somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসা এবং আমাদের ব্রেইন : বিজ্ঞান কি বলে !!? ৩য় পর্ব :

০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

( ২য় পর্বের পর :) :) )
কর্টিক্যাল ডি অ্যাক্টিভেশণ এবং ভালোবাসার উন্মাদনা:
অনেকের কাছে অবাক লাগতে পারে যে, কোন চেহারা যা একদিন ট্রয় অভিমুখে হাজার জাহাজের যাত্রা ঘটিয়েছে শুধুমাত্র ব্রেনের অল্প কয়টি সীমিত এলাকাকে সক্রিয় করার মাধ্যমে। কিন্তু প্যারিস আর ট্রয়ের হেলেন এর গল্পই শুধু যথেষ্ঠ এদের নিউরোবালোক্যাল পরিনতিটা বোঝার জন্য, কিন্তু এই সক্রিয় হবার ব্যাপারটা আলাদা আলাদা করে দেখলে এর ইন্টারপ্রিটেশনটা অস্পষ্ট মনে হতে পারে। কারন রোমান্টিক ভালোবাসা জীবনের নানা অংশকে (প্রায় সব অংশই) প্রভাবিত করে, মানুষের জীবনকে পারে বদলে দিতে, তাদেরকে যেমন মহৎ বীরোচিত কাজ করতে উদ্ভুদ্ধ করতে পারে, তেমনি প্ররোচনাও দিকে পারে ভয়াবহ কোন খারাপ কাজ করতে। বিজ্ঞানীরা তাই সঠিক ভাবে মনে করেন, যে ব্রেনে রোমান্টিক ভালোবাসার সাথে সংশ্লিষ্ট মুল জায়গাগুলো ব্রেনের অন্যান্য জায়গাগুলোর সাথে স্নায়ুসংযোগের ক্ষেত্রে খুবই সমৃদ্ধ, এটা কর্টিক্যাল এবং সাবকর্টিক্যাল উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এ ধরনের সংযোগের মধ্যে অন্যতম ফ্রন্টাল প্যারাইটাল এবং মধ্য টেম্পোরাল কমপ্লেক্স, এবং টেম্পোরাল লোবের শীর্ষে বা অ্যাপেক্স এ থাকা একটি নিউক্লিয়াসের সাথেও, যার নাম অ্যামিগডালা। গবেষনায় দেখা গেছে যখনই রোমান্টিক ভালোবাসার সাথে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় এলাকাগুলো য় কোন ধরনের সক্রিয়তা বাড়ে, এই কর্টিক্যাল এলাকাগুলোর সক্রিয়তা যায় কমে যায় কিংবা পুরো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। সাধারন কোন পরিস্থিতিতে অ্যামিগডালা বিশেষভাবে সক্রিয় হয় কোন ভীতিকর পরিস্থিতিতে এবং এর ডি-অ্যাক্টিভেশন, বিশেষ করে রোমান্টিক ভালোবাসায়, ভালোবাসার মানুষের মুখ দেখলে, এমন কি পুরুষদের বীর্যপাতের সময়, ইঙ্গিত করে, ভয় কমে গেছে। এছাড়া রোমান্টিক ভালোবাসার সর্বগ্রাসী আবেগ প্রতিফলিত হয় বিচার বিবেচনা বা জাজমেন্ট করার ক্ষমতা লোপ পাওয়ার মাধ্যমে বা অন্য কোন মানুষদের বিচার বিবেচনা করার জন্য যে মানদন্ড ব্যবহার করি তা শিথিল হয়ে যায়, যে কাজটি আমাদের ফ্রন্টাল কর্টেক্স এ। কর্টিক্যাল অঞ্চল, প্যারাইটাল কর্টেক্স, টেম্পোরাল লোবের কিছু অংশ, সাধারনত দেখা গেছে নেতিবাচক ইমোশন বা আবেগের সাথে জড়িত। রোমান্টিক এবং মাতৃত্বর ভালোবাসায় যখন ভালোবাসার মানুষের মুখোমুখি হয়, এর ডি অ্যাক্টিভেশন বা নিষ্ক্রিয় করন, সেজন্য খুব একটা বিস্ময়ের ব্যাপার না, কারন, যখন আমরা গভীরভাবে ভালোবাসি, আমরা অন্য মানুষকে যেমন ক্রিটিক্যালী বিচার করি, সেটাকে আমাদের প্রিয় মানুষের ক্ষেত্রে স্থগিত করে রাখি।


উপরের ছবিতে দেখানো হয়েছে আমাদের ব্রেনের কর্টিক্যাল (উপরিভাগের) এলাকার ডিঅ্যাক্টিভেটেড বা নিষ্ক্রিয় (লাল এবং হলুদ রঙ) অংশগুলো, যখন গবেষনায় অংশগ্রহনকারীদের তাদের ভালোবাসার মানুষের ছবি দেখানো হয় (তুলনা করা হয়েছে যখন তারা তাদের অন্য বন্ধুদের ছবি দেখে সেই প্যাটার্নের সাথে); যে অঞ্চলগুলো ডিঅ্যাক্টিভেটেড তারা মুলত ডান দিকের ব্রেনে:প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স, মিডল টেম্পোরাল জাইরাস এবং প্যারাই্টাল কর্টেক্স।নীচের ছবিতে দেখা যাচ্ছে সিংগুলেট জাইরাসের পেছনের অংশ (pc) এবং মিডিয়াল প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স (mp); বাম দিকে অ্যামিগলয়েড (A) এলাকার ডিঅ্যাক্টিভেশণ দেখানো হয়েছে। ( সুত্র: NeuroReport, Vol 11 No 17 27 November 2000);


মা র ভালোবাসা এবং রোমান্টিক ভালোবাসার সময় কর্টেক্সে এ জায়গাগুলো ডি অ্যাক্টিভেট হয় (লাল ও হলুদ রঙ); লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, উভয় ক্ষেত্রে একই জায়গাগুলোর অ্যাক্টিভিটি হ্রাস পায় বা নিষ্ক্রিয় হয়। A = amygdaloid cortex, pc = posterior cingulate cortex, mp = mesial prefrontal/paracingulate gyrus; mt = middle temporal cortex; op = occipitoparietal junction; tp = temporal pole. .( A. Bartels,S. Zeki/ NeuroImage 21 (2004) 1155–1166)
ফন্ট্রাল কর্টেক্স, প্যারাইটো-টেম্পোরাল জাংশান এবং টেম্পোরাল পোল একসাথে একটি এলাকার নেটওয়ার্ক তৈরী করে যা অবশ্যই সক্রিয় হয়ে ওঠে আমাদের ব্রেনের ‘মেন্টালাইজিং (Mentalizing)’ বা ‘থিওরী অব মাইন্ড (Theory of mind)’ প্রক্রিয়ার সাথে অর্থাৎ যে প্রক্রিয়ায় আমরা অন্য কারো মনোভাব, উদ্দেশ্য বা ইনটেনশন বা আবেগ বোঝার প্রতিরক্ষা মুলক ক্ষমতা প্রয়োগ করি। লক্ষ্য করার মতো বিষয়, ভালোবাসায় একাত্মতার (unity in love) দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দেখলে, এই থিওরী অব মাইন্ড এর মাধ্যমে মেন্টালাইজিং প্রক্রিয়ার একটি বৈশিষ্ট হলো নিজ থেকে অন্যদের আলাদা করতে পারার ক্ষমতা, যার সম্ভাব্য একটা প্রয়োগ হচ্ছে অন্যদের এবং নিজের উপর ভিন্ন ভিন্ন ধরনের বিশ্বাস এবং কামনা আরোপ করা। কল্পনার এই ভালোবাসার একাত্মতা (Unity-in-love) পাওয়ার লক্ষ্যে, যেখানে নিজের সাথে অন্যকে একীভুত করে ফেলা যায়, সেখানে এই মেন্টালাইজিং প্রসেসটি, অর্থাৎ যা নিজেকে অন্যর কাছ থেকে পৃথক রাখে, তাকে অবশ্যই নিষ্ক্রিয় করতে হবে। কিন্তু অনেক সময়ই আমরা কারো সম্বন্ধে আমাদের ক্রিটিক্যাল জাজমেন্ট স্থগিত রাখি, যখন তাদের সাথে আমাদের একটি বিশ্বাসের বন্ধন তৈরী হয়, এছাড়া মায়ের সাথে তার সন্তানের গভীর বন্ধনতো বটেই। একারনে এখানে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, সেই প্রচলিত কথা: `Love is Blind’ এর নিউরাল ভিত্তিটাই শুধু না, ভালোবাসার একাত্মতা , Unity-in-Love কনসেপ্টটির স্নায়বিক ভিত্তিটাকেও । এছাড়া এটাও কোন আশ্চর্যজনক ব্যাপার না,যখন মাঝে মাঝে কারো ভালোবাসার মানুষ বাছাই এ পছন্দ দেখে আমরা অবাক হই, বৃথাই নিজেদের জিজ্ঞাসা করি কেমন করে তারা এমন একজনকে পছন্দ করতে পারলো? কান্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে কিনা? আসলেই তারা কান্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল। ভালোবাসা প্রায়শই কোন যুক্তি গ্রাহ্য করে না, কারন আমাদের ব্রেনেই যৌক্তিক বিচার বিবেচনা স্থগিত হয়ে থাকে বা যেভাবে দৃঢ়তার সাথে অন্য কোন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেভাবে ব্যবহৃত হয় না। প্লেটোর Phaedrus এ সক্রেটিস মন্তব্য করেছিলেন: ‘‘the irrational desire that leads us toward the enjoyment of beauty and overpowers the judgment that directs us toward what is right, and that is victorious in leading us toward physical beauty when it is powerfully strengthened by the desires related to it, takes its name from this very strength and is called love’’. প্রচন্ড ভালোবাসা তখন নৈতিক বা মোরাল কোন বিধিনিষেধও তোয়াক্কা করে না, কারন নৈতিকতা বিষয়ক কোন ধরনের বিচারবুদ্ধিও স্থগিত হয় ফ্রন্টাল কর্টেক্স এর ডি অ্যাক্টিভেশনের মাধ্যমে। তাছাড়া, মোরাল বিষয়গুলো যদি কোন ভুমিকা পালন করেও, যেমন আনা কারেনিনা বা ফেদরে বা এমা বোভারী বা ডন গিওভানীর ক্ষেত্রে, সেটা হয়তো সামান্য কোন ভুমিকা; এবং মোরালিটির কেন্দ্রও হচ্ছে আমাদের ফ্রন্টাল কর্টেক্স।
ইউফোরিয়া বা এক ধরনের উল্লসিত অবস্থা এবং সাথে বিচার বুদ্ধি লোপ পাওয়া এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যায়, যা অনেকের কাছে মনে হতে পারে কোন পাগলামী। আর এই পাগলামীটা কবি আর শিল্পীরা লালন করে আসছেন। Phaedrus এ প্লেটো একে কাঙ্খিত উৎপাদনশীল একটি অবস্থা বলেছিলেন কারন এ ধরনের ম্যাডনেস ঈশ্বর প্রদত্ত, অন্যদিকে স্বাভাবিক অবস্থাটা শুধু মাত্র মানবিক। কিন্তু অবশ্যই , যদি এটি ঈশ্বর প্রদত্তই হতো, তাহলে যৌক্তিক পৃথিবীর বাইরে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি বা জ্ঞান দিয়ে এর কোন অর্থ খুজে পাওয়া সম্ভব হতো না। বরং হয়ত নিউরোলজিক্যাল ব্যাখ্যাটি: বিচার করার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্রেনের সেই অংশটি ডি-অ্যাক্টিভেটেড হয়, যার কারনে ভালোবাসার ক্ষেত্রে প্রায়শ দ্রষ্টব্য অযৌক্তিকতার একটি বোধগম্য প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা হতে পারে। নীচাহ লিখেছিলেন, ‘‘There is always some madness in love. But there is always some reason in madness’’; এই কারন খুজতে হবে নিউরোবায়োলজিক্যাল এক্টিভেশন আর ডিএক্টিভেশনের প্যাটার্ণের মধ্যে যা রোমান্টিক ভালোবাসার বৈশিষ্ট, যা আরো বৃহত্তর স্বার্থে বায়োলজিক্যাল কারনে এমন কি অসম্ভব কোন জুটিকেও একাত্ম করার চেষ্টা করে এবং এভাবে জীনে বৈচিত্রতার প্রবাহ নিশ্চিৎ করে। যদি, the heart has its reasons of which reason knows nothing,এটা প্রায় পুরোটা্ই আক্ষরিকভাবে সত্যি কারন সকল যুক্তি স্থগিত হয়ে যায়। যখন ব্লেইজ প্যাসকাল একথা বলেছিলেন, তার জানা ছিল না, এই যৌক্তিকতার সবকিছু স্থগিত হওয়ার নেপথ্য কারন ফ্রন্টাল লোব ( অন্তত সাময়িকভাবে) এ ডিঅ্যাক্টিভেট বা নিষ্ক্রিয় হয়, জাজমেন্ট প্রক্রিয়াটি স্থগিত হয়। আমরা এই সুনির্দিষ্টভাবে নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে বিচার করার ক্ষমতার স্থগিতাবস্থা থেকে একটা নিউরোবায়োলজিক্যাল শিক্ষা নিতে পারি কারন, ভালোবাসায় আচ্ছন্ন কেউ যখন তাদের ভালোবাসার মানুষের প্রতি সব ক্রিটিক্যাল জাজমেন্ট স্থগিত করে রাখেও, তারা কিন্তু অন্য সব কিছুর ব্যাপারে তাদের বিচার ক্ষমতা স্থগিত করে রাখে না, তারা কিন্তু পারে, যেমন, কোন বই বা কোন বৈজ্ঞানিক গবেষনার গুনগত মান সম্বন্ধে তাদের জাজমেন্ট ক্ষমতা প্রয়োগ করতে। তারা তাদের ভালোবাসার মানুষ ছাড়া আর যে কোন কারোর সম্বন্ধে তাদের ’থিওরী অব মাইন্ড প্রয়োগ’ করতে সক্ষম। এই জাজমেন্টটা সাসপেসনশন হয় সিলেকটিভ ভাবে, যা ভালোবাসার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট স্নায়ৃ সংযোগ এবং ব্রেনের কর্মকান্ডের পক্ষেই যুক্তি দেয়।


মা’র ভালোবাসার স্নায়বিক ভিত্তি:
নিউরোবায়োলজিষ্টদের জন্য আরেকটি ইন্টারেস্টিং ব্যাপার লক্ষ্য করেন তা হলো, রোমান্টিক ভালোবাসার সময় ব্রেনের যে অংশগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে সেই অংশ গুলোরই বেশ কিছু অংশ, যখন কোন মা তার প্রিয় সন্তানের ছবি দেখে (অন্য কোন শিশুর ছবির দেখে যা হয় তার তুলনায়), মা’র ব্রেনেও সক্রিয় হয়ে ওঠে। অর্থাৎ রোমান্টিক ভালোবাসার সময় ব্রেনের সক্রিয় হবার প্যাটার্ন এবং মা’র ভালোবাসার সময় যে প্যাটার্ন হয়, তার মধ্যে বেশ ওভারল্যাপিং দেখা যায়। মায়ের ভালোবাসা এবং রোমান্টিক ভালোবাসা, দুই ধরনের ভালোবাসাই একটি কমন এবং গুরুত্বপুর্ন বিবর্তনীয় লক্ষ্য শেয়ার করে, সেটি হলো প্রজাতির রক্ষনাবেক্ষন এবং সংখ্যাবৃদ্ধি। তারা একই ধরনের ফাংশনাল লক্ষ্যও শেয়ার করে, যেখানে দুজন সদস্যকে তাদের জীবনের একটা সময়ে একসাথে থাকতে হয়, সেকারনে প্রাকৃতিক নির্বাচন এই প্রক্রিয়াগুলো হিসাব করে বেছে নিয়েছে, যা বিভিন্ন মানুষের মধ্যে দৃঢ় বন্ধন তৈরী করে, এবং একটি সুখকর অভিজ্ঞতা হিসাবে। একারনে এই দুই সেন্টিমেন্ট একই ব্রেন মেকানিজম শেয়ার করবে এতে অবাক হবার কিছু নেই। কিন্তু আগেই উল্লেখ করা নিউরোলজির অ্যাক্সিওম বা সুত্র অনুযায়ী, এ দুটির মধ্যে কেউ যদি পার্থক্য করতে পারে, তা কেবল সম্ভব হবে কারন ব্রেনের আলাদা আলাদা অংশ এদের সাথে জড়িত। একই ভাবে ব্রেন অ্যাক্টিভেশনের যে প্যাটার্ণ মার ভালোবাসায় দেখা যায় আর রোমান্টিক ভালোবাসায় দেখা প্যাটার্ণ এর মত হুবুহু একরকম না।একটা বিশেষ পার্থক্য হচ্ছে মায়ের ভালোবাসার ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্রেনের যে অংশগুলো মুখাবয়বের বা চেহারার সাথে সংশ্লিষ্ট সেই এলাকাগুলোর বেশী মাত্রায় সক্রিয়করণ। এটা হয়তো শিশুদের চেহারা অভিব্যক্তি বুঝতে পারার প্রয়োজনীতাটি, যার মাধ্যমে তাদের ভালোমন্দ নিশ্চিৎ করা করে ব্যাখ্যা করে, একারনে মা তার শিশুর চেহারার দিকে বিশেষ নজর দেন সারাক্ষন। আরেকটা বিশেষ পার্থক্য হলো, হাইপোথ্যালামাস, যা কিনা যৌন উত্তেজনার অন্যতম স্নায়বিক কেন্দ্র, শুধু মাত্র জড়িত থাকে রোমান্টিক ভালোবাসার ক্ষেত্রে। এই দুই ধরনের ভালোবাসা, উভয়েই যে এলাকাটিকে সক্রিয় করে তার অবস্থান স্ট্রায়াটাম (Striatum); যা আমাদের ব্রেনের রিওয়ার্ড সিস্টেমের সাথে জড়িত। রোমান্টিক ভালোবাসার মতই কোন অংশে কম না, মায়ের ভালোবাসার ক্ষেত্রেও বিচার বুদ্ধি বা জাজমেন্ট করার ক্ষমতাটি নানা মাত্রায় স্থগিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ মারা তাদের বাচ্চাদের ব্যাপারে বেশী একটু পশ্রয় দিয়ে থাকেন এবং স্বভাবত সে কারনে নিজেদের সন্তানের ভুলটা সহজে চোখে পড়ে না। আরো একবার, বিজ্ঞানী দেখলেন যে, মার ভালোবাসার সময়ও যে কর্টিক্যাল ডি অ্যাক্টিভেশন হয় তার সাথে রোমান্টিক ভালোবাসার সময় কর্টিক্যাল ডিঅ্যাক্টিভেশন প্যাটার্নের বিস্ময়কর মিল, বিশেষ করে ফ্রন্টাল কর্টেক্স এ, যে এলাকাটি জাজমেন্টের সাথে সংশ্লিষ্ট।


কোন মাকে যখন তাদের নিজেদের সন্তানের ছবি দেখানো হয়, তাদের ব্রেন এভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে ( তুলনা করা হয়েছে পরিচিত একবয়সী অন্য কারো সন্তানের ছবি দেখার সময় যে প্যাটার্ন হয় তার সাথে): aC = anterior cingulate cortex; aCv = ventral aC; C = caudate nucleus; F = frontal eye fields; Fu = fusiform cortex; I = insula; LPF = (ventral) lateral prefrontal cortex; occ = occipital cortex; OF = orbito-frontal cortex; Tha = thalamus; S = striatum (consisting of putamen, caudate nucleus, globus pallidus); PAG =periaqueductal (central) gray; SN = substantia nigra.( A. Bartels,S. Zeki/ NeuroImage 21 (2004) 1155–1166)


মা র ভালোবাসা ( হলুদ রঙ) আর রোমান্টিক ভালোবাসার (লাল রঙ) অ্যাক্টিভেশন প্যাটার্ন। দুই ভালোবাসাই ব্রেনের বেশ কিছু একই অংশকে সক্রিয় করে । ওভারল্যাপিং গুলো লক্ষ্য করুন। aC = anterior cingulate cortex; aCv = ventral aC; C = caudate nucleus; F = frontal eye fields; Fu = fusiform cortex; I = insula; LPF = (ventral) lateral prefrontal cortex; occ = occipital cortex; OF = orbito-frontal cortex; Tha = thalamus; S = striatum (consisting of putamen, caudate nucleus, globus pallidus); PAG =periaqueductal (central) gray; SN = substantia nigra, hi: hippocampus.( A. Bartels,S. Zeki/ NeuroImage 21 (2004) 1155–1166)



যখন মার ভালোবাসা আর রোমান্টিক ভালোবাসার অ্যাক্টিভেশন প্যাটার্নের একটি তুলনা মুলক পরিসংখ্যান করা হয়, দেখা যায় এই দুই ভালোবাসায় ওভার ল্যাপিং থাকা সত্ত্বে কিছু কিছু জায়গা বিশেষভাবে অ্যাক্টিভেটেড হয় উপরের ফ্রেমে (a: Maternal Vs. Romantic) যেমন মায়ের ভালোবাসার সময় (লেবেল করা অংশগুলো শুধু), এবং নীচের প্রেমে রোমান্টিক ভালোবাসার সময় (b: Romantic Vs Maternal)(লেবেল করা অংশগুলো শুধু): aCv = ventral aC; C = caudate nucleus; F = frontal eye fields; Fu = fusiform cortex; I = insula; LPF = (ventral) lateral prefrontal cortex; occ = occipital cortex; OF = orbito-frontal cortex; Tha = thalamus; S = striatum (consisting of putamen, caudate nucleus, globus pallidus); PAG =periaqueductal (central) gray; SN = substantia nigra, hi: hippocampus, HTh = hypothalamus; VTA = ventral tegmental.( A. Bartels,S. Zeki / NeuroImage 21 (2004) 1155–1166)


ভালোবাসা এবং আমাদের ব্রেইন : বিজ্ঞান কি বলে !!? ৪র্থ পর্ব ( শেষ পর্ব )
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×