হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যারা
ব্যবসা করে যায় তাদের কাছে আপামর
জনসাধারনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট তুলে দেওয়ার
যৌক্তিকতা নিয়ে ভাবলাম। বিশ্বাসের
জায়গাতে জুয়া চলবেনা। এয়ারটেলের
ডাটাবেস হইতে সব আঙ্গুলের ছাপ ভারতীয়
ইন্টেলিজেন্সের কাছে যাবেনা তার গ্যারান্টি
কি? কিংবা জিপির হাত ধরে ইউরোপ,
আমেরিকা? ভাবুন, প্যারিস হামলার পর
অবিস্ফোরিত বোমায় কোন বাঙ্গালীর
ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া গেল।
ভাবুন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর বদৌলতে কোন
আন্তর্জাতিক জংগী সংগঠনের সাথে
বাংলাদেশের একটা মেলবন্ধন কোন বিদেশী
পত্রিকার হেডলাইন হল…
ফ্যান্টাসি মনে হচ্ছে? বাদ দেন। খালি ভাবুন,
মিথ্যা আসামীকে বাঁচানোর জন্য সত্য
প্রমাণ খুঁজতে গিয়ে উকিলগণের চুল ছিঁড়ার
মুহূর্তে বাদী পক্ষের উকিল একটা
ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে আসলেন (ক্রয়
মারফত); ভাবুন, যে তল্লাটে মিথ্যা মামলা
দায়ের করে হোক অথবা সত্য মামলাতেই
হোক যেখানে মিথ্যা আসামী ধরে জেলে
ভরার একটা তুমুল কম্পিটিশন সেখানে কিছু
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আঙ্গুলের ছাপের
ডাটাবেস নিয়ে বসে আছে… ভাবতে বিরক্ত
লাগছে?-বাদ দেন। চলুন ফ্যাক্ট দেখি
কয়েকটা
… মিডিয়া মারফত আমরা ইতিমধ্যেই জানি
বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধনের ইতিহাসে
বাংলাদেশ পৃথিবীতে দ্বিতীয় দেশ হিসাবে
অগ্রণী ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে! রাষ্ট্রীয়ভাবে
এধরনের একটা ভুল সিদ্ধান্ত কোন দেশ
প্রথম নিয়েছিল তা জানতে ইচ্ছা হয়?
আমারও ইচ্ছা হল, ঘেঁটে চমকপ্রদ তথ্য
পেলাম। এই দুর্ঘটনা প্রথম ঘটায় কোন
দেশ- অনুমান করেন তো দেখি কোন
মাথামোটারা এই কার্য সাধন করেছিল?
সমঝদার মানুষের জন্য ইঙ্গিতই যথেষ্ঠ,
তবুও বললাম, ২০১৩ তে পাকিস্তান এই
ঘটনা ঘটিয়ে বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম
ডিজিটাল বোকাচোদা হিসাবে আত্মপ্রকাশ
করে।
বোঝার ব্যাপার একটাই, ব্যক্তি হিসাবে না
ভেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাবার চেষ্টা করুন।
সরকারি ডাটাবেসের জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট
নেওয়া আর কোন বেনিয়া মাল্টিন্যাশনাল
কর্পোরেটের কাছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট জমা
দেওয়ার মধ্যে ফারাকটুকু বুঝতে পারলেই
খেল খতম। সরকারের কাছে একটাই আরজি,
অপরাধ দমনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট অবশ্যই
জরুরী বিষয়। প্রয়োজনে ন্যাশনাল আইডি
রিনিউইয়াল হিসাবে সরকারি উদ্যোগে
ফিঙ্গারপ্রিন্ট জমা নেওয়া হোক। অপরাধ
নিধন চাইলে অপরাধীর ভেরিফিকেশনের
দায়িত্বটা রাষ্ট্রের হাতেই বর্তাক।
ন্যাশনাল আইডি দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন
হলে তো প্রাথমিক শনাক্তকরণ হয়েই যায়।
মোবাইল মাধ্যমে কোন ক্রাইম হলে তার
সাথে ফিঙ্গারপ্রিন্টের কি সম্পর্ক? ভয়েস
কলে কি অপরাধী ফিঙ্গারপ্রিন্ট রাইখা
আসবে? যত্তসব ননসেন্স!!
কথা সহজ, কোটি টাকা ট্যাক্স ফাঁকি দিয়া
চলতে থাকা কিছু বেনিয়া মাল্টিন্যাশনাল
ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে এই ভয়ানক
ডাটাবেস করতে দিয়ে রাষ্ট্রের এবং তার
নাগরিকদের মাথার উপর ছড়ি ঘুরাতে দেওয়া
যাবেনা। ফিঙ্গারপ্রিন্ট একজন মানুষের
চূড়ান্ত লেভেলের প্রাইভেট, এ জিনিস
লিফলেট বানাইয়া বেচার জন্য কারো হাতে
তুলে দিতে আমরা রাজি না। সমেস্যা নাই,
সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে বাঙ্গালী
চিরকালই আঙ্গুল বাঁকাইয়া অভ্যস্ত।
বিঃদ্রঃ এই কথাগুলো সবাইকে জানান, আর
বলুন যাতে কেউ এই বায়োমেট্রিক নিবন্ধন
না করে। ব্যবসায়ি বলে কথা, দিনশেষে একটা
ভারী সংখ্যক মানুষ রেজিস্ট্রেশন না করলে
এতগুলা সিম বন্ধ করে দেওয়া এত সহজ
হবেনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৮