somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিনা জাহান প্রিয়া
আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

‘অ-মানব’- (৯ম পর্ব)

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সেলিনা জাহান প্রিয়া: মিলি ঘুম থেকে উঠে কিছু টাকা হাতে নিয়ে পাগলের কথা মত গণক মহিলার কাছে ।
গণক মহিলা মহিলা জানে মিলি বিভিন্ন সময় তাঁর কাছে অনেক কিছু জানতে আসে ।
মিলি বলল – খালাম্মা ভাল আছেন ।
—- আরে মিলি যে আসো আসো । আল্লাহর কি ইচ্ছা তোমার কথা বলতে বলতে চলে আসলা ।
—- আমার কথা কেন খালাম্মা ।
—- তোমার বাসায় নাকি একজন পাগল জাগা দিয়েছিল ।
—- হ্যা , তাই তো আপনার কাছে আসলাম । একটু গণনা করে দেখেন তো আসলে মামলা কি?
—- তাহালে মিলি একটু বসও । ওজু করে এসে বলল ।মিলি চিন্তা কর না- বলছি । চোখ বন্ধ করে
বলতে লাগলো । মিলি আগে সালামি দাও । মিলি ৫০০ টাকা দিল । বল মিলি কিজান্তে চাও ?
—- খালাম্মা । আমার বাসার পাগল টা ভাল না কি কোন মতলব আছে ।
—- চোখ বন্ধ করে তজবি হাত উপর করে বলছে । ছেলেটা পাগল । তবে মাথা ভাল হলে কিছু
খারাপ
হবে । তবে মাথা ভাল হবে না।
—- পাগল ছেলেটা কি লিখা পড়া জানে ।
—- আরে না মিলি কিছুই জানে না।
—- আচ্ছা খালাম্মা আর একটা কথা আমার স্বামী আর আমি কি সন্তানের মুখ দেখতে পারব ।
—- মিলি মা সব কপাল । তোমার সাথে একটা যে মানুষ টার বিয়ে হয়েছে । সে কোন দিন বাবা
হতে
পারবে না। আমার গণনা । ভুল হতে পারে না। তোমার যে বয়স মা। তুমি এই স্বামী ছেরে আর
তো বিয়ে ও করবে না। যদি স্বামী ছেরে বিয়ে কর । নতুন সংসারে বাচ্চা হতে পারে । আমার গণনা
ভুল হতে পারে না। মিলি মা আর কিছু জানতে চাও ।
—- না খালাম্মা আর কিছু না। মনে মনে মিলি বলে । স্বামী ছাড়তে পারব না। ৩৫ বছর বয়সে
স্বামী ছারলে মানুষ কি বলবে ? মিলি গণক খালার বাসা থেকে রাস্তায় আসতেই দেখা তুতুলের
সাথে
কি তুতুল বিকালে বাসায় আসো । জী মিলি খালা আমি আসব । আমাকে একটা কর্ক কিনে দিবে
ব্যাট খেলব । ঠিক আছে তুতুল এসো । বাড়ির পাশের দোকানদার মিলি কে দেখে বলল – আপা
আমার বউ কে আপনার একদিন ডাক্তারের কাচ্ছে নিয়ে যেতে হবে । মিলি বলল – ঠিক আছে আমার কাছে আসতে বল । আমি কথা বলে নিবে । মিলি কে এলাকার সবাই যে কোন কাজে ডাকে ।।
পাগলের জন্য সকালের খাবার নিয়ে জোছনা ছাদে এসে দেখে পাগল রোদের মধ্য বসে আছে । জোছনা বলল– পাগল ভাই আসেন খাবেন ।
— দিনের বেলায় জোছনা দেখা যায় !
— আপনে যে কি বলেন ভাই জান ? আমি কি চাঁদ যে রাতে উঠবো ।
— হ্যা ঠিক তো । জোছনা !
—আচ্ছা পাগল ভাই আপনি পায়ে জুতা পরেন না কেন ?
— পাগল বলে জুতা পড়ি না ।
— না । আপনি মিছা কথা বলছেন ।
—- সত্য কোনটা জোছনা ?
— সেইটা আপনে ভাল জানেন ।
—- পাগল একটু হেসে বলল জোছনা মানুষ অনেক সত্য জানে শুধু স্বার্থের নেশায় সে সত্য
গোপন
করে । তারা মনে করে সত্য গোপন করলে তা কেউ জানবে না। কিন্তু এটা জানে না । সত্য
আলোর মত যা প্রকাশিত হবে । তুমি অনেক ছোট বুঝবে না। আর গত কাল তুমি ঘরে একা
বসে
যে চিন্তা করেছ এটা করবে না। কারন তুমি ছোট আর সত্য জানতে অনেক সময় বড় হতে
হয় ।।
—- আচ্ছা পাগল ভাই আমার বাবা মা কি আসবে ।
—- অপেক্ষা কর আসবে ।
জোছনা ছাদ থেকে নেমে চলে যায় । পাশের বাড়ির রেজিয়া জানালা দিয়ে দেখ পাগল কি করে। পাগল মনে মনে হাসে । পাগলের হাসি দেখে রেজিয়া বলে পাগলের সুখ মনে মনে তাই সে একা একা হাসে ।।

আজিজ মিয়ার মনটা ভাল না । কিন্তু তার মনের মধ্য ভয়টা এখনো শেষ হয় নাই । ছাদে যেতে পারছে না । না জানি মিলি কিছু বলে । যাই হোক তবু সে ছাদে গেল পাগলের মতিগতি বুঝার জন্য । পাগল ছাদের এক কোনে পাগল দাড়িয়ে । আজিজ মিয়া পাগলকে বলল- কি পাগল মামু ভাল আছ না কি?
—– পাগল ঘাড় ফিরিয়ে একটা হাসি দিয়ে বলল , আজ পর্যন্ত কোন পাগল বলে নাই সে খারাপ
আছে ।
একমাত্র পাগলেই কোন দিন মন্দ থেকে না ।
—–আসলে তুমি কে ?
—- আমি কে এটাই জানার চেষ্টা করছি !
—- পাগল মামু তোমার কি কোন নাম নাই ।
—- রাস্তার কত জন পাগল তার নাম বলতে পারে ।
—- দেখ আমি একটা ব্যাপারে তোমার কাছে এসেছি ?
—– পাগলের কাছে কি কোন জ্ঞান থাকে । যদি জ্ঞানেই থাকত আমার তাহলে কি কেউ আমায়
পাগল
ডাকত !
—– দেখ আমি জানি তুমি পাগল না । কারন পাগল রা যুক্তি দিয়ে কথা বলে না।
—– হ্যা আমি পাগল না তবে আমি মানুষ ও না ।
—- তুমি পাগল ও না মানুষ ও না তাহালে তুমি কে ?
—- দেখুন আপনি কি আমাকে জানতে এসেছেন । নাকি আপনার সম্মান বাচাতে এসেছেন তা
পরিষ্কার করুন ?
—- হ্যাঁ আমার সম্মান বাচাতে এসেছি ।
—- দেখুন এটাই উত্তম । তাই হউক ।
—– তাহালে আমার স্ত্রী কে তুমি বলবে না ।
—- পিছনে মিলি খালা আসছে । আজিজি চেয়ে দেখে । মিলি ছাদের কর্নারে দিকে আসছে ।আজিজ
মিয়া এমন একটা ভাব ধরল যে পাগল কে খুব ভালবাসা দিচ্ছে । মিলি বলল স্বামী কে –
—– এই তুমি ছাদে কি কর । আজ অফিস নাই তোমার ।
—– অফিস আছে তবে ফোনে বলেছি আসতে একটু দেরি হবে
—– যাও তুমি অফিসে যাই । আসার সময় ওর জন্য দুইটা প্যান্ট আর দুইটা টি সার্ট নিয়ে আসবে ।
—– আচ্ছা ঠিক আছে । তা তোমার পাগলের চুল দাড়ি যে অবস্তা ।
— এটা নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না। তুমি যাও । আজিজ মিয়া চলে যায় । মিলি বলে এই
মানুষটা সহজে ছাদে আসে না । নিশ্চয় কোন মতলবে । বুঝতে পারছ । মনে হয় অমাকে
ঘুস দিতে এসেছিল । আমাকে দেখে পালাইছে ।
—– না মিলি খালা তেমন মনে হয় না। আচ্ছা গণক মহিলার কাছে গিয়েছিলেন ।
—– হ্যা সকালে গিয়েছিলাম । ৫০০ টাকা দিয়ে জানে আসলাম ।
—- কি আপনাকে আবার বিয়ে করতে বলেছে ?
—- হ্যাঁ ঠিক তুমি জানলে কি ভাবে ?
—– গণক রা মানুষের মনের দুর্বলতা নিয়ে খেলে । দুনিয়ার প্রতিটা মানুষ । কোন না কোন ভাবে
কষ্টে আছে । কারন মানুষ কে স্রষ্টা পরীক্ষা মূলক প্রাণী হিসাবে দুনিয়ায় পাঠাইছে । তাই
মানুষ কে জন্ম থেকে মৃত্য পর্যন্ত শুধু পরীক্ষা দিতে হচ্ছে ।
—– বাহ ! সুন্দর কথা । আচ্ছা পাগল ছেলে বলত ঐ মহিলা আমাকে বলল আমি আবার বিয়ে
করলে মা হব , এটা কি তো সে মিথ্যা বলেছে । ডাক্তার আমাকে বলেছে যে আমি কোন দিন
মা হতে পারব না ।
—– হ্যা খালা মনি এটাই সত্য । তবে আপনি মা ।
—– কি ভাবে আমি মা ? সবাই মা বলে তাই আমি মা ।
—– না ! আমি যদি একটা কথা বলি তাহালে কি মেনে নিবেন । আচ্ছা দেখুন আপনি না হয় মা হতে
পারবেন না। কিন্তু আপনার স্বামীর তো বাবা হবার অধিকার আছে ।
—- আরে পাগল আমি অনেক বার চেষ্টা করেছি । আজিজ কে বিয়ে করাতে ।
—- আজিজ মামা আপনাকে অনেক ভালবাসে । তাই না ।
—- হ্যা ভাল বাসে । কিন্তু আমার কোন কথা শুনে না।
—- আপনি কি মা ডাক শুনতে চান । যদি শুনতে চান তাহালে বলি ।
—– মিলির চোখে পানি টল টল করে ঝরছে । বল পাগল ! শুনি তোর কথা !
—– খালা মনি স্রষ্টা অনেক সময় অন্যের মধ্য দিয়ে তার প্রিয় মানুষ কে সুখি করে । হয়ত এটাই
তিনি ভাল জানেন । আমাদের জানা পরিবর্তন শীল । আর স্রষ্টার জানা অপরিবর্তন শীল ।
তাই স্রষ্টার প্রতি জিবনের প্রতি প্রেম আর ভালবাসা বিলিয়ে আপনি স্রষ্টার অংশ হয়ে মানুষের
কাজ করুন ।
—— মিলি বলল তুমি কি মানুষ না অন্য কিছু আমাকে বলত । জিবনে এত সুন্দর করে কেউ কোন
দিন বলে নাই
——- মিলি খালা আপনি ঘরে জান । আমি আপনাকে আপনার সন্তানের কাছে নিয়ে যাব ।
কিন্তু আপনি এই কথা কাউকে এখন বলবেন না ।
—– আমার সন্তানের কাছে । ঠিক বুঝলাম না ।
—– মিলি খালা । আজিজ মামার সন্তান কি আপনার সন্তান না ।
—- মানে আজিজ বিয়ে করেছে ।
—– হ্যা । কিন্তু ঐ মেয়েটা কে এখন সে মেনে নিচ্ছে না। কারন ঐ মেয়েটার আগে একটা বিয়ে হয়ে
ছিল । বিয়ের সময় মেয়েটা ঐ কথা লুকিয়ে রাখে । আগের স্বামী মামলা করে । কিন্ত পুলিশ
দেখল আগের স্বামী প্রতারক । তাই তার বউ এসে তাকে মুক্ত করে দিয়ে যায় । মিলি খালা
ছেলেটা অনেক সুন্দর মনে হয় তিন বছরের । আর মেয়েটা এখন কুল হারা ।
—– তুমি কি শুনালে আমাকে ? আমি ওদের আনতে যাব । তোমাকে নিয়ে । কাউকে বলব না।

চলমান———

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×