somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একখানা জোক, গিফট ও বালিকা

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফ্রান্সে নাকি কাউকে অপমান করতে চাইলে তাকে বই উপহার দেয়া হতো। এখনো হয় কিনা জানিনা। (ফ্রান্স সম্পর্কে আমার জ্ঞান ঐ মুজতবা আলী, সুনীল গাঙুলি আর মোনালিসা পর্যন্তই। এবং মোনালিসা যে খাস ফরাসি নয়, তার জন্মস্থান যে ইতালি-এটাও জেনেছি আমি এই মাস কয়েক আগে। তাই এব্যাপারে- শুধু এব্যাপারে কেন, কোন ব্যাপারেই আমাকে প্রশ্ন করে আমার অজ্ঞানতাকে, আবার, নতুন করে প্রমাণ না করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি) ভাবখানা এমন, যেন বই উপহার দিয়ে মনে মনে বিদ্রুপের হাসি হেসে বলা, "গুরু, পেটে তো বিদ্যেবুদ্ধি নেই- আর এদিকে ভাব তো মারো যেন বিদ্যাসাগর। এই বইটা পড়। তাতে যদি একটু জ্ঞানগম্যি হয়!" সবচেয়ে বেশি নাকি অপমান করা যায় ম্যানার বা এতিকেট বিষয়ক বই গিফট করে। আমাকে যদি ম্যানার বা ভদ্রতা বিষয়ক কোন বই উপহার দেয়া হয়, তবে আমি নির্ঘাত ধরে নেব, আমি ম্যানার জানিনা কিংবা অভদ্র। আপনি কোন রুপসচেতন নারীকে "কীভাবে সাজতে হয়" বা কেকা ফেরদৌসিকে- কেকাকে না পারেন অন্তত আপনার আপন(!) বউকে 'কীভাবে ভাল রান্না করতে হয়" টাইপ উপহার দিয়ে দেখতেই পারেন একবার!
আমার অত্যন্ত কাছের একজন আমাকে একটা বই গিফট করেছেন-উপলক্ষ্য বলা বাহুল্য, তাই আর সেদিকে যাচ্ছি না। আমার যে পেটে বিদ্যেবুদ্ধি নেই সেকথা জানতে অক্সফোর্ডে গবেষণা করতে হয় না। আবালবৃদ্ধবনিতা দেখলেই বুঝে যায়। চেষ্টা অবশ্য কম করি না তা লুকাতে। তবে কিনা, ল্যাঞ্জা লুকানো যায় না! তাই আমাকে বই গিফট করায় ঠিক সার্প্রাইসড হইনি। অপমানিত তো নয়ই। কিন্তু গেরোটা লেগেছে অন্যখানে। তিনি আমাকে একটা কৌতুকের বই উপহার দিয়েছেন!
জোকের বই উপহার দেয়ার কারণ থাকতে পারে দুটো-
১। আমি লোকটা অত্যন্ত গম্ভীর। তাই বইটা পড়া দরকার।
২। তিনি জানেন, আমি মাঝেসাঝে মাসেদুমাসে রম্য লেখার ব্যর্থ প্রয়াস করে থাকি। আর এজন্য আমাকে নেট ঘেটে, ফেসবুকের পেজ থেকে জোক সংগ্রহ করে আনতে হয়। কবির ভাষায় বলতে গেলে, "যেথা পাই চিত্রময়ী বর্ণনার বানী, কুড়াইয়া আনি"। তাই হয়তো আমার কষ্ট লাঘব করতেই, তিনি বইটা গিফট করেছেন। হয়তো ভেবেছেন, "বেচারা চুরিচামারি করে পোস্ট লেখে। এই বইটা দিলে আর ওকে নেট ঘেটে কষ্ট করতে হবে না"।
প্রথম কারণটা যে নয় সে আমি জানি। ২য়টাই হবে। তবে কি আমার রম্য লেখার রহস্য সবাই জেনে গেল? সবাই বুঝে ফেলেছে, আমি চুরি করে লিখি?
টেনসন!
সবাই যেহেতু বুঝেই ফেলেছে- কী আর করার। আজও একটা জোক শোনাই। কে যেন বলেছিল, স্বভাব যায় না ম'লে! ভাড়াটে, ব্যচেলর, জঙ্গি ইত্যাদি এখনকার হটডগ। তো ভাড়াটে আর বাড়িওয়ালাকে নিয়েই একটা শুনুন।
বাড়িওয়ালা ভাড়া চাইতে এলে, ভাড়াটে রেগে মেগে বলল, "আমি এমাসের ভাড়া দিতে পারবো না!"
বাড়িওয়ালা তাজ্জব। তিনি বললেন, "সেকি! তুমি না গতমাসেও একথা বললে!"
ভাড়াটে ততোধিক ক্ষেপে জবাব দিল, "আমি, অন্যদের মতো রোজ রোজ কথা পাল্টাই না। ভদ্রলোকের এক কথা!"
25/08/2016
2
সেজেছো কি আজ ফুলে?
ভোরবালিকা, বকুল আজ ফুটেছে তোমার চুলে?
বাতাসে আজ কীসের দোল-
হেসেছো একটু-পড়েছে টোল/
বাবুই পাখি বেঁধেছে বাসা তোমার আঙ্গুলে?/
নি*, সেজেছো কি আজ ফুলে?
মার্ক টোয়েন নাকি একবার অসুস্থ হওয়ায় সারা বিশ্বে খবর রটে গিয়েছিল, তিনি পটল তুলেছেন। পরে তিনি সুস্থ হয়ে জনগনকে বলেছিলেন, "আপনারা হয়তো শুনে কষ্ট পাবেন যে, আমি বেঁচে আছি!"
আমিও তার মতো করে বলতে চাই, আপনার হয়তো শুনে খুশী হবেন যে, "আমি কবিতা লেখা ছেড়ে দিয়েছি!"
পাঠিকা,(I don't care about my পাঠক!) আপনি হয়তো অলরেডি বুঝে গেছেন যে, আমি সাহিত্য রচানার তাগিদে উপরের অকবিতাখানা লিখিনি। আমার লক্ষ্য ছিল, একজনকে ইম্প্রেস করা। তো লিখে, তাকে text করে অপেক্ষা করছি, কখোন তিনি উচ্ছোসিত হয়ে রিপ্লাই করবেন, "ওয়াও কী সুইট! আপনি কবিতাও লিখতে পারেন? জানতাম না তো!"
সে গুড়ে কাঁকড়। তিনি স্ট্রেটকাট বললেন, "ধুর, ফুল কই পাবো?"
আমি কিছু বললাম না। পরে, তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, "আচ্ছা, আপনাকে ইম্প্রেস করি কীকরে বলুন তো?"
বললেন, "বাঙালি ছেলেরা যেভাবে করে, কবিতা লিখে"
আমি ইতস্তত করে বললাম, "সে তো একখান লিখেছিলাম। আপনি ইম্প্রেসড হলেনই না"
- "ওমা কখোন? কই কবিতা?"
বললাম, "ঐ যে, "সেজেছো কি আজ ফুলে"- ঐটা?"
-"ঐটা কবিতা? আমি তো ভাবলাম এমনিতেই ম্যাসেজ দিছেন বোধহয়। সরি, বুঝতে পারিনি। অবশ্য খুব ভাল হয়েছিলো...............bla bla""
কী আর করার, রুপম ইসলামের গানটা গাইতে শুরু করলাম,
"কিচ্ছু পারলাম না, শুধু বাড়ল ওজন বুক/
সুখী গাল বোঝেনা কবিদের অসুখ!"
06/09/2016
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৩
২১টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×