সাজাতে ভালোবাসে কেউ কেউ।
দেশ বিদেশের নানান রকম বাহারী জিনিস।
ক্রিষ্টালের।
কাঠের।
চিনামাটির।
কারো কারো প্রিয় পৃথিবীর
যাবতীয় সভ্যতার নিদর্শন।
কারও বা প্রাণীকূল।
শো-কেসের তাকগুলোতে ধুলা পড়ে যায়।
বিবি সাহেবের শো-কেসের
নিউইয়র্কের ষ্ট্যাচু অব লিবার্টির মশালটা ভাঙা।
ক্রেইজী গ্লু আটকে রাখে তাকে।
যতগুলো দেশ।
ততগুলো শো পিসের বাহার।
তত বেশী শো-কেস সাজে।
১২ বছরের নঈমের আজ খুশীর দিন।
শো-কেসের সব কিছু ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করবে ও।
ভূগোল বই পড়া হয়নি ।
দেশ ধারণা আমেরিকা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ।
বুশের কুশপু্ত্তলিকা জ্বালিয়েছিলো একবার।
কাওরান বাজার এর মোড়ে।তখন থেকে।
দেশের বাইরে পৃথিবীর সব দেশ ওর কাছে মুলতঃ বিদেশ।
বিবি সাহেবের বাজার এনে দিয়েছিলো একদিন।
এরপর থেকে এখানেই থাকা।
বাড়ীঘর ধোয়া মোছা ওর কাজ।
বসার ঘরের শো-কসের মস্ত জগত ওকে টানতে থাকে ।
প্রায়ই কাজ না থাকলে ও তাকিয়ে সব গুলো দেখে।
সেই সব শো-পিস আজ ওর হাতের মুঠোয়।
মিশরের পিরামিড।
প্যারিসের আইফেল টাওয়ার।
কানাডার সি-এন টাওয়ার।
আগ্রার তাজমহল।এইটাই শুধু চেনা।
(কোন যেনো সিনেমায় দেখেছিলএকবার)
বিবি সাহেব পাশ থেকে সাবধান বানী ঝরাতে থাকেন।
আর কোনটার নাম কি
কোনটার দাম কত
বলেই যেতে থাকেন।
ওর হাতের ক্রিষ্টাল পিসটার দিকে তাকিয়ে বলেন
এইটা হলো ষ্ট্যাচু অব লিবার্টি।
হঠাৎ সতর্কতার ফাঁক গলে নঈমের হাত থেকে
খসে পড়ে লিবার্টির মশাল।
চকিতেই বিবি সাহেবার ক্রুদ্ধ মুখ।
এতক্ষনের শিক্ষকতার মুখোশ খুলে
উনি হন অত্যাচারী শাসক।
মশাল ভাঙার দায়ে জ্বলে যায় নঈমের হাত।
বিবি সাহেবার ১০ বছরের ছেলেটা কবে ভেঙেছিলো ওটা।
ক্রেইজী গ্লু খুলে গিয়ে আজ এই বিপদ।
হায়রে শো-কেসের বাহারী শো-পিস!
নঈমের ইচ্ছে করে
গুড়িয়ে ভেঙে দিতে শো-কেসের এই সভ্যতা।
ওর জ্বলতে থাকা চোখ এ লিবার্টির মশালের আগুন।
সেই আগুন বুকের মধ্যে নিয়ে
পথের ছেলে নঈম আবার পথে নামে।
ছবির লিন্ক:
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:১৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


