somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক্সক্লুসিভঃ ফেসবুকে খুনিদের প্রকাশ্য স্বীকারোক্তি...আমাদের পুলিশ এবং একজন আজম নাছির।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আত্নস্বীকৃত খুনী চমেক ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল পারভেজ সুমনের ফেসবুক থেকে।

সোহেল পারভেজ সুমন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি। বাড়ি নোয়াখালী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এর ৪৯ তম ব্যাচের ছাত্র। অন্যদিকে মফিজুর রহমান জুম্মা। বাড়ি ভোলা, বরিশাল। ছাত্রসংসদের ভিপি এবং মেডিকেল ৪৯ তম ব্যাচের ছাত্র। এ দুজন যথাক্রমে মেধাবী ছাত্র আবিদ হত্যা মামলার ১ এবং ২ নং আসামী। এদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ এবং ছাত্রসংসদের বর্তমান কমিটির আরো ২০ জন মিলে চট্টগ্রামের ছেলে মেডিকেল ডেন্টাল ছাত্র আবিদকে ছাত্রদল করার অপরাধে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। আবিদের মামা নেয়ামতউল্লাহ চৌধুরী বাদী হয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩০২ ও দণ্ডবিধির ৩৪ ধারা্রে মোট ২২ জনকে আসামি করে সুনিদিস্ট ভাবে নাম দিয়ে এদের নামে মামলা করেছে আজ থেকে এক সাপ্তাহ আগে। যথারীতি পুলিশ তাদের খুজে পাচ্ছেনা। এ ব্যাপারে আজকে কথা বললাম এই নৃশংস মামলার আইও চট্টগ্রাম পাচলাইশ থানার এসআইর সাথে।তিনি জানালেন তারা নাকি দিন রাত হন্য হয়ে খুনিদের ধরার জন্য অভিজান চালাচ্ছেন। কিন্তু কোথাও তাদের নাকি পাওয়া যাচ্ছেনা!! ৩ দিন আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ ছাত্রলীগ কর্মীকে তারা এরেস্ট করেছিল, তবে পরে এক নেতার চাপে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।


চমেক ছাত্রসংসদের ভিপি জুম্মার ফেইসবুক প্রোফাইল পিকচারে কি লেখা দেখুন...

তো পুলিশ তাদের খুজে পাবেনা সেটা আগেরই জানা ছিল সবার। কারন হত্যাকারিদের টপ লেভেলের ৬ জন এখন চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী নেতার বাসায় রাজকীয় মেহমান হিসেবে অবস্থান করছেন। এটা পুলিশ যেমন জানে, জানে সাধারন অনেক ছাত্রও। সবচেয়ে অবাক ব্যাপার মনে হয়েছে যখন দেখলাম এসব খুনি প্রকাশ্য খুনের স্বীকারোক্তি দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বেড়ায়। স্ট্যাটাসে বলে কিনা আবিদ মরলে জানলে নাকি তারা এভাবে মারতোনা। হাউ ফানি!! আবার এসব খুনি আবিদের হত্যার জন্য করুণা প্রকাশ করে লিখে, "যখন ভাবি একটা মায়ের বুক খালি করাতে আমাদের হাত ছিল তখন নিজেদের খুব ছোট মনে হয়। এই মানসিক যন্ত্রনা বয়ে বেড়ানোর ক্ষমতা আমাদের অনেকের..." (সোহেল পারভেজ সুমন)। অন্যদিকে আরেক কসাই ছাত্রসংসদ ভিপি জুম্মা তার ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি চেঞ্জ করে তার উপর লিখেছে, "I am not a Bad man But Now In a Bad Line...Kill him now Or Shot at side."। তার বেসিক ইনফোতে নিজের ব্যাপারে সে লিখেছে,"i m jumma. i think i m very aggressive and danger by nature. thats all."।


চমেক ছাত্রলীগ সভাপতি সুমন এবং ছাত্রসংসদ ভিপি জুম্মা একসাথে।

সুমন এবং জুম্মার ফেসবুক এর স্ট্যাটাস নিয়মিত আপডেট হচ্ছে এবং মনে হচ্ছে তারা খুব সুখেই আছে। গতকাল জুম্মাকে নগর যুবলীগের এক সময়ের ক্যাডার, চাঁদাবাজি এবং মাস্তানির জন্য দল থেকে একাধিকবার বহিষ্কৃত, বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতা আজম নাসির (চট্টগ্রামের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নাসির গ্রুপ নামে পরিচিত) এর দেওয়ানবাজারের বাসা থেকে বের হতে দেখে মেডিকেল এর এক ইন্টার্নী ডাঃ। পরে তিনি জানতে পারেন জুম্মা সহ আরো ৬ জন নাসিরের বাসায় অবস্থান করছে এবং উচ্চ আদালত থেকে জামিনের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ পুলিশ তাদের নাকি খুজে পাচ্ছেনা। এটা সবাই জানে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ছাত্রলীগের যে কমিটি ছিল সেটা নাসির গ্রুপের অনুসারী ছিল এবং সে তাদের শেল্টার দিয়ে আসছে বিভিন্নভাবে। এর বিনিময়ে মেডিকেলের আশেপাশের মার্কেট, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, ল্যাব, ভিন্নমতের ডাঃ ও এ্যাম্বুলেন্স থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাসিক আয় ছিল তার বিশাল অংশ চলে যেত আজম নাছিরের কাছে। বর্তমানে এতাও সবাই জানে চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগে নাছিরের সাথে টেক্কা দেবার কেউ নেই ছাত্ররাজনীতিতে। যুবলীগের এক সময়ের দুধর্ষ এই ক্যাডার এতটাই প্রভাবশালী যে চট্টগ্রাম মেডিকেল এর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ করা হয় প্রধান অতিথি হিসেবে। তো এই নেতার আশ্রয়ে যখন কেউ থাকে তার বাসায় গিয়ে পুলিশ এদের ধরবে সেটা কল্পনা করা মানে বকার স্বর্গে বসবাস করার শামিল। তাছাড়া সাহারা খাতুন এদের হত্যার লাইসেন্স দিয়ে রেখেছে সেটাও সবার জানা আছে।


মামলার লিস্টে সুমন ১ নং এবং জুম্মা ২ নং আসামী

এবার নিজে নিজে ভাবুন আমরা কোন সভ্য জগতে বাস করছি। আবিদকে প্রথমে ধরে নিয়ে যাওয়া মেডিকেল ছাত্রলীগের টরচার সেল হিসেবে পরিচিত ছাত্রসংসদে দুপুর আড়াইটার দিকে। এরপর তাকে সেখানে সবাই মিলে পিটিয়ে মুমুর্ষ করে নিয়ে আসে ক্যান্টিনে, সেখানে তাকে ফ্রি স্ট্যাইলে সবাই মিলে দ্বৃতীয় দফা বেধড়ক পিটায়, তারপর হিংস্র জানোয়ারগুলো তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় ভিপির ছাত্রাবাসের কক্ষে। আর সেখানেই মূলত আবিদকে শেষ করে দেয়া হয়। তাকে কম্বল পেছিয়ে রড-হকিস্টিক-স্ট্যাম্প দিয়ে সেখানে গ্রামে যেভাবে ধান পিটানো সেভাবে পিটাতে পিটাতে মৃতপ্রায় অবস্থায় নিয়ে যায়। এরপর সন্ধ্যায় তাকে তারা জরুরী বিভাগে ফেলে রেখে আসে সন্ধ্যায়। ২.৩০ এ আবিদের উপর যে নির্যাতন শুরু হয় তা শেষ হয় সন্ধ্যা ৬.৩০ এ। এই দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা ধরে তার উপর যে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয় তার করুণ আত্নচিৎকারে সাড়া দেয়নি প্রশাসন। ভাবি এই ২২ টা ভবিষ্যৎ হবু ডাঃ এর মধ্য কি একটাও মানুষ ছিলনা?? এরা ডাঃ হয়ে জাতীর জন্য কি বয়ে আনবে???


সুমন-জুম্মার নেতৃত্বে পুলিশের উপস্থিতেতে সাধারণ ছাত্রদের ধাওয়া দিচ্ছে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা।

প্রধান ছাত্রাবাসে অস্ত্র উচিয়ে প্রকাশ্য মহড়া দিচ্ছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা


মেডিকেল একটা ছেলেকে প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে পিটিয়ে একটি স্বনামধন্য মেডিকেল কলেজে হত্যা করার আজ প্রায় ১০ দিন পার হতে চললো কিন্তু কাউকেই এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ। তার থেকে ভয়ানক ব্যাপার এসব খুনি আবিদের হত্যার পরেও ক্যাম্পাসে অস্ত্র উচিয়ে মহড়া দিয়েছে পুলিশকে সাথে করে। হায় সেলুকাস!! বিচিত্র এই বাংলাদেশ।


মুল হোতা এবং প্রশ্রয়দাতা আওয়ামীলীগ নেতা আজম নাছির[/sb

আগের এক্সক্লুসিভ পোষ্ট- তিনি সুফি নামধারী ভন্ড, ক্যাটরিনার রসালো নিতম্ব দেখতে স্পন্সর করেন ৫ কোটি আর মিতালীকে নিয়ে যান নিজ বাসায়......

নেক্সটঃ আবিদের হত্যাকান্ড নিয়ে বিএনপি এবং ছাত্রদলের নোংরা রাজনীতি।

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১২:০৫
৫০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত/ শিবির কারনামা-১✅

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:৪১



জামাত শিবির ২০০১ নির্বাচনের পরে নাজিরহাট বাজারে চল্লিশ জনের নামের তালিকা ঝুলিয়ে দিয়েছিল । যাদের হত‍্যা করবে তাদের নাম। বাবা কথাগুলো বলছিল মাকে, আমি ওখানেই ছিলাম। মা রান্না করছিলো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিঝুম মজুমদার: সত্যের পক্ষে এক নির্ভীক কণ্ঠ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪

নিঝুম মজুমদার: সত্যের পক্ষে এক নির্ভীক কণ্ঠ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যত দ্রুত বদলাচ্ছে, তত দ্রুতই বদলে যাচ্ছে সত্যের রূপ—কেউ লুকিয়ে ফেলতে চায়, কেউ বিকৃত করে, কেউ আবার নিজের স্বার্থে তা ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার মাঈনউদ্দিন মইনুলকে ১৩ বছর পুর্তি উপলক্ষে অভিনন্দন।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৭



সামুর সুসময়ের আদর্শ ব্লগারদের মাঝে মাঈনউদ্দিন মইনুল হচ্ছেন একজন খুবই আধুনিক মনের ব্লগার; তিনি এখনো ব্লগে আছেন, পড়েন, কমেন্ট করেন, কম লেখেন। গত সপ্তাহে উনার ব্লগিং;এর ১৩ বছর পুর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিয়তির খেলায়: ইউনুস ও এনসিপিনামা

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৪



২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া আমেরিকান চলচ্চিত্র 'আনব্রোকেন' একটি সত্যি ঘটনার ওপর নির্মিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, আমেরিকান বোমারু বিমানের কিছু ক্রু একটি মিশন পরিচালনা করার সময় জাপানিজ যুদ্ধ বিমানের আঘাতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কা দেখে ভোট দেওয়া সমর্থন করা যায় কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০১



মার্কার লোকটি অযোগ্য হলে তিনি তাঁর এলাকার সঠিক প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন কি? ভোটার মার্কা না দেখে যোগ্য লোক দেখে ভোট দিলে সমস্যা কি? যোগ্য লোকেরা কি তাঁর দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×