somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশের আইন একেক জনের জন্য একেক রকম

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দেশের আইন মনে হয় একেক জনের জন্য একেক রকম। আপাতত: আমার কাছে সেরকমই মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ সংবিধানের আইনের প্রয়োগ সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোই করে থাকে। বিশেষভাবে পুলিশ বিভাগ আইন প্রয়োগের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। আইন তৈরি হয় জনগনের সুবিধার্থে বা সেবার উদ্দেশ্যে। সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ হলেন জনগনের সেবক, আর জনগন সেবাপ্রার্থী। উন্নত বিশ্বে হয়তো এর সত্যতা পাওয়া যায়। কিন্তু আমার প্রিয় বাংলাদেশে এমনটি ভাবাও যায় না। সাধারণ মানুষ ঠকতে ঠকতে এ কথা মনে প্রানে বিশ্বাস করে নিয়েছে যে, তারা (সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ) হলেন রাজা, আর আমরা জনগণ হলাম প্রজা।

এ কথা বলার কারণ-

স্পট: ১
গত রমজানের শুরুর দিকে আমি একটা বাইক কিনলাম, পরের দিনই গাড়ী রেজিষ্ট্রেশনের টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে বাইকের পিছনে জমা রশিদের ফটোকপি ঝুলিয়ে দিলাম, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করত: লার্নার কপি সঙ্গে রাখলাম। ব্যাস, এখানে ওখানে নিরাপদেই কিছুদিন চলাচল করলাম। কারন তখনো পর্যন্ত কোন সার্জেন্ট বা এসআইয়ের সম্মুখিন হইনি। মহোদয়ের দেখা হলো ঈদের পর, আমি ভদ্রতার সাথে সালাম দিয়ে রেজি: টাকা জমা রশিদ ও লার্নার কপি শো করলাম। আমি এখনো কেন নাম্বার পাইনি, সেটা অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আমাকে হুমকি দিলেন গাড়ী আটক করে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়ার, তবে তিনি আমার প্রতি দয়া দেখালেন।গাড়ী আটক করলেন না। তিনি আমাকে খালি হাতেও ফিরালেন না, লার্নার কপির কোন মূল্য নেই বিবেচনায় ড্রাইভিং লাই: না থাকার অপরাধে একখানা কেস লিখে আমায় ধরিয়ে দিলেন।
ঘটনা এখানেই শেষ হলে ভালো হতো, কিন্তু শেষ হয়নি। আমার সাথে আরেকটি বাইক দাঁড় করিয়েছিলেন এসআই আহসান হাবীব। ভদ্রলোকের কাগজ দেখতে চাইলে তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের একটি ভিজিটিং কার্ড শো করলেন এবং বললেন এখনো পর্যন্ত আমার গাড়ী কেউ আটক করতে পারে নায়। অতপর তিনি নিরাপদে প্রস্থান করলেন।
(আমি মনে মনে ভাবলাম, তাহলেতো আমিও আমার মরহুম মুক্তিযোদ্ধা পিতাকে হাজির করতে পারলে আমার জন্য আইন আলাদা হতো!!!!)

স্পট: ২।
উক্ত ঘটনার এক সপ্তাহ পর। আমার বন্ধু রফিক। তার বাইকের রেজি: ফি জমা রশিদ আছে, আর কিচ্ছু নেই। এসআই সাহেবের সাথে দেখা হল, যথারীতি কাগজ দেখতে চাইলেন, রফিক জমা রশিদ বের করে দেখালো, আর কিছু নেই স্যার। এসআই সাহেব হাসি দিয়ে কেস লিখা শুরু করতে যাচ্ছিলেন, রফিক থামিয়ে দিয়ে বলল, এই নেন স্যার ভিজিটিং কার্ড (অন্য একজন এসআইয়ের ভিজিটিং কার্ড)। আমি এসআই সাহেবের বাসায় পড়াই। স্যার বলেছেন, কোথাও সমস্যা হলে, আমাকে ফোন দিবেন। তো আমি কি ফোন দিবো?...... অগত্যা তিনি রণে ভঙ্গ দিয়ে, বললেন- আপনি যেতে পারেন।
রফিক ছাড়া পেয়েই আমাকে ফোন দিয়ে কাহিনী বললো। আমি তাকে বললাম- ইস্ !! আমারও যদি একটা এসআই থাকতো, তাহলে আমার জন্যও হয়তো আইন ভিন্ন রকম হতো!!!!!

স্পট: ৩।
আরো কিছু দিন পর। আমাদের ইমাম সাহেব। তাঁর বাইকের ডিজিটাল নাম্বার প্লেট আনতে গেলেন। সাথে আমিও গেলাম। বিআরটিএ অফিসের সামনের মাঠে শ'খানেক মোটরসাইকেল লাইন করে দাঁড় করানো। ইমাম সাহেব বাইকটি লাইনে দাঁড় করালেন। সকাল হতে দুপুর অবদি দীর্ঘ অপেক্ষার পর ইমাম সাহেবের পালা এলো। পরিদর্শক অফিসার কাগজ-পত্র সাইন করে ইমাম সাহেবের হাতে দেয়ার সময় কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে বললেন- হুজুর কিছু বখশিশ দিয়ে যায়েন।
ঘটনা এখানেই শেষ। হুজুরকে বখশিশ দিতে হয়নি। আমি শুরু থেকেই অফিসারের একটু দূরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে তার কাজ দেখছিলাম। সে কাউকেই কানে কানে বখশিশের কথা বলেনাই। অবশ্য কয়েক জনের সাথে (যাদের সমস্যা আছে) কথা বলতে বলতে অফিসের ভিতরে যেতে-আসতে দেখেছি, তাদের সাথে কি কথা হয়েছে তা আমার জানা নেই। এখন আমার প্রশ্ন হলো, শুধু হুজুরকে কেন বখশিশের কথা তিনি বললেন? এ সরল প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। আমার মাথা থেকে প্রশ্নটি একদম বের করতে পারছিনা, তাই পাঠক! আপনাদের দরবারে হাজিরা দিলাম...........
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৫
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×