somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মীয় উপনিবেশ পাকিস্তান ও মিথ্যাবাদিতা

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধর্মের নামে সৃষ্ট একটি দেশ যখন ধর্মকে ব্যবহার করে ঔপনিবেশিক কায়দায় শাসন ও শোষণ চালায় তখন সেটি হয়ে ওঠে ‘ধর্মীয় উপনিবেশ’। স্বাভাবিকভাবেই তাদের এই অবস্থান টিকিয়ে রাখতে হলে নিতে হয় মিথ্যার আশ্রয়। পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও ঠিক সে রকমটিই ঘটেছে। পাকিস্তানের ‘জিন্নাহ্ ইউনিভার্সিটি অব উইমেন’-এর প্রফেসর শাহিদা কাজী বলছেন, ‘ইতিহাস এমন একটি বিষয় যেটিকে পাকিস্তানের কেউই আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করেননি। ফলে, বিষয়টি এমনভাবে বিকৃত হয়েছে যে অনেক মিথ্যা কথা আমাদের সামগ্রিক চেতনার অংশ হয়ে গিয়েছে।’ ((History is a discipline that has never been taken seriously by anyone in Pakistan. As a result, the subject has been distorted in such a way that many a fabricated tale has become part of our collective consciousness.) মিথ্যাবাদিতার কারণেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে মদদ দাতা হিসেবে ইতোমধ্যেই পাকিস্তান কুখ্যাতি অর্জন করেছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি আবরার আহমেদ খান নামক ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তাকে মূলত জঙ্গি তৎপরতায় মদদ দেয়ার লক্ষ্যে সন্দেহজনক আচরণের কারণে ঢাকার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। পাকিস্তানের এই ক‚টনীতিকের কাছ থেকে পুলিশ বেশ কিছু ভারতীয় মুদ্রা উদ্ধার করেছে। এর আগে ফারিনা আরশাদ নামের একজন পাকিস্তানি ক‚টনীতিককে জঙ্গিদের অর্থায়নের কারণে বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। গত ১ জানুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনীর পশ্চিম কমান্ডের অধীনে পাঠানকোট বিমান বাহিনী ঘাঁটিতে পাকিস্তানের মদদপুষ্ট জঙ্গিদের আক্রমণে বেশ কিছু মানুষ অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। কিছুদিন আগে সৌদি আরবের ‘ডাইরেক্টরেট অব ইন্টেলিজেন্স এন্ড ইনভেস্টিগেশন’ সৌদি আরবে বসবাসরত দুইজন বাংলাদেশি এবং দুইজন ভারতীয়কে হত্যা করার দায়ে আসাদ খান (২৪) এবং আদম খান (২২) নামের দুইজন পাকিস্তানিকে গ্রেপ্তার করেছে। এমন অসংখ্য ঘটনা উল্লেখ করা যাবে যাতে স্পষ্ট হয় যে, পাকিস্তানের সরকার সরাসরিভাবে অথবা পরোক্ষভাবে জঙ্গিদের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে হামলা করে থাকে।
১৯৯৩ সালের ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ে বিস্ফোরণের প্রধান হোতা দাউদ ইব্রাহিম বিশ্বের ১০ জন মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীদের মধ্যে অন্যতম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল রিপোর্ট ২০১০-এ বলা হয়েছে ‘পাকিস্তানের আইএসআই-এর সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের ডি কোম্পানির কৌশলগত সম্পর্ক আছে’। মিচেল বি. ওয়ালেরস্টেইন তার ‘কম্ব্যাটিং টেরোরিজম : স্ট্রাটেজিস এন্ড অ্যাপ্রোচেস’ শীর্ষক গবেষণায় বলছেন- পালানোর পর থেকে দাউদ ইব্রাহিমকে পাকিস্তানের করাচিতেই দেখা গিয়েছে। সে করাচিতেই থাকে এমন কথা ভারতও বলছে। অথচ পাকিস্তান তা বরাবরই অস্বীকার করছে। গত ২০ জানুয়ারি পাকিস্তানের পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বাচা খান বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ যেখানে, পাকিস্তানও সেখানে কোনো না কোনোভাবে আছে! এটিই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ কবলিত বর্তমান দক্ষিণ এশিয়া তথা সমগ্র বিশ্বের বাস্তবতা !
পাকিস্তানের পাখতুনখাওয়া প্রদেশের চরসাড্ডাস্থ বাচা খান বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২০ জানুয়ারি সন্ত্রাসী আক্রমণ এবং প্রায় ৩০ জনের নিহত হওয়ার ঘটনা বিশ্ববাসীর নজরে এসেছে। সন্ত্রাসী আক্রমণে মানুষ হত্যা করা পাকিস্তানের জন্য একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কিন্তু খান আবদুল গাফ্ফার খান ওরফে বাচা খানের (৬ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯০- ২০ জানুয়ারি, ১৯৮৮) নামটি উপমহাদেশই নয় সমগ্র বিশ্বে অহিংস নীতির সাধক হিসেবে সুপরিচিত। তাকে বলা হতো ‘সীমান্ত গান্ধী’। সত্যের সাধক ছিলেন তিনি। যখন বাচা খান বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী আক্রমণ হয়েছিল তখন সেখানে বাচা খানের মৃত্যুবার্ষিকী পালনের আয়োজন চলছিল। এই নামটি আমাদের দেশে বাদশা খান’ হিসেবেও বলা হয়ে থাকে। মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে বাচা খান বা বাদশা খানের ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তিনি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে ‘খোদাই খিদমতগার’ আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তার এই আন্দোলন সে সময়ের পাখতুনখাওয়ার মানুষদেরকে অহিংস পথে স্বাধীনতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ করেছিল। সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই নেতার নামানুসারেই ২০১২ সালে পাখতুনখাওয়ার তৎকালীন প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বাচা খানের দ্বিতীয় পুত্র আবদুল ওয়ালি খান (১১ জানুয়ারি, ১৯১৭-২৬ জানুয়ারি, ২০০৬) পাকিস্তানের একজন নামকরা রাজনীতিক ছিলেন।
ওয়ালি খান লিখিত ঋধপঃং অৎব ঋধপঃং শিরোনামের বইটি প্রকাশিত হয়েছে ১৯৮৬ সালে। এটি এখন ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে বিনামূল্যে। এই বইটি লিখতে লেখক বেশ কয়েক বছর ব্যয় করেছেন। বইটির তথ্যের উৎস হচ্ছে ব্রিটিশ সরকারের ডিক্লাসিফাইড দলিলপত্রাদি। এইসব দলিলপত্র বিশ্লেষণ করে ওয়ালি খান দেখিয়েছেন যে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকের ‘ভাগ করো এবং শাসন করো’ নীতির ইচ্ছাকৃত সৃষ্টি হচ্ছে ‘পাকিস্তান’। ব্রিটিশদের এই ‘ভাগ করো এবং শাসন করো’ নীতি বাস্তবায়নে অন্যান্য কয়েকজন ধর্মীয় নেতাসহ মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ সহায়তা করেছেন। যেমন পাকিস্তান চঅকওঝঞঅঘ শব্দটি আবিষ্কার করেছেন চৌধুরী রহমত আলী। কিন্তু পাকিস্তানে বরাবরই বলা হয়ে থাকে এবং জেনারেল জিয়াউল হকের শাসনামল থেকে জোর দিয়ে বলা হচ্ছে পাকিস্তানের স্বপ্নদ্রষ্টা হচ্ছেন মহাকবি ইকবাল। অথচ পাকিস্তান সৃষ্টির অনেক আগেই ১৯৩৮ সালের ২১ এপ্রিল কবি ইকবাল মৃত্যুবরণ করেছিলেন এবং তিনি উপমহাদেশের বিভক্তির একজন ঘোর বিরোধী ছিলেন। যদিও ইকবাল বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথের প্রতিভার প্রতি ঈর্ষান্বিত ছিলেন! যা হোক, চঅকওঝঞঅঘ শব্দটি যেসব শব্দাবলির আদ্যাক্ষর নিয়ে গড়ে উঠেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ নেই। কিন্তু বাংলাদেশকেও কৃত্রিমভাবে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এদিক থেকেও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তান প্রবক্তাদের মিথ্যা যুক্তির বিরুদ্ধে একটি প্রবল এবং অপ্রতিরোধ্য ইতিবাচক যুক্তির অনিবার্য লড়াই। ত্রিশ লক্ষাধিক বাঙালির আত্মাহুতির বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর যে যুক্তির তথা বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হয়েছে। এ তো গেল বাংলাদেশের কথা। খোদ বর্তমান পাকিস্তানেই এই কৃত্রিম রাষ্ট্রটির স্বপ্নদ্রষ্টা বা চঅকওঝঞঅঘ শব্দটির মূল আবিষ্কর্তা নিয়ে সে দেশের সরকারের মিথ্যাচার চলছে।
‘পাকিস্তান সৃষ্টির মূল কারণ ব্রিটিশ রাজের ষড়যন্ত্র’ বিষয়টিকে সত্য হিসেবে পাকিস্তান সরকার কখনোই স্বীকার করেনি। পাকিস্তান সরকারের প্রতিষ্ঠিত অনুভূতি হচ্ছে- উপমহাদেশের মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র আবাসভূমি হিসেবে পাকিস্তানের জন্ম অনিবার্য ছিল, যেটি মূলত ভারতীয় মুসলমানদের প্রতি ইংরেজদের বদান্যতা হিসেবে ব্রিটিশ শাসকেরা প্রচার করত। পাকিস্তানের সৃষ্টি সম্পর্কে আর একটি প্রচার হচ্ছে ‘পাকিস্তানের বীজ নিহিত রয়েছে মুহাম্মদ বিন কাশিমের আক্রমণ ও বিজয়ের মধ্যে’। পাকিস্তানেরই প্রফেসর শাহিদা কাজী বলছেন, ‘মুহাম্মদ বিন কাশেম ছিলেন একজন লুটেরা এবং সন্ত্রাসী।’ তবে ওয়ালি খান তার বইতে এসব কোনো কারণকেই পাকিস্তান সৃষ্টির কারণ হিসেবে দেখতে পাননি। তিনি অথোরিটেটিভ তথ্য দিয়ে প্রমাণ করেছেন ‘ব্রিটিশ শাসকদের ভাগ করো এবং শাসন করো নীতির ফসল হচ্ছে পাকিস্তান’। এই কারণটিই তিনি তথ্য-উপাত্তসহ বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছেন। সঠিক কারণ তুলে না ধরে এর বিপরীতে পাকিস্তান যেসব কারণের কথা বলছে তার সবটুকুই মিথ্যাচার।
পাকিস্তানের একজন ইতিহাসবিদ জাফর হাসান জায়িদী উর্দুতে একটি বই লিখেছেন, যার শিরোনাম হচ্ছে ‘পাকিস্তান ক্যায়সে বান্না?’ [কীভাবে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল?] । পাকিস্তানেরই আর পণ্ডিত রশিদ জাহাঙ্গিরী এই বইটির পর্যালোচনা করেছেন। এখানে বলা হচ্ছে, ‘পাকিস্তানের ধারণাটি ইংল্যান্ডে ওয়াকিং মুসলিম মিশনের (যা খাজা কামাল উদ্দীন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল) ড্রইং রুমে উৎপত্তি লাভ করেছিল। এখানের একটি আলোচনায় চৌধুরী রহমত আলী সাহেব এই ধারণাটি নিয়ে আসেন এবং একটি ‘নাউ অর নেভার’ শিরোনামে একটি প্রচারপত্র লিখেন।’
রাজা রুমি নামের একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’-এ ২০১১ সালের ১৪ এপ্রিলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদটির শিরোনাম হচ্ছে ‘আওয়ার টেক্সট বুকস এন্ড দ্য লাইজ দে টিচ’ এই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ‘পাকিস্তানের পাঠ্যপুস্তকগুলো মিথ্যাবাদিতা, ঘৃণা এবং সংকীর্ণতা ও গোঁড়ামি শিক্ষা দেয়। তারা সব অমুসলিমদের বিশেষত হিন্দুদের শয়তান এবং মূলত শত্রু হিসেবে চিত্রিত করেছে, সামরিক একনায়কতন্ত্রকে গৌরবান্বিত করেছে এবং বাঙালি ভাই ও বোনদের সঙ্গে মহা বেঈমানি করেছে, যারা পাকিস্তানি আন্দোলন প্রতিষ্ঠাতা ও মালিক ছিলেন। সময় এসেছে এইসব ভুলগুলোকে শুধরানোর।’ পাকিস্তানের আর একটি খ্যাতনামা সংবাদপত্র ‘ডন’। এই সংবাদপত্রে ২০১৪ সালের ১৫ আগস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম হচ্ছে এতে যে ঘটনাগুলোর স্মৃতি উপমহাদেশের মানুষের মনে দগ্ দগ্ করছে সে ধরনের তিনটি ঘটনার কথা বলা হয়েছে। এই তিনটি ঘটনা হচ্ছে, ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৪৭ সালের ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি আলাদা রাষ্ট্রের অভ্যুদয় সম্পর্কে সেদেশের পাঠ্যপুস্তকে যা শেখানো হয়ে থাকে তার উল্লেখ করা হয়েছে। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের টেক্সটবুক বোর্ড কর্তৃক ২০০২ সালে প্রকাশিত পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ সম্পর্কে বলা হচ্ছে “The Pakistan Army conquered several areas of India, and when India was at the verge of being defeated she ran to the United Nations to beg for a cease-fire. Magnanimously, thereafter, Pakistan returned all the conquered territories to India.” অর্থাৎ পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতের কয়েকটি এলাকা দখল করে নিয়েছিল, এবং যখন ভারত পরাজয়ের একেবারে কিনারায় পৌঁছে গিয়েছিল তখন তারা যুদ্ধ-বিরতি ভিক্ষা চাইতে জাতিসংঘে দৌড়ে গিয়েছিল। মহানুভবতার সঙ্গে তখন বিজিত এলাকাগুলো পাকিস্তান ভারতকে ফেরত দেয়। সেকেন্ডারি শ্রেণির জন্য ১৯৯৩ সালে পাঞ্জাব টেক্সটবুক বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত বইতে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয় সম্পর্কে বলা হচ্ছে, ‘পূর্ব পাকিস্তানে বৃহৎ সংখ্যক হিন্দুর বসবাস ছিল। তারা কখনোই সত্যিকার অর্থে পাকিস্তান মেনে নিতে পারেনি। তাদের বড় একটি অংশ স্কুল এবং কলেজের শিক্ষক ছিল। তারা অব্যাহতভাবে ছাত্রদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করছিল। তরুণ প্রজন্মকে পাকিস্তানের আদর্শ ব্যাখ্যা করার কোনো গুরুত্বই দেয়া হয়নি।’ অফিসিয়ালি স্বীকার করে নিলেও, মনের দিক থেকে, মূলত স্বাধীন বাংলাদেশকে পাকিস্তান এখনো তার ‘ধর্মীয় উপনিবেশ’ হিসেবেই এবং পাকিস্তানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবেই দেখে থাকে। বলা বাহুল্য ‘পাকিস্তানকে’ প্রভু হিসেবে এবং এর পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বা ‘ধর্মীয় উপনিবেশ’ হিসেবে গণ্য করার মতো প্রচুর লোক খোদ বাংলাদেশেও আছে। পাকিস্তানের পাঠ্যপুস্তকে যা পড়ানো হয় এইসব কথা বাংলাদেশের পাকিস্তানপন্থীরা হরহামেশাই বলে থাকে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা তার শেষ ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে বলেন, ‘কয়েক দশকব্যাপী অস্থিতিশীলতা বিশ্বের অনেক অংশে চলতে থাকবে- মধ্যপ্রাচ্য, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান, মধ্য আমেরিকার কয়েকটি অংশে, আফ্রিকা এবং এশিয়ায়।’ এ সম্পর্কে ‘ডন’ পত্রিকায় আনোয়ার ইকবাল নামের একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক একটি কলাম লিখেছেন। এতে তিনি বলছেন, ‘যেহেতু এটি ছিল প্রেসিডেন্ট ওবামার শেষ মেয়াদের শেষ ভাষণ তাই তিনি আমেরিকার সামনে আগামী দশ বছর বা তার বেশি সময়ে যেসব চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলো তুলে ধরেছেন।’ বোঝাই যাচ্ছে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের হাতে গোনা দু’একটি রাষ্ট্রের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার পাকিস্তানও (এবং আফগানিস্তান) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরদারিতে থাকবে। ওসামা বিন লাদেনকে মার্কিন বাহিনী কর্তৃক পাকিস্তানে তার ‘নিরাপদ বাসস্থানে’ এসে হত্যা করা, যখন তখন ড্রোন হামলা করা এসব পাকিস্তানে চলতেই থাকবে। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে অর্জিত বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট ওবামার ভাষণে এভাবে চিত্রিত হয়নি। বাংলাদেশের যারা পাকিস্তানপন্থী আছেন তাদের ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ দেশের সরকার ও জনগণ সতর্ক আছে এবং থাকবে। সুত্রঃ
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৪৫
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×