মোশারফ করিমের একটা নাটক আছে। তিনি তার পার্সোনাল লাইফ ডিসক্লোজ করতে চান না। কিন্তু বউ সব কিছু ফেসবুকে দিয়ে দেয়। এই নিয়ে সংসারে শুরু হয় বাকবিতন্ডা।
এই নাটক দেখে গিন্নিতো হাতে চাঁদ পাইলো। আমাকে এই নাকট দেখতে বাধ্য করলো। নাটক শেষে জিজ্ঞাসা করলো
- কী বুঝলা?
আমি বল্লাম, হুম নায়িকাটা তো মারাত্মক সুন্দর!
এরপর কপালে যা ঘটার তাই ঘটলো।
-০-
এবার আমি আমার পক্ষে যুক্তি দেই।
আমি সংসারের সেইসব কথাগুলা বলি, যেগুলো শিক্ষণীয়। যে কথাগুলা আমার বন্ধুদের খুব কাজে লাগবে। কেমন কাজে লাগবো উদাহরণ দেই-
- অবিবাহিত পুরুষ বন্ধুরা বুঝে যাবে, সংসার কী জিনিস। এরা বিয়ে করার আগে তিরিশ বার ভাববে। একা থাকার সুখটা আরো ২৯ বার এরা পাবে।
- অবিবাহিত মেয়ে বন্ধুরা বুঝে যাবে, বিয়ে করলেই এমন করে ঝারি দেওয়ার মানুষ পাওয়া যায়। অতএব যে ছেলেটা পিছনে ঘুরঘুর করছে তাকে একটু পাত্তা দিতে শুরু করবে।
- বিবাহিত পুরুস বন্ধুরা বুঝে যাবে, সংসারে সেই শুধু একটা ভোক্তভুগী না। আমরা সবাই একই রাকম...
- বিবাহিত মেয়ে বন্ধুরা বুঝে যাে, ঝারি দিয়ে স্বামীকে বশে রাখার কোন বিকল্প নাই। ইহা পরিক্ষীত এবং প্রামাণীত।
-০-
ফাঁকে গত পরশু'র একটা ঘটনা বলি।
আমি গৃহীমানুষ। অফিসে আসি শুধুমাত্র ঘর চালানোর টাকা লাগে বলে। যদি ঘর চালাতে টাকা না লাগতো অফিসেও আসতাম না। বউ, বাচ্চা নিয়া ঘরেই থাকতাম।
বাসা আর অফিস ছাড়া আর কোথাও যাই না। অফিসে আসলে একটু পরপর বাসা খোঁজ নেই। ঐদিন প্রায় দুই ঘন্টা ধরে ফোন দিচ্ছি, বউ ফোন ধরেনা!
ভাইয়ের নম্বরে ফোন দিলাম ভাইও ফোন ধরে না! টেনশানে আমার গা আক্ষরিক অর্থে কাঁপতে থাকলো। অনেক্ষণ পরে ভাই ফোন দিয়ে জানালেন যে তিনি বাসার বাইরে, নামাজ পড়ছিলেন। আমার টেনশন আরো বেড়ে গেলো!
ফোন দিয়েই যাচ্ছি। বাসার নম্বরে, গিন্নির নম্বরে। ফোন ধরার কোন নাম নাই। ভাবছি, প্রতিবেশীদের ফোন দিবো কি না। এমন সময় গিন্নি ফোন ধরলেন। গিন্নির শান্তশিষ্ট গলা শুনার পর আমি অশান্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম
- বাসায় কি আগুন লাগছে! তোমার কি বাসার সামনে দাঁড়ায়ে দেখতেছো আগুন কেমনে জ্বলে?
ব্যাস্। বাসায় গেলাম। আমার টেনশন কমেছে, কিন্তু রাগ কমে নাই। গিন্নি জানালেন, একটা মোবাইল ব্যাগে আরেকটা বালিশের নীচে ছিলো। কিন্তু কণ্ঠ বেশ শীতল রোমান্টিক।
সারা জীবন ঝারি খাওয়া মানুষটা ঝারি দিচ্ছে তাতো গিন্নির মেনে নেওয়ার কথা না। বিজ্ঞের মত বল্লেন
- কাজের বুয়াকে ঝারতে পারবো না নিয়ম করলা। নিজের ঘরে কথা বলার সময় এই নীতিকথা কই থাকে?
আমি মুখে কোন কিছু বল্লাম না। শুধু মনেমনে বল্লাম, এই ঝারিটা কোন টেনশন থেকে, কোন মায়া থেকে, কোন ভালোবাসা থেকে আসছে এইটা তুমি নিজেও বুঝো।