মজা মারে ফজা ভাই, সারারাত ঘুম কামাই বা মুরগী খাই দাই সৌদি আরবে আর ডিম পাড়ে আমেরিকায়।
তেল কিনলেন সৌদি আরব থেকে আর ডলার গুলো দিলেন আমেরিকাকে। সৌদি আরবের তেল বেচা সকল টাকা আমেরিকা খায়।
কিভাবে খায়? ফিরে যায় ১৯৭১ সালের নিক্সন শকে। যখন নিক্সন বললেন “ আমরা কথা দিয়েছিলাম আমাদের ডলার আমাদের ফেরত দিলে প্রতি ৩৫ ডলারের বিপরীতে এক আউন্স করে সোনা ফেরত দেব কিন্তু আমরা কথা রাখতে পারছি না।”
আরেকটু পেছনে ফেরত যায় ১৯৪৪ সালে Bretton Woods monetary system এ। এর সদস্যরা তাদের রিজার্ভ সোনার পরিমান জানাতে হয়েছে এবং ২৫% সোনা প্রথমেই সিষ্টেমের হারি চাদা হিসাবে জমা রাখতে হয়েছে আমেরিকার কাছে।
তারপর বলেছে ডলার দিয়ে কেনাকাটা করেন। এক আউন্স সোনা দিয়ে ৩৫ ডলার নেবেন আবার ৩৫ ডলার আমাকে ফেরত দিলে আমিও এক আউন্স সোনা ফেরত দেব।
কিন্তু ১৯৭১ সালের ১৫ আগষ্ট অবলিলায় বলে ফেলল “আমরা কথা রাখতে পারছি না”। কত বড় ধাপ্পাবাজি। কাগজ ধরায়ে দিয়ে সোনা নিয়ে গেছে। টুটু চেপে ধরবেন? এতবড় সাহস। হিরোশিমা দেখেন নাই?
ডলার নোম্যানস ল্যান্ডে। আন্তজাতিক মুদ্রা হিসাবে ডলারের ডিভোর্স হয়ে গেছে। বড় লোকের ডিভোর্সের কথা কেউ মুখে আনতে চাচ্ছে না। তখনই দৃশ্যপটে হাজির বাদশা ফাহাদ বিন আব্দুল আজিজ আর হেনরী কিসিঞ্জার। সালটা ১৯৭৪।
কিসিঞ্জার কানপড়া দিলেন বাদশাকে। বাদশা বললেন ডলার ছাড়া অন্য কারেন্সিতে তেল বেচব না। সৌদির সব সাকরেদরা ওমম শান্তি বলে গলা মিলালো হ হ আমরাও ডলার ছাড়া বেচব না।
কি কানপড়া দিয়েছিল কিসিঞ্জার? বলেছিল যা খুশি তাই করবা, যতদিন খুশি ততদিন চৌদ্দগুষ্টি ক্ষমতায় থাকবা, দাসীর চাষ করবা, আমরা আছি, কেউ তোমাদের কিছু বললে পিটায়ে তারে তক্তা বানায়ে দেব। শর্ত একটাই ডলারে তেল বেচবা। যদি না বেচো তোরে পিটায়ে তক্তা বানায়ে দেব।
এখন আপনার তেল কিনতে হলে লাগবে ডলার। কৈ পাবেন? জাহাজ ভরে জামা প্যান্ট আমেরিকায় দিয়ে আসবেন। তারা জাষ্ট ডলারের ছবি কাগজের উপর প্রিন্ট করে আপনাকে দিয়ে দেবে আপনি সেই ডলার সৌদি আরবকে দিয়ে জাহাজ ভরে তেল নিয়ে আসবেন।
আমি কাপড়, বোতাম, সুতা, তুলা, লেস, রং সেলাই বুবুর শ্রম সব কিনে শার্ট প্যান্ট বানায়ে জাহাজ ভাড়া করে দিয়ে আসলাম আর তারা জাষ্ট ডলারের ছবি কাগজের উপর প্রিন্ট করে আপনাকে দিয়ে দিল। সেই কাগজ নামের ডলার সৌদিকে দিয়ে তেল কিনলাম। কালো সোনার বিনিময়ে সৌদি পাইল কাগজ।
ফোরাত নদীর নীচের সোনার পাহাড় নিয়ে যুদ্ধ যা খলিফার ছেলেরা কেউ পাবে না।
আমার যদি জামা প্যান্ট গাড়ি এমন দেওয়ার কিছু না থাকে তাহলে আমি ডলার কৈ পাইবো? তারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জেতার গনিমতের মাল যেখানে জমা রাখা হয়েছে সেখান থেকে অর্থাৎ বিশ্বব্যাংক থেকে আপনাকে ধার দেবে। বছরের পর বছর পুরো জাতি ঘামে শ্রমে কাগজের দাম শোধ করবেন। আধুনিক কালের দাসত্ব।
সৌদি আরব ডলার দিয়ে ভোগ বিলাস ফূর্তি দাসীর গর্ভে সন্তান বোপন সবই তো করতে পারছে তাহলে সমস্যা কোথায়?
সমস্যা হল ব্যাপারটা অনেকটা লম্পট প্রেমিকের সাথে বালি দ্বীপে হানিমুন করার মত।
ফূতি করবেন, সেরাব, মাছ, মাংশ, দুধ, ডিম, কলা, পঞ্চ ব্যাঞ্জনে ভোজন করবেন, চরম পুলক অনুভব করবেন কিন্তু যখন ছেড়ে যাবে আপনাকে ফাইভ ষ্টার হোটেলের সফেদ বিছানায় ঘুম পাড়িয়ে হোটেলের বিল না দিয়ে তখন বাসন মেজে, ইজ্জত বেচে হোটেল বিল শোধ করতে হবে।
হয়ত এক জীবনে শোধ করা যাবে না। কয়েক প্রজন্ম লাগবে সে ঋণ শোধ করতে। ঘটনাটা কিন্তু একবারই ঘটবে।
ট্রাম্প অতি চালাকী শুরু করেছে। তার অতি চালাকীর কারনে সে সহ পুরো আমেরিকা ধরা খাবে। সে খুব ভাল করেই জানে জাপান থেকে গাড়ি আমদানী করলে কেন ১.৫% কর দিতে হয় আর নিজেরা বানালে কেন ৩৫% কর দিতে হয়। আমদানী করলে পেমেন্ট দিতে ডলারের ছবি কাগজের উপর প্রিন্ট করে হাতে ধরায়ে দিলেই হয় আর নিজেরা গাড়ী তৈরী করলে নিজেদের সম্পদ ও শ্রম ব্যবহার করতে হয়। শালায় হয় অতি চালাক না হয় একটা বলদা।
দুই ধাপ্পাবাজের ধাপ্পাবাজির প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। আমেরিকা আর চীন। একজন কাগজের উপর ছাপ মেরে কয় টেকা। আরেকজন প্লাষ্টিকের উপর সোনালী রং করে বলে সোনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২৭