somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার কেন্দ্রকথা (১)

১০ ই মে, ২০০৮ বিকাল ৩:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্মৃতিকাতরতা আসলেই খুব খারাপ জিনিস...পেছনে যা ফেলে আসা হয় তার প্রতি সমর্পিত মনোবেদনা আসলে বর্তমানে চাইয়াও না পাওয়ার বোধ থেইকা কষ্টের। কিন্তু স্মৃতিকাতরতায় নেশাতুর আহ্বান থাকে। স্মৃতি'র উপলক্ষ্যে তৈরী হওয়া বেদনার গুরুত্ব মর্ষকামের মতোন...আর তাই কষ্ট নিয়া হইলেও স্মৃতিরে নিয়া নাড়াচাড়া করি...হঠাৎ ভিন্ন উপলক্ষ্যে আসা শব্দের মর্তবা পৌছায় রোমান্টিকতার গন্তব্যে...চোখে জল...শিহরিত রোম...কর্ণপটহ লালাভ...

গতোকাল নাস্তিকের ধর্মকথা'র এস এম সুলতান আর ভ্যান গ'র স্মরণে দেওয়া পোস্টে একটা মন্তব্য করতে গিয়া বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের রেফারেন্স চইলা আসলে পর আমি স্মৃতিকাতর হই...স্মৃতিকাতরতার যেই বিমর্ষ আবেদন, তার স্রোতে খানিকটা নিথর হইয়া পরলে মৌসুম খানিকটা শঙ্কিত হয়। আমি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের দিনগুলি নিয়া ভাবতে বসি...বাতি নিভাইয়া ঘুমাইতে যাই...তারপর স্বপ্ন দেখি, সেই আড়াইতলা'র টেরাস...মোতালেব-হামিদ আর তৈয়ব ভাই...ভালোবাসার মাছ-ভাত...অশ্বশক্তির ছোলা ভূনা...

বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতি আকৃষ্ট হইছিলাম যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি। তখন অনেক কিছু শিখছি...মায়ের সংগ্রহ থেইকা বঙ্কিম-রবীন্দ্র-শরৎ-উপেন্দ্র কিশোর-সুকুমার পাঠ শেষে চুরি কইরা নীহাররঞ্জন-কাজী আনোয়ার হোসেন-রকিব হাসানে উপনীত হইছি...কিশোর বয়সের অ্যাডভেঞ্চার পার কইরা প্রেমের পাঠ...ইংরেজী মিডিয়ামের সংসর্গ থাকনের কারনে টিনটিন-আরচি আর মারভেল কমিকসের পাতায় ডাগর ছেলেমেয়ের সংলাপ ছবি দেখি। কিন্তু কিসের জানি একটা অপূর্ণতা ছিলো নিজের উপলব্ধিতেই...জাভিকের বইয়ের তালিকা যেনো মেঘ না চাইতেই চল! পাশ্চাত্যের চিরায়ত সাহিত্যের সাথে পরিচয়...চিন্তাশীলতার হাতছানিতে বান্ধা পরলাম...

ক্লাসিক পড়নের আগ্রহটা তৈরী হইছিলো মায়ের ইন্সপিরেশনে...কিন্তু তার অভ্যাস তৈরী করলো বিসাকে.। আকর্ষণ কেবল ঐ বইগুলি ছিলো এইটা কইলে আসলে ভুল কওয়া হয়। শুক্রবারের জনস্রোত-বন্ধুতা...সায়িদ স্যারের গল্প বলার ধরণ! আর সেই ছোট অথচ ঠাসা লাইব্রেরীটার প্রাচীন অবয়ব! সায়িদ স্যাররে সেই বয়সে মনে হইতো পৃথিবীর সবচাইতে জ্ঞানী আর আকর্ষণীয় মানুষ...মহীরূহ...

কিন্তু বয়সের সাথে সাথে সায়িদ স্যারের সাথে বন্ধনটাও বাড়লো...বন্ধুত্বের রেশটা ধীরে ধীরে নৈকট্য আনে আর নৈকট্য আসলে বিরূপও করে...ক্লাস নাইনে আমি যখন বস্তুবাদী তখন সায়িদ স্যারের সংশয়বাদ আমারে আর কেনো জানি মোহিত করে না...আমাগো ব্যাচ মানে কচি আঁতেলদের আসর ভূক্ত বেশীরভাগ জনই আমরা কেন্দ্রের সাথে জীবন আস্টেপৃষ্টে বানলাম...সংগঠক...জাভিকের ভলান্টিয়ার হইয়া দিবারাত্রি কাটানো তখন আমাগো নিয়তি। এসএসসি'র পর মোর্তুজা-বিপ্লব-কচি-মোখলেস আর আমি কেন্দ্র কেন্দ্রীক সকাল-বিকালে তর্ক করি স্যারের লগে বিবিধ বিষয়ে...কলেজ কালেও যার রেশ চললো পুরাটা সময়...

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমি প্রায় যোগাযোগহীন হইয়া পরি কেন্দ্রের সাথে...স্যারের কথার মায়াজাল আর ভালো লাগে না...সমাজ প্রগতির আন্দোলনের সাথে তুল্যে-মূল্যে জাভিক'রে একধরণের সুশীলতা বই আর অন্য কিছু মনে হয় না...কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে দুপুরটা কেন্দ্রের ক্যান্টিনে কাটাই...কচিৎ বিকালে স্যারের মুখামুখি হইলে একটা সালাম দিয়া সটকাইয়া পরা।

কিন্তু কেন্দ্রবিরোধী আমি সক্রিয় রাজনীতি ছাড়নের পরদিন'ই আহ্বান পাই কেন্দ্রের চলচ্চিত্র চক্র সংগঠনের...এইবার আর বিনা পারিশ্রমিকের ভলান্টিয়ার না, পুরা মাসিক বেতনভূক্ত কর্মচারী। এই ছয় মাস আমার রাজনীতি'র স্মৃতিকাতরতামুক্ত হইতে প্রায় রাতদিন ২৪ ঘন্টাই কেন্দ্রে কাটাই...বিভিন্ন পরিকল্পনা করি...আর এইসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কালেই আমি আবিষ্কার করি এক অন্য আব্দুল্লাহ আবু সায়িদরে...যিনি তার ভবিষ্যত নিয়া চিন্তিত, যেই কারনে একরম সম্পত্তিজাত মানসিকতায় আক্রান্ত হইলেন তার উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠানরে নিয়া...

১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×