somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবিতার মোহে এ এক অন্য কথন

২৭ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবরুদ্ধ কন্ঠ দেয়ালে দেয়ালে চতুষ্কণে পাঁক খেয়ে মস্তিষ্কের কোঠরে জায়গা খুঁজে নেয়। নিউরনে কোষে কোষে জন্ম নেয় ক্রোধ আর কবিতা। কবিতার আচরন অনিয়মিত ঠেকে যদিও রাত্রির আঁধারে ঘাই দিয়ে ওঠে জিয়ল মাছ কোনো কোনো বুকের অলিন্দে। স্মৃতি আর সুখের উল্লাস পাজেরোয়। ভক্স ওয়াগনের নরম গদিতে আলস্য মাখে পড়ন্ত বিকেল। কুকুর আর মানুষের পরিপূরক ব্যবহার অশ্লীল লাগে হেতু, ভক্স ওয়াগন জায়গা করে নেয় রোমান্টিকতায়। খুন সব রাত্রিতেই হয় আর আত্মহত্যা? দিনভর।


বধির আর ক্লেদাক্ত মানুষ সব। শহর ঢেকে যায় ধুলোয় আর কংক্রিটে মোড়া সাত আসমান। জন্ম কেনো হয়েছিলো? আজন্ম জন্মকে গালি দিয়ে ভরাট স্তনে মুখ ঢাকে রাতের বিছানায়। কালো টুপি পরে আসে স্বপ্ন। ডানা ঝাপটানো বাদুড় পুরোনো এখন। দুলতে থাকে… দুলতে থাকে কংক্রিটের দেয়াল, সভ্যতার কোমর ভেঙে অনিবার্য পতন। রক্ত আর শ্লেষ মেশানো সব মানুষ। থেতলানো আর ঘৃন্য!


সবুজ জামা পরে কোনো এক ভোরে ডাকপিয়ন এসেছিলো। পেটমোটা ঝোলা নিয়ে দরজায় দাড়ালে কলিংবেলের সুরেলা বাতাস আর ঘ্রাণে ঘুমটা আরো গাঢ়ো হল। দরজা কে খুলেছিলো মনে নেই। আমার বিছানার পাশে এসে দাড়ালো গাঢ়ো সবুজ। হাত বাড়ালে দেখলাম, আমার জন্য হলুদ খামে পোরা কোনো চিঠি নেই। বদলে ঝুলি ভর্তি বিষন্ন করোটি।


দেয়ালগুলো পুনরায় বেড়ে উঠছে পেলব শিশুদের মতো। বেড়ে ওঠার আগে কোনো কোনো রাতে ভেঙে যাওয়া চাঁদ আর খন্ড হওয়া মেঘের আলোড়ন পুরোটা পথ জুড়ে। কুয়াকাটার রাস্তায় অজস্র মানুষ। কচুরিপানার রাতে বার বার, বার বার শীত। ফেরিঘাটে প্রবল জ্যোছনা। ছিড়ে যাওয়া জ্যোছনা বার বার কল্পিত নগরী পার হয়ে ফিরে আসে সাগর সৈকতে। সাগর সৈকতে কারো কারো বুকে ঢেউ ওঠে। সুবোধ সহচর ঝাঁপ দেয় কোনো ভেঙে পড়া ঢেউয়ে।


ক্রমাগত বিরুদ্ধ কথন। অপবাক্য আর অশ্রুত সংলাপে শাঁসালো কেউ। রাস্তায় দাঁড়ালে চেয়ে থাকে অগনিত চোখ। বুঝে নিতে চায়, লুকিয়ে রেখেছি কোথায় স্টেনগান। মারো অথবা মরো। নিরপেক্ষ কেউ নয়। তারিয়ে তারিয়ে চেখে নেয় জীবনের রস। জীবনতো একটাই। রক্ত আর বীর্যে ভরা। ‘কে আর হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে?’ শরীর খুঁড়ে রক্ত আর বীর্যে ঢের উপশম।


বিষন্ন বালকেরা দল বেঁধে পাড়ি দেয় তেপান্তর। শকুনের ধারালো নখের আড়ালে যে পশম থাকে উষ্ণতা থাকে, বালকদের অভিলক্ষ্য তা-ই। তেপান্তরের পারে বরফ গলা নদী পার হয়ে যে পাহাড়, সেই পাহাড়েরও ওপারে এক ডাইনির বুকে সেই শকুনের বাস। হায়! বিষন্ন বালকেরা!


শূণ্যতার আঁচল ধরে ঝাপিয়ে পড়ো রোদ বারান্দা হতে। দিগন্ত জোড়া নীল জল সকাল ১১টায়, ধূ ধু নীল আকাশ, মেঘহীন পালকহীন…… লবন মাখানো রোদ ছুঁয়ে যায় আমার নাসারন্ধ্র, বাতাসে রোদের ঘ্রাণ, রোদ আর নুনের। আহ! আটলান্টিক! ভেসে বেড়ায় আমার মগজে দিনভর।


প্রত্যেক কবিতাই ব্যক্তিগত। পতনোন্মুখ আর নিজেকে রক্ষার ক্রমাগত চেষ্টা। অসহায়তা আর ক্লান্তি। পতনের আগে ঝুলে থাকা রডে শার্ট বেঁধে গিয়ে পতন রোধের প্রানান্তকর বেদনা। নিজেকে চেখে দেখা বারবার সাদা পাতায়। কতটুকু পূর্ণতা পেলাম, পরিনত হলাম, পরিবর্তন কতটুকু আমাকে দেখালো ক্লেদ, কতটুকু পবিত্র হলাম।


অনাগত স্বপ্নগুলো গড়িয়ে গড়িয়ে পার হয়ে যায় বিষন্ন অতীত। ঝরে যাওয়া ফুলের শোকে উষ্ণ জল তোমার চায়ের কাপে। কয়েদিদের দখলে আমার লাল শার্ট আর ভুলে যাওয়া সিগারেট কেস মেরুন রঙের। বৃত্তাকার জানালায় আমার চোখ যদিও ওপাশে গাঢ় আঁধার। কুসুম গরম আকাশ, ডায়েরির পাতায় না লেখা নাম। তোমার গহীনে ভেঙে পড়ে আকাশ রাত্রি দিন- সকালের নরম রোদ মাখেনি কেউ একজন, মাখবে না কোনোদিন এই পৃথিবীর, এই শোকে।


বর্ষারা এসে যায় নিঃসঙ্কোচে। বহুদিন পর বর্ষার কবিতা ফিরে এলে শ্রেয়তর সুখে ভরে ওঠে অগোছালো কামরা। উন্মাদনা আর পরিহাসে সিক্ত বিকেলের আকাশ। পরিহাসে সঙ্কোচ নেই। উন্মাদনায় আকুতি আছে। মেয়েদের শরীরে নিঃসঙ্কোচ আকুতি অশ্লীল লাগে না, মনে হয় জীবন এখনও জীবিত, অনুভবে।


স্বপ্নের দেয়াল পার হয়ে খোলা প্রান্তর। বুনো ঘাসের শরীরে সবুজের ঘ্রাণ। আমার সর্বাঙ্গে ঘাসের শরীর। আকাশ ভরা নীল স্বাধীনতা আর বাতাসে জলের সুবাস।
হারিয়ে ফেলা কৈশোর কি আবার ফিরে এলো?
বিভৎস স্বপ্নেরা যেনো আর ফিরে না আসে!


সরে যেতে হবে, যতটুকু পারা যায়। কবিতার মতো আত্মচরিত আর কি আছে? হেমন্তের বাতাস বসন্তে কতটুকু উষ্ণ হবে না জেনে শিহরিত হওয়ার কোনো মানে নেই। উন্মাতাল হাওয়া আর বৃষ্টি। জ্যাক ড্যানিয়েলের কোমোর পেঁচিয়ে অনন্ত সময়। হিরন্ময়ী কোনো রমনীর চুলের ঘ্রাণে মাতাল সময়, মাতাল এই মধ্যরাত।


দহনের মতো তীব্র পাপে চৌচির রাতের পেয়ালা। মদিরায় পাপ আছে, দহন আছে। দহনে পরিত্রান আছে। মৃত্যুর মতো নিষ্ঠুর আর মৃতের মতো স্নিগ্ধতায় ফরহাদ বেঁচে আছে। তবুও ফরহাদ মৃত, আর আমি লিখে চলেছি জীবনের গান।








সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:৩৪
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×