somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্রিকেট এবং একটি দাবি

২০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জন্মের পর থেকে যে খেলাটি সবচেয়ে বেশি খেলেছি, সবচেয়ে বেশি দেখেছি এবং উপভোগ করেছি সেই খেলাটির নাম ক্রিকেট। হ্যা আমি একজন বাংলাদেশী আমাদের জাতীয় খেলা হাডুডু কিন্তু সর্বাধিক প্রচলিত খেলা ক্রিকেট এবং বাংলাদেশের অঘোষিত জাতিয় খেলা এটিই। সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরে আতশি কাঁচ দিয়ে খুজলেও আমার মনে হয় এমন একটি শিশু,ব্যক্তি,যুবক কিংবা কিশোর পাওয়া যাবেনা যে ক্রিকেট খেলেনি কিংবা এই খেলার নামের সাথে পরিচিত নয়। হ্যাঁ ক্রিকেট বাংলাদেশে এমন মাত্রার জনপ্রিয় একটি গেম। এটা এখন বাঙ্গালীদের প্যাশনে পরিণত হয়েছে।
আমার জন্ম আশির দশকে তাই ভারতীয় ক্রিকেটের উত্থান আমি সচক্ষেই দেখেছি। ওদের বোলার ক্রাইসিস দেখেছি, একটি সাধারণ ম্যাচ কষ্ট করে জিততে দেখেছি,কিংবা জিতে যাওয়া ম্যাচ শোচনীয়ভাবে হারতে, দেখেছি ওদের জয়ের পর অতিরিক্ত আনন্দ উল্লাস। তাই বিগত কয়েক বছর ধরে ক্রিকেটে উন্নতি করে ওদের দাদাগিরি টা মেনে নেওয়া আমার কাছে বেশ কষ্টকর। নবীনতম টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া দল বাংলাদেশ। ওয়ান্ডেতে এতদিনে বেশ কয়েকটা জয় আমরা দেখে ফেলেছি। দেখেছি নিউজিল্যান্ড কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত টেস্ট প্লেয়িং নেশান কে শোচনীয় ভাবে হোয়াইটওয়াশ করতে। অনেক জয় পেয়েছি আমরা। হারের পাল্লা ভারী বটে কিন্তু হার জিত মিলেই ক্রিকেট। কোন দলই নেই যারা হারেনি। এবার আসি ইন্ডিয়ার ক্রিকেট ইতিহাস নিয়ে।ইংল্যান্ড যখন ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করে তখন এ উপমহাদেশে প্রথম ক্রিকেটের প্রচলন। সে থেকে ইংরেজদের খেলা দেখে ভারতীয়রা ক্রিকেটটাকে রপ্ত করে। কিন্তু ২০১৫ সাল পর্যন্ত এসে তারা ক্রিকেটের হর্তা কর্তায় পরিণত হয়েছে। এবং এমন হর্তা কর্তা যারা ম্যাচ ফিক্সিং থেকে শুরু করে ম্যাচের আম্পায়ারিংটা পর্যন্ত নিজেদের করে নিয়েছে। ম্যাচ ফিক্সিং এর কথা ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বারং বার উত্থাপিত হলেও তা ধামা চাপা হয়ে যায়। তার কারণ তারাই তো এখন ক্রিকেটের হর্তা কর্তা। এই দলটি আন্তর্জাতিক দল হিসেবে অভিষেক করে ১৯৩২ সালে। তখন অবশ্য ভারত স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেনি। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ভারতে ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ ১৯৪৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। আর তারা প্রথম জয় পায় ১৯৫২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তাহলে ভারতের ক্রিকেটের উন্নয়ন কতটুকু মন্থর ছিল তা এই ইতিহাসের ছোট্ট কিছু তথ্যেই বোঝা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন এর থেকে ঢের ভাল। ঢের। বিগত কয়েক বছর ধরেই আইসিসি নামক ক্রিকেটিয় সংস্থাটি বিতর্কের ঝুড়ি নিয়ে বুক ফুলিয়ে চলছে। মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু ১৯/০৩/২০১৫ তারিখে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের ম্যাচের পর আর স্থির থাকতে পারলাম না। বিশ্বে এখন গণতন্ত্র চলে, মুক্ত বাজার অর্থনীতি চলে। সবার সমান অধিকারের কথা বলা হয়। কোন ক্রীড়ার উন্মেষ যে দেশেই ঘটুক না কেন তা অন্যদের খেলার ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা থাকে না। আর ক্রিকেট বর্তমানে ১০৫ টি কিংবা তারও বেশি দেশে খেলা হয়ে থাকে। সুতরাং ব্যাপারটা অনেক বড় পরিধিতে চলে এসেছে। কিন্তু ভারত, অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের এমন একটি ভাব যে ক্রিকেটটা ওদের বাপ দাদার সম্পত্তি। ক্রিকেটের কর্তৃত্ব ওরা এমন ভাবে আগলে রেখেছে যে দেখলে মনে হয় সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিক দিন গুলা এখনও ফুরায়নি। না দাদারা আপনারা স্বপ্নে বিভোর আছেন। ১৯ তারিখের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলায় পুরো বিশ্ব প্রত্যক্ষ করল যে ভারত আইসিসি কে কতটুকু নিজেদের মত করে চালায়। আইসিসি কে তাই ব্যাঙ্গাত্ত্বক ভাবে ভারতীয় ক্রিকেট কাউন্সিলও বলা হচ্ছে। এবার আসি একটি দাবী নিয়ে।
ক্রিকেট যেহেতু কোন দেশের পেটেন্ট করা গেইম নয় সুতরাং এটা খেলার স্বাধীনতা সবারই আছে। আর আইসিসি যেহেতু ভারতীয়, অস্ট্রেলীয় এবং ইংল্যান্ডের ভাই বেরাদর দিয়ে চালানো হয় তাই বিদ্যমান আইসিসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রমানসহ প্রশ্নবিদ্ধ করলাম। প্রমান অনেক তবে ১৯ তারিখের ম্যাচটাই সর্বোত্তম প্রমান হতে পারে। তাই এমতাবস্থায় বিদ্যমান আইসিসির কর্তৃত্ব আমরা বাংলাদেশি জনগন আর মেনে নিতে পারছিনা। তাই বাংলাদেশ , চীন, আরব আমিরাত, শ্রীলঙ্কা সহ বিশ্বে বিদ্যমান অন্যান্য সকল ক্রিকেট প্লেয়িং নেশানকে আহ্বান জানানো হোক একটি নিরপেক্ষ ক্রিকেট নিয়ন্ত্রন সংস্থা পুনর্গঠন কিংবা আইসিসি কে পুরোপুরি রিফর্ম করার। হ্যাঁ এতে অবশ্যই ভারত ,অস্ট্রেলিয়া , ইংল্যান্ড থাকতে পারবে তবে শর্ত হচ্ছে তারা কেবল নিজেদের ভেতর ক্রিকেট খেলতে পারবে আর নিজেদের ঘরোয়া লীগে কেবল এই তিন দেশের খেলোয়াড় এবং অফিসিয়ালকে নিতে পারবে তবে তারা অন্যান্য দেশের ঘরোয়া লীগে খেলতে যেতে পারবে।
তাই চায়না, শ্রীলঙ্কা, দঃ আফ্রিকা, আরব আমিরাত, নিউজিল্যান্ড(সন্দিহান) , এবং অবশ্যই বাংলাদেশ এর সরকার ও ক্রিকেটবোদ্ধা এবং শক্তিশালী ব্যক্তিদের উক্ত সংগঠন সৃষ্টি করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করার অনুরোধ ও দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ক্রিকেট সর্বজনীন হোক, সবাই এখানে ন্যায় বিচার পাক এবং সম অধিকার পোষণ করুক ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:২৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×