অনেকে মাজার পুজারীরা বলে মাজারকে কবর বলা যাবে না। এতে করে ওলি আল্লাহদের অসম্মান হয়। তাদের উদ্দেশ্য আজকের এই প্রয়াস।
আসলে কবর ও মাজারের পার্থক্য কী? কবরকে মাজার শরীফ ও মাজার শরীফকে কবর বলা যাবে কি? মাজার শরীফের উৎপত্তি কখন এবং কোথা হতে? আওলিয়ায়ে কিরামের মাজারকে কবর বললে তাদেরকে অসম্মান করা হয় কি না? কবর শব্দের অর্থ দাফনস্থল অর্থাৎ যে স্থানে মৃত ব্যক্তিকে দাফন করা হয়। আর মাযার শব্দের অর্থ দুটি : যিয়ারত করা এবং যিয়ারত স্থল। তাই যে কোনো মুসলমানের দাফনস্থলকে যেমন কবর বলা যায় তেমনি যে কোনো মুসলমানের কবরকে আভিধানিক অর্থে মাযারও বলা যায়। কেননা, সকল মুসলমানের কবরই যিয়ারত করা বৈধ।
বুযুর্গ, নেককার ও ওলিদের দাফনস্থলকে কবর বলা যাবে না এমন কোনো বিধান শরীয়তে নেই। ওলি-বুযুর্গদের কবরের জন্য কুরআন-হাদীসে কোথাও মাযার শব্দ ব্যবহার হয়নি। হাদীসে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ নবীদের দাফনস্থলকেও কবর বলা হয়েছে। এমনকি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কবরকেও কবর শব্দেই উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, সহীহ বুখারীতে বর্ণিত একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- ‘ইহুদী ও নাসারাদের উপর আল্লাহর লা’নত, কারণ তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে সিজদার স্থান বানিয়েছে। (সহীহ বুখারী ১/১৮৬) এই হাদীসে নবীদের দাফনস্থলকে কবর বলা হয়েছে।
অন্য এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিজের ব্যাপারেই বলেন, আমার কবরকে তোমরা উৎসবের স্থান বানিও না। (সুনানে আবু দাউদ ১/২৭৯) সুতরাং বোঝা গেল, যত সম্মানিত ব্যক্তিই হোক তার দাফনস্থলকে কবর বলা দোষণীয় নয়। তাই ওলি-বুযুর্গদের দাফনস্থলকেও কবর বলা যাবে।
সংগৃহিত।