অণুগল্প
গাছ মানুষ
স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া
রাস্তায় উৎকট গাড়ির হর্ণ, মানুষের গিজ গিজ, সবসময় বাজারের মতো লাগে ঢাকার ফুটপাতকে। আর বাড়িকে মনে হয় সিনেমা হল। সারাদিন শুধু জি বাংলা আর স্টার জলসা। নাটক গান আর হৈ হল্লা। জীবনের মানে ওখানে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অর্থ চিন্তা, খাওয়ার চিন্তা, বাঁচার চিন্তা এই সব চিন্তা থেকে নিস্তার পেতে পবিত্র গাছেই বাস করবে বলে সিদ্ধান্ত নিল। যেই চিন্তা সেই মতো কাজ। নিজেদের বাসা থেকে বাড়ির দিকে রওনা দিল পবিত্র। যখন গ্রামে পৌঁছল পবিত্র তখন তার মা বাবা তো আশ্চর্য তাকে দেখে, কর্পোরেট অফিসের চাকরি ছেড়ে অসময়ে বাড়িতে! মা জিজ্ঞাসা করলো, কি বাবা হঠাৎ গ্রামে? পবিত্র জবাবে বলে: মা আমার আর শহর ভালো লাগছে না ইদানিং, চারিদিকে খালি শব্দ শব্দ আর ঝগড়া, চিন্তা, টেনশন। কত আর ভালো লাগে বলো। এখানে সুন্দর মার্কেটের চাইতে হাসপাতাল বেশী। যেন মনে হয়, ঢাকার সব মানুষ এখন অসুস্থ। এত এত হাসপাতাল, প্রতিদিন মরছে, প্রতিদিন কোন না কোন রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। আর ভাল্লাগে না মা। একটু শান্তি চাই। তাই এখানে। আর একটা উদ্দেশ্য আছে। একটি বড় গাছে একটি বাসা বানাব। সেই বাসায় থাকবো। মানুষের সঙ্গে নীচে আর নামবো না। কারো সঙ্গে আপাতত একমাস কথা বলবো না। তোমরা খালি আমার জন্য খাবার দাবার ওখানে পাঠিয়ে দেবে। আর আমি বইপত্র নিয়ে এসেছি ওখানে পড়বো, ঘুমাবো, গান শুনবো, যখন যা ভালো লাগে করবো। এখানে শব্দ দুষণ নেই, কি শান্তির পরিবেশ, আহা ঢাকায় টাকা আছে কিন্তু শান্তি তো নেই। মা বাবা ছেলের কথা শুনে তো হতবাক! কিন্ত পবিত্র তার কথা মতোই কাজ করতে লেগে গেল।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৩