somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সে, তুমি, আমি -- আমরা

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সে

ছেলেটা নাকি পড়াশোনাতে বেশ ছিলো,
কবিতা আর গানেও সুরের রেশ ছিলো,
সেই যে এক নতুন প্রাণের দেশ ছিলো,
সেই খানেতেই থাকতো সে,
ফোয়ারা হাসির তুলত যে,
ফেসবুকেতে সেলফি দেবার পাগলামি তার ছিল বেশ,
আব্বা তাকে বকা দিলেও মায়ের আদর পেতই বেশ।
এমনি করেই কাটছিলো দিন দিনগুনে,
প্রেমের প্রহর আসত যেত তাল গুনে,
জানি না কোন আষাঢ় এলো সেই কালে
নৌকা যেমন আঁধার রাতে পাল তুলে
কোন পথে যায় নিরুদ্দেশে, পথ ভুলে,
এমনি করেই হারিয়ে গেল হাসির রেশ,
যুগের পাগল ছেলেটা হল নিরুদ্দেশ।
বাবা খোঁজেন সবকটা দিক, কাঁদেন মা।
ধোঁয়ার মতোই হারিয়ে গেল ছেলেটা,
যেন সে আর কোনোকালে ছিল-ই না।
কেঁদে কেঁদে অশ্রু যখন প্রায় হারা
টিভির খবর ছেলেটা হয়েই দিল সাড়া।
মায়ের রঙিন স্বপ্নগুলো রুধির হয়ে
কান্না হয়ে বন্যা হয়ে গেল বয়ে,
ছেলের ছোড়া বুলেট গুলো
বেধেনি তো লোকের বুক
মিটিয়ে দিলো মায়ের সকল গর্ভ সুখ।
কান্না ছিলো চোখ ছুঁয়ে তার অভিমানে
হদ্দ বোকা ছেলেটা কি আজ জানে ?
বলবে লোকে হাসবে লোকে
মায়ের চোখে জল দেখে,
‘কুমির অশ্রু দেখাতে হয়
লোকে তাই দেখে।’
একটা গুলি ছিনিয়ে নিল
মায়ের চোখের অশ্রুজল
সন্তানকে ভালোবাসার এই তো ফল!



তুমি

তুমি তখন রাস্তার মোড়ে,
চাঞ্চল্য গোটা শহরটিতে,
গোটা দেশটিতেও।
চারিদিকে ভয়ার্ত চাহনি,
কি ঘটেছে পরিষ্কার ভাবে
জানা যাচ্ছে না কিছুতেই।
তবে আরো কিছু যে একটা ঘটতে চলেছে
এটা তুমি বেশ পরিস্কার বুঝতে পারছ,
চারিদিকে মানুষের ছোটাছুটি,
তবে মিলিটারিদের বেশি।
অদম্য কৌতূহল চেপে
কিম্বা অদম্য কৌতূহল মেটাতে
তাদের পাশে পাশে চলেছ তুমিও,
বিনা পয়সায় একটা সিনেমাটোগ্রাফি বিনোদন।
একটা গুলি এসে তোমার মাথাতেও লাগতে পারে,
একটা গ্রেনেড এসে তোমাকে এমন ঝাঁকুনি দিয়ে যেতে পারে
যাতে করে তোমাকে আর চেনবার অবকাশ টুকুও থাকবে না।
তুমি বীর, মরতে ভয় পাচ্ছ না- এমনটা নয়
তবে ঝুঁকিটা নিচ্ছ অদম্য কৌতূহলে,
কৌতূহল তোমাকে ঝুঁকিটা নেওয়াচ্ছে,
বাড়িতে ফিরে এর জন্যে তোমাকে বৌয়ের কাছে
বিস্তর গাল শুনতে হবে,
তবু তুমি পাত্তা দিচ্ছ না।
আসলে তুমি ঘোরের মধ্যে,
পূর্বাপর কিছু না ভেবেই
মাথা বাঁচিয়ে শরীর বাঁচিয়ে
মনের নেশা চোখের নেশা মিটিয়ে নিচ্ছ
গোলাগুলির তুমুল চিৎকারে।
রুদ্ধশ্বাস মুহূর্ত গুলো তোমার চোখের সামনে
কেমন ভাবে কাটছে,
যখন তুমি সুস্থতায় ফিরবে-
পারবে না দিতে তার বিন্দুমাত্র বিবরণ।
কিন্তু মস্তিষ্কের হার্ড ডিস্কে সেটা অক্ষত।
শুধু ওভারলোডে হ্যাঙ করে গেছে তাই।



আমি

মহা সমারোহ, তাই অফিসেতে যাই নি,
চুমুক চায়ের কাপে, তবু নাস্তাটা খাই নি।
চ্যানেল গুলো সব মহা ধড়িবাজ
কত কিছু দেখবার, তবু দেখালো না আজ।
অত দূর থেকে যদি ছবি তোলো ভাই
কিছু কিগো দেখা যায় , কিছু দেখা যায়?
ধোঁয়া ধোঁয়া ভাসা ভাসা ভিডিও র হাল
চোখের কষ্ট, আর করে নাজেহাল।
তুমি নাকি রিপোর্টার? সংবাদ পেশা?
করছ কেন বা তুমি বাঁচবার আশা?
কাছে যাও, ছবি তোলো, গুলি লাগে তাও
তবেই না টিআরপি, বাড়বে যে ভাও।
অফিসটা ছুটি নেওয়া ফাউ হলো ভাই।
এদের ঘটেতে কিছু স্পেশালিটি নাই।



আমরা

এই আমাদের দেশ, এই আমাদের মা,
মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নিয়ে আবার ভূমিষ্ঠ হয়েছি এই মাটিতে,
আমদেরকে দাবিয়ে রাখার কম চেষ্টাতো হয়নি এ যাবৎ পর্যন্ত,
পেরেছে কি কেউ ? আমরা কি পারতে দিয়েছি তাদেরকে?
আমাদের ভালোবাসা বিশ্ব ছোঁয়া,
দেশের প্রতি ভালোবাসা
মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা।
এ কিন্তু কিংবদন্তী নয় , এ হলো ইতিহাস।
সময়ে সময়ে রাজনীতির লোকেদের রং বদলায়,
কিন্তু মানুষতো একই থাকে।
আমরা সরল, বিশ্বাস করি সহজে,
কিন্তু আমরা বোকা নই,
ধর্ম আমাদের শক্তি,
ধর্ম আমাদের ধর্মান্ধতা নয়।
ভালোবাসা দিয়ে আমাদের জয় করা যায়
উন্মত্ততা দিয়ে আমাদের ক্ষয় করা যায় না।
আমরাই সাহস রাখি- পুত্র দেশ হন্তারক হ’লে
তার মৃতদেহটাকে ন্যূনতম মমত্ব না দেখানোর জন্য।
সুতরাং খুব সাবধান।

*************************************************************************************************************************

বিঃ দ্রঃ এই কবিতা আমি উৎসর্গ করছি আমার প্রিয় ব্লগার আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম কে।

গতকাল সকালেই তাঁর কবিতাঃ সে, তুমি ও আমি দেখেই এই কবিতার জন্ম হয়েছিল আমার মাথায়। তাই এই কবিতার পুরো কৃতিত্ব আমার প্রিয় ব্লগার আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলামের।




সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৩:২৪
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×