somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব পরিবারগুলোর আর্তনাদ কে শুনবে?

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলহামদুলিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালাম আলা রাসুলিল্লাহ


পদ্মা নদীর আরেক নাম কীর্তিনাশা। জনশ্রুতি আছে রাজা রাজবল্লভের স্থাপনা পদ্মার ভাঙ্গনের মুখে পড়ে বিলীন হয়ে যায়, তখন থেকে এর এরকম নাম হয় পদ্মার। এ নাম সুনামের নাকি দুর্নামের? তবে যাই হোক, ২০১৮ সালে ও পদ্মা তার এ নাম অক্ষুন্ন রেখেছে চলেছে। পদ্মার ভাঙ্গন ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে শত শত মানুষের সুখের নীড়, কেড়ে নিচ্ছে মানুষের মাথা গোঁজার ঠাই।

পদ্মা না হয় মানুষের দুঃখ বোঝে না। কিন্তু তাই বলে কি, মানুষ মানুষের কষ্ট বোঝে না? না আমি ভুল বলেছি কেউ কেউ হয়তো বুঝেন কিন্তু যারা ব্যবস্থা নিতে পারবেন তারা কিছুতেই বোঝেন না। মানুষ আসে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন দেখতে, দেখতে আসে মানুষের কান্না্আ‌হাজারি আর শেষ মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারানোর যন্ত্রণা। নদী ভাঙন রোধ করার দায়িত্বে যারা রয়েছেন, যারা রয়েছেন এলাকার নেতা তারা কি বুঝেও বুঝে না। তাদের হাত গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া নাকি আর কোন উপায় নেই? আশ্চর্য অবাক করা এক পৃথিবী।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মুলফৎগঞ্জ বাজারটি ২শ’ বছরের পুরনো একটি সমৃদ্ধশালী বাজার। এখানে রয়েছে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঐতিহাসিক মুলফৎগঞ্জ মাদরাসা ও মসজিদ কমপ্লেক্স, কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কেদারপুর ইউনিয়ন ভ‚মি অফিস, কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক, সরকারি বেসরকারি ব্যাংক ও বিমা অফিস, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। পদ্মার আগ্রাসী থাবায় কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে চলেছে গুরুত্বপূর্ণ এই বাজারটি। গত বুধবার (২৯ আগস্ট) সকাল থেকে এ পর্যন্ত বাজারের দুটি মসজিদসহ প্রায় ২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও আশপাশের অর্ধশতাধিক কাঁচা-পাঁকা বসতঘর পদ্মার গর্ভে চলে গেছে।
ভাঙনের মুখে মূলফৎগঞ্জ বাজারের চারতলা বিশিষ্ট দেওয়ান ক্লিনিক এন্ড কম্পিউটারাইজড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, লাইফ কেয়ার হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনসহ শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হুমকির মুখে রয়েছে ঐতিহাসিক মুলফৎগঞ্জ মাদরাসা কমপ্লেক্স ভবন, দুটি প্রাইমারি স্কুল ও পাঁচ শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ পুরো মুলফৎগঞ্জ বাজার।
এ ছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে নড়িয়া উপজেলা শহর, নড়িয়া পৌরবাজার, পৌরভবন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, নড়িয়া সরকারি খাদ্য গুদাম, নড়িয়া সরকারি কলেজ, নড়িয়া বিএল উচ্চ বিদ্যালয়, নড়িয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক-বীমা অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পুরনো ঐতিহ্যবাহী সহস্রাধিক স্থাপনা।
গত ১৮ আগস্ট মুলফৎগঞ্জ বাজার সংলগ্ন গাজী কালুর মেহমানখানা নামে পাঁচতলা বিশিষ্ট প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিলাসবহুল একটি বাড়ি, খানবাড়ি জামে মসজিদ ও দিলুখার দ্বিতল পাকা বাড়ি একসাথে পদ্মার গর্ভে চলে যায়। ভাঙনের মুখে হজরত খাজা মইনুদ্দিন গাজী কালু মঞ্জিল নামে চারতলা বিশিষ্ট আরেকটি বিলাসবহুল বাড়ি ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ওইদিন থেকে এ পর্যন্ত নড়িয়া-মুলফৎগঞ্জ সড়কের কয়েকটি পয়েন্টে প্রায় ৩শ’ মিটার এলাকা পদ্মায় বিলিন হয়ে নড়িয়া-মুলফগঞ্জ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সাধুর বাজার, কেদারপুর, বাঁশতলা, চরজুজিরা, সেহেরআলী মাদবর কান্দি বিলিন হয়ে গেছে কিছুদিন আগে।
এর আগে গত ৭ আগস্ট দুপুরে হঠাৎ করে মুলফৎগঞ্জ বাজার সংলগ্ন লঞ্চঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা ধসে গিয়ে ৩০ জন লোক পদ্মায় তলিয়ে যায়। এদের মধ্যে নিখোঁজ হয় ৯ জন। নিখোঁজের সাতদিন পর চাঁদপুর সীমান্ত এলাকা থেকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা গেলেও বাকিদের এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা পদ্মা পাড়ের মানুষ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। তিন সহস্রাধিক মানুষ তাদের সাজানো ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। খোলা আকাশের নিচে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। ভাঙন কবলিতদের আহাজারিতে ভারি হচ্ছে পদ্মার পাড়। পদ্মার আগ্রাসী রূপ দেখতে প্রতিদিন ভির করছে হাজারো মানুষ। ভাঙন রোধে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

কবে নেওয়া হবে যথাযথ বাবস্থা????
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২৪
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×