স্মৃতিশূন্য প্রবালসন্ধ্যায় ভেসে আসে ঘোলাটে সুর ।
একটা হলুদ পাখি , মাধবীলতার ঘ্রাণ ।
জোনাকীদের নৃত্য ।
আমার বুকের ভিতরে ছিন্নসুতোর ঘুড়ি
অতল রাত্রি , সবুজ অন্ধকার ।
রাত্রি গভীর হলেই শুয়ে পড়বো ঘাসফুলেদের গায়ে ,
কম্পনহীন তারার মেলা , পলাতক মেঘের দল !
কোথা হতে যেন বন্ধ্যা গোলাপেরা এসে ভিড় করে ,
নৈঃশব্দ্যের নিদ্রা ছুটি নেয় ।
সহস্র প্রাচীন এই রাত্রির গায়ে , সুর তোলে অরণ্যের বিষন্ন পাখির দল । কখন যেন ওরা সুনীল সমুদ্রে হারিয়ে যায় , এ তল্লাটে তখন নৈঃশব্দ্যের শূন্যতা। অন্ধ আকাশে কারা যেন বিষাদের তৈলচিত্র আঁকতে থাকে , একটি ঘর , ছাইরঙা আকাশ । সমস্ত মহাবিশ্বটাকেই দেখি ক্যানভাস বানিয়ে ফেলছে , আমি দেখি ... একটি পথ । সুনির্দিষ্ট কিছু অভিমান , মুহুর্তে একজোড়া চোখ ... আকাশের বুকে গল্প আঁকছে কে জানি ।
সমুদ্র স্নান শেষে পাখিরা যখন এ তল্লাটে ফিরে আসে , ওদের ঠোটের ডগায় জাগতিক বিভ্রম , সহস্র শঙ্খের হাহাকার ধ্বনি , রক্ত হিম করা গর্জন । সমুদ্র ওদের বিশালতার ভ্রান্তিতে কাবু করে ফেলেছে । থেমে গেছে ওদের সুর ।
ওপাশে কে জানি গল্প এঁকে চলছে আকাশকে ক্যানভাস ভেবে ,একটি পথ ... একজোড়া চোখ ! তেজপাতার ঘ্রাণ পাচ্ছি , সুগন্ধী তেজপাতা ! কৃষ্ণচূড়ায় অভিসম্পাত , তারপর আবার শূন্যতা ।
অরণ্যের ঘুঘুরা এতক্ষণে জেগে উঠলো বুঝি , আকাশে যে গল্প আঁকা হচ্ছে সেই গল্পের সাথে সুর মিলিয়ে ওদের উল্লাসধ্বনি , হাহাকার সবই শুনতে পাচ্ছি ।
এতক্ষণে অর্থহীন একটি অসামপ্ত গল্প আকাশের বুকে আঁকিবুঁকি শেষ । স্মৃতিশূন্য আমাকে স্মৃতি ফিরিয়ে দিতে রাত্রির এই আয়োজন ।
আমি এবার অরণ্যে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকি,
নীলপদ্ম , তোমার প্রিয় বন্য গোলাপ ।
ভোরের আলো ফোটার আগেই
এসব নিয়ে তোমার পাশে এসে বসতে হবে যে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৪