somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলচ্চিত্র বিশ্লেষণঃ আয়নাবাজি

০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আহা! অনেকদিন পরে একটা অসাধারণ বাংলা সিনেমা দেখলাম, সিনেমা দেখে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে প্রচন্ড আশাবাদীও হলাম। বলছি, আয়নাবাজির কথা।" বলাকা" সিনেওয়ার্ল্ডের ফার্স্ট ডে, ফার্স্ট শোতে দেখে এলাম "আয়নাবাজি।" আমি জীবনে এর আগে কোনোদিন বলাকা'তে ঢুকিনি। নীলক্ষেতে অসংখ্যবার গিয়েছি, আসা-যাওয়ার পথে বলাকা'র বৃহৎ দালানও দেখেছি। কিন্তু, চলচ্চিত্রগুলোর চটকদার পোস্টার দেখেই আর ভেতরে ঢোকার সাহস পাইনি কখনো। সুতরাং, আজকের মুভি রিভিউ শুধু মুভি রিভিউতেই সীমাবদ্ধ থাকবেনা, আমার প্রথম "বলাকা" দর্শনের হালকা-পাতলা বর্ণনাও সেখানে মিলে গিয়ে একটা একাকার অবস্থার তৈরি হবে। তো,শুরু করা যাক।

সিনেমার কাহিনী কি কিছুটা ভিন্ন টাইপের? হ্যাঁ, কাহিনীটা মানতেই হবে কিছুটা ভিন্ন ধরণের। সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র শরাফাত করীম আয়না (চঞ্চল চৌধুরী)। সে নিরীহ, গোবেচারা টাইপের ভালোমানুষ, বাজারে গিয়ে মাছের গা টিপে, দরাদরি করে মাছ কেনে, নিজে রান্না করে, নিজেই খায়। মা মারা গেছেন ৭ বছর আগে। বাবাও নেই।

কিন্তু, এই নিরীহ চেহারার আড়ালেই রয়েছে আরেকটা ক্ষুরধার চরিত্র। সে মানুষকে খুব ভালো নকল করতে পারে। অন্যের হাঁটা-চলা, কথা বলা নকল করতে খুব কম সময়ই লাগে তার। তার এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে সে কাজে লাগায় ভিন্নভাবে। সে অন্যলোকের প্রক্সি হিসেবে জেল খাটে। টাকার বিনিময়ে এই কাজ করে সে। যেহেতু সে অন্যকে নকল করতে ওস্তাদ, তার এই প্রক্সির বিষয়টা কেউ ঘূর্ণাক্ষরেও টের পায়না। এভাবেই চলে কাহিনী।

একসময়ে আয়নার সাথে পরিচয় হয় চিরুনির (কনসেপ্ট অনুযায়ী সেটাই হওয়ার কথা ছিলো) স্যরি হৃদির(নাবিলা)। পরিচয়, কথাবার্তা থেকে বিষয়টা গড়ায় প্রেম, ভালোবাসায়। কিন্তু, এরমধ্যেই আয়না পড়ে যায় এক বিশাল ফাঁদে। কী ফাঁদ? সেটা এখানে বলে দিলে,মুভি দেখে আর করবেন কী? রিভিউ পড়লেই তো হয়ে গেলো। যাই হোক, আর কিছু বলছিনা। বাকিটা সিনেমাহলের বড়পর্দায় দেখে আসুন।

সিনেমাটা আমার ভালো লেগেছে অনেকগুলো কারণে। প্রথম কারণ, সিনেমায় কাহিনী এগিয়েছে রোলার কোস্টার গতিতে, ঝুলে পড়ার কোনো সম্ভাবনাও ছিলোনা কোথাও। শেষ মিনিট পর্যন্ত ধরে রেখেছে পর্দার সামনে, শেষ কবে এরকম টানটান গতির বাংলাদেশি চলচ্চিত্র দেখেছি, ভেবে দেখতে হবে, এই মুহুর্তে মনে পড়ছেনা। দ্বিতীয় কারণঃ সিনেমায় ক্যামেরার কাজ ছিলো অসাধারণ। কখনো ঈগল'স আই ভিউ, কখনো ফ্ল্যাট ভিউ, কখনো ক্লাব ভিউ... মানে এককথায়, ভিজ্যুয়ালাইজেশন নিয়ে রীতিমত এক্সপেরিমেন্ট চালিয়েছেন পরিচালক। এবং উতরেও গেছেন দারুণভাবে। বিজ্ঞাপন নির্মাতা অমিতাভ রেজার কাছ থেকে এক্সপেকটেশন যেরকম ছিলো, ঠিক সেটাই পেয়েছি এখানে। ফুল মার্কস। ঘিঞ্জি সায়েন্সল্যাবটাকেও না কী সুন্দর করে তোলা হলো সিনেমায়, হ্যাটস অফ!!! তৃতীয় কারণ, হিউমার। বাংলা সিনেমার আদিকাল থেকেই আমরা দেখে এসেছি, কখনো দিলদার, কখনো টেলি সামাদ অত্যন্ত নিম্নমানের ভাঁড়ামোর মাধ্যমে দর্শকদের কাতুকুতু দিয়ে হাসানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, এই সিনেমায় প্রতি তিন-চারটা সংলাপ অন্তর আপনি হাসতে বাধ্য হবেন। কোনো সস্তামানের রসিকতা না, কথাবার্তার স্বতঃস্ফূর্ততায় এমনিতেই হাস্যরসের সৃষ্টি হবে। চতুর্থ বিষয়, সিনেমার গানগুলো দারুণ। বিশেষ করে অর্ণবের গানটা। পঞ্চম বিষয়, আমি আমার রিভিউতে বারবারই বলি, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকই পারে একটা সাধারণ সংলাপকেও অসাধারণ বানাতে। এই সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ছিলো ফাটাফাটি। ষষ্ঠ বিষয়, চঞ্চল চৌধুরী। কী অসাধারণ অভিনয়ই না করলেন সিনেমাজুড়ে। অথচ, আমরা তাকে বরাবরই সস্তা সব উদ্ভট নাটকের উপাদান বানিয়ে দিই!!! সত্যি, সম্পদ থাকা সত্বেও সেই সম্পদ অপব্যবহারের যদি কোনো সূচক থাকতো, আমরা সেই সূচকের সবার ওপরে অবস্থান করতাম নিঃসন্দেহে। এই একইরকম আফসোস আমার হয়েছিলো, "চোরাবালি" সিনেমা দেখে। শহীদুজ্জামান সেলিমকে যেন সেদিন নতুন করে চিনেছিলাম আমরা। বিষয়টা আক্ষেপের, বিষয়টা কিন্তু ভাববারও। ভেবে দেখবেন একটু। তবে, সিনেমাটার যে নেগেটিভ দিক একেবারেই নেই, তা বলবোনা। সিনেমার একটা নেগেটিভ দিক হচ্ছে, ক্লাইম্যাক্সে একটা ড্রামাটিক টুইস্ট আশা করেছিলাম আমি, টুইস্ট পেয়েছি, ছোটখাটো একটা, মন ভরেনি (ব্যক্তিগত মতামত)। ক্লাইম্যাক্সটা আরো জমজমাট হলে ভালো লাগতো। যাই হোক, "আয়নাবাজি" বাংলাদেশের প্রথম সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার, শুরু হলো নতুন এক অধ্যায়ের। এই ধারার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি আশা করছি।

এবার "বলাকা" নিয়ে কিছু বলি। প্রথমেই টিকেট কাটলাম। ব্যাটারা আমাকে একেবারে পেছনের সীট ধরিয়ে দিলো (কবে ওদের পাকা ধানে মই দিয়েছিলাম, কে জানে?)। যাই হোক, টিকেট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। হঠাৎ করে, কলেজের দুই বন্ধুর সাথে অপ্রত্যাশিতভাবে দেখা। ওদের সাথে আড্ডা-টাড্ডা মেরে ঢুকলাম "বলাকার" অন্দরে। সেখানে উত্তমকুমার, রাজেশ কাপুর, অমিতাভ বচ্চন, আল পাচিনো, সুচিত্রা সেন, হেমা মালিনী... প্রমুখদের স্টীল ফটোগ্রাফ। ভেবেছিলাম, পরিচালকদের ফটোগ্রাফও থাকবে, আঁতিপাঁতি করে খুঁজেও পাইনি। মাথার ওপরে ঝাড়বাতির দিকে তাকিয়ে রইলাম অল্পক্ষণ (চিত্র দ্রষ্টব্য)। তারপরে, সাড়ে দশটা বাজলো, ছোট ছোট পায়ে ঢুকলাম পেক্ষাগৃহের প্রতীক্ষিত জায়গায়। হলের গুটিকয়েক সীট ছাড়া প্রায় সবই ভরা ছিলো, বিষয়টা আশাব্যঞ্জক। বসলাম, ও তার আগে একটা কাহিনী হয়ে গিয়েছিলো। আমার ব্যাগে ছিলো ল্যাপটপ। টিকেট চেকার বললো, ব্যাগ কাউন্টারে জমা দিয়ে টোকেন নিয়ে যেতে। ল্যাপটপ নিয়ে ভেতরে ঢোকা যাবেনা। ব্যাগ-ট্যাগ কাউন্টারে রেখে ভেতরে ঢোকার পরেই আমার হাহুতাশ শুরু হলো। যদি, ব্যাগসহ ল্যাপটপ ওরা মেরে দেয়!!! ব্যাগে আইনের বইও ছিলো অনেকগুলো। যাই হোক, কাউন্টারের আংকেলের নাম ছিলো কাঞ্চণ। ইলিয়াস না, শুধুই কাঞ্চন। তিনি অবশ্য পরে ব্যাগ দিয়ে দিয়েছিলেন, আমিও স্বস্তি পেয়েছি। সিনেমা দেখার সময়ে বারবারই মনে পড়ছিলো, ব্যাগের কথা। টেনশনে জেরবার অবস্থা। এছাড়াও, মজার বিষয়, টিকেটের ওপরে লেখা ছিলো, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ। অথচ, কক্ষে পলেস্তারা খসে পড়া ফ্যান ঘুরছিলো বনবন করে, এটা কেমন শীতাতপনিয়ন্ত্রণ হলো বুঝলাম না!!! আর একটা সমস্যা ছিলো, আমার পাশের সীটে বসেছিলেন, দুই বিজ্ঞ ব্যক্তি। একজন সীটের ওপরে ঠ্যাং উঠিয়ে বসেই শুরু করলেন ইংরেজীতে বয়ান। আমি ইংরেজিতে অতটা দক্ষ না হলেও, ঐ ব্যক্তির এক বাক্যে চার-পাঁচটা গ্রামেটিকাল ভুল ধরতে সক্ষম হয়েছিলাম। পাশের বিজ্ঞ ব্যক্তি, আবার এক কাঠি সরেস। সে কিছুক্ষণ পরপরেই আক্ষেপ করছিলো, "আয়না কোতায় ছলে গ্যালো?" এই দুই ব্যক্তির অত্যাচার বাদ দিলে বাকি বিষয়টা সুন্দর, মসৃণ ছিলো।

শেষে, একটাই কথা বলবো, এরকম দারুণ স্টোরিলাইনের সিনেমা আমাদের দেশে এর আগে কখনো হয়নি। আর, সিনেমাটা দেখে মনেই হবেনা, এটা পরিচালকের প্রথম সিনেমা। ক্যামেরার কাজ প্রায় নিখুঁতই বলা চলে। ক্রেডিট গোজ টু অমিতাভ রেজা। সবাইকে অনুরোধ করবো, সিনেমাটার ডাউনলোড লিঙ্ক অনলাইনে না খুঁজে হলে গিয়ে দেখে আসুন। কয়টাকাই বা আর খরচ হবে? সিনেমায় যতই চঞ্চল চৌধুরী "আয়না" হোন না কেন, বাস্তবের আয়না তো আপনারাই। আপনারা সিনেমাহলে এলেই তো আয়নায় "সাফল্য" ভেসে উঠবে। এরকম ভিন্ন কনসেপ্টের সিনেমা বানানোর মত বহু প্রতিভাবান পরিচালক আমাদের দেশে আছে। আপনার একটু এগিয়ে আসাই তাদের আকাশসমান আত্মবিশ্বাস দিতে পারে। একটা দেশ শুধু খাদ্যে, অর্থে, প্রযুক্তিতে ভালো হলেই উন্নত হয়না, শিল্প, সংস্কৃতিতেও উন্নত হতে হয়। তাই, হলে আসুন, পরিচালকদের প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিন, তাতে সবমিলিয়ে আমাদেরই লাভ, আমাদের দেশের চলচ্চিত্রশিল্পের লাভ।

আপনাদের আয়নাবাজি চলতে থাকুক অব্যাহত গতিতে। আর, যারা পুরো লেখাটা পড়লেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, এই ফাও জিনিস পড়ার সময় পান কোত্থেকে আপনারা? আপনাদের আর কোনো কাজকর্ম নাই?

এক নজরেঃ

সিনেমাঃ আয়নাবাজি
পরিচালকঃ অমিতাভ রেজা
অভিনয়েঃ চঞ্চল চৌধুরী, নাবিলা, গাউসুল শাওন...
প্রকারঃ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার
মুক্তিঃ ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬
রেটিংঃ ৮.৫/১০

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৫২
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×