রাতে যখন নিলুয়া বাতাসের দোলায় স্বপ্নের পঙ্খিরাজ ঘোড়ায় চড়ে সুদর্শন রাজপুত্র উড়ে যায় কাল মেয়ে কমলার মাথার উপর দিয়ে, তখন কমলা হা করে তাকিয়ে দেখে সম্মুখ পানে উড়ে যাওয়া রাজপুত্র কে আর ভাবে এই রাজপুত্র তার জীবনের সঙ্গী কোন দিনও হবে না কারণ সে তো কাল।
মা বলে কালই ভাল, রবীন্দ্রনাথ বলে কৃষ্ণকলি কিন্তু কমলা বলে ছাই, কাল সে আবার সুন্দর হয় কি করে??? রাজপুত্র একবারও তাকিয়ে দেখেনা তার মুখপানে।
গতরাতের মত এমন হাজার স্বপ্ন আসে কমলার নিদ্রায়। পাশের বাড়ির সুমন দাদা দেখতে খুব সুন্দর। স্বপ্নে উড়ে যাওয়া রাজপুত্রের মত সুন্দর। সুমন দা যেদিন কমলার হাতে একটা চিঠি ধরিয়ে দিয়েছিল সেদিন খুব ভয় পেয়েছিল কমলা আর চিঠিখানা খুলে তার ভয় পরিণত হয়েছিল কষ্টে। চিঠির উপরে লেখা ছিল শকুন্তার জন্য।
শকুন্তলা কমলার খুব কাছের সখি। অত্র এলাকায় সর্বোচ্চ সুন্দরী এবং আবেদনময়ী ও বটে। শকুন্তলা খুব ভাল মত জানে এ কথা, তাতে তার দম্ভও কম নয়।
সুমন দা শকুন্তলাকে পাবার জন্য নিজের হাত কেটেছে তিন বার।। তাতে রক্তপাত হলেও শকুন্তলার মনে রক্তের পরমানুও ঝরাতে পারেনি। শকুন্তলার ধারনা তার জন্য আরও সুন্দর পাত্র অপেক্ষা করছে খামখা তিনবার এসএসসি ফেল করা সুমনের সাথে প্রণয় করে লাভ কি তার। কিন্তু কমলা এ কথা কখনো চিন্তা করেনা। কমলা ভাবে সুমনদা দেখতে কত্ত সুন্দর কিন্তু তারপরও তার কপালে নেই কারণ সে তো কাল। ঈশ্বরের কাছে কত্তই না প্রার্থনা করে কমলা। ঈশ্বর আমি যদি জীবনে একটিও ভাল কাজ করে থাকি তার ফল হিসেবে আমাকে সুমন দা উপহার দাও।। কিন্তু ঈশ্বরতো পাষান হৃদয় এমন সাধাসিধা আকুতি আরও কয়েককোটি জমে আছে তাঁর ইনবক্সে। কে চেক করে দেখে বল??? ভেস্তে যাক দুনিয়া। ঈশ্বর ভাবেন সুনামি হল, যুদ্ধ হচ্ছে কত্ত মানুষ মারা যাচ্ছে তাতেই দেখছিনা আর এ কোন কমলার আকুতি ।।পূজা প্রতিদিনই দেয় কমলা। কাজ আজ অব্দি হয়নি তবে হয়ে যাবে। ঈশ্বরের পাষাণ হৃদয় গলবেই।(চলবে)