somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফরহাদ মজহারের অন্তর্ধান ও কিছু কথা

১০ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এমন এক কঠিন সময়ে আমরা, কোনটা আসল কোনটা নকল– সেটাও বোঝা যায় না; এই যেমন ফরহাদ মজহার। কী টেনশান কী টেনশান! একদল বলছে: নিয়ে গেছে, তাঁকে গুম করা হয়েছে। আরেকদল বলছে: নাটক।
আমরা মাঝখানে চ্যাপটা হয়ে ভাবছি আসলে কোনটা গো?
যাক এ যাত্রায় গুজব ও পানি ঘোলায় কম কামিয়াব যারা তারাই জয়ী হয়েছে। এ কথা বললাম কেন? এ দেশের ইতিহাস যারা জানেন তারা চোখ বুঝলেই দেখবেন বিএনপি ধর্মান্ধ আর পঁচাত্তরের খুনিরা কেমন গুজব ছড়াত। সেসব গুজবে কত সর্বনাশ হল, তবু জাতির হুঁশ ফেরে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও প্রগতিবাদীরা যত রাগ করতে জানেন, কৌশলে ততটাই বোকা।
এবার ফরহাদ মজহারের নাটক কেমন জানি একপেশে আর দুর্বল। এই লোক আজ থেকে নয়, দীর্ঘসময় ধরে স্ববিরোধী আচরণ আর কাজকর্মে ব্যস্ত। একসময় তাঁকে সবাই মার্ক্সবাদী মনে করতেন। তখনই আমার সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছিল। তাঁর কলাম তখন দেশের প্রগতিশীল কাগজ নামে পরিচিত পত্রিকার পাতায় পাতায়। দিনমান সব দোষ আমেরিকা সাম্রাজ্যবাদের ওপর চাপিয়ে দিনশেষে ছুটতেন আমেরিকায়। দেখুন কী ভণ্ডামি! যতদূর জানি, তাঁর ছেলে বা মেয়ে এখনও ওখানে। দোষের কিছু নেই; আমরাও বাইরে থাকি।
কিন্তু ‘দুশমন’ বলে ঘোষিত দেশে সন্তান না পাঠিবে মিত্র মনে করা হিজবুত তাহেরির দেশে তাদের পাঠালেন না কেন? ঠিক বামদের মতো! কথায় কথায় সোভিয়েত-চীন বন্দনা, সন্তান থাকে আমেরিকা, কানাডা বা প্রশান্তপাড়ের কোনো দেশে।
‘ফরহাদ মজহার হইতে সাবধান’ নামে ‘সংবাদ’-এ কলাম লিখে বিরাগভাজন হলেও জানতাম একসময় বাংলার ভুয়া বামের মুখোশ খুলবেই। অতঃপর দেশের পরিবেশ শাসনভার বদলালে বাম পরিণত হলেন ঘোর রামে। জানা গেল, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন উগ্রবাদের সঙ্গেও যোগ আছে তাঁর। এক পায়ে নূপুর বেঁধে হরিনাম সংকীর্তন করা ফরহাদ মজহার হয়ে গেলেন মৌলবাদী।
এই কারণে আমি সব সময় বলি: জামাতিরাই ভালো। তারা তাদের আদর্শ আর নিষ্ঠায় অবিচল। তারা বিধর্মীদের নিয়ে রাজনীতি করে, মারামারি বা নাটক করে না। এসব বাম, বিএনপি আর দালালেরাই যত নষ্টের গোড়া। ফরহাদ মজহার এবার যে ‘ধরা’টা খেলেন তারপর আমরা কী বলব?
কোন মানুষ অপহৃত হওয়ার জন্য ফোনকল পেয়ে বাইরে যায়? সাতসকালে আপনি ব্যাগ গুছিয়ে পিন চার্জার নিয়ে কোথায় যাচ্ছিলেন জনাব? টিকেট কাটলেন তা-ও গফুরের নামে। এদিকে যারা নাটের গুরু তারা রাত পোহাবার আগেই বিবৃতি নিয়ে হাজির। জনাব রিজভিকে প্রায়ই দেখি গম্ভীর মুখে কী সব বলেন। বিএনপির নেতারা পাহাড়ের ঘটনার দশদিন পর রিআ্যাক্ট করেন, দেশের কোনো সুখ-দুঃখে থাকেন না।
ফরহাদ মজহার আড়াল হতেই ঝাঁপিয়ে পড়লেন কেন? এই যে অতি উৎসাহ এতেই কিন্তু অবিশ্বাসের জন্ম। শেষতক আবারও ‘ধরা’ খেলেন বিএনপির নেতারা। কারণ, ফরহাদ মজহারকে বোঝা দায়।
আমার ধারণা, তিনি উভয় দিক ম্যানেজ করেছেন। যাদের জন্য গায়েব হওয়ার কথা তাদের জন্য গায়েবের নাটক আর ফিরলে যাদের লাভ তাদের জন্য ধরা খাওয়া! মারহাবা!
তবে একটা কথা, এমন ‘গায়েব’ বা ‘গুম’ বা ‘অন্তর্ধান’ আমরা দেখতে চাই না। দেশে সহজ স্বাভাবিক ও সুন্দর জীবন কাটানো মানুষের অধিকার। এই নাটকের রহস্য উন্মোচনের দায় সরকারের। এ যাবৎ যা আলামত তাতে নাটকের পর্দা উঠলে তারাই লাভবান হবেন, আর তা না হলে মানুষের মনে গুজব আর সন্দেহ দানা বাঁধবে।
আর একটা কথা সত্য: বাম পচলে তার ধারেকাছে যেতে নেই। আম পচলেও কাজে লাগে, বাম পচলে জাতির সর্বনাশ ছাড়া আর কোনো কাজে লাগে না! একদা কবি, লেখক, বামপন্থি নামে পরিচিত ফরহাদ মজহারের জীবন ও নাটক থেকে শিক্ষা নিয়ে যারা সটকে পড়বেন তারাই ভালো থাকবেন।
র‍্যাবকে ধন্যবাদ নাটকের দৃশ্য বাড়তে না দেওয়ার জন্য। জীবনের এই প্রান্তে, শেষ বয়সে এমন নাটকে অংশ নেওয়া কুশীলবেরা আমাদের সুশীল? আর যদি এই ঘটনায় বিন্দুমাত্র সত্যতা থাকে তাহলেও আমরা হতাশা হওয়া ছাড়া কী করতে পারি?
সুত্র
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৪৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×