somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুন্যের গর্ভে-চতূর্থ পর্ব

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাসখানেক পরে সে বুঝতে পারল তাকে দেখলে- মেয়েটির সারা দেহ উপচিয়ে যে খুশীর ভাব ফুটে উঠত সেটা ম্লান হতে শুরু করেছে , তার একান্ত সান্যিধ্যে স্নিগ্ধ তৃপ্ততা সে ভাবে আর প্রকাশ পায় না!
তাকে হারানোর ভয়ে সে শংকিত হয়ে উঠল! ব্যাপারটা ভাল হচ্ছেনা জেনেও তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে অনুরোধ করল, মেয়েটিকে অনুসরন করতে। কদিনের মাথায় সে খবর এনে দিল;সেটা বলতে গিয়ে লজ্জায় তন্ময়ের মুখ লাল হয়ে গেল, নিজেকে লুকোবার জন্য সে মাথাটা নিচু করে ফেলল...ভাবটা এমন যে অপরাধী সে-ই।
এ’কদিনেই সম্পর্ক শুধু মনের দিক দিয়েই এগুইনি,সেটা শরির পর্যন্ত গড়িয়েছে। তন্ময় প্রথমে বিশ্বাস করতে চাইল না- কিন্তু প্রমান যখন হাতে নাতে পেল তখন সে উন্মাদের মত আচরন শুরু করল। এও কি সম্ভব যে দু- বছরের ঘনিষ্ঠতার সুযোগে সে যা দাবী করতে পারেনি?
কোত্থেকে হুটকরে এসে অন্য কেউ তার সবকিছূ ছিনিয়ে নিয়ে গেল। হয়তোবা ছিনিয়ে নেয়নি- সম্ভবত স্বেচ্ছায় আত্ম সমর্পন করেছে সে -উদারতার সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছে!
যৌবনের রক্ত টগবগিয়ে উঠল। প্রতিশোধ স্পৃহা তাকে উন্মত্ত করে তুলল।
আজ এই মুহুর্তে আমার সামনে বসে হয়তো তার আত্মোপলদ্ধি হল। ঘৃনায় চোখ-মুখ কুঁচকে গেল তার- ছিঃ! প্রচন্ড অনুশোচনা হচ্ছিল সে এমন একটা নোংরা মেয়েকে ভালবেসেছিল ভেবে।
সে প্রথমে তার প্রেমিকার মুখোমুখি হতে চাইল। কিন্তু চরম ঘৃনা লজ্জা আড়ষ্ঠতা তাকে বাধা দিল। সারাক্ষন ফন্দি আটতে থাকল কিভাবে প্রতিশোধ নেয়া যায়।
মনের মধ্যে ঝড় বইছিল ভীষন! ঠিক করল, সে দুজনকেই খুন করবে! কিন্তু কিভাবে?
পরে ভেবেছিল,সেই ছেলেটিকেই খুন করবে যে তার প্রেমিকাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। তাছাড়া ওকে খুন করলে তার সেই প্রেমিকা যে কষ্ট পাবে তার সেই বিষন্ন চেহারা মানষপটে ভেসে উঠতেই সে আরো হিংস্র হয়ে উঠল।
হলের ক্যাডারদের অনেক অনুনয় বিনয় করে কিছু টাকা খরচ করে সে একটা অতি পুরোনো রিভলবার যোগার করল। একদিনের ট্রেনিং নিয়েই সে তক্কে তক্কে থাকল, ওকে বাগে পেলেই ঠিক মাথা লক্ষ করে গুলি চালাবে। ব্যাস্ শেষ..
সুযোগ একদিন ঠিকই এসে গেল। তার মুখোমুখি হয়ে রিভলবারটি কপালেও ঠিকই ঠেকিয়ে ছিল কিন্তু গুলি করতে গিয়ে শেষ মুহুর্তে হাত কেঁপে যাওয়ায় নেতাজী সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে আহত হয়ে হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল বেশ কিছূদিন।
তন্ময় ভেবেছিল সে মারা গেছে। গুলি করে সে একচুলও নড়েনি। আগে থেকেই ভেবে রেখেছিল সে কাপুরুষের মত পালাবে না, সেচ্ছায় ধরা দিবে। তাছাড়া কেউ বিশেষ করে তার প্রেমিকা যদি জানতেই না পারে যে কে খুন করেছে তাহলে তার এই প্রতিশোধ নিয়ে লাভ কি হল।
বিমুঢ় দৃষ্টিতে চেয়েছিল রক্তাক্ত সেই দেহটির দিকে। কিংকর্তব্যবিমুঢ় সে তখন তার সামনে পড়ে থাকা একটা লাশই দেখতে পাচ্ছিল।
পরে আরেক জনের মুখে এ কথা শুনেছিল যে মাটিতে পরে গিয়ে সে তার কাছে প্রান ভিক্ষে চাইছিল। সেই নেতাটি ভেবেছিল তাকে সে আবার গুলি করবে!
কিছুটা সম্বিৎ ফিরে পেতেই সে অনুভব করল কয়েকজন মানুষ তাকে একরকম চ্যাংদোলা করে কোথায় যেন নিয়ে চলছে। কিছুক্ষন পরে নিজেকে আবিস্কার করল হাজতের গড়াদের আড়ালের বদলে হোস্টেলের রুমে নিজের প্রিয় বিছানায় ।
ঢাকা ভার্সিটিতে এরকম হরহামেশাই ঘটত। যে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে পরের দিন পত্রিকার পাতায় ফলাও করে প্রচার করা হয় প্রতিপক্ষের হাতে অমুক ছাত্র বা ছাত্র নেতা নিহত অথবা আহত। বিশেষ কোন ব্যক্তির নাম প্রচার করা হয় না। যে কোন ঘটনাকেই রাজনৈতিক মোড় দেয়ার প্রয়াস চালানো হয়। সত্যিকার অপরাধী থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে।
যে নেতাটিকে তন্ময় গুলি করেছিল সে এককালে দারুন জনপ্রিয় থাকলেও পরবর্তীতে তার কিছু ন্যক্কারজনক কর্মকান্ডের জন্য সেই জনপ্রিয়তা তখন বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছিল। তাছাড়া তার অধীনস্ত কিছু ছাত্র নেতা দলের জন্য প্রচুর ত্যাগ স্বীকার করার পরেও দল তাদের সঠিকভাবে মুল্যায়ন করছিল না সেটার জন্য বহুলাংশে সেই দায়ী। ক্ষোভ থেকে নিজের দলেই একটা প্রতিদদ্বী গ্রুপ গড়ে উঠছিল। যদিও তাকে চ্যালেঞ্জ করার মত যথেষ্ট শক্তি বা সাহস তাদের ছিল না।
তন্ময়ের সেই দুঃসাহসিক কান্ডের জন্য তারা তাকে অনেকটা বীরের মর্যাদা দিল। তাকে প্রোটেকশনের নিশ্চয়তা দিল। বিনিময়ে তন্ময় বাধ্য হল সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহন করতে। ধীরে ধীরে রাজনীতি তাকে গ্রাস করে ফেলল। মফস্বলের একটা সহজ সরল ছেলে অল্প কদিনেই অত্মপ্রকাশ করল দলের একজন দুঃসাহসিক ক্যাডার হিসেবে।
প্রতিহিংসা ও রাজনীতির আগ্রাসন কত সম্ভবনাময় ভবিষ্যৎকে এভাবে ধ্বংস করে ফেলে তার কি ইয়ত্বা আছে।
তন্ময়ের এই আকস্মিক পরিবর্তনের খবরে তার বাবা মায়ের কি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল সে জানেনা তবে মা মাঝে মধ্যে চোখের জলে দুয়েকটা চিঠি লিখলেও বাবা আর তার খবর নেবার প্রয়োজন অনুভব করেননি। সেও আজ অব্দি তার মুখোমুখি দাড়ানোর সাহস সঞ্চয় করে উঠতে পারেনি।


ভাষা শিক্ষা কোর্স শুরু করার মাস ছয়েকের মাথায় আমাদের ইনস্টিটিউটের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিলেন ফাইনাল পরীক্ষা নেয়ার(কোর্সটা ছিল এক বছরের)।
ছাত্ররা স্বভাবতই হতভম্ভ হঠাৎ তাদের এই অপরিকল্পিত উদ্ভট সিদ্ধান্তের জন্য। এমনকি আমাদের ক্লাস টিচারদের কেউই চাচ্ছিলেন না যে এই মুহুর্তে আমাদের পরীক্ষা নেয়া হোক। কেননা এ’কদিনে পরীক্ষা দেয়ার মত উপযুক্ত ভাষা আমরা করায়ত্ব করতে পারিনি। তবুও যদি শুধু রুশ ভাষায় আমাদের দক্ষতা নিরুপনের জন্য পরীক্ষা নেয়া হোত।এখানে আমাদের ক্যমিস্ট্রি ,ফিজিক্স,ম্যাথ,আর্কিটেকচারের সহ অন্যান্য সব বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে তাও আমাদের কাছে তখন আপাত দুবোধ্য এক ভাষায়। আমরা কতৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে কোন বরফ গলাতে পারলাম না। তারা তাদের সিদ্ধান্তেই অনঢ় থাকল!
শুধু এমনি এমনি পরীক্ষা হলে কথা ছিল নোটিশ টাঙ্গিয়ে জানিয়ে দেয়া হোল। কেউ যদি এই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয় তাহলে তাকে আবার ভাষা শিক্ষা কোর্স প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। তার মানে শুধু সময় ক্ষেপনই নয় তৎসঙ্গে নতুন করে টিউশন ফি দেয়ার প্রশ্ন।
অগত্যা বিমর্ষ চেহারা নিয়ে আমরা সবাই মিলিত হলাম বিশেষ আলোচনার জন্য।
উদ্দেশ্য একটাই কিভাবে এই পরীক্ষা দেয়া থেকে বিরত থাকা যায়।
যে যার মত বক্তব্য প্রদান করল। চেস্টা করল সবচেয়ে সহজ সল্যিউশনের কিন্তু ব্যাপারটা আরো জটিল করে ফেলল...
আমরা যখন বিশেষ কোন সিদ্ধন্তে উপনিত হতে পারছিলাম না তখন আমাদের সাহায্যের জন্য সবাইকে ভীষন অবাক করে দিয়ে তন্ময় এগিয়ে এল। আমাদের সবারই প্রায় ধারনা ছিল সেই একমাত্র ছাত্র যার এ পরীক্ষায় পাশ করার ন্যুন্যতম সম্ভাবনা আছে। সেজন্যই সে আমাদের বিপক্ষচারন না করলেও পক্ষে যে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে না সে ব্যাপারে কারোই দ্বীমত ছিল না।
সে আমাদের বলল আন্দোলন করতে। একদম দেশী স্টাইলে!!!
আন্দোলনের কথা শুনে অনেকেই প্রথমে একটু ঘাবড়ে গেল! কিন্তু তন্ময়ের সাবলীল ব্যাখ্যার পরে সবাই নিশ্চিত সিদ্ধান্তে উপনিত হল যে আন্দোলনই হবে আমাদের প্রধান হাতিয়ার। অন্দোলন ভিন্ন অন্য কোন পন্থাই আমাদের সমস্যা উত্তরনের জন্য যথেস্ট সহায়ক হবে না।
সবার মধ্যে সে কি উত্তেজনা! আন্দোলন যেন অ্যাডভেঞ্চারে রুপ নিল। সেই অ্যাডভেঞ্চারের উত্তেজনায় সবার রক্ত যেন ফুটছে টগবগ করে।
তন্ময় আমাদের পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করে দিল তবে তার একটা শর্ত ছিল যে সে কখনই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে না।
কেন? ব্যাখ্যা চাইলে বলল ’এমনিই’ রহস্যজনক উত্তর। কিন্তু তখনকার মত এনিয়ে আর কেউই বিশেষ মাথা ঘামাল নাক।
আমাদের প্রথম পদক্ষেপ ছিল ঘোষনা দিয়ে ক্লাশ বর্জন এবং পরবর্তীতে অবস্থান ধর্মঘট।
দ্বীতিয়টার আর প্রয়োজন পরেনি প্রথমটাতেই বাজিমাত! আমাদের প্রথম পদক্ষেপই ইনস্টিটিউটে রীতিমত তুমুল আলোড়ন সৃস্টি করল।শিক্ষকসহ ওদেশী ছাত্ররা সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল!
ক্লাশ বন্ধের দু'দিনের মাথায় ডিপার্টমেন্ট ডিন থেকে শুরু করে সব শিক্ষরা আমাদের হোস্টেলে ছুটে আসল আলোচনার জন্য। তারা কখনই এমন পরিস্থিতির সন্মুখীন হয়নি সেজন্য কিভাবে এসব পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয় তা তাদের জানা নেই। তারা কিভাবে আলোচনা শুরু করবে এইটেই বুঝে উঠতে পারছিল না। তাদের অসহায়ত্ব ভাব দেখে আমরা সামনে গাম্ভীর্যতা দেখালেও ভিতরে ভিতরে্র সবাই হেসে খুন হচ্ছিলাম!
তারা আমাদেরকে আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান করল। বিপরীতে তারা আমাদের যে কোন অনুরোধ মেনে নিবে ।
কিন্তু তারা একটা শর্তও জুড়ে দিল যে প্রতিটা ছাত্রের নিজস্ব বক্তব্য শুনতে চায় কারন তারা সন্দিহান সবাই পরীক্ষা বর্জনের বিপক্ষে নয় দু'য়েকজনকে জোড় করে দলে টানা হয়েছে। আমরা খুশী মনে তাদের প্রস্তাব মেনে নিলাম- কেননা কেউই যে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাদের এই আন্দোলনে যোগ দেয়নি সে ব্যাপারে আমরা শতভাগ কনফার্ম ছিলাম।
আমাদের ইনস্টিটিউট কতৃপক্ষ জানালেন যে তারা পরদিন অফিস টাইমে টিচার্স রুমে আমাদের সবার সাথে মিলিত হবে।
আমাদের অগ্রিম বিজয়ের আনন্দে আমরা সেদিন রাত্রেই বিশেষ পার্টির আয়োজন করলাম। সেখানে সবার মধ্যমনি ছিল তন্ময়।অনেকের চোখেই সে তখন হিরো।
দারুন হৈ হুল্লোড় করে আমরা রাত কাটিয়ে পরদিন যথা সময়েই ইনস্টিটিউটে গিয়ে উপস্থিত হলাম ।
কিছুক্ষনের মধ্যেই আমাদের সাক্ষাৎকার পর্ব শুরু হল; একেকজন দারুন টেনশন নিয়ে যাচ্ছে কেননা সবারই ধারনা ছিল তাকে কঠিন কোন প্রশ্নের সন্মুখীন হতে হবে যার উত্তর দিতে গিয়ে সে জট বাধিয়ে ফেলবে। কিন্তু ফিরে আসছে মোটামুটি উৎফুল্ল চিত্তেই -বোঝা যাচ্ছে তেমন কোন কঠিন প্রশ্নের সন্মুখীন হতে হয়নি- সবার শেষে আমার ডাক পড়ল।
আমি খুব সাবলীল ভঙ্গীতে রুমে ঢুকলেও ভিতরে ঢুকে একটু নার্ভাস হয়ে পরলাম। ওখানকার পরিবেশটা দারুন থমথমে। সবাই পাথরের মত মুখ করে বসে আছে।
প্রথমে আমাকে কয়েকটা টুকটাক প্রশ্ন করল; যেমন, আমাদের ইনস্টিটিউট কেমন লাগছে ?এখানকার পড়ালেখার মান কেমন? শিক্ষকরা কেমন? হোস্টেলে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা?
আমি সাবলীল ভাবেই উত্তর দিলাম।
অবশেষে সেই কাঙ্খত প্রশ্নটি করল, তুমি কি পরীক্ষা দিতে চাও কি না ?
আমি সরাসরি 'না' বললাম না একটু ঘুড়িয়ে বললাম; আমাদের প্রিপারেশন ঠিক মত হয়নি। আমরা পরীক্ষা দেয়ার জন্য এমুহুর্তে প্রস্তুত নই। তাছাড়া যেহেতু সব ছাত্র মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা পরীক্ষা দিবে না সেহেতু আমিও তাদের সাথে একমত।’
তারা আমাকে বোঝাতে চেস্টা করল। কেন পরীক্ষা দিবে না? তুমি ভাল ছাত্র।পাশ করা তোমার জন্য কোন ব্যাপারই না-- এই সব...
আমি মনে মনে হাসলাম,আমি তো জানি নিজেকে! অযথা তারা মিস্টি মিস্টি কথা বলে আমাদের ভিতরে বিভক্তি করতে চাইছে।
রুম থেকে বের হয়ে করিডোরে এসে দেখি কেউ নেই। আমি দারুন আশ্চর্য হলাম। সেই সঙ্গে ব্যাথিতও! নাহ্ এ হতে পারে না। সবাই আমাকে ফেলে চলে যাবে!
তাছাড়া ইনস্টিটিউট কতৃপক্ষ তো এখনও তাদের শেষ সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি।
তারা কি এতটাই কনফিডেন্ট যে এটা শোনারও প্রয়োজন অনুভব করল না।
খুব কস্ট পেলাম আমার সহপাঠীদের ব্যাবহারে। ইচ্ছাকৃত বিক্ষিপ্তভাবে কিছুক্ষন এদিক ওদিক ঘুরে অনেক দেরী করে হোস্টেলে গেলাম।
আমি ভেবেছিলাম সেখানে গিয়ে দেখব প্রচন্ড হৈ হুল্লোড় হচ্ছে। কিন্তু হোস্টেল করিডোরে পা রাখতেই চমকে ইঠলাম। এ যেন মৃতপুরী! প্রতিটা রুমের দরজা বন্ধ। কোথাও যেন কোন প্রাণের চিহ্ন নেই! যা চরমভাবে অপ্রত্যাশিত- তার মানে কি কেউ আসেনি? কোথায় গেল ওরা?
চিন্তিত চিত্তে ধীরে ধীরে আমার রুমের দিকে এগিয়ে গেলাম। আমার রুম বাইরে থেকে তালাবদ্ধ।পকেটে হাত দিয়ে ডুপ্লিকেট চাবি বের করে তালা খুলতে যাব সে মুহুর্তে পিছন থেকে কে যেন আমার নাম ধরে ডাকল?
পিছনে তাকিয়ে দেখি আমার প্রাক্তন রুম মেট তার রুমের দরজা খুলে আমাকে ডাকছে।
এখানে উল্লেখ্য, কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য কিছুদিন আগে আমি ওই রুম ছেড়ে চলে আসি যার মুল কারন ছিল আমার ওই প্রাক্তন রুমমেট। যে আমার দৃস্টিতে সব অঘটনের উদ্যোক্তা। সরল ভাবে যে কোন কিছুই চিন্তা করতে পারেনা বলেই আমার বিশ্বাস।
দ্বীধান্বিত পায়ে এগিয়ে গেলাম তার রুমের দিকে । রুমে ঢুকেই আবার চমকে উঠার পালা একি সবাই এখানে? যেন মৃত মানুষের আত্মার শান্তির জন্য মৌনতা অবলম্বন করছে ! সবাই মাথা নিচু করে নিশ্চুপ বসে আছে। আমার ধারনা হোল ইনস্টিটিউট কতৃপক্ষ নিশ্চই আমাদের দাবি প্রত্যাখান করেছে সে কারনেই হয়ত .....চতূর্থ পর্ব সমাপ্ত
আগের পর্বের জন্য; Click This Link
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×