somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাহাদাত উদরাজী
সাহাদাত উদরাজী'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - 'গল্প ও রান্না' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

দুনিয়ার সেরা পাঁচ জন ফুড ইউটিউভার দেখুন, যাদের ফুড ভিডিও দেখলে আপনার জিবে জল আসবে, সাথে সেই দেশ ভ্রমন হয়ে যাবে!

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খাবার দাবার আমার প্রিয় বিষয়! রান্না যেহেতু করেই চলছি, সুতারাং এই বিষয়ে সারা দুনিয়ার খাবারের প্রতি একটা চাহিদা বা জানার আগ্রহ থাকেই। আপনারা বিশ্বাস করবেন কি না জানি না, আমি নেটে বসা মানেই হল, সারা দুনিয়ার খাবার দেখা বা রেসিপি দেখা। ঘন্টার পর ঘন্টা আমি এই সব ভিডিও/ব্লগ বা তথ্য দেখে বা পড়ে কাটিয়ে দিতে পারি! আজকাল বাসায় একটা এন্ড্রয়েড টিভি কেনাতে আমার এই আগ্রহ আরো বেড়েছে, শুয়ে বসে আনন্দে এখন আরো বেশি সময় দেখতে পারি! যাই হোক, কয়েকদিন ধরে এই বিষয়ে লিখবো লিখবো ভাবছিলাম, সময়াভাবে পারি নাই। আজ মনে হয় সেই সময় এসেছে! গত কয়েকদিনে স্ত্রী পুত্ররা বাসায় না থাকাতে আরো বেশি সময় হাতে পাওয়া গেল, মনে ভরে এই সব ইউটিউব চ্যানেল দেখেছি, তথ্য জেনেছি। এখন এই বিষয়ে লেখা যেতে পারে!

প্রথমেই বলে নেই, আজকাল মানুষ আর সেই মত টিভি দেখেন না, লোকাল কিংবা স্যাটেলাইট টিভি এই সবে আর মানুষের মন ভরে না! মানুষ নির্মল বিনোদন চায়, আজাইরা বিজ্ঞাপন বা অহেতুক সময় নষ্ট করার মানসিকতা এখন আর কারো নেই। ইউটিউব তার ভিউয়ারদের সেই স্বাধীনতা দিয়েছে, বিষয় পছন্দের স্বাধীনতাও আছে। ফলে এখন ধীরে ধীরে মানুষ ইউটিউবে অভস্থ্য হয়ে পড়ছে! মানুষের এই চাহিদার বিবেচনায় ইউটিউব কর্তপক্ষ মানুষকে তার ভিডিও আপ্লোডের সুযোগ দিয়েছে (পুরানো খবর, পোলাপাইনেও জানে) এবং সাথে যারা ভিডিও আপলোড দিয়ে থাকে তাদের উপার্জনের ব্যবস্থা করেছে (পুরানো খবর, পোলাপাইনেও জানে)!

১। মার্ক উইন্সঃ মার্ক উইন্স নিয়ে আমি আগেও লিখেছি বেশ কয়েক বছর আগেও, উনাকে নিয়ে নুতন কিছু বলা চলে না। তার কাজেই তিনি পরিচিত সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে। সম্প্রতি সময়ে তিনি একটা ভিডিও পোষ্ট দিলে ঘন্টা খানেকেই কয়েক লক্ষ ভিজিট হয়ে যায়। মুলত তিনি ২০০৯ সালে সম্ভবত খাবারের দুনিয়ার নেমে পড়েন। বাবা আমেরিকান, মা চায়নিজ এবং বেড়ে উঠেন কেনিয়াতে, এখন স্থায়ী হয়ে পড়ছেন থাইল্যান্ডে। বিয়ে শাদীও থাইল্যান্ডে, মাইশা নামে এক ছেলের পিতা তিনি। তার স্ত্রী তাকে এই কাজে সব সময়ে সাহায্য করে থাকেন, তিনি যেখানে যান স্ত্রী তার সঙ্গে থাকে, তিনি বলে থাকেন, লাভিং ওয়াইফ (আমরা অনেকেই তা বলতে পারি না!)! তার ব্লগ পোষ্ট গুলো দেখলে বুঝতে পারবেন, তিনি কতটা সহজ সরল! তার জীবনের কথাও তিনি কত নির্ভেজাল্ভাবে তার ব্লগে পরিবেশন করেন। বলতে গেলে এখন প্রায় সারা দুনিয়ার কোনাকাঞ্চি ভ্রমন করে ফেলেছেন এবং তার প্রায় হাজার খানেক ভিডিও আছে এপর্যন্ত, সপ্তাহে দুই দিন দুটো ভিডিও আপলোড করে থাকেন।


২। বেষ্ট এভার ফুড রিভিও শোঃ এটি মুলত একাটা স্পন্সার্ড ভিডিও ব্লগ। পরিচালনা ও উপস্থাপনা করে থাকেন সানি সাইড নামের এক জন ভদ্রলোক। তার উপস্থাপন আমার কাছে বেশ ভাল লাগে, কথাবার্তা ও আচার আচরন অসাধারণ। স্পন্সার্ড বলে তাকে কখনো টাকা নিয়ে ভাবতে হয় না, ওয়ান ট্রিপ নামের একটা টুরিস্ট কোম্পানি তার ব্যয় বহন করে থাকে বলে জানা যায়। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া ইত্যাদি দেশে তারা টুরিষ্টদের নিয়ে নানান প্যাকেজে কাজ করে থাকে। মিঃ সানি মুলত টেনশনলেস হয়ে কাজ করেন বলে তার শো গুলো অসাধারণ এবং তিনি যেখানেই যান সাথে দোভাষী এবং ক্যামেরাম্যান নিয়ে যান ফলে তার ভিডিওর চিত্রায়ন অসাধারণ। তবে মিঃ সানি স্বাস্থ্য সচেতন, যা পান তা খান বটেই তবে আমি প্রায় খেয়াল করেছি, একটা লিমিট থেকেই!


৩। দি ফুড রেঞ্জারঃ মিঃ ট্রিভোর জেমস অনেকটা মিঃ মার্ক উইন্সের মতই, আচার আচরণ অনেকটা মার্ক উইন্সের সাথে মিলে যায়। আমি তার শো গুলো পছন্দ করি। বয়সে তরুন এই ভদ্রলোক বেশ কয়েক ভাষায় কথা বলতে পারেন। বিশেষ করে চীনা ভাষা মান্দারিনে তার দক্ষতা অসাধারণ। তার চীনের খাবারের ভিডিও গুলো দেখতে বসলে চোখ ফেরানো যায় না। তার আর একটা দক্ষতা হচ্ছে, তিনি যে কমিউনিটিতে যান, সেই কমিউনিট্র ড্রেস পরেন ফলে তার উপস্থাপনা আরো ভাল লাগে। মুসলিম কমিউনিটিতে গেলে পাঞ্জাবি টুপি পরে খেতে বসে পড়েন। তার ইন্ডিয়ার নানান স্থানের ভমনের ভিডিও গুলো এতই ভাল যে, আপনার মনে হবে আপনি এখন সেখানেই আছেন। দেখতে অতন্ত্য সুদর্শন জেমস প্রসঙ্গে আমি আরো জানার চেষ্টা করছি, তিনি মার্ক উইন্সের মত ব্যক্তিগত তথ্য দিতে এত উদার নন তবে অতান্ত্য পরিশ্রমি এই তরুণ গামীতে আরো ভাল করবে নিশ্চিত। পথের ধারের খাবার দেখতে তিনি সেই খাবার কোথায় বানানো হয় সেই জায়গা গুলোও দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন ফলে তার ভিডিওতে আলাদা একটা ফ্লেভার থাকে।


৪। মাইকি চেংঃ মিঃ মাইকি চেং এখন নুতন করে নিজ নামে সারভাইভ করছেন (সারভাইভ কথাটা বলা চলে না, আমি যতসই শব্দ পাচ্ছি না)। মুলত মাইকি 'ট্রিকি ডামপিং' নামের একটা ভিডিও বল্গ পরিচালনা করতেন, এখন নিজ নামেই পরিচিত হয়ে উঠছেন। তিনি দেখতে মুলত প্রিয় সিনেমা অভিনেতা জ্যাকি চেং এর মত, বেশ গাটা পেটা শরীর, খেতেও পারেন মাশাআল্লাহ। মুখে রুচির অভাব নেই! চোখে যা পড়ে তাই খেতে পারেন। এক বসাতে অনেক পদের খাবার সাবাড় করে দিতে পারেন। আমি মাইকি চেংকে জাপান বিশেষজ্ঞ বলবো, জাপানি খাবার নিয়ে তার ব্লগ গুলো থেকে চোখ ফেরানো যায় না। কুংফু ক্যারাটে জানা এই ভদ্রলোক আগামীতে আরো আরো চমৎকার ভিডিও আমাদের দেখাবেন। পথের ধারের খাবারতো আছেই, তার ব্লগে ছোট ও মাঝারি দোকানের খাবারো বেশ সুন্দর করে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে।


৫। ফারহানা ওভারসনঃ মিস ফারহানা ওভারসনকে মুলত এখন ফুডের দুনিয়া বুঝতে পারছে না! তার সাবস্কিপশন কম হলেও আমি মনে করি আগামী এক দুই বছরে তিনি অসাধারণ উচ্চতায় উঠে পড়বেন। কারন তার কাজ, উপস্থাপনা, যোগাযোগ সব কিছুই অসাধারণ। ইংরেজী উচ্চারনের জড়তা আরো কেটে গেলে তিনি ছেলে ফুড ব্লগারদের সমকক্ষ হয়ে উঠবেন। তিনি মুলত কেনিয়া ফোকাসড ফুড ব্লগার, কেনিয়াতে তাকে মুলত সবাই চিনে থাকেন এবং কেনিয়াতেই থাকেন। মার্ক উইন্সের ব্লগ ধরে আমি তার খোজ পাই এবং আমি তাকে নিয়ে আশাবাদি। ভমনের ছোটখাট দিক গুলো তুলে ধরাতে তার জুড়ি নেই, লাভলী! কেনিয়ার মুম্বাসা শহরে থাকলেও নাইরোবিতেই যোগাযোগ, আজকাল তিনি দেশের বাইরে যাচ্ছেন এবং সম্ভত কিছু দিন আগে সিঙ্গাপুর সফর করে গেলেন। সিঙ্গাপুরের ভিডিও গুলো বেশ ইম্প্রেসিভ। তার উপস্থাপনা বেশ আন্তরিক, তবে রাস্তার খাবারকেই তিনি চমৎকার বর্ননা দিয়ে অসাধারণ উচ্চতায় নিয়ে যান। আমি তার আরো আরো সাফল্য কামনা করি।


খাবারে বিশ্ব নিয়ে আরো আরো লেখার ইচ্ছা থাকলো। দুনিয়ার নানান দেশের মানুষ্য খাবার কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা দেখার একটা আলাদা আনন্দ আছে, কোন দেশের মানুষ কি খাচ্ছে! আমাদের বাংলাদেশের জন্য দুঃখ হয়, এখনো আমরা আমাদের দেশে স্ট্রিট ফুড জনপ্রিয় করতে পারি নাই অথচ এই সেক্টর উন্নত করতে পারলে কত শত শত মানুষের কর্ম হত, কত পরিবার নানান কাজকর্মে বেঁচে যেত। কত যবুক/যুবতি চাকরী বা কিছু না করতে পেরে জীবন শেষ করে দিচ্ছে, অথচ সামান্য প্রশিক্ষন, সামান্য জায়গা দিলে কত পরিবার বেঁচে যেত। এই রাস্তার খাবারে ভেজাল মুক্ত করাও যেত যথাযত মনিটরিং করে! আমাদের আফসোস নিয়েই মরতে হবে, যা শাসককুল আমরা পেয়েছি, আফসোস! ধন্যবাদ সবাইকে।

(একযোগে গল্প ও রান্না'য় প্রকাশিত)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৩
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×