৪ জুন, ২০১৩
পড়াশোনা, কাজ, ব্যস্ততা - সব মিলিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। সবসময়ের সঙ্গী নাইকন ডি-৯০ ডিএসএলআর ক্যামেরাতেও অনেকদিন ধরে কোন ছবি তোলা হয়না। কোথাও ঘুরতে যাবো যাবো ভাবছি। এমন সময় বান্ধবী সুজানা এসে প্রস্তাব দিলো টরন্টো শহরের জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট 'সেন্টার আইল্যাণ্ড এবং হারবার ফ্রন্ট সেন্টারে' বেড়াতে যাবার। সুজানার কথা আপনাদের মনে আছেতো? ওই যে, যার সাথে গেলবার নায়াগারা ফলস-এ ঘুরে এলাম ।
যেই কথা, সেই কাজ। সাথে সাথে মোবাইল ফোনে আবহাওয়া আর ফেরীর শিডিউল দেখে আমার ল্যাটিন-আমেরিকান বান্ধবী জানালো, মঙ্গলবার 'সানি ডে' থাকবে, আবহাওয়াও চমৎকার। অতএব, মঙ্গলবার খুব সকালেই রওনা হলাম নয়নাভিরাম সেন্টার আইল্যাণ্ডের উদ্দেশ্যে।
ডাউনটাউন টরন্টোর ইউনিয়ন স্টেশনে সাবওয়ে ট্রেন থেকে নেমে জানলাম যে, সেন্টার আইল্যাণ্ডের ফেরী ঘাটে যাবার জন্যে এখান থেকে আগে যে স্ট্রীটকার ছাড়তো, সেটা বন্ধ আছে। অতএব, বাস নম্বর ৫০৯ ধরে চলে এলাম ফেরী ঘাটে।
অবশ্য ডাউনটাউনের অবস্থা দেখে চোখে পানি চলে এলো প্রায়। চারিদিকে শুধু কনস্ট্রাকশন চলছে। মানুষ পায়ে হেঁটে যে শান্তিমতো চলবে, সে উপায়টুকু নেই।
কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে পুরোদমে
কনস্ট্রাকশনের কাজের জন্যে রাস্তা-ঘাট সব বন্ধ
বেলা পৌনে এগারোটার দিকে যখন ফেরী ঘাটে পৌঁছালাম, তখন শুনি ঠিক এগারোটায় একটা ফেরী ছাড়বে। সুতরাং দেরী না করে জনপ্রতি ৭ ডলার করে টিকেট কেটে ফেরীঘাটের ভিতরে ঢুকে পড়লাম।
টরন্টো শহর থেকে ফেরীতে সেন্টার আইল্যাণ্ড যেতে প্রায় ১৫ মিনিট লাগবে। এরকম আইল্যাণ্ড আরও কয়েকটি আছে, যেমন ওয়ার্ডস আইল্যাণ্ড, যেগুলো লেক ওন্টারিওর ভেতরে টরন্টোর মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ।
ফেরীতে ওঠার পথে
ফেরীর ভেতরে
ফেরী থেকে তোলা সি.এন টাওয়ার
সেন্টার আইল্যাণ্ডে চলে এসেছি প্রায়
এখুনি সেন্টার আইল্যাণ্ডে নামবো আমরা
নেমে পড়েছি সেন্টার আইল্যাণ্ডে
নয়নাভিরাম সেন্টার আইল্যাণ্ড
এই কাকায় দেখি পার্কের ভেতরে ১৯০০ সালের এক ভাঙা গাড়ি চালায়!
সেন্টার আইল্যাণ্ডে নেমে শুরুতেই ঢুকে পড়লাম বাচ্চাদের সেন্টারভিল আ্যামিউজমেন্ট পার্কে
কু ঝিক ঝিক লাল ট্রেনে ছোট বাচ্চাদের সাথে তাদের বাবা-মা'রাও উঠেছে!
লাল ট্রেনের সাথে নীল ট্রেন-ও আছে!
পরে বুঝলাম, উপরের ওই কাকা এইখান থেকে গাড়ি নিয়ে চালানো শুরু করেছেন!
ছোট বাচ্চাদের জন্যে কত রাইড যে এই অ্যামিউজমেন্ট পার্কে!
এই হাঁসগুলোর পেটের ভেতরে চড়ে পানিতে ভাসা যায়
কাঠের লগের ভেতরে বসে অনেক উঁচু থেকে পানিতে পড়া যায়
পার্কের ভেতরের ঝর্ণা
এই ক্রুজ শীপে করে সেন্টার আইল্যাণ্ডের পানিতে ভেসে বেড়াতে অনেক আনন্দ
একটা ছোট ক্রুজ শীপ
গাছের ছায়া ঘেরা সেন্টার আইল্যাণ্ড
এখান থেকে সাইকেল ভাড়া করে পার্কের ভেতরে চালানো যায়
পার্কের চারদিকেই লেক ওন্টারিও
সেন্টার আইল্যাণ্ড থেকে তোলা সি.এন টাওয়ারের ছবি
লেক ওন্টারিওর পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে রাজহাঁসের পরিবার
আরও কিছু ছবি:
ঘড়িতে প্রায় ৩ টা বাজতে চললো। অতএব, এবার ফেরার পালা।
বেলা ৩টার ফেরী ধরে ব্যাস্ত টরন্টো শহরের দিকে এগিয়ে চলেছি আমরা
আর একটু পরেই ফেরী থেকে নামবো আমরা
ফেরী ঘাটে লেগে গিয়েছে, আমরা নেমে গেলেই পরের চালানের মানুষজন সেন্টার আইল্যাণ্ড যাবার জন্যে এই ফেরীতে উঠবে
*****
ফেরী থেকে নেমে হাঁটা পথে চলে এলাম হারবার ফ্রন্ট সেন্টারে। আমাদের বাংলাদেশের পতেঙ্গা বীচের মতো অনেকটা।
এই কাকার হিস্টরী হলো, তিনি বন্ধুর সাথে বাজী ধরে লেক ওন্টারিওতে জামাকাপড় খুলে ঝাঁপ দিচ্ছেন।
হারবার ফ্রন্টে এরকম অনেক ক্রুজ শীপ আছে যেগুলো যাত্রীদের নিয়ে লেক ওন্টারিওতে ঘুরে বেড়ায়
এখানে ওপেন এয়ার কনসার্ট হয়
এবার ফেরার পালা, কিন্তু ক্যামেরার শাটার বন্ধ করতে পারছিনা, শুধু ছবি আর ছবি তুলতে ইচ্ছে করছে।
সন্ধ্যা ৬ টায় আইসক্রিম ট্রাকের চকোলেট কোন আইসক্রিম খেতে খেতে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৩৬