somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিনা জাহান প্রিয়া
আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

ধারাবাহিক -অ-মানব ৫ম পর্ব

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



। তুতুল তো আবাক হয়ে মিলি খালার কাছে গেল ।
--খালা মনি তোমার খাবার তুমি নিয়ে যাও । লোকটা বলে যার খাবার তাকে আসতে বল ।
-- আচ্ছা দে আমি নিয়ে যাই । পাগল বলে কথা । মিলির মা ঘর থেকে বলে খুবেই ভাল কাজ মা ।
যাও পাগল টা সেই সকালে আসছে । আমি দুবার দেখেছি । আল্লাহ্‌ যে কোন মানুষ কে কখন কিসের জন্য পাঠায় এক মাত্র মাবুদেই জানে ।। মিলির মায়ের বয়স এখন প্রায় সত্তরের কাছা কাছি ।। মিলি
খাবার নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছে । মিলির স্বামী সাথে সিঁড়িতে দেখা । কি কোথায় যাও মিলি
-- আরে তুমি উপরে যাও । আমি আসছি মাত্র দুই মিনিট যাব আর আসব ।
-- টা যাও কোথায় ।
-- আরে ঐ মোরে । দেখ না একটা পাগল সকাল থেকে আছে । মনে হয় কিছুই খাই নাই । তাই একটু
খাবার দিতে যাই ।
--- এলাকায় কি তুমি একমাত্র নারী । না কি আর কোন মহিলা নাই । যত সব । যাও দেখ গেলেই
বলবে আপা খবার দিলেন । কয়টা টাকা দেন । জামা দেন । কাপড় দেন । আর মহল্লার সবাই
জানে তুমি হলে নিজের খেয়ে অন্যের মহিষ তাড়াও ।
--- মিলি স্বামীর কথায় একটু কষ্ট পেল তবু সে খাবার নিয়ে পাগলের কাছে আসলো । অনেক লোক
তাকে ঘিরে দাড়িয়ে আছে । মিলি বলল
-- - আই সবাই যাও । দেখি দেখি এটা কি টেলিভিশন নাকি
যে ভীর করে আছ । সবাই সরে দাড়াও । মিলি এবার পাগলের কাছে এসে বলল - তোমাকে দেখে তো
মনে হয় না পাগল । ভাব ধরে সকাল থেকে এই খানে দাড়িয়ে আছো কেন । তোমার ভাগ্য ভাল যে তারু মিয়া নাই । থাকলে যে কয়টা বারি মারত । পাগলামি কই পালাইত ।
--- মিলির দিকে তাকিয়ে পাগল বলল-- যে চলে যায় সবাই তার ভয় দেখায় । আর যারা বেঁচে আছে
তারা কই কোন ভয়ের কারন না।
--- কথা তো সুন্দর । নাও এই গুলো খাও ।
--- না আমি আপানার খাবার খাব না। এটা আপনার স্বামী কে খেতে দিন । কারন আপনার স্বামী আপনার কাজে খুব বিরক্ত । আর বলে দেন আমি তার মত স্বার্থ পড় না। কারন গত রাত সে আমার সাথে পুলিশ লকাপে ছিল । মিলি তো শুনে অবাক । বল কই পাগল ভাই । তুমি তাকে চেন ।
-- সেটা তাকে বলল ।। পাগলের কথা কেউ কই বিশ্বাস করে ।। যদি তুমি কর সেটা তোমার উধারতা । তবে কারো কথা সব না শুনে কাউকে অবিশ্বাস কারা ঠিক না, আমাদের সমস্যার মুল অবিশ্বাস । পাগলের কথা শুনে মিলি চুপ হয়ে যায় । ঠিকেই তো গত রাতে সে দেরি করে বাসায় আসছে । ইস আল্লায় মনে তোমাকে পাঠাইছে । আমার বাবা কে এক দিন রাতে পুলিশে ধরে। পরের দিন সকালে আমরা বাবা কে বের করে নিয়ে আসি । কিনতু আমরা স্বামী আজিজ মিয়া বলে আমি নাকি একজন চোরের মেয়ে । আজ বের হবে কে চোর ।
পাগল হেসে বলে জগতের চোর তো আমারাই সৃষ্টি করি । কে যে চোর কে যে ভাল একমাত্র সৃষ্টি যার সেই জানে ।।
--- রাখ তোমার জ্ঞানী কথা । খাবার টা খেয়ে নাও । আমি জানি তোমার মধ্য কি জানি একটা আছে । আমাকে কিন্তু এলাকার সবাই সম্মান করে ।।
-- আমার জন্য কেন কষ্ট করবেন । আমি খেলেই কি না খেলেই কি?
-- দেখ আমার সমানে কেউ না খেয়ে থাকতে পারবে না। এলাকায় আমার সম্মান আছে । তাছারা তুমি আজ একটা সত্য কথা বলেছ ।। তোমাকে আমার একটু দরকার ।। পাগল ভাই তুমি আমার সাথে একটু এসো । পাগলের হাত ধরে মিলি বেগম পাগল কে নিয়ে
তার বাসার দিকে যাচ্ছে ।। মহল্লার সবাই তাই দেখে হাসছে ।। পাশের বাসার একজন বলেই ফেলল -
এক পাগল নিয়ে যায় আরেক পাগল ।।

**************
সামছু পুলিশ কে নিতে তার বাসার সামনে গাড়ি আসছে । আলেয়া বেগম বলল- কই গো তুমি ঐ যে গাড়ি আসছে ।। সামছু মিয়া গাড়ি করে বনানি অফিসে যায় । বড় সাহেবের রুমে গিয়ে ছালাম দিয়ে বলে স্যার আমাকে আসতে বলেছিলেন ।
--- আরে সামছু সাহেব আসুন । বসুন । তা কেমন আছেন ।।
--- স্যার ভাল আছি । আপনি ভাল আছেন ।।
--- হ্যা ভাল আছি । আপনার কাছে আমি অনেক বড় ঋণী মানুষ। আমার ম্যানেজমেন্ট কে আপনার
কথা বললে সবাই অবাক হয়েছে । সবাই বলল যেন আপনি যে উপকার করেছেন তার যেন ১%
আমি আপনার জন্য করি ।।
--- স্যার আপনার নামি দামি মানুষ । আপনাদের কথার কিছু আমি বুঝি না। আর আমি স্যার অংকে খুব একটা ভাল না। পুলিশের চাকুরি তো এখানে অংকের চেয়ে পলিটিক্স বেশী । আমি স্যার দুইটাই কাচা । ২৪ ঘণ্টা পুলিশ কে কাজ করতে হয় । কিন্তু বেতন দেয় পিয়নের চেয়ে কম ।।
--- হ্যা সামছু সাহেব যারা সব বিষয় কাচা তারাই সুখি । এই যে আমরাদের এত আছে । আমরা
সুখি হতে পারি না । সুখের অভিনয় করি ।।

--- স্যার সুখ কি আমি জানি না । তবে আমি একজন সুখি মানুষ দেখছি ।
--- তাই । সখি মানুষ ।
--- হ্যা স্যার তবে সে কি মানুষ না অন্য কিছু জানি না।
--- তার জন্যই আমি এখন আর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করি না ।
--- ভাল । আসলে চিন্তা করলে যে রেজাল্ট না করলে তার চেয়ে ভাল ।।
--- জী স্যার , ঠিক দামি কথা ।
--- আচ্ছা সামছু সাহেব । এই নেন এটা ১% চেয়ে অনেক কম । করন আমি ১% দিতে পারছি না।
আর আপনার জন্য দুই টা ফোন একটা আপনার একটা আপনার স্ত্রীর । আর খামটায় একটা
পে-অডার আছে । বাসায় গিয়ে দেখুন ।। ভাল কিছু করুন ।। আমার ভিজিটিং কার্ড এটা
রাখুন। যে কোন দরকারে আমাকে ফোন দিবেন ।। কারন ১% কিন্তু অনেক কেবল দেয়া শুরু ।
সামছু পুলিশ খামটা নিয়ে ওদের অফিসের গাড়িতে বাসার দিকে রাওনা দিয়েছে । মনে মনে মোবাইল
ফোনের দিকে তাকিয়ে খুব হাসছে । অনেক দিনের ইচ্ছা তার আলেয়া কে একটা মোবাইল ফোন কিনে দিবে । কিন্তু পারছে না। আর কয়দিন পড় মানুষ ২০০০ সাল উজ্জাপন করবে ।। আর মাত্র কয়টা দিন ।। মনে মনে হাসছে জিবনে যা সে কল্পনা করতে পারে না। মনে পড়ছে তার ছোট ভাই মোবাইল নিয়ে আসার কথা মনে পড়ছে । তার ছেলে মোবাইল ধরেছিল বলে অ চাচী ধমক দিয়েছিল । ক্লাস নাইনের ছেলে কি কেউ ধমক দেয় ।। পাগল টার কথা খুব মনে মনে পড়েছে । শীত বলেই কিছুই না । না কি সে জামা কাপড় কিনতে পারে না। এবার দেখা হলে সুন্দর করে একটা প্যান্ট শার্ট বানিয়ে দিব । দামি দেখে জুতা কিনে দিব। মনে মনে অনেক কথা বলতে বলতে গাড়ি বাসার রাস্তায় চলে আসে । গাড়ি থেকে নেমে বাসায় এসে খাটে বসে কাদতে থাকে সামছু পুলিশ ।।
আলেয়া বেগম রান্না ঘর থেকে তাড়াতাড়ি এসে আচলে হাত মুছে স্বামীর মাথায় হাত দিয়ে কি হয়েছে
কান্না করছ কেন?
-- কান্না করছি না । টা সুখের হাসি । আমার মত পুলিশ কে মানুষ এত সম্মান দেয় । ভাবতে পারি না। আলেয়া বেগমের হাতে খাম টা দেয় মোবাইল দেয় , ফোন পেয়ে আলেয়া বলে - আমার লাগবো না ফোন । ছেলে কলেজে যাবে । ছেলেই ব্যবহার করবে । ফোনটা দেখলে আমার ছেলে যে কি খুসি হবে। আচ্ছা খামে কি । এ দেখি পাতলা খাম ।
--- খামে পে - অডার
--- পে- অডার কি ?
--- নগদ টাকার মত কিন্তু ব্যাংকে জমা দিয়ে টাকা তুলতে হয় ।
--- কত টাকা গো ।
--- আলেয়া আমি দেখি নাই কত টাকা । মোবাইল ফোন পাইয়া মন ভড়ে গেছে ।।শুন ফোন দুইটা
বেচলে তোমার অপারেসান টাকা হয়ে যাবে ।
--- না ফোন বেচা লাগবো না। উপহারের জিনিস বেচতে হয় না। আলেয়া বেগম খামটা খুলে ছেলে
কে দেয় । দেখত বাবা কত টাকা লিখা । ইংলিশ এ লিখা তো আমি পড়তে আরব না। ছেলে
পে- অডার দেখে বলে মা । কি রে কত টাকা ।
---- আব্বু তুমি দেখ । মনে হয় ভুল দেখতাছি ।
--- আরে বাবা ভুল কেন । দেখ না কত টাকা ...........................।।

চলমান ------------------------
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×