somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরমানু অস্ত্রহীন পৃথিবী[স্বপ্ন-গল্প]

১৩ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

০১.
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে। শত শত সাংবাদিকের অধীর অপেক্ষা। প্রেসিডেন্ট নিজেই মুখোমুখি হবেন সাংবাদিকদের। কী বলবেন? সমগ্র পৃথিবীর কোটি মানুষ সেই কথাটি শোনার জন্য উদগ্রীব অপেক্ষায়। কোটি কোটি চোখ স্থির হয়ে আছে টিভির পর্দায়। স্তব্ধ-মুক পৃথিবীর দৃষ্টি এখন বাংলাদেশে। আর মাত্র দশ মিনিট...

ড. নাসের আসাদ। বাংলাদেশের গর্ব। মাত্র বিশ মিনিটে বদলে দিলেন সারা পৃথিবীর চাল-চিত্র! হতবাক পৃথিবীর সব সুপার পাওয়ার! অসহায় সব সমর শক্তির দাপুটে সবল-পেশি! পৃথিবীর সব মানবতাবাদী আর শান্তিকর্মীর মনযোগ বালাদেশের প্রতি। কৃতজ্ঞতার অঞ্জলী নিয়ে দাঁড়িয়ে অসহায়ত্বের নাগপাশ ছিড়ে মুক্তির নাগাল পাওয়া সব মানুষ...

০২.
২০২৭ সাল। ৭ অক্টোবর। শান্তিতে নোবেল ঘোষণা হল। পৃথিবীর মানুষকে হতবাক করে দিয়ে পুরষ্কারটি দেয়া হল বাংলাদেশের ড. নাসের আসাদকে। কিন্তু কেউ এ নিয়ে বিতর্ক করেনি। বিতর্ক হওয়া কথ ছিল। কারণ তিনি নোবেল পেলে পাবেন রসায়নে বা পদার্থে। এই দুয়ের সফল প্রয়োগে যেভাবে পৃথিবীকে বদলে দিলেন তাতে তাঁর নোবেলটা পাওয়ার কথা বিজ্ঞানের কোন শাখাতেই। যেহেতু তার এই আবিষ্কারই অস্থির পৃথিবীতে নামিয়ে এনেছিল শান্তির পায়রকে। মাত্র পাঁচ দিনে। সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদিতা আর যুদ্ধপরায়ণতা থেমে গিয়েছিল সব এক নিমিষে। এ যেন এক যাদুর ছোঁয়া।

০৩.
“আমরা একটা ক্ষুদ্র দেশের প্রতিনিধি। আমরা চাই এই পৃথিবীটায় সবাই থাকি সুন্দর আর সহনশীল সহাবস্থানে। পৃথিবীর সকল পাওয়ার সুপার পাওয়ার আর উন্নত দেশের কাছে আমার একটাই আশা, মানুষের জীবন আর জমি নিয়ে খেলা বন্ধ করুন।” জাতি সংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শফিক আদনানের বক্তব্যের শুরুটা এমনই ছিল।
-‘প্রেসিডেন্ট আপনি আপনার লিমিট ক্রস করছেন।’ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট চেচিয়ে ওঠেন।
-না আমি একনো সবটুকো বলিনি। আরো আছে...
-“প্লীজ আপনি আপনার অবস্থান পরিষ্কার করেন। মানবতার এই যুদ্ধে আপনার পক্ষ কোনটি ? হয় আমাদের সাথে নয় আমাদের বিপক্ষে! হ্যাঁ অথবা না।” সামনের সারিতে বসে থাকা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তীব্র শ্লেষ নিয়ে বললেন।
-শফিক আদনান বেশ তাচ্ছিল্যভরে বলে ওঠেন, আমি কারো পক্ষেই না। আরেকটা বিশ্বযুদ্ধ হোক আমি চাইনা। এই যুদ্ধই হতে পারেনা। এটা মানবতার যুদ্ধ না এটা তোমাদের জালানি সংকট থেকে রক্ষা পাওয়ার আগ্রাসন মাত্র।
-ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট বললেন, “আপনি আপনার সীমা অতিক্রম করেছেন। নিজের ধ্বংস নিজেই ডেকে এনেছেন। আমাদের কিছু করার নেই। আপনার পাওনা পেয়ে যাবেন।”
-না! অপেক্ষা করুন! যদি এই যুদ্ধ আপনারা না থামান আমিই থামাব! ওয়েট এন্ড সি! এই বলে তিনি বেড়িয়ে পড়েন হল রোম থেকে।

এরপর একমিনিটও না থেমে সোজা স্পেশাল ফ্লাইটে দেশে চলে আসেন। এসেই এক গোপন বৈঠকে মিলিত হন ড. নাসের আসাদের সাথে।

সমগ্র পৃথিবতে ঝড় ওঠে প্রেসিডেন্টের এই আচরণে। সংবাদ মাধ্যম, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সব মানুষের ঘুম হারাম হয়ে যায়। প্রশ্ন একটাই... বাংলাদেশের এই ঔদ্ধত্যের উৎস কোথায়?

০৪.
২০২৫ সাল। ১লা আগস্ট। রাত ১২টা এক মিনিট। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের গোপন কক্ষে আলাপরত দুই সাহসী লৌহ মানব। শান্তির দূত। পৃথিবীর সত্যিকারের সুহৃদ।
-ডক্টর এখন কী করা যায় আর তো মাত্র পাঁচ ঘন্টা সময় আছে হাতে। যুদ্ধটা শুরু হোক আমি এটা চাইনা।
-মি.প্রেসিডেন্ট আমিও চাইনা যুদ্ধ হোক। মানুষের রক্ত আমাকে কাঁদায়। আপনি আমাকে অনুমতি দিন। যুদ্ধবাজদের যুদ্ধসাধ চিরদিনের মত মিটে যাবে।
-তো তাই হোক ডক্টর! আমি অপেক্ষায় থাকবো মজা দেখার!

পরদিন সকাল ৪টা থেকে পৃথিবীর সব কটি টিভি চ্যানাল লাইভ আপডেট দেখাচ্ছে যুদ্ধ যাত্রার। মার্কিনিরা এগিয়ে আসছে উপসাগরীয় অঞ্চলের দিকে। সাথে তাদের মিত্ররা। অপর দিকে রাশিয়া ও তার মিত্ররা। মানুষ উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা নিয়ে প্রহর গুনছে।

কী হয়! কী হয়!! কেউ আবার ভাবছে বাংলাদেশের খবর আছে! মাত্র একঘন্টা চলল মিডিয়ার হৈ হুল্লোড়! সব কিছু থেমে গেল। থেমে গেল যুদ্ধ যুদ্ধ সাজ! থেমে গেল মিডিয়ার সব লাইভ আপডেট। আচানক এক আঘাতে যেন সব কিংকর্তব্যবিমূঢ়। মুখের ভাষারাও স্তব্ধ নিরব। থমথমে এক পবিবেশ। সারা জগৎজুড়ে যেন স্তব্ধতার কোন এক অধ্যাদেশে থেমে গেছে সব।

০৫.
আরও ত্রিশ মিনিট পর। খবর হয়, পৃথিবীর সব সুপার পাওয়ার এতদিন যা নিয়ে গর্ব করত; ধরাকে সরা জ্ঞান করত যার আশ্রয়ে, সেই পরমানু অস্ত্র আর জীবানু অস্ত্রগুলোতে ছাই ছাড়া আর কিছু নেই। সবার মুখগুলো অসহায় পান্ডুর!

ঠিক এই মূহুর্তে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের সংবাদ ব্রিফিং_ আজকের পর থেকে যারাই অস্ত্র আর সামরিক শক্তির গরম দেখাবে তাদের পরিণতি এমনই হবে। আমরা এন্টি-নিউক্লিয়ার ক্ষমতার যেটুকো অর্জন করেছি তার একটা ঝলক দেখালাম মাত্র!

শান্তির এক পশলা উদাস হাওয়ার ঝাপটার আড়াল নিল পৃথিবীর সব শক্তি আর ঔদ্ধত্য...





ছবিঃ বাই মোবাইল...
৬২টি মন্তব্য ৬২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×