(প্রথাগত কোন কবি নই, মনের কথাগুলো এভাবে লেখার চেষ্টা করেছি। ভালোবাসা থেকে নিঃসৃত!)
কত সমূদ্র ভালবাসা তোমার মাঝে
মমতার কতটা খনি তোমাতে বিদ্যমান,
মা তোমার ভালোবাসার পরিমাণ কী দিয়ে মাপা যায়?
সেদিন তুমি বললে-
'তুমি আসলে আমার সব অসুস্থতা দূরে চলে যায়' ----আমার শুন্যতাই তোমাকে অসুস্থ বানিয়ে দেয়।
১০ মাস তোমােত ভর দিয়ে যাপন করেছি জীবনের প্রারম্ভ!
৩ সাল চুষে খেয়েছি তোমার সোনালী অতীত।
তোমার অস্তিত্ব খুয়ে খুয়ে গড়ে তুলেছো আমার তুলতুলে নরম শরীর!
আমার ব্যাপারে বাবার কঠোরতাগুলো তোমার হৃতপিন্ডে রক্তাকারে জমা রেখেছো,
মাদরাসা পালানো আমি ভয়ে ভয়ে গভীর রাতে
বাড়ি ফিরে দেখি তুমি ল্যাম্পো জ্বালিয়ে
উঠোনে বসে আছো!
শীতের কুয়াশারা আস্তর হয়েছে তোমার ঘোমটার ওপরে
কিন্তু তোমাকে ঠান্ডা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তোমার ছেলে হারানো হৃদয়ের উত্তাপে বরফগুলো গলে গলে নেউর হয়ে ঘাসের ডগায় পড়েছে..
তেল শেষ হয়ে নেম্পর মৃদু আলো নিভে গেছে
তুমি চোখের আলো জ্বালিয়ে আঁধার রাতে চেনা পথে তাকিয়ে থাকতে অপলক।
কখন যেন চাঁদ ডুবে গেছে...
তুমি ডুবে যাওনি গভীর ঘুমে
মাতৃত্ব তোমাকে জাগিয়ে রেখেছে...
তারকারা ক্লান্ত হৃদয়ে ম্রিয়মান আলো নিয়ে
হারিয়ে গেছে গ্যালাক্সির ভীরে..
তোমার চোখের তারা আরো তিব্র আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে....
আঁধার কেটে ভোর হয়ে গেছে তোমার পিঠ বিছানাটা চেখে দেখেনি।
মাটির জায়নামাজে কপাল ঠেকিয়ে মুনাজাতরত তুমি বুক ভাসিয়ছো
মা... তুমি না শুধুই মা।
তোমার কোঠরে যাওয়া চোখের দিকে তাকিয়ে সহসাই আয়না তুলে নিই
আমার ডাগর চোখ দেখে বুঝে নিই
তোমার সুন্দর সে চোখ আমাকে দিয়ে তুমি এখন এমন...
নানা একদিন বলল - যৌবনে তুমি নাকি সোনালী কালাড়ে মোড়ানো ছিলে। তা-ই?
কোথায় হারালো তোমার সোনালী সৌন্দর্য্য?
বাবার ঘরে আসার পর পাড়ার সবাই তোমাকে দেখতে হুমরি খেয়ে পড়েছিল,
ওহ! সেই সোনালী তুমি আজ মেটে।
তুমি আমাদের অস্তিত্ব বুনে দিয়েছো মাটিতে।
চাষাবাদের মতন তুমি আমাদের দেহকে ফলিয়েছো তোমার সোনালী সৌন্দর্য্যে।
রুপালী হাসিগুলো উপহার দিয়েছো শহস্র কষ্ট লুকাতে।
তুমি হারোনি মা' আমরা হেরেছি।
তোমার রোগাটে শরীরটা তুমিই বেছে নিয়েছো আমাদের সুস্থতার বিনিময়ে।
তোমার প্রাণটা ভরে দিয়েছো আমার শরীরে।
তাই, আমি দূরে সরলেই তোমার হৃদয় কেটে বিচ্ছন্ন হয়।
জার জার করে কেঁদে তুমি আহত কর আমায়।
রক্তাক্ত হৃদয় নিয়ে আমি ছুটে চলি কর্পোরেট মার্কেটের গলিতে।
ফেরি করে করে সুখ গুলোকে বিকিয়ে দেই কিছু টাকার বিনিময়ে।
এভাবে তোমার দেয়া অস্তিত্ব আমি ক্ষয়ে দেই
শহর- বন্দর, মার্কেট, আর পিচ ঢালা পথে।
তা দেখে তুমি আবারো কাঁদো
আর আমি তখন হাসি... তোমার কান্না কমাতে।