১ম অংশ- Click This Link
২য় অংশ- Click This Link
৩য় অংশ- Click This Link
৪র্থ অংশ- Click This Link
৫ম অংশ- Click This Link
আল্লাহর রাসুল (সঃ) তাঁর যুগে দূরবর্তী স্থানের লোকদের চাঁদ দেখার সংবাদ পাঠানোর জন্য ‘ঘোড়সওয়ার’ এর ব্যবস্থা করেছিলেন ।
তার পরবর্তী ইসলামি রাস্ট্রের খলিফাগণ চাঁদ দেখে বা স্বাক্ষী পেয়ে যেটি করত, তা হল মুসলমানরা বিভিন্ন পাহাড়ের উপরে মশাল বা আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা করতো । যেই এলাকায় প্রথম চাঁদ দেখা যেত, সেই এলাকার পাহাড়ের উপরে মশাল বা আগুন জ্বালানো হতো । সেই আগুন দেখে দূরবর্তি পাহাড়ও আগুন জ্বালানো হতো । এভাবে ধীরে ধীরে সকল এলাকায়, সব মুসলমান আগুন জ্বালানো দেখে চাঁদ দেখার খবর পেত ।
কোন খিলাফাহ এর সময়, যে কোনো অঞ্চলে চাঁদ দেখা গেলে ঘোড়া ছুটিয়ে কিংবা আরও উন্নত যোগাযোগ মাধ্যম পরবর্তী সময়ের কোনো বিশেষ বাতি জ্বালিয়ে বা শব্দ শুনিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেয়া হতো যে নতুন মাসের চাঁদ দেখা গিয়েছে । সে সময়ে সমুদ্রবক্ষে জাহাজের নিরাপদে দিক চিনে চলাচলের সুবিধার্তে যে সকল লাইট হাউস বা বাতিঘর ছিল, আকাশে চাঁদ দেখা গেলে সেগুলিতে আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হত । একটি লাইট হাউসে আলো জ্বললে সে খবর যখন অন্যটিতে পৌঁছাত, তখন অন্যটিতেও আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হত । এভাবে জনতা আলো জ্বলতে দেখে চাঁদ দেখার ব্যাপারটি বুঝতে পারত ।
এই সমস্ত প্রক্রিয়ায় যে সকল এলাকার মানুষ চাঁদ দেখার ব্যাপারটি বুঝতে পারত, সে সকল এলাকার মানুষেরা রোজা, ঈদ একসাথে পালন করত ।
এখান আমরা একটু লক্ষ্য করলে বুঝতে পারব যে, আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, এ সংবাদটি পায়ে হেটে অন্যদেরকে জানানো, ঘোড়ায় চড়ে জানানো, লাইট হাউসের মাধ্যমে জানানোর মধ্যে বিষয়ভিত্তিক কোনো পার্থক্য নেই বরং প্রযুক্তিগত পার্থক্য রয়েছে, যা প্রথম যুগ থেকেই গ্রহন করা হয়েছে । বেশী সংখ্যক মানুষকে দ্রুততার সাথে জানানোর জন্যে এ মাধ্যমগুলি প্রযুক্তি বিশেষ, যা সময়ের প্রেক্ষিতে পরিবর্তিত হয়েছে । এখানে উক্ত প্রযুক্তির একটিই উদ্দেশ্য ছিল, তা হলো-দ্রুততার সাথে অন্যদেরকে চাঁদ দেখার সংবাদটি জানানো ।
বর্তমান কালে স্যাটেলাইট টেলিভিশন, ইন্টারনেটের কল্যানে চাঁদকে পৃথিবীর সকল এলাকাবাসীর সামনে সরাসরি উপস্থাপন করা যায় ।
আধুনিক প্রচার মাধ্যম (টিভি, রেডিও, ইন্টারনেট, মোবাইল…) কে আমরা যাতে কাজে লাগাতে পারি তা বহু আগেই আল্লাহপাক নির্ধারণ করে দিয়েছেন ।
আল্লাহপাক বলেন,
‘আমি বাতাসকে দিয়েছি তোমাদের সুসংবাদ বহনের জন্য’ (সূরা আল ফোরআন-৪৮, নমল-৬৩, রুম-৪৭)
আজকের এই প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সময়ে যদি কেউ এক এলাকাতে চাঁদ দেখতে পায় এবং তা অন্য এলাকার লোকদেরকে টেলিফোনে, ইন্টারনেটে, টেলিভিশনে, রেডিওর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়, তাহলে তা পূর্ববর্তী সময়ের পায়ে হাটা, ঘোড়ায় চড়া, লাইট হাউসের মাধ্যমে ঘটিত প্রচারণার সমপর্যায়েরই হবে। কারণ, এখানে উদ্দেশ্য একই ।
বর্তমান সময়ের জ্ঞানীরাও এ বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন কিভাবে সকল ইবাদত বিশ্ব মুসলিম এক হয়ে পালন করা যায় । অনেকে আধুনিক প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে এ বিষয়ে লেকচার, বইয়ের মাহ্যমে প্রচারনা চালাচ্ছে।
সকলের প্রচারনায় দেখায় যায়-সউদির চাঁদ দেখার খবরের সাথে মিলিয়ে এক করতে চান ! কেন ?
বলেন- সৌদী আরবের অবস্থান পৃথিবীর মাঝখান বরাবর । বিখ্যাত ‘গোল্ডেন রেশিও’ অনুযায়ী মক্কা পৃথিবীর কেন্দ্র বিন্দু ।
মক্কা ইসলামের কেন্দ্র বিন্ধু । কা’বা মুসলমানদের সর্বোচ্চ সম্মানিত তীর্থস্থান । কা’বা শরীফের ঠিক উপরে বায়তুল মামুর যার নিচ বরাবর আদম আ: কা’বা প্রতিষ্ঠিত করেছেন ।
নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কা থেকেই আল্লাহর বাণী সমগ্র বিশ্বে প্রচার শুরু করেছেন ।
মক্কার সাথে পৃথিবীর যে কোন স্থানের সময়ের ব্যবধান বার ঘন্টার নিচে । কোন স্থানের সাথে সময়ের ব্যবধান বার ঘন্টার নিচে থাকলে ঐ স্থান অনুসারে মাস শুরু করা যায় ইত্যাদি ।
তারিখ চাঁদের উদয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত । মাসের প্রথম দিনের চাঁদ পশ্চিম আকাশে উদিত হয় । সৌদির পশ্চিমের দেশগুলতে আগে চাঁদ দেখা যাবে । প্রথম চাঁদ যে দেশে দেখা যাবে তাদের সাথে এক হওয়া উচিত নয় কি ?
তাছাড়া শরীয়ায় সৌদিকে মনদ্বন্দ করার কোন দলিল আছে কি ?
আল্লামা শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহ.)
একই দিনে সারাবিশ্বে ঈদের প্রবক্তাদের কেউ কেউ মক্কা শরীফে চাঁদের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ ও সাওম পালনের যে মত ব্যক্ত করেছেন । কিন্তু খোদ সৌদি আরবের সাবেক প্রধান মুফতি আল্লামা শায়খ বিন বায (রহ.) এটি নাকচ করেছেন ।
তিনি বলেন: ‘বিশেষ করে মক্কার চাঁদ দেখাকে ভিত্তি করে যারা সারা দুনিয়ায় রামাযান ও ঈদের ফায়সালা করতে বলেন, তাদের এ মতের কোন ভিত্তি ও দলীল নেই । আর তা হলে অবস্থা এ রূপ হবে যে, মক্কায় চাঁদ দেখা না-হলে, অন্য অঞ্চলের লোকেরা চাঁদ দেখলেও তাদের উপর সাওম ফরজ হবে না’- (আল বা’সুল ইসলামী: জিলহজ্ব ১৩৯৯, সূত্র: ইসলামী মাহ, মওলানা ইয়াক‚ব ঈসমাইল দেওবন্দী, পৃ. ১৩১)
সুতরাং যারা সৌদি সাথে এক হওয়ার কথা বলেন বিষয়টি ভেবে দেখুন । মুসলিম উম্মার কেন্দ্র মক্কার ইসলামিক চিন্তাবিদেরকে বিষয়টি পর্যালোচনার দাবি রাখে ।
মক্কা ইসলামের কেন্দ্র হিসাবে আমরা বিশ্বের মুসলিম উম্মা থেকে একজন খলিফা (যে সহিহ শরীয়া জ্ঞানের অধিকারী) মেনে তার কেন্দ্রীয় কার্যালয় সউদিতে করতে পারি । তার অধিনিস্থ বিভিন্ন দেশের গভর্ণর (প্রত্যেক দেশে একজন) বানাতে পারেন । বিশ্বের যে দেশে প্রথম চাঁদ দেখা যাবে ঐ দেশের গভর্ণর খলিফাকে জানাবে ।
খলিফা অধুনিক প্রচার যন্ত্রের মাধ্যমে প্রথম চাঁদ দেখার খবর বিশ্ব বাসীর নিকট প্রচার করবে । এভাবে মাসের শুরু সমগ্র বিশ্বে এক সাথে করা যেতে পারে । (ইনশাআল্লাহ) ।
উক্ত খলিফা শির্ক বেদাতেরও সমাধান দিবেন । যারা এতে লিপ্ত তাদের কাছ থেকে লিখিত প্রমাণ নিয়ে সহিহ শরীয়া মতে জানাবেন এটা করা যায়েজ, এটা নাযায়েজ ।
শুধু চাঁদ দেখার খবর হলে দেশের রাষ্ট্র প্রদানও করতে পারবে ।
মক্কার সাথে পৃথিবীর যে কোন স্থানের সময়ের ব্যবধান বার ঘন্টার নিচে (ধরা যাক ১০ ঘন্টা) ।
মক্কায় যখন সন্ধ্যা তক্ষণাৎ ১ম চাঁদের খবর প্রচার করা হলে অন্য দেশে তখন সুবহে সাদিক হবে । রমযানের তারাবী, সেহেরী, নিয়ত ঐ দেশের লোকেরা কিভাবে করব?
তারাবীর জন্য-
(চলবে)
৭ম অংশ- Click This Link
৭ম অংশে মক্কায় যখন সন্ধ্যা তক্ষণাৎ ১ম চাঁদের খবর প্রচার করা হলে অন্য দেশে তখন সুবহে সাদিক হবে । রমযানের তারাবী, সেহেরী, নিয়ত ঐ দেশের লোকেরা কিভাবে করবে ? এর কিছু সমসধানের দলিল পাবেন ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:৫৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



