ইদের পর অফিস খুলেছে দুইদিন, তবে রাজধানীতে এখনো ঈদের আমেজ কাটেনি। ঢাকার রাস্তাঘাট একদম ফাকা, অন্য সময় যেখানে দুই আড়াই ঘন্টা লাগতো, আজ ত্রিশ মিনিটেই অফিসে চলে আসলাম। গত কয়েকদিন ধরেই মেয়ে বায়না ধরেছে ইদে কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ঢাকার বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে শিশু পার্ক, বিমান যাদুঘর,নভোথিয়েটার আমার অফিস যাওয়া আসার পথেই পড়ে। এই ইদের সিজনে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি এসব বিনোদন কেন্দ্রগুলোর সামনে। এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে বিনোদন কেন্দ্রে ঢোকা এবং ঢোকার পর ভিতরে দেখবেন পা ফেলার জায়গা নেই। এমন ভিড়ের মধ্যে গিয়ে ভাল লাগার চেয়ে বিরক্তি লাগবে তাই কোথাও বেড়াতে যাওয়া হল না। মেয়েটার জন্য দুঃখ হয় সারাদিন চারদেওয়ালের মধ্যে বন্দী, টিভি দেখা, কম্পিউটার অথবা মোবাইলে গেম খেলা ছাড়া অন্য কোন বিনোদন নেই, এমনকি ইদের দিনও কোথাও বেড়াতে যাওয়ার জায়গা নেই।
এই ছোট্ট শহরে দেড়কোটির উপর লোক বাস করে। এত অল্প জায়গা কিভাবে এত লোক একসাথে বসবাস সেটাই আশ্চর্যের বিষয় এর উপর বিনোদন খোজা খুবই বোকামি। কিন্তু আমাদের শিশুরা তাহলে কি বিনোদনবিহীন ভাবেই বড় হবে? খেলাধুলার সুযোগ নেই, বেড়ানোর জায়গা নেই! নিজেদের শৈশবের কথা ভাবলে ওদের জন্য দুঃখ হয়। দাড়িয়াবান্ধা, সাতার কাটা, ক্রিকেট, ফুটবলসহ কত কত খেলা। স্কুলে নিজেরাই যেতাম বাবা মায়ের কোন টেনশন ছিল না আমাদের স্কুলে যাওয়া নিয়ে। স্কুলে গিয়ে টিফিন টাইমে কত কত খেলা করতাম।
শিশুদের বিনোদনের বিষয়টি নিয়ে সরকারের খুব বেশি মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। বেসরকারি উদ্যোগে কিছু বিনোদন কেন্দ্র গড়ে উঠলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপর্যাপ্ত। শিশুদের সুস্থ মানসিক বিকাশের কথা ভেবে পর্যাপ্ত বিনোদন কেন্দ্র এবং স্কুলগুলোতে খেলার মাঠ থাকা জরুরী। যদিও এদেশের সরকারগুলোর কাছ থেকে এগুলো আশা করা বোকামি, আমাদের নিজেদের ছেলেমেয়েদের মানসিক বিকাশের বিষয়টি আমাদের নিজেদেরই ভাবতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১:০৭