somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শেখ মিজান
অন্যায় অপশক্তির বিরুদ্ধ্যে সোচ্চার কন্ঠধ্বনি, মুক্তবাক, স্বাধীন চিন্তা, প্রগ্রেসিভ রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে সামাজিক বৈপ্লবিক পরির্তন চাইযুক্তিহীন কথা মূল্যহীন। কিছু কিছু লোক আছে যারা অযুক্তিক অসত্য কথা বলে বেড়ায়। এদের কথার মূল্য খুবই কম। যুক্তি যু

"পর্দা বা হিজাব" করো নইলে ধর্ষন? নৈতিক মানদন্ডটি অনৈতিকতার চর্চা !

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তনু হিজাব পরাই ছিলো, তবুও তাকে ধর্ষনের পর হত্যা করা হলো কেন?
ধর্ষণের অপরাধ একতরফা ভাবে ধর্ষণকারীর। এর সঙ্গে আমতা আমতা করেও যে পোষাকের প্রসঙ্গ তোলে, সে কোন না কোনভাবে ধর্ষণকারীর সমর্থক ।


সৌদির (ভিডিও)মত মুসলিম প্রধান দেশে আমাদের দেশের নারীসহ সবার জন্যই কট্টর হিজাব পরার বাধ্যবাধতা দেখা যায়, । কিন্তু কট্টর সৌদিতে নারীর একলা চলাচলে যে বিধিনিষেধ আছে, তা পেরিয়ে আইন পর্যন্ত দ্বারস্থ হওয়া দুঃসাধ্যকর বা অসমম্ভব। আর ধর্ষিতার সামাজিক অবমূল্যায়ন আমাদের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সমাজে বড় দুভোর্গের। সুতরাং ধর্ষিতা নারী ও পরিবার ঘটনা লুকিয়ে রাখে। তাহলে অজানা ঘটনার পরিসংখ্যান কী করে লিপিবদ্ধ হবে?


কেমন আছে সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশী নারী শ্রমিকেরা
বাংলাদেশী এই নারী শ্রমিকের উপর এমন র্ববরোচিত নির্যাতনের কেন? এখানে হিজাবের ভুমিকা কি?

উন্নত বিশ্বে ধর্ষণের সংজ্ঞায়ন আরও বড় পরিসরে। উপরন্তু, সেখানে নারী যথেষ্ট স্বাবলম্বী এবং ধর্ষিতা নারী সমাজে কোনঠাসা অবস্থানে থাকে না বিধায়, ধর্ষণ, যৌন হয়রানির মত অভিজ্ঞতায় নারী দমিত না হয়ে আইন মোতাবেক মামলার পদক্ষেপ নিতে পারেন। এমনকি কর্মক্ষেত্রে মানসিকভাবে যৌন হয়রানির মত সূক্ষ অভিজ্ঞতাগুলোও জরিপকালে উপাত্ত হিসেবে পাওয়া সম্ভব হয়।



নারীরা নাকি তাদের পোশাকে পুরুষদের উস্কে দেয় ধর্ষনের জন্যে ?।
ধর্ষণের জন্য নারীর পোশাক কিংবা অঙ্গভঙ্গি দায়ী নাকি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি? নারীর পোশাক কিংবা পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির চেয়েও ধর্ষণ সংগঠিত হওয়ার অন্তরালে যে ভয়াবহ অবক্ষয় লুকিয়ে রয়েছে তা উদঘাটনের মানসিকতা অনেকের মধ্যেই অনুপস্থিত।

সৌদি যে কতটা বর্বর, নৃশংস হতে পারে, তার নমুনা-

একদল পরোক্ষভাবে পুরুষতন্ত্রকে উস্কে দেয় নারীর পোষাকের সমালোচনা করে। কোন কোন নারীকেও আক্রান্ত নারীর পোশাক নিয়ে কথা বলতে দেখা যায় ! স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করার, নিজের রুচিকে প্রাধান্য দিয়ে পোশাক পরার অধিকার নারী। আমাদের সমাজে পুরুষদের নারীকে মানুষ হিসেবে ভাবতে শেখানো হয়না। তাই অধিকাংশ পুরুষ যৌনতার দৃষ্টি নিয়ে নারীকে বেশ্যা বানিয়ে খল স্বভাবের কামুক পুরুষ সমাজে নিজেকে সাধু জাহির করতে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নেয়। একজন কামুক অথবা যৌনাচারী পুরুষের দৃষ্টিতে নারীর দৈহিক রূপ সৌন্দর্য, তার স্বাভাবিক অঙ্গভঙ্গি ও সুরেলা কণ্ঠ, যাদুময়ী চাহনি সব কিছুই কামুকতাকে উস্কে দেয়।

বর্তমানে আমরা যে সমাজে বসবাস করি তাকে আধুনিক সমাজ বলা হয়। আমাদের চিন্তা-ভাবনা, কথা-বার্তা, আচার-আচরণ সবই আধুনিক, প্রগতিশীল। নারী স্বাধীনতা ও সমতায় বিশ্বাসী এই সমাজ। কিন্তু আমাদের আদিম কালের মনোভাব বেরিয়ে আসে তখনই যখন সমাজে কোন যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে, সমাজে কোন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।


মোদ্দা কথা সবই এক – পৃথিবীর অমুক দেশের তমুক শহরের নারীদের উপর ধর্ষণ ও অন্যান্য নির্যাতন কমানোর জন্য শহর কতৃপক্ষ তাদের বেশি বেশি পোশাক পরার আহ্বান ... আর আমাদের বিখ্যাত সমাজে, যেখানে ধর্ষিতাকে সামাজিক ভাবে এড়িয়ে চলা হয়, ধর্ষক বুক ফুলিয়ে পার্টি করে, তার পুরুষতান্ত্রিক একচোখা মনোভাব অনেকাংশে দায়ী এই অপরাধ বৃদ্ধির পিছনে।

মূল্যবোধ আর সুস্থতার চর্চা- এই জিনিষটা আমাদের পরিবার, সমাজ কোথাওই নেই বললেই চলে। আপাতদৃষ্টিতে হয়তো মনে হয় - পরিবারগুলো অনেক আধুনিক। আসলে কিন্তু যে তা না - তার প্রমাণ হলো - ছেলেটাকে নিয়ে অনেক বড় বড় স্বপ্ন হলেও মেয়েটাকে স্বামীর ঘরে তোলাটাই মোর অর লেস সবার মধ্যেই স্বাভাবিকতা থাকে। মেয়েটাকে কেউ দেশের বড় কোনো কাজে কল্পনা করতে চায়না - কষ্টসাধ্য কল্পনা করলেও "পাছে লোকে কিছু বলে" - সেটাতো থাকেই।



প্রশ্ন- পোশাক দিয়েই যদি ধর্ষণরোধ হবে তাহলে- [/sb
>>ছোট বেলার যৌন হয়রানির কষ্টের অভিজ্ঞতা জানালো তরুণী, হিজাব এখানে কিভাবে রক্ষা করতো?
>>সৌদিতে নারী শ্রমিকদের কেউ কি যৌন নির্যাতন থেকে রেহাই পেয়েছেন, এমন উদাহরণ দেখাতে পারবেন?
>> অধিকাংশ আদিবাসী সমাজ ব্যবস্থায় তো কাপড় নেই বললেই চলে, তারা ধর্ষণের শিকার হয় না কেন?
>>পাকিস্তানের মুখতার মাইয়ের কথা অনেকেই জানেন, তার ভাই পরকিয়া করছে বলে স্হানিয় বিচারে তার বোন মুখতার মাইকে গনধর্ষনের রায় দেওয়া হয় এবং গন ধর্ষন করা হয়। বোন মুখতার কি হিজাব পরতেন না?
>>>তাহলে এদেশে ১৯৭১ সালে ২ লক্ষ মা বোন কেন ধর্ষন হলো পাকি বা রাজাকারদের হাতে। বাঙ্গালি নারী কি উলঙ্গ ছিল?
>>>দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বে নাৎসী কতৃক রাশিয়ার নারীদের ধর্ষন, জাপানিদের হাতে চীনের সাংহাই, নাংকিং শহরের নারীদের গনধর্ষন।
>>কাশ্মীরে বা আসামে ভারতীয় সেনা কত্বক ধর্ষন, মিয়ানমারে নাসাকা কতৃক রোহিঙ্গা ধর্ষনকে যদি আমরা দেখি তাহলে ঐ নারী কি পোশাক পরেছিলো যে তাদের ঘর হতে বের করে এনে প্রকাশ্যে গন ধর্ষন করা হয়?
>>আসাদ আলী মুক্তিযোদ্বা, তার ঘরে রেইড দিয়া তাকে পাওয়া যায় নাই, তার বোনরে আর মায়েরে পাওয়া গেছে এবার দু জনকে এক সাথে ধর্ষন। এখানে হিজাবের ভূমিকা কি?
>> ৫ বছরের শিশু হতে ৮০ বছরের বৃদ্বাকে ধর্ষন করা হয়, ওরা কি এমন পোশাক পরেছিলো যে ধর্ষকদের উত্তেজিত করেছে?
>> কিছুদিন আগে মিশরে ফুল বোরকা পরা এক নারীকে গনধর্ষন করা হয়? কিন্তু কেন?
>> ক্লিনিক কর্মী সাজিয়া এবং তনু হিজাব পরাই ছিলো, তবুও তাকে ধর্ষনের চেস্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যা করা হলো কেন?
>> ৭৩ বছর বয়সী এই বৃদ্বা কি পোশাক পরে ধর্ষকদের উত্তেজিত করেছিলো?


‌‌‌‍‍‌=> এ সমস্যার সমাধান রবি ঠাকুর তাঁর ‘জুতা আবিষ্কার‘ কবিতায় দিয়ে গিয়েছেন। হবু রাজার পায়ে ধুলি লাগার সমস্যা সমাধানের জন্য সারা দেশ চামড়া দিয়ে না ঢেকে, শুধুমাত্র রাজার চরণ দু‘টি চামড়া দিয়ে ঢেকে দিয়েই ধুলি লাগা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়েছিল। তদ্রুপ পুরুষতন্ত্রের দাম্ভিকতায় সমগ্র দেশের নারীকুলের প্রায় পুরো শরীর ঢাকার কথা চিন্তা না করে পুরুষদের ছোট্ট দু‘টি চোখ ঢাকলেই সমস্যার সমাধান হতে পারে। তাও সব পুরুষের চোখ নয়, শুধুমাত্র তাদের চোখ ঢাকালেই চলবে যারা নারীকে পুরোপুরি আবৃত ব্যতীত অন্য কোন পোষাকে দেখলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। যারা ঐ পরিস্থিতিতে পশুতে রূপান্তরিত হয়ে যান। এ ব্যবস্থা চালু করলে কাজও অনেক কমে যাবে আর কাপড়ও সাশ্রয় হবে। এখানে নারীর কোন দোষ নেই। যেহেতু আপনার নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা, মানবিক ও মানসিক পরিপক্কতা নেই, তাই দোষী আপনি। আপনার দোষে নারী কেন পোষাক শৃংখলা মেনে চলবে। যদি কোন পোষাক শৃংখল পড়তে হয় তবে তা পরতে হবে সংশ্লিষ্ট দুর্বল ও বিকৃত মানসিকতার পুরুষদেরকে।


শেখ মিজান
Blogger, Writer & Politician
গণজাগরণ মঞ্চ, শাহবাগ ঢাকা, বাংলাদেশ।
ঢাকা /২৬/১০/২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:৫৭
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×