somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এসো রাজনীতি করি

১১ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(কথ্য-প্রমিত মিশ্রণ-মার্জনা কাম্য)

আমার এই লেখার উদ্দেশ্য হইলো সক্রিয় রাজনীতিতে আসার যৌক্তিকতা আর উপায় নিয়া প্রবাসী একটা ক্ষুদ্র অংশের ভাবনা তুইলা ধরা। একইসাথে বিভিন্ন ঘরানার ব্লগারদের ভাবনাগুলা জাইনা নেয়া। আমি বিভিন্ন সময় ইনায়া বিনায়া একটা কথা কইতে চাইছি যে, বাংলাদেশের বর্তমান ব্লগ প্রজন্মের (সাইনের ব্লগারদের দেখে আমি যেটা বিশ্বাস করি) মেধা, যোগ্যতা, পারদর্শিতা, দেশপ্রেম, মনোবল দেইখা আমি প্রতিনিয়ত এদের প্রেমে পড়ি। একেকটা সোনার ছেলে, মেয়ে। এরা দেশরে আমূল বদলায়া ফেলতে পারি- এইটা আমার একেবারে বিশ্বাসের কথা। ব্লগে যে পরিমাণ ধী-শক্তির পরিচয় আমি এদের পাই, এই আশা করতে আমার একটুও ভুল হয়না। আমি খুব করে চাই যে এখান থেকে অনেকগুলা ছেলেমেয়ে (বয়স ১৮-৮০ যাই হোক) ক্ষমতার বলয়ে এবং এজন্যে রাজনীতিতে আসুক।

জাপানে এসে ১/১১ এর পর আমি দেশজ রাজনীতি নিয়ে যত আলোচনার সম্মুখীন (সামনে পড়ে যাওয়া আরকি) হইছি, বিগত কোন সরকারের আমলে এতটা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করিনাই। কারণ তখনো আমার বিবাহ হয় নাই আর আমার বরেরও এম.পি. হওয়ার অলীক স্বপ্ন বাস্তবায়নের কোন উপলক্ষ্য তৈয়ার হয়নাই। হালের 'চেঞ্জ' এর নায়ক ব্যাপারটার এক ঘোরতর গতি প্রদান করেছেন। এক ওবামা যদি শূন্য থেকে আইজ রাজার আসনে বসতে পারে তাইলে সেদিনের মাসুম কেনো বাংলাদেশের এমপি, পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট-প্রধান মন্ত্রী হইতে পারবোনা? আমি না-তে নাই, তবে হ্যাঁ তেও নাই তা বলা যায়না। এইখানে ছেলেদের আড্ডায় রাজনীতি ১০০% জায়গা নিয়া আছে, বোধকরি সবখানেই। আমরা ভাবীরা যখন অপি করিমের আসন্ন বিবাহবিচ্ছেদের চিন্তায় চুকচুক শব্দ করতেছি, ক্লোজআপ আর ক্ষুদে গানরাজ নিয়া ঘর ফাটাইতেছি, গোলাপজাম আর প্যাড়া সন্দেশের রেসিপি নিয়া জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় বোতল (বিদেশী কুক)খালি করতেছি, ভাইরা তখন LIVE সংবাদ পর্যালোচনায় রত। ইউনির রিসার্চ ল্যাবে গিয়া প্রোফেসরের চোখ ফাঁকি দিয়া মিনিটে মিনিটে যারা রাজনীতির আপডেট ওয়েবে খোঁজে তারা আমাদেরই জামাই, ভাই-বেরাদর। অধিক বাংগালী পরিবেষ্টিত প্রবাস জীবনে আড্ডাই যেখানে বাঁচার রসদ যোগায়, সেখানে রাজনীতি আসব, এইটা ভাবীকূল মাইনা নিছি।

বুদ্ধদেব কপি মারি, 'দোতলা মাঝে-মাঝে উতলা হয়, একতলা ঘন-ঘন নিঃশ্বাস ফেলে।' আমাদের ড্রইংরুম রাজনৈতিক উত্তাপে তাইতা ওঠে, আমরা বেডরুম থাইকা ‘কী শুরু করলা তোমরা?’ বইলা হাঁক পাড়ি আর স্বজাতির দিকে চোখ টিপ্পা প্রশ্রয়ের আহ্লাদী হাসি দেই। জামাইকূল আমাদের বোঝাইতে সমর্থ হইছে যে, তারা সক্রিয় রাজনীতিতে আসার ব্যাপারে চরমভাবে চিন্তাভাবনা করতেছে। নাহ, আর হেলাফেলা নয়, নয় খালি ফাঁকা বুলি। উইকএন্ডের আড্ডার সুবাদে আমাদের ঘরে ঘরেই কিছু প্রতিশ্রুতিশীল রাজনীতিকের পয়দা হইতেছে চোখের সামনে দিয়া। লাগাতার আলোচনা পর্যালোচনায় সহস্র ঘন্টা ব্যয় শেষে আমরা একটা উপসংহারেই পৌঁছাইতে পারছি যে, মাঠে নামতে হইব। সোজা বাংলায় ইলেকশন করতে হইব। যত ছাড়ই দেয়া লাগুক, যত বছর পরেই হোক, যত ভোটেই হারার সম্ভাবনা থাকুক, মেইনস্ট্রিম রাজনীতিতে না গেলে হাসিনা-খালেদার গুষ্ঠি উদ্ধার একটা আকেয়ামত ফেনোমেনন হইয়া থাকব। যদি এখনো ‘দেশ নিয়ে ভাবি’ বলার মত ‘পবিত্র ভন্ডামি’টারে ‘বনের মোষ তাড়াইন্না’ শেইপ-এ নেয়ার ন্যূনতম সদিচ্ছাও লালন কইরা থাকি, তাইলে খোলস ছাড়তে হইব। চা-সিংগারা ভক্ষণের সহযোগী না কইরা ‘দেশসেবা’-রে একটা রিয়েল লাইফ প্র্যাকটিসে আনতে হইলে প্রচলিত রাজনীতির ধারায় হাত মিলাইতে হইব। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিরে অচ্ছুত, বিষাক্ত, আবর্জনাময় বইলা নাক সিঁটকানোর ধারণাটারে বদলাইতে হইব।

ওবামা হইতে চাই বললেই তো আর হইলনা। রাস্তা নিয়া ভাবার শুরুতে কিলবিল করে কয়েকটা প্রশ্ন আসে। আমাদের মত ছা-পোষা (ছা নাই; ‘গোবেচারা’ অধিক উপযুক্ত) ছাত্রসমাজ যারা অন্যদেশের দয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাইছে, দেশে যাদের বেশীরভাগেরই কোন চাকরী নাই, পলিটিক্সের সাথে সম্পৃক্ততা নাই, ব্যাংক-ব্যালেন্স নাই যা দিয়া ক্ষমতার মূলধারায় যাওয়ার ব্যাপারে প্রতিদ্বন্দিতায় অবতীর্ণ হওয়ার সাহস করতে পারে, কিন্তু যারা স্বদেশে ফিরা আসার ব্যাপারে সংকল্পবদ্ধ, যারা কোন না কোনভাবে দেশের একটা কিছুতে অবদান রাখতে চায়, যারা বিশ্বাস করে যে কাঠামোর ভিতরে থাইকাই ‘চেঞ্জ’ আনতে হইব - তাদের তবে কী উপায়? প্রথম প্রশ্নটা আসে প্রতিনিধিত্বের ভিত্তি নিয়া। একটা দলে ভিড়তে হইব, নাকি? যদি কোন দলরেই নিজের মতাদর্শের পৃষ্ঠপোষকতা করতে দিতে মন না চায়, তাইলে পাব্লিকের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা তৈয়ারের রাস্তাটা কী উপায়ে হইবে? আমজনতা ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড় নয়’ এইটারে মনেপ্রাণে যদি মাইনা নিতে পারে তাইলে এই বিষয়টা আমলে নেয়ার কোন কারণ নাই। কিন্তু সে অবস্থা জোরালোভাবে গ্রহণীয় হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রাথমিক করণীয় তাইলে কী হইব?

ধরে নিলাম প্ল্যাটফর্মের বিষয়টা সুরাহা হইছে। এখন প্রশ্ন আসে, ভুঁইফোড় একজন বিদেশ ফেরত লোকরে মাইনষে কেন প্রতিনিধি রূপে দেখতে চাইবো? ওকে, চাইবো কারণ এই লোক আসলেই এলাকার ভালো চায়। আচ্ছা, তাইলে নিজের পাড়া-মহল্লা-গ্রামে বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের ইস্যু দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কয়েকটা প্রস্তাব আসছে আমাদের মাঝ থেকেই যার মূল কথা হলো- ডিগ্রী ফিগ্রী নিয়া, কিছু পয়সা কামাইয়া, সিটিজেনশিপ আর ভালো চাকরির লোভ দু’পায়ে দু’হাতে ছুঁইড়া দিয়া এলাকায় ফিরতে হইব সমর্থনের ক্ষেত্রটা তৈরীর জন্য। নিজের অর্থনৈতিক মেরদণ্ড মোটাতাজাকরণ কিন্তু এইখানে বিশাল গুরুত্ব রাখে। কাজেই সে জায়গাটা একেবারে হেলাফেলা করা যাবেনা।

আর লিখতে ইচ্ছা করতাছেনা। আসলে লিখার কিছু নাই। আমি শুধু একটা আলোচনা শুরু কইরা দিতে চাইছিলাম। আশা রাখি নিজের কিছু প্রশ্নের উত্তর জাইনা নিতে পারব কমেন্ট থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৩৯
৪৩টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×