somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কিশোর মাইনু
মোহাম্মদ মইন উদ্দীন। ডাক নাম মাঈনু। কিছু কিছু ফ্রেন্ডের কাছে কিশোর। বাড়ি চট্রগ্রাম। পড়ালেখার কারণে ঢাকায় থাকি। কৌতুহল একটু বেশী, হয়তো বাড়াবাড়ি ধরনের ই বেশী। দূঃসাহসী, কিন্তু সাহসী কিনা এখনো জানতে পারিনি।

গ্রীক মিথোলজি (১): বিশ্বব্রহ্মাণ্ড থেকে মাউন্ট অলিম্পাস

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিথোলজি, জিনিসটা আসলে কি??? সোজা কথায় মিথোলজি হচ্ছে এমন ধরণের গল্পকাহীনি যাতে কেবল দেব-দেবী এবং সমাজের বীরপুরুষদের কাহীনি বর্ণিত যা প্রাকৃতিক ঘটনা সমূহের পিছনে তাদের শক্তি বর্ণনা করে এবং প্রাকৃতিক ঘটনা সমূহের ব্যাখ্যা দেয়। প্রত্যেকটি মিথ বা গল্প প্রাকৃতিক অথবা ঐতিহাসিক ঘটনা সমূহের পিছনের কারণ বর্ণনা করে। এক কথায় দেব-দেবীদের নিয়ে যেকোন কাহীনিই হচ্ছে মিথ আর এ সম্পর্কিত বিদ্যা বা পড়ালেখাকে মিথোলজি বলে। মিথোলোজি শব্দের অর্থ পোরাণিক কাহিনী।পোরাণিক কাহিনী অনেক রকম হতে পারে। গ্রীক মিথোলোজি, হিন্দু মিথোলোজি, মিসরীয় মিথোলজি,পার্সিয়ান মিথোলজি এক-একটি একেক ধরণের। তবে যে কোন মিথলজিতে সৃষ্টিতত্ত্ব একটি অবিচ্ছেদ্য এবং গুরুত্বপূর্ন অংশ। এই সৃষ্টিতত্ত্ব আবার তিনটি অংশ: বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডের সৃষ্টি, দেবতাদের জন্ম এবং মানবজাতির সৃষ্টি।


গ্রীক মিথোলজি হল এই জায়গায় স্বয়ংসম্পুর্ণ। গ্রীক মিথোলজিতে সৃষ্টিতত্ত্বের এই তিনটি অংশই আছে।৭৫০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ থেকে ৬৫০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ সময়ে প্রাচীন গ্রীসের চারণকবি হেসিয়ড ছিলেন আরেক বিখ্যাত গ্রীক মহাকবি হোমারের প্রায় সমসাময়িক। এই বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডের সৃষ্টি, দেবতাদের জন্ম–এই সমস্ত কিছু তিনি তাঁর গ্রন্থ ‘থিওগোনী’-তে লিখে গিয়েছেন।


সৃষ্টির আদিতে, দেবতাদের আবির্ভাবের বহু পূর্বে, সুদূরের তমসাচ্ছন্ন অতীতে শুধু ছিলেন ক্যায়োস - এক অবয়বহীন অস্তিত্ব, যা আচ্ছিন্ন ছিলো অবিচ্ছিন্ন অন্ধকারে। ক্যায়োস হচ্ছেন এই বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডের আদিম দেবতা, বিশাল ও অপরিমেয় গভীরতার এক গর্ত, সমুদ্রের মতো নিষ্ঠুর, অন্ধকার, অমিতাচারী এবং উদ্দাম, একইসাথে অবয়বহীন শূন্যতা।

সে সময়ে না ছিলো কোনো স্থল ভূমি, না ছিলো কোনো জলভাগ, না ছিলো মানুষ, না ছিলো কোনো দেবতা। ছিলো না সূর্য বা চাঁদ, পাহাড় বা নদী। এমনকি সময়েরও অস্তিত্ব ছিলো না। ছিল শুধু এক বিশাল শূন্যতা। এই বিশাল শূণ্যতা থেকে কীভাবে যেনো জন্ম নিলেন- গাইয়া বা পৃথিবী, বা অন্যভাবে বলা যেতে পারে ক্যায়োসের পর গাইয়ার আবির্ভাব হয়, তিনি ক্যায়োসের সন্তান হো্ন, বা না হোন। গাইয়ার সাথেই জন্ম হয় টারটারাস (পাতালপুরী) এবং এরোসের, ভালোবাসার আদিম দেবতা। এভাবেই বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ড তখনো তৈরী হয় নি, কিন্তু সৃষ্টি হয় পৃথিবী, পাতালপুরী আর ভালোবাসার।
টারটারাস হচ্ছে এই বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ডের তৃতীয় আদিম দেবতা- ক্যায়োস ও গাইয়ার পর এবং এরোসের পূর্বে যার জন্ম। টারটারাস একইসাথে দেবতা এবং পাতালপুরী। স্থান হিসাবে টারটারাসের অবস্থান পৃথিবীর গভীর তলে। হেসিওড একে স্বর্গ থেকে বহু নিচে অবস্থিত অঞ্চল হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তাঁর মতে- স্বর্গ থেকে একটি ব্রোঞ্জ মুদ্রা নিক্ষেপ করলে, পৃথিবীতে তা পৌঁছাতে নয় দিন সময় লাগে। একইভাবে পৃথিবী থেকে এই মুদ্রা পাতালে পৌঁছাতে সময় নেয় নয় দিন। পাতালের এই অঞ্চলটি অন্ধকারময়, গুমোট। এই অঞ্চল ঘিরে রয়েছে একটি ব্রোঞ্জ নির্মিত দেওয়াল। এই দেওয়ালকে বাইরের দিক থেকে ঘিরে রয়েছে তিন স্তরে বিন্যস্ত রাত্রির অন্ধকার। ক্যায়োস এরপরে জন্ম দিলেন এরেবাস (অন্ধকার ও ছায়ার দেবতা) এবং নিক্স (রাত্রি-র দেবী)-কে। ভালোবাসার আদি দেবতা এরোসের হস্তক্ষেপে এরেবাস এবং নিক্স মিলিত হলেন, এবং জন্ম নিলেন ইথার (স্বর্গীয় আলো) এবং হেমেরা (দিন বা পৃথিবীর আলো)। এরেবাস এবং নিক্সের এই মিলিত হওয়া যেনো বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ডের প্রথম মিলন। নিক্স আবার একা একা জন্ম দিলেন মোমুস (নিন্দা), মোরোস (অদৃষ্ট), থানাটোস (মৃত্যু), হিপনোস (নিদ্রা), ওনেইরোরি (স্বপ্ন), কের (ধ্বংস), ওইজিস (দুর্দশা), হেসপেরিদেস (সূর্যাস্ত), কেরেস (মৃত্যুভাগ্য), মোইরাই (ভাগ্য), নেমসিস (কর্মফল), এ্যাপাটে (কপটতা), ফিলোটেস (বন্ধুত্ব), গেরাস (বৃদ্ধত্ব) এবং এরিস (দ্বন্দ্ব)সহ মোট পনেরজন সন্তানকে, যারা অন্ধকার থেকে মানুষের কাছে এসেছেন।
যাই হোক, গ্রিক মিথোলজির ক্রমানুসরণটা হয়েছে এই গাইয়া থেকেই। এই বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ড ধীরে ধীরে তার চেহারা পেতে থাকে গাইয়ার জন্যই। খুব দ্রুতই গাইয়া বা পৃথিবীর সন্তান জন্মাবার ইচ্ছা হলো এই বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ডকে বসতিপূর্ণ এবং শাসন করার জন্য।


গাইয়ার সন্তানের জন্য এতোই প্রবল ইচ্ছা ছিলো যে সর্বপ্রথম নিজে নিজেই জন্ম দেন তাঁর সমপর্যায়ের ইউরেনাসকে (আকাশ, বা স্বর্গ), যাতে গাইয়ার অন্যান্য সন্তানেরা বা ভবিষ্যত প্রজন্ম গাইয়া বা পৃথিবীর বুকে দাঁড়াতে পারেন এবং ইউরেনাসে বা স্বর্গে বিশ্রাম নিতে পারেন। আর এভাবেই গাইয়া আর ইউরেনাস (পৃথিবী এবং স্বর্গ বা আকাশ) আলাদা হলেও সমপর্যায়ে পরিনীত হয়। ইউরেনাসকে জন্ম দেওয়ার পর গাইয়া অউরিয়া(পাহাড়) এবং পন্টাস(সমুদ্র)কে জন্ম দেন। ফলে এই বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ড আকৃতি পেতে থাকলো- পৃথিবী, পাতালপুরী, আকাশ (বা স্বর্গ), পাহাড় এবং সমুদ্র। ইউরেনাস গাইয়ার সন্তান হলেও যেহেতু সমপর্যায়ের ছিলো তাই প্রতিরাতে গাইয়াকে চারপাশ থেকে আবৃত করে রাখতেন এবং এভাবেই গাইয়া মা হওয়া সত্ত্বেও ইউরেনাস তাঁর সাথে মিলিত হতেন। গ্রীক মিথলজিতে যে অজাচারের ছড়াছড়ি, সেটার উৎপত্তি যেনো সেই আদিতেই!!!

গাইয়া এবং ইউরেনাসের মিলনে প্রথমে জন্মগ্রহন করেছিলো হেকাটনখিরাস নামক দানব। হেকাটনখিরাসরা সংখ্যায় ছিলো তিনজন- তেজস্বী ব্রিয়ারেস, উন্মত্ত কোট্টুস এবং বড় অঙ্গযুক্ত গিয়েস। তারা প্রত্যেকেই ছিলো শক্তিশালী, বিশালকায় এবং ভয়ঙ্কর ও দাম্ভিক প্রানী, যাদের প্রত্যেকের ছিলো একশটি হাত এবং পঞ্চাশটি মাথা, যেগুলোর উৎপত্তি হয়েছিলো কাঁধ থেকে। এই কিম্ভূতকিমাকার সন্তানদের দেখে ইউরেনাস খুব বিরক্ত হলেন, এদের শক্তিমত্তা দেখে ভীতও হলেন। তাই জন্মাবার পর পরেই এদেরকে গাইয়ার গর্ভাশয়ে ধাক্কা দিয়ে ফিরিয়ে দিলেন। ইউরেনাসের এই আচরনে গাইয়া খুব ব্যথিত হলেন।

হেকাটনখিরাসদের পর ইউরেনাস আর গাইয়ার মিলনের ফলে জন্মগ্রহন করলো সাইক্লোপসরা, যারা দেখতে অনেকটা মানুষের মতোই, কিন্তু বিশালকায় আকৃতির। এরা বিশাল আকৃতির হলেও বুদ্ধিতে অনেক খাটো ছিলো। এদের কপালের মাঝখানে ছিলো একটি মাত্র চোখ। এরা স্বভাবেও অনেকটা একগুয়ে। সাইক্লোপরা ছিলো তিনজন- ব্রোন্টেস, স্টেরোপেস এবং আর্গেস। স্বভাবে একগুয়ে এবং বুদ্ধিতে খাটো হওয়ার জন্য এরা একের পর একের বিব্রতকর এবং অবাঞ্চিত ঘটনার জন্ম দিতে লাগলো। ইউরেনাস বিরক্ত হয়ে আবারো কঠোর হলেন। এদেরকেও বন্দী করে রাখলেন গাইয়ার অভ্যন্তরে কোন এক গোপন স্থানে। মা গাইয়া আবারো ব্যথিত হলেন।

হেকাটনখিরাস এবং সাইক্লোপসদের পরে গাইয়া এবং ইউরেনাসের একে একে আরো বারোটি সন্তান জন্ম গ্রহন করে, এদেরকেই বলা হয় টাইটান, আসলে এরা ছিলেন প্রথম প্রজন্মের টাইটান। এরাই মূলত দেবতাদের উত্তরসূরী হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকেন। এই টাইটানরাও আকৃতিতে ছিলেন বিশাল, তবে দেখতে ছিলেন সাইক্লোপদের চেয়েও মানবীয়। এই বারোজন টাইটানের ভিতর আবার পুত্র ছিলেন ছয়জন আর বাকী ছয়জন ছিলেন কন্যা সন্তান। ছয়জন পুত্র টাইটান হচ্ছেন- ওসেনাস, হাইপেরিয়ন, কয়ওস, ক্রিয়াস, ইয়াপেতুস ও ক্রোনাস এবং ছয়জন কন্যা টাইটান হচ্ছেন- টেথিস, থেইয়া, ফয়বে, থেমিস, নেমোসাইনে ও রিয়া। এদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ, কিন্তু সবচেয়ে বেশী সাহসী, উচ্চাকাঙ্খী, দুর্বীনিত সন্তান হল ক্রোনাস। আগেই বলেছি, বাবা ইউরেনাস কদাকার চেহারার জন্য সাইক্লোপস আর হেকাটনখিরাসদের গাইয়ার ভিতরে লুকিয়ে রাখেন। এই ব্যাপারটি গাইয়া মেনে নিতে পারেন নি। এছাড়া এদেরকে তাঁর ভিতরে লুকিয়ে রাখার জন্য ব্যথাও শুরু হতে লাগলো। ব্যথা যখন অসহনীয় পর্যায়ে পরিনীত হলো, গাইয়া তাঁর সন্তানদের আহবান করলেন এই অরাজক অবস্থার অবসান করার জন্য। গাইয়া তাঁর সন্তানদের বললেন, “হে আমার সন্তানেরা! পাপাচারে নিমগ্ন বাবার সন্তানেরা! যদি তোমরা আমাকে মান্য করো, তাহলে তোমাদের বাবাকে তাঁর পাপময় কৃতকর্মের জন্য অবশ্যই শাস্তি দেওয়া উচিত”। কিন্তু তাঁর টাইটান সন্তানরা কিছু করতে ভয় পেলেন, শুধুমাত্র একজন ছাড়া। তিনিই হচ্ছেন ক্রোনাস। তিনি গাইয়াকে বললেন, “মা! আমি এই দায়িত্ব নিলাম। বাবাকে শাস্তি দিবো, শুধু তুমি বলেছ বলে নয়, বরঞ্চ সে লজ্জাজনক পাপ কাজ করেছে বলে!!!" শুরু হলো ক্রোনাসের সাথে মা গাইয়ার ষড়যন্ত্র!!! গাইয়া চিন্তা করলেন, ইউরেনাস বাবা হিসেবে মোটেও ভালো নন। অবশ্য যে তার সন্তানদের জন্মাবার সময় আবার মায়ের পেটে পাঠিয়ে দেয়, কিংবা কোথাও বন্দী করে রাখে, সে বাবা হবার যোগ্যও নয়। তাই গাইয়া ঠিক করলেন, ইউরেনাসকে আর বাবা হতে দেওয়া যাবে না!!! গাইয়া ইউরেনাসকে নপুংসক করার জন্য একটি অনমনীয় কাস্তে তৈরী করে ক্রোনাসের হাতে তুলে দিলেন। এক রাতে ক্রোনাসের নেতৃত্বে ছয়জন পুত্রের মধ্যে পাঁচজন টাইটান ইউরেনাসকে আক্রমণ করার জন্য ওঁত পেতে থাকেন। অধিকাংশ মিথে দেখা গেছে, ওসেনাস ক্রোনাসের সাথে এই ষড়যন্ত্রে ছিলেন না।


ইউরেনাস যখন অন্যান্য রাতের মতো গাইয়ার সাথে মিলিত হতে আসেন, তখনই চারজন টাইটান হাইপেরিয়ন, কয়ওস, ক্রিয়াস এবং ইয়াপেতুস চারদিক থেকে ইউরেনাসকে শক্ত করে ধরে রাখেন এবং ক্রোনাস মাঝখানে গিয়ে মা গাইয়ার তৈরী অনমনীয় কাস্তে দিয়ে ইউরেনাসকে নপুংসক করেন।ইউরেনাসকে নপুংসক করার সময় যেসব রক্তের ফোঁটা ঝরতে থাকে, সেগুলো গাইয়া নিজের বুকে রেখে দেন এবং মৌসুম শেষে সেখান থেকে জন্ম নেয় শক্তিশালী এরিনিজ, জায়ান্ট এবং মেলিয়া নামক এক অ্যাশ গাছের নিম্ফ। আর ইউরনাসের অন্ডকোষসহ যৌননাঙ্গটি সমুদ্রের যেখানে ফেলা হয়েছিলো,সেখানের ফেনা থেকে উত্থিত হয়েছিলেন দেবী আফ্রোদিতি, এজন্য আফ্রোদিতিকে বলা হয়ে থাকে “ফেনা থেকে উদ্ভূত।

এই সমুদ্র জন্মটি ঘটেছিলো সিথেরার অদূরে, সেখান থেকে আফ্রোদিতিকে ভাসিয়ে নেওয়া হয় সাইপ্রাসে।
এভাবেই ইউরেনাসের পর এই বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডের রাজা হলেন ক্রোনাস। ক্রোনাস ইউরেনাসকে নপুংসক করার পর গ্রীক মিথে ইউরেনাসকে আর খুব একটা দেখা যায় নি, যদিও ইউরেনাস জীবিত ছিলেন, কারণ তাঁকে হত্যা করা হয় নি, তবে আর কোনো ক্ষমতা ছিলো না। ক্রোনাস যখন ইউরেনাসকে নপুংসক করে তখন চোখে মুখে বিস্ময় নিয়ে ইউরেনাস বেদনার্ত কন্ঠে ক্রোনাসকে অভিশাপ দেন, “ক্রোনাস, তুমি আজ আমার সাথে যে ব্যবহার করেছ, একদিন তোমার সন্তানও তোমার সাথে সেই ব্যবহার করবে, তোমাকে ক্ষমতা থেকে ছুড়ে ফেলে সে এই বিশ্ব- ব্রক্ষ্মান্ডের রাজা হবে”। ক্রোনাস ইউরেনাসের কথাকে খুব গুরুত্বের সাথে বিশ্বাস করলেন।ক্রোনাস বিয়ে করে টাইটানদের মধ্যে সবচেয়ে শান্ত গডেস বা দেবী রিহা কে। রিহা ও ক্রোনাসের ঘরেও সন্তান জন্ম নিলো। কিন্তু ক্রোনাস তার পিতার অভিশাপের কথা ভুলে নি। সেও ধরে নিয়েছিল তার সন্তানেরা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। ঠিক যেমনটি সে করেছিল। এ জন্যে সে তার সন্তানদের জীবন্ত গলধঃকরন করতো।

এভাবে একে একে সে তার ৫টি সন্তানকে জ্যান্ত গিলে ফেলল। ৬নাম্বার সন্তানটি বাচানোর জন্য রিহা মরিয়া হয়ে উটে। ইউরেনাস আরর গাইয়ার পরামর্শে সে বাচ্চার বদলে একটি পাথরের টুকরা ক্রোনাসের হাতে তুলে দেয়। সে সেটাকেই বাচ্চা ভেবে খেয়ে ফেলে। আর মা রিহা তার বেচে যাওয়া ৬ষ্ঠ সন্তান্টিকে পাঠিয়ে দেন ক্রিট দ্বীপে ডিক্টে গুহায় থাকা আরমাথিয়া নামক এক নিম্ফের কাছে যেখানে সে নিরাপদ থাকবে। আর এই সন্তানটি ই হল জিউস,দ্যা কিং অফ গড। ওসেনাস & থেতিসের তিনহাজার সমুদ্রকন্যার একজন ছিলেন গভীর চিন্তা ও জ্ঞানের দেবী মেথিস। মেথিস একদিন জিউস কে একটি বিশেষ পয়জন দেয়,যা খেয়ে ক্রোনাস একে একে তার ৫ভাইবোন কে বমি করে। এবং অবাক ব্যাপার হল, তাদের যখন বমি কতরা হয় তখন তারা জীবিত ও প্রাপ্তবয়স্ক। তো জিউস তার ভাইবোনসহ মোট ১১জনকে সাথে নিয়ে "Titan War" যুদ্ধে ক্রোনাসকে পরাজিত করেন। তারপর তার এক ভাইকে পাতালপুরীর দায়িত্ব দিয়ে বাকীরা সবাই অলিম্পাস পর্বতে বাস করা শুরু করেন। তাই এদের অলিম্পিয়ানস বলা হয়। তার বাকি ২ভাই হচ্ছে পসাইডন ও হেডিস, এবং তিন বোন হচ্ছে হেরা, ডিমেটার ও হেস্টিয়া। হেডিসকেই পাতালপুরীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। বাকী ৭জন ছিলেন হার্মিস, এরিস, আফ্রোদিতি, অ্যাপেলো, অ্যাথেনা, আরথেমিস, হেফেস্টাস।

মিথোলোজি অনেক বিশাল একটি ব্যাপার। আর গ্রীক মিথোলজি সেখানে কয়েক ধাপ এগিয়ে। এখানে দেব-দেবীরা প্রেম করে, পরকীয়া করে সন্তান জন্ম দেয়। আবার তারা তারা মারামারি করে,যুদ্ধ করে। আবার দেবতারারা মর্টালদের প্রেমে ও পড়ে। মর্টাল বলতে মানুষ ও সাইক্লপস। মর্টালদের বিয়ে করে বাচ্চা ও পয়দা করে। যেমন হারকিওলিস, থালিয়া, পার্সি জ্যাকসন ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার এই সন্তান্দের মাঝেও সংঘর্ষ বাধে। ট্রয়ের যুদ্ধ, পান্ডোরার বাক্স, প্রমিথিউস, মানুষের সৃষ্টি, অ্যাজটেক, স্ফ্রিংস অনেক অনেক কাহিনী/মিথ আছে এই গ্রীক মিথোলজিতে। একে একে সব ই দেওয়ার চেষ্টা করব। আজ অলিম্পিয়ানস রা কোথাথেকে এসেছে সেটা বোঝানোর চেষ্টা করলাম। পরের পর্বে তাদের একটু বোঝার চেষ্টা করব। সে পর্যন্ত ভাল থাকুন। আর কষ্ট করে পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৫:৫১
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×