somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উন্নয়নের চমকে এসডিজি যুগে পৌঁছে যাচ্ছে দেশ

০৮ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এমডিজির যুগে (২০০০-২০১৫) বাংলাদেশ দারিদ্র্য দূরীকরণ ও মানব উন্নয়নে অসামান্য সফলতা অর্জন করেছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এমন সফলতা অনেক পর্যবেক্ষকের কাছেই অবিশ্বাস্য চমক বলে মনে হচ্ছে। কারণ, জাতি হিসেবে আমরা অনেক গুরুতর প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন। প্রতিবন্ধকতাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা, ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, পরিবেশ বিপর্যয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সম্পদের স্বল্পতা, আয় ও সুযোগের বৈষম্য, ভঙ্গুর প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন ইত্যাদি। এসব প্রতিবন্ধকতা ও ঝুঁকি সত্ত্বেও গত দেড় দশকে বাংলাদেশের জনগণের জীবন-জীবিকায় ব্যাপক অগ্রগতি ঘটেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিশেষত আমাদের উচ্চ প্রবৃদ্ধির হারের একটি বড় কারণ হলো গত কয়েক দশকে তৈরি পোশাকশিল্পে আমাদের ব্যাপক সফলতা। স্বল্প আয় করলেও তৈরি পোশাকশিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক, যাঁদের অধিকাংশই নারী, গ্রামে-গঞ্জে বসবাস করা, তাঁদের পরিবারের আর্থিক সংগতি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বিদেশে কর্মরত ও হাড়ভাঙা খাটুনিতে নিয়োজিত প্রায় এক কোটি শ্রমিকের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশের পল্লি অর্থনীতিতে ব্যাপক গতিশীলতা এনেছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর (এনজিও) সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং তাদের উদ্ভাবিত জনগণের বহু সমস্যার স্বল্প খরচের সৃজনশীল স্থানীয় সমাধানই গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের সামাজিক ও মানব উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। বাংলাদেশে বহু সেবা প্রদানকারী এনজিও সমন্বিতভাবে দরিদ্র মানুষকে টার্গেট করে বহু সেবা দিয়ে আসছে, যাতে তাদের অবস্থা ও অবস্থানের পরিবর্তন হয়। উদাহরণস্বরূপ, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে এনজিওদের সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং একই সঙ্গে ডায়রিয়া রোগে মৃত্যু রোধে খাবার স্যালাইন (ওআরটি) ও কৃমি রোধের ক্যাম্পেইন, টিকাদান কর্মসূচির সম্প্রসারণ এবং ইউনিসেফের সুপারিশকৃত ব্যয়বহুল পদ্ধতির পরিবর্তে রিং-স্লাব দিয়ে স্বল্প খরচের স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারের কারণে। সেবা প্রদান করতে গিয়ে এনজিওগুলো নারী ও তাঁদের পরিবারগুলোকে তাদের নিজস্ব স্বার্থসংশ্লিষ্ট অগ্রাধিকারগুলোর ওপর—যেমন পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ এবং সন্তানদের স্কুলে প্রেরণ ইত্যাদির ওপর জোর দিয়েছে। এ ধরনের কার্যক্রম ও উদ্যোগগুলো জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ এবং মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মাতৃমৃত্যু রোধে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে নারীদের জন্য সন্তান জন্ম পূর্ব-প্রসূতিসেবা বা ‘প্রি-নেটাল কেয়ার’ এবং সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ নারীদের প্রসব-পূর্ব থেকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। সরকারের পক্ষ থেকে এনজিওগুলোকে সেবা প্রদানমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান না করা হলে অবশ্য এসব অর্জন সম্ভব হতো না। সরকারের প্রধান লক্ষ্য হল কেউ যেন বাদ না পড়ে এবং সবচেয়ে দরিদ্রতম ব্যক্তিও যেন এতে অন্তর্ভুক্ত হয়, যা অর্জনের মাধ্যমে আরও অনেক দুরূহ প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠবে সরকার। এভাবেই উন্নয়নে ক্রমাগত চমক দেখিয়ে এসডিজি যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:০৬
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×