বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি ও ই-মেইল অ্যাকাউন্টস এবং কম্পিউটার হ্যাকের সূত্র ধরে বেরিয়ে আসছে ট্রাইব্যুনালের সাথে ভারতের কানেকশান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের সাথে বিদেশে একজনের কথোপকথনের রেকর্ড এবং ই-মেইলের ডকুমেন্টচলে গেছে লন্ডনভিত্তিক বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন দি ইকোনমিস্টের কাছে।
বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি ও ই-মেইল অ্যাকাউন্টস এবং কম্পিউটার হ্যাক করে দি ইকোনমিস্ট এসব তথ্য হস্তগত করেছে বলে ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করেছেন।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক গতকাল নিজেই বিষয়টি ওপেন কোর্টে প্রকাশ করে একটি আদেশ পাস করেছেন। বিচারপতি নাসিম জানান তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের কাছ থেকে ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালে এবং বিভিন্ন আদেশের সময় সহায়তা নিয়েছেন বিচারপতি নিজামুল হক। সেই জিয়া উদ্দিন হচ্ছেন BORD OF ADVISORS The Indian Campaign on the International Criminal Court.
আর সেই আহমদ জিয়াউদ্দিন থেকেই সহায়তা নিয়েছেন নিজামুল হক।
বিচারপতি নিজমুল হক নাসিম স্কাইপি আলোচনার বিষয়টি স্বীকার করে দ্য ইকোনমিস্টের বিরুদ্ধে রুল জারির পর বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। বিচারপতি কোর্টের বাইরে মামলা নিয়ে কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিশেষ আলোচনা করতে পারেন কিনা—এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আইনজীবী মহলে।
ইকনোমিস্টকে জারি করা রুলের আদেশে বিচারপতি নিজামুল হক বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনটি নতুন ধারণা। এজন্য তিনি বিশেষজ্ঞ হিসেবে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন ও অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করে পরামর্শ নেন। আমাদের কাছে আসা স্কাইপি আলোচনার তথ্যে বিচারপতির মুখে শোনা যায় বিভিন্ন কথা।
তিনি ১৪ অক্টোবরের কথোপকথনে আহমদ জিয়াউদ্দিনকে বলেন—
‘গভর্নমেন্ট রায়ের জন্য পাগল হইয়া গেছে। সাঈদীরটা হলে ডিসেম্বরের মধ্যে রায় দেতে পারবো। গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া। তারা একটা রায় চায়।
.................... আমাদেরও ইয়ে ছিল যে, গোলামকেই প্রায়োরেটি দিতে হবে। সাঈদীর কেসটা খুব লাইট ওয়েট কেস......
.................... সাঈদীর কেসটা ডিফারেন্ট। এই সাঈদীর কেইসটার লগে আইনের সম্পর্ক খুব বেশী না। এডা আমাদের দরবারের মতই। ’
১৫ অক্টোবরের কথোপকথনের এক পর্যায়ে তিনি ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনকে বলেন, ‘আমাদের তো স্টেট মিনিস্টার যাচ্ছে হজে। আজকে আসছিল আমার লগে দেখা করতে সন্ধ্যায়। ওনি বললেন যে রায়টা তাড়াতাড়ি দেবেন।’
আওয়ামী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিদের পোষ্ট দেখে মনে হলো, তাদের চোখ নেই কান নেই তারা বোধহীন প্রাণী। এসব নির্বোধ প্রাণীদের কথাশুনে কিছু প্রশ্ন চলে আসে-
=> একজন বিচারপতি গোপনে কারো সাথে আলাপ করতে পারেন কিনা? বিচারকদের আচরনবিধি অনুযায়ী এটা আইন লংঘন করে কিনা?
=> বিচারবিভাগের উপর বিশেষ করে আদালতে বিচারাধীন কোন মামলায় সরকার কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করতে পারে কিনা?
=> যেখানে বিচারপতি বলছেন, সাঈদীর মামলার সাথে আইনের কোন সম্পর্ক নাই। সেখানে আবার কিসের বিচার? সেখানে বিচারক আর মাস্তানের মাঝে পার্থক্য কোথায়?
=> কোন মামলার জাজমেন্ট বিচারক ব্যাতিত অন্য কেউ লিখতে পারেন কিনা? অবিটার ডিক্টা বা আদালতের পর্যবেক্ষন কি একজন সিভিলিয়ান লিখতে পারেন কিনা?
=> কোন বিচারক যদি কোন দলীয় আদর্শের দ্বারা প্রভাবিত হন, তাহলে তিনি বিচারক হিসাবে অধিষ্ঠিত থাকতে পারেন কিনা?
উপরের সবগুলো প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে-
..........না
...........না
...........না
কোথায় রুল অব ল' কোথায় আইনের শাসন। যেখানে বলা হয়েছে আইনের দৃষ্টিতে সকল মানুষ সমান?
কোথায় ইকুইটি এন্ড জাস্টিস? যেখানে বলা হয়েছে ন্যায় পরায়নতাই আইনের মুল দর্শন!
জনগনের শেষ আশ্রয় স্থল আদালতে যদি দলীয় সন্ত্রাসী বসানো হয়, তাহলে কোথায় দিয়ে দাঁড়াবে জনগন? যদি বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা হারিয়ে যায়, তার পরিপ্রেক্ষিতে যে নৈরাজ্য তৈরী হবে, তার দায়ভার ফ্যাসীবাদী আওয়ামী সরকারকেই বহন করতে হবে।
এরপর প্রশ্ন আসবে, আইনের কিছু টার্ম উল্লেখ করে কিছু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি এবং ফ্যাসীবাদী আওয়ামী লীগের পাচাটা গোলাম, যারা মুলতঃ রাজাকারের বংশধর তাদের কথাগুলো শুনে সাধারন মানুষগুলো বিভ্রান্ত হবে না?
না। সাধারন মানুষ বিভ্রান্ত হবে না। তবে ফ্যাসীবাদী স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের পাচাটা গোলামরা মনে মনে সুখ পাইতে পারে। কিন্তু সাধারণ মানুষ জেনে গেছে আসল সত্য।
যুদ্ধপারাধ ট্রাইবুনাল নামে যে তামাশা চলছে, তাহলো শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম মিথ্যাচার। জামাত শিবিরকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যার্থ হয়ে, ভারতের চাপে ভারতের গোলামরা টাইবুনাল নামে ক্যাঙ্গারু কোর্টের আয়োজন করেছে।
কিন্তু মিথ্যাবাদী এবং প্রহসনের এই ট্রাইবুনালের বিরুদ্ধে জনগণ জেগে উঠেছে। রাজপথেই সকল অন্যায় অত্যাচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৫৬