somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল কুরআনের আলোকে নারী অধিকার (সত্য উম্মোচিত)/আল কুরআন মানব রচিত নাকি স্রষ্টার তার বিচারের দায় পাঠকের বিবেকের উপর

১৮ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্রষ্টা প্রদত্ত কোন বিধানের মত নির্ভূল, উত্‍কৃষ্টতম, যথাযথ ও ভারসাম্যপূর্ণ বিধান কেউ তৈরী করতে সক্ষম নয়৷ স্রষ্টার বিধানের শ্রেষ্ঠত্বের কোন তুলনাই হতে পারে না৷ স্রষ্টা প্রদত্ত কোন বিধানের উপর প্রশ্ন উত্থাপন করা বড়ই স্পর্ধার বিষয়৷ তবে কোন বিধান স্রষ্টা প্রদত্ত বলে দাবি করা হলে, সেটা আসলেই স্রষ্টা প্রদত্ত কিনা তা যাচাই করা অন্যায় তো নয়ই বরং স্বাভাবিক বিবেক-বুদ্ধির দাবি৷ বুদ্ধিমানেরা যাচাই-বাছাই করে কোন কিছু গ্রহণ-বর্জন করে থাকে, আর বোকারা অন্যের তালে তালে/বংশ প্রীতির কারনে/আবেগ তাড়িত হয়ে কোন কিছু গ্রহণ-বর্জন করে থাকে৷

ইসলামে নারী অধিকার দিয়েছে বলতে যদি বুঝায় ১৪০০ বছরে তত্‍কালীন সমাজে নারীদের যে অবস্থা ছিল তার তুলনায় নারীদের কতটুকু অধীকার দিয়েছে, তাহলে আমি বলবো অবশ্যই সে তুলনায় ইসলামে নারীদের অনেক অধীকার দিয়েছে৷ যদি প্রশ্ন করা হয় অন্য ধর্মের তুলনায় ইসলামে নারীদের কতটুকু অধিকার দিয়েছে, আমি বলবো সে বিতর্কে হয়ত আপনি প্রমাণ করতে পারবেন ইসলামে অনেক বেশি নারী অধীকার দিয়েছে৷ কিন্তু আপনি যদি প্রশ্ন করেন মানুষ হিসাবে ইসলামে নারীদের কতটুক অধিকার দিয়েছে, তাহলে আমি বলবো ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য করেছে৷
ইসলামে নারীদের উপর পুরুষদেরকে কতৃত্বশীল করেছে৷ পুরুষ পরিচালক,নারী তার অধীনস্ত৷ পুরুষেরা যাতে নারীদের উপর কর্তৃত্ব খাটাতে পারে সে জন্য পুরুষদের হাতে দেয়া হয়েছে অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব৷ এ নীতি সম্পর্কে আল ক্বুরআনের বক্তব্য লক্ষ্ করুন:
পুরুষ নারীর কর্তা। এ জন্য যে, আল্লাহ‌ তাদের একজনকে অন্য জনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং এ জন্য যে, পুরুষ নিজের ধন-সম্পদ ব্যয় করে। কাজেই সতী-সাধ্বী স্ত্রীরা আনুগত্যপরায়ণ হয় এবং পুরুষদের অনুপস্থিতিতে আল্লাহর হেফাজত ও তত্বাবধানে তাদের অধিকার সংরক্ষণ করে থাকে।৫৮ আর যেসব স্ত্রীর ব্যাপারে তোমরা অবাধ্যতার আশঙ্কা করো, তাদেরকে বুঝাও, শয়নগৃহে তাদের থেকে আলাদা থাকো এবং তাদেরকে মারধোর করো।৫৯ তারপর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়ে যায় তাহলে অযথা তাদের ওপর নির্যাতন চালাবার জন্য বাহানা তালাশ করো না। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ ওপরে আছেন, তিনি বড় ও শ্রেষ্ঠ। (সুরা আন নিসা:34)

তালাক প্রাপ্তাগণ তিনবার মাসিক ঋতুস্রাব পর্যন্ত নিজেদেরকে বিরত রাখবে। আর আল্লাহ‌ তাদের গর্ভাশয়ে যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তাকে গোপন করা তাদের জন্য বৈধ নয়। তাদের কখনো এমনটি করা উচিত নয়, যদি তারা আল্লাহ‌ ও পরকালে বিশ্বাসী হয়, তাদের স্বামীরা পুনরায় সম্পর্ক স্থাপনে প্রস্তুত হয়, তাহলে তারা এই অবকাশ কালের মধ্যে তাদেরকে নিজের স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নেবার অধিকারী হবে।২৪৯নারীদের জন্যও ঠিক তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে যেমন পুরুষদের অধিকার আছে তাদের ওপর। তবে পুরুষদের তাদের ওপর একটি মর্যাদা আছে। আর সবার ওপরে আছেন আল্লাহ‌ সর্বাধিক ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকারী, বিচক্ষণ ও জ্ঞানী। (সুরা বাকারা:২২৮)
আপনি হয়ত আমার অভিযোগ অস্বীকার করে বলবেন ইসলামে পুরুষকে শাসক করেনি বরং ইসলাম বলে নারী-পুরুষ পরস্পর পস্পরের বন্ধু ও সাথী৷ আপনাকে প্রথমে স্বীকার করতে হবে পুরষদেরকে নারীদের পরিচালক/কতৃত্বশীল করেছে৷ আপনি বলবেন পুরুষকে যেহেতু নারীর যাবতীয় খরচ বহনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই পরিচালনার দায়িত্ব তার উপরে চলে আসে৷ আমি বলব আমার অভিযোগ এখানেই৷ অর্থ কর্তৃত্ব খাটানোর প্রধান হাতিয়ার৷ এ অর্থনেতিক কর্তৃত্ব আরো বেশি করে দিতে ইসলাম উত্তারাধিকার সুত্রে পুরুষের অংশ নারীর দ্বিগুন নির্ধারন করেছে৷ আপনাকে যদি প্রস্তাব দেয়া হয় আপনি কারো অধীন হয়ে থাকবেন, যার অধীন হবেন তিনি আপনার সার্বিক খরচ নির্বাহ করবেন৷ এমনকি মালিকের মৃত্যূর পর মালিকের সম্পদের ভাগের একটি অংশ আপনি ( পেনশন স্বরুপ বা যে নামেই হোক)৷ একটি কথা সবসময় মনে রাখতে হবে যে চিরজীবন আপনি অধিনস্ত৷ আপনি কি এমন অধিনস্ত হতে পছদ করবেন?
মজার বিষয় কি একজন দাসকে যদি আপনি মনস্তাত্বিকভাবে প্রস্তুত করতে পারেন যে তার সৃষ্টি দাস হিসাবে, দাস হিসাবে অনুগতভাবে মনিবের সেবা করাই তার দায়িত্ব ও কর্তব্য।দাস হিসাবে যে তার মানসিক কষ্ট তা কেটে যাবে। ধর্মীয় বিষয়ে মানুষ চরম দূর্বল। যেহেতু নারীদেরকে ধর্মের নামে পুরুষের অধীনস্ত করা হয়, তারা অধিনস্ত থেকেও অধিনস্ত থাকার মানসিক কষ্ট থেকে মুক্ত থাকতে পারে।
পুরুষদের কর্তৃত্বশীল করার কুফলসমূহ:
১. এ নীতি নারীদের শিক্ষা ও উন্নত জীবন গঠনে অনুৎসাহীত করে:
যখন একটি নারী ছোট বেলা থেকে বড় হয় এ ভেবে যে সে যত যোগ্যতাই অর্জন করুক না কেন তার কোন মূল্য নেই, যখন তার বিবাহ হবে তাকে তার স্বামীর অধীনে চলে যেতে হবে - এ ভাবনা নারীর প্রতিভা বিকাশের প্রধান বাধা৷ একজন পুরুষ যখন বড় হয় তখন সে ছোট থেকেই তার উজ্জ্বল ক্যরিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে৷ এ স্বপ্ন তার প্রতিভা বিকাশে তাকে বহুদুর এগিয়ে নিয়ে যায়৷সাম্প্রতিককালে নারীদের যে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ তৈরী হয়েছে তা নারীবাদীদের আন্দোলনের ফলে এবং নারীদের পুরুষের কর্তৃত্ব থেকে বের হওয়ার মানসিকতা থেকে।
২. নারীদের মেধা ও যোগ্যতা বিকাশে প্রধান অন্তরায়:
এছাড়া একজন পুরুষ কর্মজীবনে এসে তার কর্মের মাধ্যমে সে তার যোগ্যতার বিকাশ ঘটিয়ে থাকে৷ উল্লেখ্য, বই পড়ে মানুষ যে বিদ্যা অর্জন করে তার চেয়ে অনেক বেশি বিদ্যা অর্জন করে কর্মজীবনে তার কর্মক্ষেত্রে বাস্তব প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে৷ একটি ৫ম শ্রেনি পাস করা ছেলেও যদি রাষ্ট্র প্রধাণদের সাথে ছোট বেলা থেকে চলা-ফেরার সুযোগ পায় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকে সে ছেলে বয়স্ক হলে যদি তাকে রাষ্ট্র প্রধাণ বানানো হয় সে যথারিতী রাষ্ট্র পরিচালনা করতে সক্ষম হবে৷ অপরপক্ষে এম, এ পাস তুখর মেধাবী এক গরীব যুবক যে কোনদিন কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হয়নি, তাকে যদি হঠাৎ রাষ্ট্র প্রধাণ বানানো হয় তাহলে রাষ্ট্রের কি অবস্থা হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷
৩. ব্যবস্থানাগতক্ষেত্রে এ নীতি নারীদের অযোগ্য করে তোলে:
একজন পুরুষ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে ইন্টারএকশন এর ফলে তার বিভিন্ন বিষয় ব্যবস্থাপনাগত যোগ্যতাও বৃদ্ধি পায়৷ অপরদিকে এ ধরনের নীতির সমাজে প্রথমত নারীরা শিক্ষার্জনের প্রতি আগ্রহ তো হারিয়ে ফেলে৷ দ্বিতীয়ত:তাদের কর্মজীবন বলতে সাংসারিক জীবনই সব, যেখানে রান্না-বান্নার বিদ্যা ভালো করে রপ্ত করতে হয়৷ রান্না-বান্না ও ঘর গোছানোর পর অতিরিক্ত সময়টি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কার স্বামী ও কার ছেলে-মেয়ে কেমন ইত্যাদি সব গাল-গল্পে কাটে৷ এ সকল গাল গল্পের মাঝে বিভিন্ন প্রকার পশ্চাদ আলোচনা-সমালোচনা, পরনিন্দা ইত্যাদি স্থান পায় যা বিভিন্ন ধরণের ঝগড়া বিবাদে বেশ ভালোই অবদান রাখে৷ আর যেহেতু তারা বাস্তব কর্মজীবনে প্রবেশের সুযোগ পায় না, এ ধরনের সমাজে নারীদেরকে সমাজের বা কোন প্রতিষ্ঠানের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়৷এ ধরনের পরিবেশে বড় হওয়ায়, নারীরা নিজেদেরকে মনে করে সংসার করাই তাদের একমাত্র কাজ ও যোগ্যতা৷ সমাজের কোন সম্মানজনক কোন পদে অধিষ্ঠিত হওয়া তাদের কাজও নয় এবং যোগ্যতাও নেই৷
হঠাৎ কোন উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় নারীরা সক্ষম নয়৷ এ যোগ্যতা থাকবেই বা কি করে-ছোট বেলা থেকে যে পরিবেশে ও মনমানসিকতা নিয়ে বড় হয়েছে সেরুপই হওয়ার কথা৷ মানসিকতা অর্ধেক যোগ্যতা কেড়ে নেয়৷যে সিংহ শাবক ভেড়ার পালের মধ্যে বড় হয়, সে সিংহ কখনও সিংহসুলভ আচরণ করতে সক্ষম হয় না৷কারণ সে সিংহ জানেই না যে সে সিংহ৷তাছাড়া সে তো ভেড়ার আচরন রপ্ত করেছে, সিংহের সাহসিকতা ও কার্যাবলী তো সে শেখেইনি৷ ছোট বেলা থেকেই মেয়ে শিশুদের বাস্তব জীবনের সকল জটিল পরিস্থিতি থেকে আলাদা করে রাখা হয়৷ দায়িত্বশীলতামূলক সকল কাজ ছেলে সন্তান দিয়ে করানো হয়, আর শুধু সাংসারিক কিছু কাজ মেয়েদের দিয়ে করানো হয়৷ সুতরাং পুরুষেরা সকল পরিস্থিতি মোকাবেলা, সামাজিক ইন্টারএকশন, ও ব্যবস্থাপনাগত যোগ্যতা রপ্ত করতে করতে বড় হয়ে থাকে৷ পুরুষেরা সামাজিক বিভিন্ন যোগ্যতা লাভ করছে উভয় দিক দিয়ে- মানসিক ও বাস্তব কর্মক্ষেত্রের মাধ্যমে৷
অভিযোগ: আমি যে ধরনের সমাজের কথা বলছি তাতে নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশার সুযোগ দিতে হবে৷ আর এরুপ সুযোগ দিলে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক (যেমন-ইভটিজিং,ধর্ষন ইত্যাদি) সমস্যার উদ্ভব হবে৷
জবাব: কুরআন এর এ বিধান যে যে নারী-পুরুষে যে বৈষম্য করেছে উপরোক্ত আলোচনায় তা ব্যখ্যা করছি। কুরআনের বিধান মানলে উপরোক্ত সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয় কিনা তা আপনাকে আগে স্বীকার করতে হবে। কুরআনের বিধান না মানলে যে সমস্যা (ইভ টিজিং,ধর্ষন) হবে বলে আপনি বলছেন সেটা আরেকটি সমস্যা। কুরআনের বিধান মানলে এক সমস্যা আর না মানলে আরেক সমস্যা। দুটি তো সমস্যা। এক সমস্যার কারন থেকে আপনি আরেক সমস্যা গ্রহণ করতে পারেন না বা সমাধান বলতে পারেন না। সমাধান কি হতে পারে সে আলোচনায় পরে আসছি।
অভিযোগ: নারীরা সৃষ্টিগতভাবে সকল কাজের যোগ্য নয়৷ তাদের শারীরিক গঠন ও প্রকৃতি সকল কাজের উপযুক্ত নয়৷ হ্যা,এটা সত্য যে নারীরা শারীরিক গঠনগত দিক ও প্রকৃতিগতদিক থেকে পুরুষের থেকে কিছুটা ভিন্ন৷ তাই বলে তারা সামাজিক সকল কর্মক্ষেত্রের যাওয়ার অযোগ্য, পুরুষের অধীনস্ত থাকতে হবে তা বলা যৌক্তিক নয়৷ আমাদের সমাজের পুরুষেরা যে সকল কাজ করে তার প্রায় সকল কাজ একজন নারী করতে সক্ষম যদি তারা সে ধরনের পরিবেশ,পরিপাশ্বিকতা ও মনমানসিকতা নিয়ে বড় হয়৷
৪. জাতী তার অর্ধেক সম্পদ(নারী)এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়:
একটি জাতীর সবচেয়ে বড় সম্পদ হল মানব সম্পদ৷ মানুষ বলতে নারী-পুরুষ উভয়কে বুঝায়৷ এ ধরনের সমাজে যেহেতু নারীরা কর্মজীবনে আসে না, দেশ ও জাতী তাদের সুপ্ত মেধা ও যোগ্যতার সেবা থেকে বঞ্চিত হয়৷ জাতীর মহামূল্যবান সম্পদ ঘরে আবদ্ধ থেকে অপচয় হয়৷ একটি জাতীর অর্ধেক সম্পদ থেকে সে জাতী বঞ্চিত হয়৷
৫. এ নীতির ফলে নারীরা মানসিক ও শারিরীকভাবে নির্যাতন ও নিগৃহিতের শিকার হয়:

এ ধরনের সমাজে নারীরা নির্যাতন ও নিগৃহতের শিকার হয়৷ যেহেতু তারা পুরোপুরি পুরুষ নির্ভর, তারা মুখ উচু করে কথা বলতে পারে না৷ স্বামীর হাতে নির্যাতীত হওয়ার পাশাপাশি শশুর-শাশুরী ও শশুর বাড়ীর নিকটস্থীয়দের কর্তৃকও মানসিক ও শারিরীক নির্যাতনে নির্যাতীত হয়ে থাকে৷

অভিযোগ:
ইসলামে নারীকে চাকরী করার অনুমতি দেয়৷ ইসলাম নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে এমন সকল ক্ষেত্রে নারীদেরকে নের্তৃত্ব দেয়ারও অনুমতি দেয়৷ নারীরা এমনকি নারী বিষয়ক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হতে পারে৷ ইসলামে জ্ঞানার্জন করা নারী-পুরুষ সকলের উপর ফরয করেছে৷ সুতরাং জ্ঞানার্জনে নারীদেরকে ইসলাম উত্‍সাহিত করে৷ হযরত আয়েশা (র:) ছিলেন একজন মুহাদ্দিস৷ অতএব আপনার বক্তব্য ভিত্তিহীন৷
জওয়াব: ইসলামে নারীকে চাকরি করার অনুমতি দেয় স্বামীর দয়ার উপর৷ স্বামী অনুমতি না দিলে স্ত্রী চাকরি করতে পারবে না৷ আর স্ত্রী চাকরি করবেই বা কেন, যেহেতু স্বামী থেকে সবকিছু পাচ্ছে৷ আর যদি কর্তৃত্বের জন্য চাকরি করে, তা তো ইসলামে বৈধ হবে না, কারন স্বামীর আনুগত্য ফরয৷ বর্তমানে আমাদের দেশে নারীদের চাকরিতে আসার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ এ প্রবণতার মুল অবদান আধুনিক নারী অধীকার আন্দোলনকারীদের৷ আমি নারী অধিকার আন্দোলনকারীদের বলছি না তারা অনেক ভাল/খারাপ৷আমি শুধুমাত্র সত্য তুলে ধরলাম৷ বর্তমানে আমাদের দেশে নারীদের যতটুকু কর্মক্ষেত্রে আসতে দেখা যাচ্ছে তার অনেকটা অবদান তাদের৷ পুরুষদের অথনৈতি কর্তৃত্বের কারনে দীর্ঘদিন যাবত নারীরা মুখবুজে নির্যাতন সহ্য করে আসছে৷
আপনি হয়ত বলবেন নারীরা নির্যাতিত হলে তার জন্য ইসলাম প্রতিকার নারীকে দিয়েছে৷ প্রথমত: নারী সালিসির মাধ্যমে মীমাংসা করার চেষ্টা করবে৷ মীমাংসা না হলে সে তালাক চেয়ে নিতে পারে৷
নারীকে অধিনস্ত করে দিয়ে তারপর নির্যাতিত হলে তা থেকে বেরিয়ে আসার এ সমাধান যথার্থ নয়৷ কারন প্রাথমিক কিছু নির্যাতন আছে যার প্রতিকারে সালিসি ডাকাও সম্ভব নয়৷ কাজের জন্য স্বামীর বা শশুর-শাশুরীর অন্যায়ভাবে বকা-ঝকা, বিভিন্ন সময় অপমানজনক কথা,ব্যবহার ইত্যাদি আচরনের মাধ্যমে পরিবারের দ্বিতীয় শ্রেনীর সদস্য হিসাবে গণ্য করা প্রাথমিক নির্যাতনের আওতায় পড়ে৷
দ্বিতীয় স্তরের নির্যাতন হলে সালিশি ডাকা সম্ভব৷ কিন্তু সেখানে কতটুকু ন্যায় বিচার পাবে তা প্রশ্ন থেকে যায়৷ আর ন্যায় বিচার না পেলেই যে তালাকের পথে হাটা সবার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না৷ তাছাড়া আদালতের জটিলতা তো আছেই৷ সামাজিক মান সম্মানের বিষয় আছে৷ তাছাড়া তালাক গ্রহণ করলে তালাকের পর সন্তানেরা পিতা থেকে আলাদা হওয়াই তাদের মানসিক সুষ্ঠ বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়৷ এ মহিলার পক্ষে আবার বিবাহ সম্ভব হয় না৷ আবার বিবাহ হলেও পূর্বের স্বামীর সন্তানেরা সমস্যার সম্মুখিন হয়৷ তালাকাবস্থায় জীবনটা মনে হয় যেন অভিষাপের৷ মেয়ে সন্তান থাকলে তাদের ভালো পাত্রে বিবাহ দেয়া বেশ কঠিন হয়ে দাড়ায়৷ ইত্যাদি বিবেচনায় একজন নারী স্বামীর নির্যাতন থেকে বাচতে তালাকের পথে হাটার বদলে নির্যাতন সয়ে জীবন কাটানোই ঢের ভাল মনে করে৷ সুতরাং দেখা যাচ্ছে ইসলাম নারীকে পুরুষের অধীনস্ত রেখে তারপর তারা নিগৃহিত হলে তা থেকে বাচার যে উপায় বাতলে দিয়েছে তা যথার্থ নয়৷
এবার আসি নারী নেতৃত্বের বিষয়ে৷ নারী বিষয়ক মন্ত্রীত্ব বা নারী বিষয়ক হাতে গোনা কয়েকটি পদে আসতে পারাটা কখনো এ অর্থ করে না যে নারীরা সামাজিক সম্মানজনক পদে অধিষ্ঠিত হতে পারে৷
ইসলাম নারী-পুরুষ উভয়ের উপর জ্ঞানার্জন ফরয করেছে৷ প্রশ্ন হল কোন কোন বিষয়ের কতটুকু জ্ঞানার্জন ফরয৷ জ্ঞানার্জন ফরয ফলতে কি ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত পাস না এম এ পাস করা ফরয? প্রতু্ত্তরে আপনি হয়ত বলবেন ইসলামের মৌলিক জ্ঞানার্জন ফরয৷ ইসলামের মৌলিক জ্ঞান বলতে নিশ্চয় ইসলামের ফরয বিধান ( যেমন-নামায,রোযা, হজ্জ,যাকাত,জিহাদ ইত্যাদি) ও মৌলিক আকিদা (যেমন-ইমান,ইসলাম,আখিরাত,কিতাব,ফেরেশতা ইত্যাদি) সম্পর্কে জ্ঞানার্জন বুঝায়৷ এতটুকু জ্ঞানার্জন করলে ফরয তো আদায় হয়ে যায়৷ বাকি জ্ঞানার্জন মুস্তাহাব৷ মুসলিম পরিবারগুলো নারীদেরকে বড়জোর একটি হুজুরের অধীনে এতটুকু জ্ঞানার্জন করে ছেড়ে দেবে৷
আমি বলি নাই যে ইসলাম সরাসরি নারীদের জ্ঞানার্জনে নিষেধ করেছে৷ আমার বক্তব্য হল নারীদের স্বামীর অধীনস্ত থাকার ইসলামের যে বিধান তা পরোক্ষভাবে নারীদেরকে শিক্ষার ব্যাপারে নিরুত্‍সাহিত করে৷ যেহেতু স্বামীর উপার্জনের উপর সে পুরোপুরি নির্ভরশীল তাই ক্যারিয়ার নিয়ে তার কোন স্বপ্নই নেই৷ বেশি দুরে যেতে হবে না পনের/বিশ বছর আগে বাংলাদেশের নারীদের কি অবস্থা ছিল প্রত্যেক সচেতন বয়স্ক ব্যক্তি জানে৷ তখন প্রত্যেক পরিবারে ইসলাম ধর্মের প্রভাব বেশি ছিল৷
নারী মুক্তি আন্দোলন শুরু হল৷ তারা চাইল নারীরা ঘরের বাইরে আসুক৷ তারা কর্ম সচেতন হউক৷ তারা স্বনির্ভর হলে, স্বামীদের প্রভাব কমে আসবে৷ তখন স্বামীরা তথা পুরুষেরা একপেশে ভাবে তাদেরকে শোষন করতে পারবে না৷ এ আন্দোলনের ফলে আজ অনেক নারী কর্মজীবি হয়েছে৷ এ আন্দোলন শুরু হওয়ায় তখন আলেম সমাজ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ল এ ভেবে যে, এ আন্দোলন ইসলামে নারী অধিকার সম্পর্কে যে বিধান রয়েছে তার প্রতি জনমনে বিরুপ প্রভাব পড়বে৷ তা থেকে রক্ষার জন্য তখন থেকে ইসলামে নারী অধিকার এ বিষয়ে ব্যপক লেখা-লেখি ও বক্তব্য বিবৃতি দেয়া শুরু হয়৷ এতকাল যে আমাদের দেশে নারীরা নির্যাতীত হচ্ছিল তখন নারী অধিকার সম্পর্কে আলেমদের লেখা-লেখি বক্তব্য-বিবৃতি কিছুই ছিল না৷ বরং নির্যাতীত নারীরা আলেমদের কাছে প্রতিকার চাইলে তাদের অনেকে এ বলে সান্তনা দিত যে স্বামীর কিছু বকা বা প্রহার করলে প্রতিবাদ করতে হয় না, তাতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন৷ তোমরা ধৈর্য্য ধর, আল্লাহ ধের্যশীলদের সাথে আছেন৷
কোন কোন নারী অভিযোগ দিলে বরং বঞ্চনার শিকার হতো এ বলে যে স্বামী বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া অসতি নারীর কাজ৷ স্বামীর সন্তুষ্টির জন্য একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাওয়া বড়ই পূন্যের কাজ৷ এমনকি এ প্রচারও করা হত যে 'স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেস্ত'৷ স্ত্রীর জন্য স্বামী কি করবে সে বক্তব্য খুব কমই হত৷ স্ত্রী স্বামীর সেবায় একনিষ্ঠভাবে নিজেকে নিবেদিত করবে- এমন বক্তব্য আপাত শুনতে ভালই শোনায়৷ কিন্তু এর পরিণতি অনেক খারাপ হয়ে থাকে৷ পুরুষদের মধ্যে এ প্রভুত্বসুলভ প্রবণতা তৈরি হয়, আর নারীরা অধীনতামুলক মানসিকতা নিয়ে বড় হয়৷
যাহোক বলছিলাম নারীবাদী আন্দোলনের ফলে নারীদের এক বৃহদাংশ ঘরের বাইরে আসতে শুরু করে৷ পর্যায়ক্রমে যারা এ নারীবাদীদের এ আন্দোলনের ঘোর বিরোধী ছিল তারাও তাদের মেয়েদের এখন চাকরি-বাকরিতে উত্‍সাহিত করছে৷ এখন যে সব নারীরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছে তাদের মুল ইচ্ছা থাকে যে তারা চাকরি করবে, স্বনির্ভরশীল হবে, এবং তাদের এ অর্থনেতি শক্তি দ্বারা স্বামীর প্রভুত্ব প্রতিহত করবে৷ এ বাসনা শুধু সাধারণ নারীরাই করে তা নয়, বরং আমি নিজে এমন অনেককে দেখেছি যারা ইসলামী আন্দোলন করে, মুখে ইসলামে নারী অধিকারের বক্তব্য দিয়ে বেড়ায়,অথচ নিজে চাকরি করে এ নিয়তে যাতে সে স্বামীর উপরও প্রভুত্ব করতে পারে৷ এটা আমার অনুমান নয়,তাদের নিজ মুখে স্বীকারোক্তি৷
পুরষ ও নারীর কর্মক্ষেত্রের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: আমরা স্মরণাতীতকাল থেকে দেখে আসছি পুরুষ ও নারীর কর্মক্ষেত্র ভিন্ন৷ এর কারন কি৷ এর প্রধান কারন ধর্ম৷ প্রায় সকল ধর্ম নারীদের স্বামীর অধীন থেকে স্বামীর সেবা ও সংসার ব্যবস্থাপনার কথা বলে থাকে৷ আর পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ কোন না কোন ধর্ম অনুসরণ করে৷ এ কারনে বিশ্বজুড়ে এমন অবস্থা দেখা যায়৷ পূর্বের যুগে মানুষ বহুধরনের কুসংস্কারে বিশ্বাস করতো৷ কিছু মানুষ কিছু যাদু বিদ্যা বা অন্য কোন চাতুর্যপূর্ন কৌশল ইত্যাদি দ্বার অলৌকিক কিছু কার্য দ্বার অন্য মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করতো৷ মানুষ এসব বিশ্বাস করতো৷ আজ আধুনিক শিক্ষা-দীক্ষা ও বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে মানুষ অনেক বেশি সচেতন হয়েছে৷
একটি জনপ্রিয় কথা ‘ এ জগতে যত উন্নতি এ পর্যন্ত হয়েছে তার অর্ধেক করেছে নারী আর অর্ধেক করেছে নর’- আমি এ কথার সাথে দ্বিমত পোষন করি। আমি মনে করি ‘এ জগতে যত উন্নতি এ পর্যন্ত হয়েছে তার কিয়দাংশ করেছে নারী আর অর্ধেক করেছে নর’। আমার মতে ‘নারী অর্ধেক করতে পারত, কিন্তু যুগে যুগে ধর্মের নামেই হোক বা যে নামেই হোক নারীকে সবসময় অবদমিত করে রাখা হয়েছে। যুগে যুগে তারা বঞ্চনার শিকার হয়েছে। আজ সভ্যতার যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে, নারী জাতীকে যদি কোন যুগে অবদমিত করে রাখা না হত, সভ্যতা আরো অনেক দুর এগিয়ে যেত।
যে কারনে আল কুরআনকে স্রষ্টা প্রদত্ত গন্থ হিসাবে গ্রহণ করা যায় না

আল কুরআন যে নারী নীতিমালা দিয়েছে তা নারী জাতীর জন্য অনেক বঞ্চনার কারন। স্রষ্টা পদত্ত কোন বিধান এমন হতে পারে না। এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছি নিম্নের লিঙ্কের প্রবন্ধে যার সারাংশ এখানে তুলে ধরছি:
আল কুরআন এর দৃষ্টিতে নারীর পরিচালক পুরুষ। অর্থ্যাৎ নারীরা পুরুষের অধীন হয়ে থেকে পুরুষের অনুগত্য করবে। সতিসাধ্ধি নারী তারাই যারা পুরুষের চরম অনুগত।অর্থ্যাৎ সংসারের সকল সিদ্ধান্ত নিবে পুরুষ, নারীর পরামর্শ পুরুষে নিতে পারে তবে তা ঐচ্ছিক। আর নারীকে অধীনস্ত করে রাখার হাতিয়ার হিসাবে পুরুষকে দিয়েছে অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব।আমাদের দেশে অন্যন্য আইনগুলো কুরআন থেকে নেয়া না হলেও পারিবারিক আইনটি কুরআন থেকে নেয়া।যার কারনে এ আইনের কুফল এ দেশের নারীরা বহুকাল আগের থেকে নিজ চোখে দেখে আসছে। নিম্নে কুফলগুলো তুলে ধরা হল(কুফলগুলো বিশ্লেষন করা হয়েছে মুল প্রবন্ধে যার লিঙ্ক উপরে দেয়া হয়েছে):
১. এ নীতি নারীদের শিক্ষা ও উন্নত জীবন গঠনে অনুৎসাহীত করে
২. নারীদের মেধা ও যোগ্যতা বিকাশে প্রধান অন্তরায়
৩. ব্যবস্থানাগতক্ষেত্রে এ নীতি নারীদের অযোগ্য করে তোলে
৪. জাতী তার অর্ধেক সম্পদ(নারী)এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়
৫. এ নীতির ফলে নারীরা মানসিক ও শারিরীকভাবে নির্যাতন ও নিগৃহিতের শিকার হয়

৪ নং পয়েন্টের উপর যে আপত্তি উঠতে পারে তার যথার্থ জবাব দেয়া প্রয়োজন মনে করছি। যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়ে থাকে তা হল নারী ঘরে থাকলে সন্তান পালনের যে দায়িত্ব পালন করে তাকে আমি খাটো করে দেখছি।
আচ্ছা, যদি ধরেও নেই যে সন্তান লালন পালনের ন্যয় গুরু দায়িত্ব পালনের জন্য নারীকে ঘরেই থাকা উচিত, তাহলে কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়? স্বামীর অধিনস্ত হয়ে ঘরে আবদ্ধ থাকলে উপরে উল্লেখিত অন্যন্য যে সমস্যাগুলোর উদ্ভব হয় সেগুলোর ব্যপারে আপনি কি বলবেন?
একটি সমাজের হাজার হাজার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পরিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান।ইসলামের দৃষ্টিতে নারীরা এ একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে থাকবে আর পুরুষদের প্রতিষ্ঠান হবে পরিবার সহ হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান। একজন নারী ঘরে থাকলে সন্তানকে বেশি সময় দিতে পারে ঠিকই কিন্তু তাকে ঘরে থাকতে হলে পুরুষের অধীন হতে হয় যা তাকে বঞ্চনার শিকার করে। আর সন্তান লালনে মা এর ভূমিকা বেশি বলতে পারেন তবে ১০০% নয়। আর মায়ের কাছে থাকার কারনে সন্তান যে সবসময় মা এর কাছ থেকে কল্যাণ পায় তা নয়। মা যদি সুশিক্ষিত না হয় তাহলে ঘরে থেকে সন্তানটি মায়ের থেকে বিভিন্ন কুসংস্কার, অন্ধ বিশ্বাস, অসদাচারন ইত্যাদিই শিক্ষা পেয়ে থাকে।কুরআনের নীতি মানলে যেহেতু নারীদেরে অর্থনৈতিক দায়িত্ব থাকে না, সেহেতু ক্ষুদ্রতম সংখ্যক নারীই শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হবে। এ নীতি থাকলে আপনি শুধু ওয়াজ করে, শিক্ষার গুরুত্ব ইত্যাদি বুঝিয়ে খুব বেশি একটি সংখ্যক নারীকে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী করতে পারবেন না।
নারী যদি ঘরের বাইরে বৃহ্ত্তর কর্মক্ষেত্রে আসে তাহলে কি সন্তানকে আদর্শ করে লালন-পালন সম্ভব নয়? অবশ্যই সম্ভব। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে হবে। তাহল:
১. সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার সময় থেকে ১ বছর বাধ্যতামূলক ছুটি।
২. সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পর দ্বিতীয় বছর থেকে পরবর্তী ৩ বছর (সন্তানের বয়স ৪ বছর হওয়া পর্যন্ত)সন্তানের মায়ের জন্য অর্ধ-বেলা (৪ ঘন্টা)অফিস সময় বাধ্যতামুলক করা যাতে করে মা সন্তানের কাছে বেশি সময় দিতে পারে।এরুপ সুযোগ দু’টি সন্তান নেয়ার ক্ষেত্রে করা যেতে পারে। এর চেয়ে বেশি সন্তান নিলে দায় দায়ীত্ব পিতা-মাতার।
৩. সন্তানের বয়স ৪ বছর হলে সে সকল সন্তানের জন্য কিন্ডারগার্টেন এর ন্যয় শিশু কেয়ার সেন্টার খোলা যেতে পারে।যেখানে শিশু মনস্তাত্বিক বিদ্যার উপর বিশেষ প্রশিক্ষন প্রাপ্ত শিক্ষক, শিশুর শারীরিক মানসিক বিকাশে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোক নিয়োজীত থাকবে যারা খেলাচ্ছলে শিশুদের সুন্দর মানুষ হিসাবে গড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভুমিকা পালন করবে।শিশুর সুন্দর মানসিক বিকাশে ভাল প্রশিক্ষন প্রাপ্ত অভিজ্ঞ লোকের প্রয়োজন যে প্রয়োজন এমন নারীরা যার চাকুরী না করে ঘরে থাকে তারাও পুরন করতে সক্ষম নয়।
এটা আমার প্রস্তাবনা।প্রকৃতপক্ষে এ নিয়ে আরো গবেষণা করে এর চেয়ে সুন্দর সমাধান বের করা যেতে পারে।যা নিয়ে গবেষণা হয় তা বিকাশ লাভ করে। যেমন শিক্ষা ব্যবস্তা,শিক্ষা দান পদ্ধতি ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।একজন শিক্ষক ছাত্রদের নিকট শিক্ষাকে কিভাবে আনন্দদায়ক করবে তা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে, এর অনেক রেজাল্টও পাওয়া গেছে। আগামি দিনগুলোতে হয়ত ইহা আরো বিকাশ লাভ করবে।শিক্ষাকে আনন্দঘন করার গবেষণায় ব্রিটেন বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে।ঠিক একভাবে উপরোক্ত সমস্যা নিয়ে বিজ্ঞজনেরা রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা গবেষণা চালিয়ে গেলে আরো সুন্দরতম সমাধান বের হয়ে আসবে। আমার উপরোক্ত প্রস্তাবনা বুঝার সুবিধার্থে উদাহরণস্বরুপ দেয়া হয়েছে।
একটি সমাজ, সভ্যতা গঠিত হাজারও প্রতিষ্ঠান নিয়ে।সকল প্রতিষ্ঠানে নারী-পুরুষ উভয়ের মেধা, যোগ্যতার ছোয়া ও অবদান থাকে সে সমাজ ও জাতির বিকাশ উন্নয়ন অতি ত্বরান্বীত হবে।আর কুরআনের দৃষ্টিতে নারী শুধু সমাজের একটি প্রতিষ্ঠারে ভুমিকা রাখে যে প্রতিষ্ঠানে নারীর কোন চিন্তা গবেষনার প্রয়োজন হয় না, কর্মের নব নব ক্ষেত্র পায় না, কর্মের বৈচিত্রতা নেই যার ফলে এ সকল নারীরা গীবত-চোগলখুরি সহ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। কার স্বামী ভাল কার স্বামী খারাপ, কার সন্তান কবে কি করেছে ইত্যাদি সহ বহু অর্থহীন কাজে তারা জড়িয়ে যায়।


সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:২৫
১৫টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×