somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইতিহাসের অমূল্য স্মারক বাঙালীর বীরত্বের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেয়

০৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় সোনার বাংলা। বাঙালীর আশ্চর্য অর্জনের খবর পরদিন ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বহু পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ভারতসহ তখনকার ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোও বাঙালীর মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে-বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়েছিল। এসব কারণে মহান বিজয়ের খবর আর কেবল বাঙালীর হয়ে থাকে না। বিশ্বগণমাধ্যম এ সংবাদ ছড়িয়ে দেয় পৃথিবীর প্রতি প্রান্তে। সে সময়কার পত্রিকাগুলো এখন গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের স্মারক। দুর্লভ এসব পত্রিকায় বাঙালীর ঐতিহাসিক বিজয়ের দিনটি নানা ব্যঞ্জনায় প্রকাশিত হয়। রিপোর্টগুলো যেমন আবেগে ভাসায়, তেমনি তুলে ধরছে অজানা অল্পজানা ও ভুলে থাকা ইতিহাস। একটি অসম যুদ্ধ। একদিকে পাকিস্তানের দক্ষ প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী, অন্যদিকে বাংলার সাধারণ কৃষক শ্রমিক মুটে মজুর। এর পরও সারাবিশ্বের বিস্ময় হয়ে সামনে আসে বাংলাদেশ। নয় মাসের সংগ্রামে পরাস্ত করে বর্বর পাকিস্তান বাহিনীকে। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দলিল ও আর্কাইভ ঘেঁটে দেখা যায়, যুদ্ধের খবর প্রথম থেকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে আসছিল দেশীয় পত্র-পত্রিকাগুলো। বিদেশী গণমাধ্যমেও বিশেষ গুরুত্ব পায় প্রতি দিনের যুদ্ধ সংবাদ। সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশের যুদ্ধ জয় এবং পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের খবর হৈচৈ ফেলে দেয় বিশ্বগণমাধ্যমে। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশসহ অধিকাংশ দেশ থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রে নতুন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের খবরটি প্রধান সংবাদ শিরোনাম করা হয়। কোন কোন দৈনিকের পুরোটাজুড়েই ছিল যুদ্ধ জয়ের খবর। অন্য পত্রিকাগুলোতে একাধিক স্টোরি ছাপা হয়। এদিনের প্রায় সব পত্রিকার পাতায় বড় করে ছাপা হয় ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে নিয়াজীর আত্মসমর্পণের ছবি। দেশীয় পত্রিকাগুলোর সংবাদ শিরোনামে বিশেষ প্রাধান্য পায় ঐতিহাসিক স্লোগান ‘জয় বাংলা’। যুক্তরাষ্ট্রসহ পাকিস্তানকে সমর্থন দেয়া দেশগুলো সংবাদটি পরিবেশন করে তাদের নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে। পরাজয়ের গ্লানি এবং হাতাশার চিত্র ফুটে ওঠে ওই সব দেশের একাধিক পত্রিকার খবরে। ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে বেশকিছু পত্রিকা প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায়। দুর্লভ কিছু পত্রিকা এখনও বিভিন্ন জায়গায় সংরক্ষিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকার পত্রিকাগুলো সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছিল। তাই রাজধানী থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় বিজয় দিবসের খবর খুব কমই পাওয়া যায়। বিশ্বের প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয়ের খবরটি মূল সংবাদ করে। ভারতের চন্ডীগড় থেকে প্রকাশিত ‘ট্রিবিউন’ পত্রিকায় লিড ছিল বাংলাদেশের বিজয়ের খবর। শিরোনাম ‘BANGLADESH FREED, UNCONDITIONAL SURRENDER BY PAK TROOPS. বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকেও বাংলাদেশের যুদ্ধ জয়ের খবর দেয়া হয়। প্রভাবশালী দৈনিক নেভাডা স্টেট জার্নালের ১৭ ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রধান সংবাদ হয়ে আসে বাংলাদেশ। পত্রিকাটি প্রথম পাতায় বেশ কয়েকটি স্টোরি করে। পাকিস্তানের পত্রিকাগুলোতেও আসে বাংলাদেশের বিজয়ের খবর। যতটা সম্ভব ঘুরিয়ে তারা এই খবর প্রকাশ করে। নাকে খত দিয়ে পাকিস্তানী আর্মি যখন প্রাণ বাঁচানোর আকুতি করছে তখন ১৭ ডিসেম্বর দৈনিক ডন পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ‘War till Victory’. মূল সংবাদের নিচে ছোট করে মাত্র দুই কলামে দেয়া হয় বাংলাদেশের বিজয়ের খবরটি। পরাজয় মেনে নিতে নারাজ পাকিরা তাদের নিজেদের মতো করেই হেডলাইন করে- ‘Fighting ends in Est Wing. PAF Hits in West. দৈনিক ‘দি সল্টলেক ট্রিবিউন’র প্রধান সংবাদ ছিল ‘Indians Enter Dacca, ExtendTruce to West’. এভাবে বিজয়ের শুভক্ষণে সারা দুনিয়ার গণমাধ্যমের নজড় কাড়ে বাংলাদেশ। অন্যসব খবর পেছনে পড়ে যায়। স্থানীয় আন্তর্জাতিক খবর পেছনে ফেলে সর্বাধিক গুরুত্বের বিষয় হয়ে ওঠে বাংলাদেশের বিজয়গাথা। ইতিহাসের অমূল্য স্মারক বাঙালীর বীরত্বের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×