর গাছ ও সৌর প্যানেলে ঢাকা থাকবে।
নগরে থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন দপ্তর, হোটেল, হাসপাতাল ও বসতবাড়ি। প্রতিটি ভবনই ঢাকা থাকবে বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক হাজার গাছপালায়। শহরটি যত পুরোনো হবে, গাছাপালা তত বয়স্ক হবে এবং তত কার্বন শোষণ করবে ও অক্সিজেন ছাড়বে।
এই নগরে থাকবে শতাধিক প্রজাতির ১০ লাখ গাছ, যা বছরে ১০ হাজার টন কার্বন ও ৫৭ টন দূষণকারী পদার্থ শোষণ করবে, ৯০০ অক্সিজেন নিঃসরণ করবে। শহরের বাসিন্দার সংখ্যা হবে ৩০ হাজার।
প্রচুর গাছপালা নগরের বায়ুদূষণ কমানোর পাশাপাশি বাতাসের তাপমাত্রা ও দূষণ কমাবে। শহরের গাছপালা জীববৈচিত্র্যে উন্নতি ঘটাব। পাখি ও কীটপতঙ্গের বাস্তুসংস্থানে ভূমিকা রাখবে। কমাবে শব্দদূষণ। শহরের বাসিন্দাদের যোগাযোগের মাধ্যম হবে বৈদ্যুতিক গাড়ি ও বৈদ্যুতিক ট্রেন। বায়ুদূষণ কমানো ও নির্মল বায়ুর সরবরাহ থাকা পরিবেশবান্ধব এই উচ্চাভিলাষী টেকসই শহরটি হবে বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি উদাহরণ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:১৪