এই প্রথম দেখলাম পাগলের বেশে মুক্তিযোদ্ধা...
নাম তার জঙ্গু পাগলা!
সালাম হে বীর । শত সালাম ।।
------------------------------------------------------------
শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা বাছুর আগলা গ্রামে স্ত্রী ও ৬ সন্তান নিয়ে তার বসবাস। এলাকায় তাকে জঙ্গু পাগলা বলে এক নামেই চিনে।
কিন্তু তার আসল পরিচয় হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা জমশেদ আলী ওরফে জঙ্গু পাগলা।
.
একাত্তরে তিনি যুদ্ধ করেছেন ১১ নং সেক্টরে। যুদ্ধক্ষেত্রে তার সঙ্গি ছিলেন ময়মনসিংহের আওয়ামীলীগ নেতা প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান। একাত্তরে যুদ্ধে যাওয়ার
আগে তিনি এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে কিরসা গান পরিবেশন করতেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে
তিনি ছুটে যান যুদ্ধে। ফিরে এসে যোগ দেয় রক্ষি বাহিনীতে। এরপর ১৯৭৫ সনের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তিনি বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসে
পাগল হয়ে যান। দীর্ঘদিন পাবনা পাগলা গারদে ভর্তি থাকেন। এরপর এলাকায় এসে বসবাস করতে থাকেন।
.
কিন্তু তিনি এখনও মনে করেন দেশ স্বাধীন হয়নি। তাই তিনি প্রতীকি কাঠের তৈরী অস্ত্র কাঁধে নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়ায়।
মাথায় জাতীয় ফুল শাপলার পদক, ময়ুর এর পাখা,
পড়নে লাল সালু, হাতে বিভিন্ন আকারের চুরি, কোমরে বাঁধা ৫ টি ছাগল চড়ানো খুটি ইত্যাদি। তার এ বেশভূষা দেখে যে কেউ তাকে সুস্থ মানুষ বলে মনে না করলেও তার সাথে কথা বলে সহজেই বোঝা যাবে না তিনি একজন পাগল। কারণ তার পোষাক-আষাকে পাগল মনে হলেও তার কথা বার্তায় পাগলামির ছাপ
সহজেই বোঝা যায়না।
.
জঙ্গু পাগলা নাম করণের ব্যাপারে তিনি জানান, জং থেকে জঙ্গি, জং মানে যুদ্ধ! অর্থাৎ তিনি জং এর পাগল। কারণ, তার ভাষায়-স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর এখনও তিনি যুদ্ধ করে চলেছে।
এলকাবাসীর কাছে ও শুনলাম তিনি একজন সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা! মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অনেক ভিক্ষুক, শ্রমিক, চাষি, কারখানার শ্রমিক, রিক্সা চালক, নাইট গার্ডসহ জীবন যুদ্ধে বিভিন্ন পেশায় কাজ করার কথা শুনেছি এবং দেখেছি। কিন্তু এই প্রথম
দেখলাম পাগলের বেশে মুক্তিযোদ্ধা...
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৩১