প্রথমেই একটা ঘটনা বলি। অতি সংক্ষেপে।
রহীমের মেয়ে জরিনা আজ দুই দিন ধরে নিখোজ। গ্রামবাসীও খুজে হয়রান। তাই রহীম থানায় অভিযোগ করলো যে, গাব্বারের পোলা জাব্বার তার মেয়েকে প্রতিনিয়ত ত্যক্ত করে। গত দুইদিন ধরে তার কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। সম্ভবতঃ জাব্বার তার মেয়েকে কব্জা করে কোথাও লুকিয়ে রেখেছে।
পুলিশী সহজ সমাধানের অংশ হিসাবে জাব্বারকে থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে কড়া ডলা দেয়া হলো, কিন্তু কোন সুরাহা হলো না। ফলে পুলিশ তদন্তে নামলো। তদন্তে নামতেই থলের বিড়াল বের হয়ে এলো। বিড়াল সাদা নাকি কালো সেটা গুরুত্বপূর্ণ না, গুরুত্বপূর্ণ হলো ঘটনা গুরুচরণ!
রহীমের সাথে গাব্বারের জায়গা-জমি নিয়ে বহু পুরানো বিরোধ। প্রতিশোধের নেশায় উন্মাদ হয়ে রহীম তার মেয়েকে দূর গায়ে এক আত্মীয়ের বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে এই নাটক ফেদে বসে। গাব্বারকে টাইট দেয়ার জন্য তার আদরের সন্তানকে পুলিশী ডলা খাওয়ায়। পরের ঘটনা সহজ। মিথ্যা নারী উত্যক্তকরন আর অপহরনের অভিযোগ এবং মানহানির মামলায় রহীম বাদশা এখন হাজতে!!
এই পর্যন্ত যারা পড়েছেন, তারা একটু ভাবেন। সন্দেহ নাই, রহীম অপরাধী। অপরাধের মাত্রা কেমন? তার কি জেল-জরিমানা হওয়া উচিত? দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়া উচিত নাকি ভবিষ্যতে ভদ্র আচরণের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া উচিত? নাকি ভুক্তভোগী জাব্বার খামাখা যে নির্যাতন ভোগ করলো, তার ক্ষতিপূরণ রহীমের কাছ থেকে আদায় করা উচিত?
সাধারনভাবে, আমরা…..ব্লগারেরা ন্যায় প্রতিষ্ঠার পক্ষে। যে কোন অন্যায়ের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়ার পক্ষে, যাতে করে একই ধরনের অপরাধ সমাজে কমে আসে। যে কোনও অন্যায়ের প্রতিবাদ করা ব্লগারদের একটা সহজাত বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্যের কারনেই কিন্তু ব্লগারেরা ক্ষমতাসীনদের চক্ষুশুল। এই প্রতিবাদ প্রক্রিয়ায় কোন স্বজনপ্রীতির ধার ধারে না এই কমিউনিটি।
যারা এখন পর্যন্ত আমার কথার সাথে একমত, তারা পড়তে থাকেন। আর যারা দ্বি-মত পোষণ করেন, তাদেরকে এই পর্যন্ত পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। বিপ্লবী লাল সালামসহ এই পোষ্টের জন্য আপনাদেরকে বিদায় জানাই।
ব্লগে গত কয়েকদিন ধরে গ্যান্জাম হচ্ছে। ঘটনা প্রবাহ সবাই জানেন।
মাল্টি নিকের ব্যাপারে ব্লগ কর্তৃপক্ষের কোন আপত্তি নাই, উনারা অনেকটাই নমনীয় এই বিষয়ে। যে কেউ এটা খুলতে এবং ব্যবহার করতে পারে। তবে এই নিকের অপব্যবহার করে অপর কোন ব্লগারের যদি চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয়, সেটা অবশ্যই নিন্দনীয় এবং গর্হিত অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে নিজের সন্মান রক্ষার্থে সেই অভিযুক্ত ব্লগার যদি ব্লগ ছেড়ে চলে যায়, তার দায়ভাগ কার? সমাজের একটা সচেতন শিক্ষিত শ্রেণীর কেউ যদি এমন জঘন্য অপকর্ম করে, সেটাকে কি হাল্কা চোখে দেখা যায়? নাকি দেখা উচিত? আপনাদের কি মত?
অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ হলো, একজন পুরুষ ব্লগার কর্তৃক পরিচালিত দু‘টা নারী মাল্টি নিক (ছাইয়া নিক!!!) আরেকজন ব্লগারের চরিত্র হননের মতো ঘৃন্য কাজ করেছে। উনাদের (দু'টা নারী মাল্টি নিক) কথিত অভিযোগ হলো, উক্ত ব্লগার নারী হওয়ার কারনে উনাদেরকে উত্যক্ত করছেন। ওই দুই কথিত নারী নিক এই অপমানে অপমানিত হয়ে ব্লগ পরিত্যাগের ঘোষণা দেয়। ফলে তথাকথিত অভিযুক্ত ব্লগার আত্মসন্মান রক্ষার্থে নিজেও ব্লগ ছাড়ার ঘোষণা দেন। এখন অভিযোগ কতোটুকু সত্য কিংবা মিথ্যা…...এটা যাচাই করার এবং নিশ্চিত করার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। আশা করছি, কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ তদন্ত করে যদি সত্যিই কাউকে দোষী চিহ্নিত করেন, তাহলে তার দৃষ্টান্তমূলক সাজাও নিশ্চিত করবেন। আরো ভালো হয়, এটা ব্লগারদেরকে নোটিশ বোর্ডের মাধ্যমে জানানো, যাতে করে এ ধরনের নিকৃষ্টতম কাজ ভবিষ্যতে কেউ না করে কিংবা করার কথা চিন্তাও না করে। সমাজে আইন শৃংখলা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারকে সময়ে সময়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়। তেমনি, ব্লগের পরিবেশ রক্ষার্থেও কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ'ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা এবং কোন রকমের অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী না হওয়াটাই কাম্য। আমি নিশ্চিত, ব্লগারগন কর্তৃপক্ষের এই ধরনের যে কোনও পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ।
ছবিঃ গুগলের সৌজন্যে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০২১ ভোর ৬:৫০