ভারতীয় জি বাংলা চ্যানেলের “সারেগামাপা” রিয়েলিটি শোতে প্রতিদিনের ভালো গায়কের হাতে একটি সরস্বতী মূর্তি উপহার দিতে দেখি। কখনও কখনও বাংলাদেশের গায়ক নোবেলের হাতেও এটি তুলে দেওয়া হয়েছে। বীণা পাণি সরস্বতীর এই মূর্তি সারেগামাপা অনুষ্ঠানে দেয়ায় একটি বিশেষ ধর্ম বিশ্বাসকে প্রাধান্য দেওয়া। সেই অর্থে জি বাংলা ধর্ম নিরপেক্ষ নয়। ভারতের রাষ্ট্রীয় আদর্শও কি তাহলে ধর্ম নিরপেক্ষ নয়?
এই রিয়েলিটি শো এর শেষ পর্ব বা “গ্র্যান্ড ফিনালে” দেখলাম। নোবেল দ্বিতীয় যে গানটি গাইলেন সেটি বাংলাদেশের প্রিন্স মাহমুদের লেখা আর জেমস এর গাওয়া “বাংলাদেশ” নামের। অনেকটা দেশাত্মবোধক ধরনের। বাংলাদেশের বিখ্যাত জাতীয় ব্যক্তিদের স্মরণ করা হয়েছে। স্মরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আর জিয়ার স্বপ্নকে। কিন্তু সেখানে রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ নাই। মনে হয়েছে “হিন্দু” বর্জন করা হয়েছে।
আশ্চর্যের বিষয়, আমি নতুন প্রজন্মের একজনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। সে বলছে যে রবীন্দ্রনাথের বাংলাদেশে জমিদারি কারবার ছিল ঠিকই কিন্তু তাঁর তো জন্ম ভারতে। আমি তাকে বললাম নজরুলের জন্ম ও কর্ম পশ্চিমবঙ্গে আর জীবনানন্দর পৈত্রিক নিবাস বরিশালে। দেখলাম আমার বক্তব্য তার হৃদয়ে নাড়া দিলনা। আমি তাকে জানলাম মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-জীবনানন্দ কি পরিমাণ প্রেরণা দিয়েছিল তা একটি গানে বুঝা যায় , “----বিশ্বকবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা রূপের যে তার নেইকো শেষ—”। মনে হল এতেও হৃদয়ে রেখাপাত করলো না।
এ পর্যন্তই, আর আগাই কিভাবে। মুজিবের হত্যা, চার নেতার হত্যা, হত্যাকারীদের দায়মুক্তি আর পুরস্কৃত করনের স্বপ্ন পূরণের গল্প তো গলায় আটকিয়ে থেকে গেল।
উপমহাদেশ জুড়ে সাম্প্রদায়িকতার এই বিষবাষ্প রুধিবে কে?
সংগ্রহকৃত ---
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:০৯