somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

বিএম বরকতউল্লাহ
পড়াশোনা করি। লেখালেখি করি। চাকরি করি। লেখালেখি করে পেয়েছি ৩টি পুরস্কার। জাতিসংঘের (ইউনিসেফ) মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১১ ও ২০১৬ প্রথম পুরস্কার। জাদুর ঘুড়ি ও আকাশ ছোঁয়ার গল্পগ্রন্থের জন্য অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬।

মেঘমেয়ে আর টুনটুনিছানা

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কান্না থেমে গেল টুনটুনিছানার। একটি বৃষ্টির ফোঁটা চুপ করে ঝুলে আছে বাসার ছাউনি দেওয়া পাতায়। কেমন টলমল করছে ফোঁটাটি। বাতাসে বাসাটি যখন দোল খায় তখন ফোঁটার ভেতর ঝলমল করে অনেকগুলো রঙ। এ ফোঁটাতে নিজের ছবি দেখতে পেল ছানাটি। আর অমনি খিলখিল করে হেসে উঠল সে।
তুমি কে গো আমাদের বাসার উপরে বসে আছ? তুমি কে? বলল টুনটুনিছানা।
আমি মেঘমেয়ে, বলল ফোঁটাটি।
মেঘমেয়ে? কোথা থেকে এসেছ তুমি? তুমি কি আমার সাথে থাকবে মেঘকননা?’
আমি তোমার কান্না শুনে সোজা চলে এলাম এখানে। তুমি কি আমাকে বাসায় থাকতে দিবা?’
টুনটুনিছানা মাথা কাৎ করে বলে, ‘হ্যা থাকতে দেব। তবে আমাকে শোনাতে হবে মজার মজার গল্প।
‘কী গলপ শুনতে চাও তুমি বলো।’
ছানাটি ভাবতে লাগল। তারপর বলল, ‘আমি, আমি শুনব তোমার মেঘ থেকে বৃষ্টি হওয়ার গল্প।
আসলে আমি হলাম পানি। বলল মেঘকন্যা। আমি কখনো উড়ে বেড়াই, কখনো গড়িয়ে চলি আবার কখনো সাঁতার কাটি।
ছানা চিৎকার করে বলল, ‘সবখানে থাকো তুমি?
হ্যা আমি সবখানেই থাকি। ছিলাম মেঘ। আর বৃষ্টি হয়ে এখানে এলাম। তারপর যাব সাগরে। সূরুজ মামার রোদের তাপে আমরা ছোট ছোট কণা হয়ে বাতাসে উড়তে থাকি। উড়তে উড়তে আমরা অনেক উপরে উঠে পড়ি। তখন সব কণা একদম কাছাকাছি চলে আসি। তারপর হাত ধরাধরি করে আমরা একেবারে গায়ে গায়ে লেগে যাই। এভাবেই হয় মেঘ মা। এই মেঘ মা তখন ভেসে বেড়ায় আকাশে।’
‘তো এখানে কি করে এলে তুমি?’ বলল ছানাটি।
‘এখানে এলাম বৃষ্টি হয়ে।
ছানাটি গলপ শুনে খুশি হয়ে বলল, আমিও মেঘ হবো আর বৃষ্টি হবো। আমি চলে যাব আকাশে। ভেসে বেড়াব। তারপর বৃষ্টি হয়ে চলে আসব মায়ের কাছে। কী মজা!’
মেঘমেয়ে বলে, ‘তুমি যাবে কেমন করে, তুমি তো উড়তেই পারো না।’
টুনটুনিছানা তার ডানে-বামে তাকিয়ে বাদামের খোসার মতো পাখা দেখে বলে, ‘এই পাখা দিয়ে আমি উড়তে পারি না। বলো না মেঘমেয়ে, আমি কিভাবে উড়াল দিয়ে যাব আকাশে।
মেঘমেয়ে বলে, ‘পাখা না থাকলেও তুমি উড়তে পারবে। যদি তুমি একটা কাজ করতে পারো। আর সেটা হবে খুব মজার একটা বিষয়।’
টুনটুনিছানা বলে, ‘বলো, বলো মেঘমেয়ে, পাখা ছাড়া আমি কিভাবে উড়তে পারি, বলো। তুমি যা বলবে আমি তাই করব।’
মেঘমেয়ে বলে, ‘তুমি যদি আমাকে তোমার পেটের ভেতরে নিয়ে রাখতে পার তো এমনিতেই পারবে উড়তে।’
ছানাটি ঠোঁট নিয়ে বিসটি ফোঁটার গায়ে লাগাতেই ফোঁটাটি চলে গেল ছানার পেটে।
‘আরে একি! কেমন জানি উড়– উড়– লাগছে আমার।
পিং পং বলের মতো নাচতে লাগল সে।

পেটের ভেতর থেকে মেঘমেয়েটি বলল, ‘তুমি বাসাটা ফাঁক করে বেরিয়ে পড়ো।’
ছানাটি পাতা সরিয়ে মাথাটা বের করে দেখে, সামনে বিশাল আকাশ। মেঘগুলো ভাসছে আকাশে। খুশিতে তার চোখ-মুখ চিকচিক করতে লাগল। সে ফুড়–ৎ করে উড়াল দিল আকাশে। সে খুশিতে টগবগ করতে করতে ডানে-বামে-উপরে শোঁ-শাঁ করে উড়তে লাগল। উড়তে উড়তে সে চলে গেল মেঘের কাছে। মেঘেরা টুনটুনিছানাকে আদর করে থাকতে দিল তাদের সাথে।
মাঝে মাঝে মায়ের কথা মনে পড়ে টুনটুনিছানার। সে বিসটির সাথে চলে আসে বাসায়। বাসায় এসে মায়ের গলা পেঁচিয়ে ধরে। আর চোখ বড় করে মেঘে মেঘে ভেসে বেড়ানোর গলপ শোনায় মাকে। ছানাটির খুশি দেখে মা-ও খুশি হয়ে যায়।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×