জীবন একটা মহাসড়ক বটে।পণ্য চলাচলের জন্য মহাসড়ক আছে ।আছে ধর্মের ও মহাসড়ক। কি ধর্ম সেটা পরে বিবেচ্য। কর্ম ধর্ম সবার উপরে নাকি থাকে কিন্তু কি কর্মে ধর্ম হবে সেটাই বড় কথা।চোর,ডাকাত,খারাপ-ভাল সবাই সবার মত ধর্ম কর্ম করে ।লালন এর কথা- সময় গেলে নাকি সাধন হয় না।তবে এখানে হয় ,এদেশে হয় ।এ বছর না হলে পরের বছর ,পরের বছর না হলে তার পরের বছর ,সে বছর না হলে তারও পরের বছর কোন সমস্যা নেই।সময় এখানে বয়ে যায় না ।স্থিরতাই বুঝি পরম ধর্ম।উন্নয়নের জন্য নাকি যোগাযোগ ব্যবস্থা এক অত্যাবশকীয় শর্ত।সে দেশটা সড়ক পথকে প্রাধান্য দিল।নৌ-রেল বিকল হয়ে গেল।এত প্রাধান্য দিতে গিয়ে সে সড়ক হযে উঠল গলার কাঁটা ,মরণ ফাঁদ।আর এখন রমজান মাস ,রমজান এলে এদেশে সংযমের বদলে যমদূত নামে।মন্ত্রী -শান্ত্রীরা হয়ত ক্যামেরা ,সুটেড বুটেড হয়ে দৌড় ঝাঁপ করবে ধর্মের মহাসড়কে।ধর্ম যেমন মনুষ্য চেতনে অচলায়তন সৃষ্টি করে ঠিক তেমনি সড়ক-মহাসড়ক গুলো অচল হয়ে উঠে।আর তাতে আমজনতার নাভিশ্বাস উঠে।উচিলার কোন শেষ নেই।কিন্তু তাদের এই কর্মের ব্যাপারে কোন কথা বলতে পারবেন না।গলা চেপে ধরবে আছে নানা আইন কানুন।অনলাইনে ও কিছু লিখতে গেলে ডর লাগে।পাছে শান্ত্রীরা এসে বলে হুঁশিয়ার!! এইতো কিছুক্ষণ আগে আমার এক পরিচিত পেশাদারি জায়গায় তার কান্নার যেন কোন শেষ নেই।চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায়গিয়ে তার একটা ভাল চাকরির ভাইভা দেয়ার কথা ।আর তাতে সর্বনাশটা হয়ে গলে ।এককালে ৫ ঘন্টার যাত্রা ১২ ঘন্টা লাগল ফলাফল যা হওয়ার তাই হল।গত ৭-৮ বছর ধরে এই মহাসড়কের কথা বলতে বলতে মানুষের গলা শুকিয়ে যাওয়ার জোগাড়। কি দূভোগ এর সড়ক বটে।ভাঙা চোরা ,শ্ৃঙ্খলাহীন ,যানজট,যত্রত্ত্র পার্কিং কি অরাজকতা বলে বোঝানো যাবে না।২০১০ এর দিকে আমি ও এরকম একটা যন্ত্রণার মধ্যে পড়েছিলাম।চট্টগ্রামের গরিবুল্লাহ বাসস্টেশন থেকে বাসে উঠেছি রাত ১১.৩০ মিনিটে আর সকাল ৭.০০টা বাজে তখন ও আমি সীতাকুন্ড পার হতে পারিনি।কি অসহ্য যন্ত্রণার ভেতর আমাকে পড়তে হয়েছে! শুধু দু-একটা ঘটনা নয় অহরহ মানুষের নানা স্বপন মরে যাচ্ছে এই মহাসড়কের অরাজকতাকে কেন্দ্র করে এটা হল উন্নয়নের অরাজকতা।মানুূষ নানা কাজে বিপদে আপদে এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় ছুটে বেড়ায় জীবনের তাগিদে।আর তাগিদের নাম হল তাগাদা ।কে কাকে তাগাদা দিবে ? এই যন্ত্রণা কবে শেষ হবে তা কেউ জানে না।আশা আকাঙ্খার এই দোলাচলে আমাদের কষ্টের জীবন শুধুই লম্বাই হতে থাকে।সব মানুষের কি আর দুই একদিন আগে ঢাকা থাকার সার্মথ্য নাও থাকতে পারে ।এর মধ্যে অস্বাভাবিকতার কিছু নেই।তাহলে কেন? কেন এই কাজ এক দশকে ও শেষ হয় না।কোন বিদেশের উদাহরণ দিতে চাই না।দিনে দিনে হাজার খানিক মাইল অতিক্রম করে কাজ শেষে আর নিজবাসে ফিরে আসব এমন স্বপন্ আমরা দেখি না!! কিন্তু দোহাই কাকে বলব? .......জনাব শান্ত্রী তিনি তো মাঝে মাঝে কবিতা গান ,কবিতা গাওয়ার দায়িত্ব নিয়ে আন্তঠেলাঠেলি সংযোগ নিয়ে ব্যস্ত সাহেব ।আর নিজেদের সংযোগ যে আলগা হয়ে গেছে সেদিকে আর খেয়াল নেই!ঈদ আসলে তার সপ্তাহখানিক দৌড়ঝাঁপ করার জন্য ভাল পুস্টিমান খাবার নিয়ে হয়ত মাঠে নামবেন তিনি।বর্ষার জলে একাকার হবেন ,কাদামাখা রাস্তায় শুভ্র পরিহিত হয়ে আবেগ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।তাতে কি লাভ।যে যায় লঙ্কায় সে হয় রাবণ ।রাবণদের অত্যাচারের কাহিনী দশকের পর দশক চলছেই ...।কোন নিস্তার নেই।ঘাঁট হয়েছে এবার পরিত্রাণ চাই।নিজেদের এতটুকুন আত্মসম্মান বোধ থাকলে আমাদের রেহাই দেন।আর মানুষকেও তার আকাঙ্খা গুলো এভাবে মাটি হবার বেড়া তৈরী না করে তাদের মুক্তি দেন।এটাই কামনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:৪০