somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্থানীয়দের উচ্ছেদ করে বিদেশীদের করমুক্ত ব্যবসা করার সুবিধা দিচ্ছে সরকার

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরকার দাবি করে উন্নয়ন দেশের জন্য। তাহলে আমাদেরকেই উচ্ছেদ করে বিদেশীদের এতো সুযোগ দেয়া কেনো?
আমাদের জন্য শুল্ক, কর। আর বিদেশীদের করমুক্ত ব্যবসা করার সুবিধা!

নিচের লেখাটা প্রথম আলোর গতকালের একটা নিউজ:

ভুলে ভরা উন্নয়নের মডেল.............

টানা এক মাস হবিগঞ্জের চান্দপুর চা-বাগানের নারী শ্রমিকেরা তিন ফসলি জমিতে ‘বেজা’র প্রস্তাবিত স্পেশাল ইকোনমিক জোন (এসইজেড) বা বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। চা-বাগানের এই শ্রমিকেরা দেড় শ বছর ধরে বংশপরম্পরায় চাষ করেছেন এই জমিতেই। বিনিময়ে তিন প্রজন্ম ধরে খাজনা দিয়েছে সরকারকে। এই জমির রেজিস্ট্রি করা দলিল নেই তাঁদের কাছে, কিন্তু হেমন্ত শেষে চান্দপুর চুনারুঘাটের ৫১১ একর জমির বিস্তীর্ণ কাটা ধানের মাঠ দেখলে বোঝা যায় এই জমির সঙ্গে এখানকার আট হাজার মানুষের নাড়ির সম্পর্ক।

মধ্যবিত্ত মানসে স্পেশাল ইকোনমিক জোন মানেই উন্নয়ন। দাবি করা হয়, এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান তৈরি হয়, এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হয়, বৈদেশিক মুদ্রা আসে এবং সরকার রাজস্ব পায়। অথচ গত দুই দশকে দেখা গেছে, এসইজেড করার উদ্দেশ্যে যেখানেই জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেখানেই গড়ে উঠেছে গণপ্রতিরোধ। রাষ্ট্র বলছে উন্নয়ন। অথচ ভারতের সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, ওডিশা, গুরগাঁও, রাইগড়, নিয়মগিরি আর আমাদের ফুলবাড়ী থেকে চান্দপুর চুনারুঘাটের অগণিত মানুষ কেন এই উন্নয়ন মডেলকে প্রত্যাখ্যান করছে, কেন ‘জীবন দেব তবু জমি দেব না’ বলে বুলেটের সামনে দাঁড়াচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।

প্রথমত বলা হয়, এসইজেড থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসে, যার মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন হয়। এই সেই ট্রিকেল ডাউন বা চুইয়ে পড়া অর্থনীতির তত্ত্ব, যার কঠোর সমালোচনা রয়েছে মূলধারার অর্থনীতিতেই। আদৌ কি ওপর থেকে সম্পদ ‘চুইয়ে’ পড়ে প্রান্তে? আদৌ কি বৈদেশিক মুদ্রার বিশাল রিজার্ভ থেকে মাঠঘাটের কৃষক– শ্রমিকের উন্নয়ন হয়? নাকি শ্রমিকের ঘামে অর্জিত ডলার পাচার হয়ে যায় বিদেশে? গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতিবছর পাচার হয় ৫৫৮ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে ১০ বছরে অর্থ পাচারের পরিমাণ সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের বেশি (বাংলাদেশের দুই বছরের বাজেটের সমান)। বৈদেশিক মুদ্রার দরকার পড়লে ফসলি জমি নষ্ট না করে, হাজারো মানুষকে উচ্ছেদ না করে এই বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাচার রোধ করছে না কেন সরকার? দ্বিতীয়ত প্রচার করা হয়, এসইজেড থেকে বিশাল রাজস্ব পাবে সরকার। অথচ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (BEZA) ‘বেজা’র সরবরাহ করা তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে এসইজেডগুলোতে প্রথম ১০ বছরের জন্য শতকরা ১০০ ভাগ আয়কর মুক্তি, ১১তম বছরে শতকরা ৭০ ভাগ এবং ১২তম বছরে শতকরা ৩০ ভাগ করমুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সব রকম রপ্তানি কর অব্যাহতিও ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া এসব অঞ্চলে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ দেওয়া হয় অস্বাভাবিক কম মূল্যে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। অর্থাৎ এসইজেড থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পায়—এই বহুল প্রচারিত ধারণাটিও আদতে একটি মিথ। বরং স্পষ্টতই এই প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পদ হস্তান্তরিত হয় বেসরকারি কোম্পানির হাতে।

তৃতীয়ত বলা হয়, জমি অধিগ্রহণের ফলে উচ্ছেদ হওয়া কৃষক ওই শিল্পাঞ্চলে গড়ে ওঠা কারখানাতেই চাকরি পান। অথচ ভারতে দেখা গেছে মোট এসইজেডের মাত্র ৯ দশমিক ৬ শতাংশ ম্যানুফ্যাকচারিং খাতভিত্তিক আর ৫৬ দশমিক ৬৪ শতাংশই আইটি সেক্টরভিত্তিক। অর্থাৎ অধিকাংশ বিনিয়োগই সার্ভিস সেক্টর (আইটি, হোটেল, রিয়েল এস্টেট) ভিত্তিক হওয়ায় কৃষক পরিবারের সদস্যদের এসব শিল্পাঞ্চলে চাকরি পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকে না। এক এলাকার কৃষক উচ্ছেদ হয়ে আরেক এলাকার শিক্ষিত গ্র্যাজুয়েট চাকরি পায় ঠিকই কিন্তু মাঝখান থেকে হারিয়ে যায় বহুদিনের খেতখামার, ফসলি জমি, আর স্বনির্ভর একেকটি গ্রাম, জিডিপির অঙ্কে যার হিসাব হয় না। উল্লেখ্য যে ভারতে এসইজেডের মাধ্যমে ৩৯ লাখ কর্মসংস্থানের কথা বলা হলেও দীর্ঘ দুই দশকে কর্মসংস্থান হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৮৪ হাজার, যা ঘোষিত কর্মসংস্থানের মাত্র ৭ শতাংশ।

এদিকে এ দেশে ইতিমধ্যে ঘোষিত শিল্পাঞ্চলগুলোতে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ন্যূনতম বিনিয়োগ কত হতে হবে, এ-সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট সরকারি নীতিমালা নেই। বেগমখান চা-বাগানের অঞ্জলি বাগতিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এখানে জোন হলে নাকি ঘরে ঘরে চাকরি হবে? দিদি ফুঁসে উঠে বলেছিলেন, ‘মিথ্যা মিথ্যা মিথ্যা। রশিদপুর গ্যাসফিল্ডের জন্য হামাদের জমি লিয়েছিল কোম্পানি। বলেছিল গঁায়ের লোকের চাকরি দেবে। অথচ কারখানা ঝাট দেবার লিয়েও গঁাও থেকে হামাদের একটা লোক লেয়নি কোম্পানি।’ ভারতের শ খানেক এসইজেডের ওপর দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী মাইকেল লেভিন। নথিবদ্ধ করেছেন ওই সব এলাকার জনগোষ্ঠীর উচ্ছেদের করুণ কাহিনি, চাকরির নামে প্রহসনের গল্প, শিল্পায়ন আর উন্নয়নের নামে কৃষক আর প্রান্তিক মানুষের সম্পদ বাণিজ্যিক কোম্পানির পকেটে চলে যাওয়ার কাহিনি। উল্লেখ্য, স্বাধীনতা-পরবর্তী ভারতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নামে প্রায় সাড়ে চার কোটি প্রান্তিক মানুষের উচ্ছেদের প্রমাণ পাওয়া যায়।

বলা হয়, এসইজেডের মাধ্যমে ওই এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, উর্বর ফসলি জমি নষ্ট করে, খাদ্যনিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে ফেলে, কৃষককে তাঁর জমি থেকে বিতাড়িত করে চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়ার নাম কি উন্নয়ন? বেগমখান চা-বাগানের সহচরী বলেছেন, তাঁর আট মাসের খোরাক আসে এই জমি থেকে। বছরে ৪০ মণ ধান করেন। ছাওয়াল-পাওয়াল অসুস্থ হলে ধান বেচার টাকায় চিকিৎসা হয়। ছেলের জন্য ম্যাট্রিকের ২০০০ টাকা ফিস ভরেছেন শীতকালের সবজি বেচে। বলেছেন, এই তিন কেয়ার জমিই তাঁর উন্নয়ন, তঁার পরিবারের ভবিষ্যৎ। নতুন করে আর কোনো উন্নয়ন তাঁর দরকার নেই।

১২ বছর ধরে পস্কো স্টিল প্রজেক্ট ঠেকিয়ে রেখেছে ওডিশার মানুষ। তারা বলছে, আমাদের চাকরির দরকার নেই। উন্নয়ন করতে চাইলে আমাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করুন। নিয়মগিরির ডঙরিয়া আদিবাসীদের প্রতিরোধেও শোনা গেছে একই কথা, ‘উন্নয়ন করতে চাইলে পাহাড়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করো, বাচ্চাদের স্কুল বানাও। বক্সাইট খনিতে আমাদের লাভ নেই, লাভ কেবল কোম্পানির।’ আর চান্দপুরের নারীদের মিছিল তো জানিয়েই দিয়েছে, এমন জবরদস্তিমূলক উন্নয়ন তারা চায় না। বেগমখান বাগানের কনকলতাদি বলছিলেন, ‘উন্নয়ন করতে চাইলে চা-শ্রমিকের বেঁচে থাকার মতো মজুরি নির্ধারণ করে দিক সরকার। ভূমির অধিকার দিক। জমি থেকে খেদিয়ে আবার কিসের উন্নয়ন?’ নমিতাদির সরল প্রশ্ন ছিল, ‘এই যে আমরা ফসল ফলাই, এতে কি উন্নয়ন হয় না?’

এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়কব্যবস্থা, ফসলের ন্যায্যমূল্য আর শ্রমের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত না করে কৃষককে ধরে বেঁধে কারখানার শ্রমিক বানানো, আর চা-শ্রমিককে জবরদস্তি করে আইটি পার্কের পিয়ন বানানোর এই উন্নয়ন মডেল যে কতখানি ফাঁপা এবং গণমানুষের সঙ্গে সংযোগবিহীন, ভারতের ৬০০ এসইজেডের তিক্ত অভিজ্ঞতাই তার প্রমাণ। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ভারতের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের একটি রিপোর্ট গত দুই দশকে ভারতীয় এসইজেডগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে মন্তব্যে করেছে, ‘দিস ইজ আ ক্লিয়ার লুট অব পাবলিক মানি ফর দ্য সেইক অব ফরেন মানি।’ অথচ ভারতের অভিজ্ঞতা আমলে নিচ্ছেন না আমাদের নীতিনির্ধারকেরা। বরং বিদেশি কোম্পানি আর বাণিজ্যিক গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষা হয় এই নিয়তেই সাজিয়েছেন তাঁরা এই উন্নয়নের মডেল। তবে চুনারুঘাটের লড়াকু মেয়েরা খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। চাপিয়ে দেওয়া ‘উন্নয়ন’ তাঁরা মানবেন না।


মাহা মির্জা: অ্যাক্টিভিস্ট ও পিএইচডি গবেষক, বিলেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়, জার্মানি।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×