somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অঙ্গুলিলব্ধ দুনিয়ায় : সামু স্বতন্ত্র ( আমার মতে)

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




অঙ্গুলি হেলনে দুনিয়া হেলিয়ে দেওয়া যায়! অনন্ত বিশ্বের মাঝে একটু জায়গা পাওয়া যায়। কিভাবে? সেটা আমরা সবাই জানি। যে কোনো সোশ্যাল সাইটে অর্থাৎ মানুষের সাথে মানুষের যোগসূত্র যেখানে গড়ে উঠছে ! সেখানে বিলুপ্ত প্রজাতির অস্তিত্ব সংকট থেকে গরমে সরবত না ডাবের জল কোনটা পান করা উচিত সে সম্পর্কে যথোপযুক্ত জ্ঞান পেয়ে যাবেন। তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয়কে বিশেষ করা যায় এখানে। কারা করেন? সেলেব থেকে সাধারণ। যে কেউ। হুম! এরমধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফেবুতে যদি আপনার এক্যাউন্ট থাকে তবে আপনি যে কাউকে হিরো বানাতে পারেন। যেমন ক্রিকেট আপনি জীবনে খেলুন বা না খেলুন , রাজনীতি নিয়ে আপনার মাথা ব্যথা থাকুক বা না থাকুক, সেসব ইস্যু নিয়ে কোনো কিছু দেখলে, তার লাইক কমেন্টের ট্রেন্ড দেখুন । নিজেও সেটাকে ফলো করলেই, আপনিও কাউকে হিরো বা জিরো বানাতে পারবেন।এমনি তেই মানুষ এখন নার্সিসিস্টিক বা স্বার্থ কেন্দ্রিক! এই সাইটগুলোর দৌলতে এখন তারা ' আমায় দেখুন ' সিন্ড্রোমএ আক্রান্ত! তা সে আমি যেমনই লাগি না কেন! লাইক দিন এবং লাইক নিন।
লাইকের জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত! লাইক চাই। যেভাবে হোক। ঠিক একারণেই বোধহয় সামুর লেখা কপি হয়! আর এজন্যই সামুকে স্বতন্ত্রও বলা যায়। কারণ এখানকার বেশীরভাগ লেখাই মৌলিক। ব্যতিক্রম আছে। সেকথা পরে বলছি।
প্রথমে মৌলিকত্বের কথা। শুধু লেখা না কমেন্ট ও লাইকও খুব মৌলিক! মানে আস্থা রাখতে পারেন! আপনি অন্যকে লাইক করলেই যে আপনিও পাবেন তেমনটা আদৌ নয়। পুরোটাই নির্ভর করছে লেখার মানের উপর । একটু ব্যক্তিগত উদাহরণ দেই! সুমন কর। ভালো কবি। বেশী পোষ্ট করেন না। যেটা করেন সে লেখাটা মাস্টার পিস হয়। তবে প্রায় সব ব্লগারের লেখাতে কমেন্ট করেন। যদিও ছোটো। কিন্তু সঠিক! আমি নিজে তো প্রথম দিকে তো শুধু ' মোটামুটি ' পেতাম। আর প্রতিউত্তরএ লিখতাম ' চেষ্টা করবো। ' এদিকে কি যে চেষ্টা করবো তা নিজেই জানি না। যেদিন ওনার কাছ থেকে প্রথম লাইক পেলাম, মনে হোলো কিছু একটা বোধহয় লিখেছি। অঙ্কে আমার সারাজীবন ভয়। তো সেই অঙ্কএ গুড পেলে যেমন লাগত অনেকটা সেরকম। তবে এখানে বেশীরভাগ ই কঠিন মনের। বিদ্রোহী ভৃগুর কথাই ধরুন। ওনার কবিতা চোখ সিক্ত করার ক্ষমতা রাখে। ভাববেন কবি খুব ই কোমল হৃদয়ের। কিন্তু কমেন্ট লেখা অনুযায়ী পাবেন। কাব্যিক মন্তব্য পেতে পারেন। আর না হলে ? নাহ। খুব একটা ঘাবড়াবেন না। উনি কাউকে ব্যাড বলেন না! ' নট সো গুড ' বলেন, আর কি! রূপক বিধৌত সাধুর লেখা যারা পড়েছেন তাঁরা জানেন যে উনি কি অসাধারণ লেখক । একটু অভিমান নিয়েই হয়ত, সামুতে লেখা থেকে বিরত আছেন। আশা করব উনি ফিরে আসুন। ওনার কাছ থেকে ভালো শোনা কঠিন। তবে পুরস্কার যখন দেন তখন প্রাপ্য থেকে বেশীই দেন। একবার জেব উন নিসাকে নিয়ে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম। একে আমার লেখার করুন দশা, তারমধ্যে সেটা ছিল বেশ বড়ো পোষ্ট। তো উনি উনি প্রথমে পড়ে মন্তব্য করে গেলেন । তারপর আবার পরে এসে বললেন যে ' এটা না প্রিয়তে রাখলে আমার গোনাহ হত ' । সেদিন আক্ষরিক অর্থে আমার চোখে জল এসেছিল। এই সম্মানটা আর কোথাও পাবেন কি? এই প্রসঙ্গে ড আলীর কথা বলতেই হয়। উনি যেভাবে প্রত্যেকের লেখা বিশ্লেষণ করেন সেটা বলে বোঝানোর দরকার নেই ! শায়মাদি সবাইকে যেভাবে উৎসাহ দেন সেটা তো সবাই জানেনই! আর একজনের কথা বলি, এহসান সাবির। খুব ভালো লেখেন। এখন যদিও অনিয়মিত! তিনি কিভাবে উৎসাহ দেন সেটা আমার অভিঙ্গতা থেকে বলি! উনি আমার প্রতি পোষ্টে মন্তব্য করেন। কোনো গ্যাপ না দিয়ে ! মানে, আগেরবার এসে শেষ যেটায় মন্তব্য করেছিলেন, সেটা থেকে কারেন্ট পোষ্ট পর্যন্ত কমেন্ট করেন। জীবনে এতো গুরুত্ব আর কোথাও পাইনি। খায়রুল আহসান স্যর তো লেখকের সাথে সে লেখার মন্তব্যকারীদের ও প্রেরণা দেন। আর জী এস স্যরএর লাইক না পেয়ে যদি দু:খ হয় তবে তা উপশম হয় ওনার ছোট্ট চিঠিতে।
আরণ্যক বা জেন শুধু ভালো লেখকই নন, ওনারা বিশ্ব সাহিত্য নিয়ে চর্চা করেন। তাই ওনাদের মন্তব্যের গুরুত্ব অপরিসীম ।
চাঁদ গাজী এতো নিয়মিত যে সেটা শিক্ষণীয়! আবার নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন নতুন লিখছেন। ওনার ডেডিকেশনটা শেখবার মতো। আর গেম চেঞ্জার যেভাবে সবার জন্য স্কোরশীট বানান, তারজন্য ' হ্যাটস অফ টু হিম ' বললে ও কম বলা হয়।
এখানে একে অন্যকে সাহায্য করেই থাকেন। এক্ষেত্রে সবার আগে এগিয়ে আসেন সাহসী সন্তান! উনি যে আমায় কতো টেকনিক্যল হেল্প করেছেন তা পরিসংখ্যান দিয়ে বলার। এরকম উনি সবাইকেই করে থাকেন। একবার আমি ব্লগে একটু অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছিলাম, তখন সাহসী সহ আরো কয়েকজন সহ ব্লগার যেভাবে আমাকে সাপোর্ট করেছিলেন, তারজন্য আমি তাঁদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।
আবার হাসান মাহবুব বা গিয়াস উদ্দিন লিটন জী প্রতিষ্ঠিত লেখক সরণীতে প্রবেশ করেছেন। কিন্তু সামুতে একই রকম আছেন। এই বিনম্রতাও আমাদের শেখায়।

ব্লগ তো অনেক আছে। তাতে লিখে কে কেমন ফিড ব্যাক পান আমি ঠিক বলতে পারবো না! কারণ আমি আর কোথাও লিখি না। কিন্তু সামুর মতো আত্মিকতা আর কোথাও পাবেন না সেটা বলতেই পারি!

তা বলে ভাববেন না যে এখানে কোনো উৎপাত নেই। আছে। তবে তা চিৎপাতও হয়।
কিছু বাঙালীর সাহিত্যএর অনুরাগটা রোগে পরিনত হয়েছে। সাহিত্য সম্পর্কে নিজ ধারনা লব্ধ জ্ঞান বিতরণ করে কেউ কেউ নিজেকে এলিটিস্ট সাহিত্য বোদ্ধা হিসাবে প্রমাণ করতে চান। এখানে সেরকম কয়েকজনের দেখা মিলবে। কয়েকদিন আগে অকবিতা নিয়ে একজন পোষ্ট দিয়েছিলেন।যদিও বিলিয়ার তার যোগ্য জবাব দিয়েছেন পাল্টা পোষ্ট দিয়ে।

এখন ব্লগে কপি করা নিয়ে খুব হই চই হচ্ছে! জানেন কি দিশেহারা রাজপুত্রের একটা সামুর পোষ্ট সামুতেই কপি হয়েছিল? যিনি কাজটা করেছিলেন পরে তিনি গরুর আকাশে ওড়ার গল্প শুনিয়ে কথাটা স্বীকার করেছিলেন। আর রাজপুত্র আবার খুব মহান। তাই সেটা মেনে নেন।
কপি কেনো হয়? আমিত্বের নেশায় কি? যেটা খুব সহজেই ভারচুয়ালি পাওয়া যায়। মানে আমি নাচতে, গাইতে, লিখতে যা কিছুই পারি না কেনো তার স্বীকৃতির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। শুধু আত্মপ্রচার চালাতে পারলেই হোলো। কিন্তু সামুর লেখাই কেনো? হয়ত তারা ভাবে এখানকার লেখকরা এখনো ততটা পরিচিত নন। তারা ভুলে যান তাঁরা ও মাত্র কয়েক হাজারে সীমাবদ্ধ। সেকারণেই কিছুদিন আগে একজন সামুর ব্লগার শুভ দাসগুপ্তর একটা কবিতা দু একটা শব্দ এদিক ওদিক করে পোষ্ট করেছেন! তাকে নির্বোধ না অতি চালাক কি বলা যায়? আমি এখানে ওনা র কথা উল্লেখ করতাম না। কিন্তু ওই পোষ্টে সামুর অনেক ভালো লেখক মন্তব্য করেছিলেন। বাংলা ভাষার সাহিত্য সম্ভার এতো বেশী যে পাঠকের পক্ষে সব পড়া সম্ভব নয়।যেমন - আমাকে জীবানন্দের একটু অপরিচিত কোট দিলে
বলতে পারবো না কবির নাম। তবে পাঠকের সাথে এই তঞ্চকতা সহ্য হোলো না!

তাই শেষে তাঁদের উদ্দেশ্যে কয়েকটা কথা বলি -
আমি নিজে সাহিত্যের ব্যকরণ জানি না। পথের ধূলায় শব্দ খুঁজে বেড়াই। আজ, এমুহূর্তে মারা গেলে, কাল ইতিহাস হবো না। কিন্তু সামুতে এমন অনেকে আছেন যাঁরা একদিন ঠিক ইতিহাস সৃষ্টি করবেন। তাঁদের সাথে একই প্ল্যাটফর্ম শেয়ার করছি, এটা ভাবতে ভালো লাগে।

তাই সামুর সব সহব্লগারদের অনেক ব্যবহৃত ' গীতা 'র একটা শ্লোক আমার মতো করে বলি নিজের কাজটা করে যান। নিয়মিত লিখুন।এখানে সকলের নাম উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি । তবে এখানে প্রত্যেকেই স্বমহীমায় উজ্জ্বল । সেকারণে অনুরোধটা আমার সব সহব্লগাদের প্রতিই রইলো । সবাই মিলে সামুর লেখার মান ধরে রাখার দায়িত্ব নেওয়াটা শুরু হোক ।



সবাইকে নববর্ষের অনেক শুভেচ্ছা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৩০
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×