somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশেষে অফুরন্ত সময় (অনুবাদ গল্প)

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকের কাছেই আনবিক বোমার অর্থই হচ্ছে সবকিছুর সমাপ্তি। কিন্তু হেনরী বেমিসের জীবনে এটা কিছু অন্য অর্থই বয়ে এনেছিল। জীবনকে উপভোগ করার জন্য এটা ছিল তার এক অনন্য সুযোগ।

অনেকদিন যাবত হেনরী বেমিসের একটা তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল। একটি গুরুতর শখ। আর তা হচ্ছে বই পড়া। কেবলমাত্র বইয়ের মলাট কিংবা ভূমিকাটুকু নয়, অথবা বইয়ের মাঝামাঝি থেকে যেকোন পৃষ্ঠা মাত্র নয়...তিনি পড়তে চাইতেন পুরোটা বই। একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। এটা নিশ্চয়ই খুব বেশি কিছু আহামরি আকাঙ্ক্ষা নয়, কিন্তু হেনরী বেমিসের তালগোলপাকানো জীবনে এটা ছিল একরকম অসম্ভব একটি ব্যাপার।

হেনরী’র নিজের বলতে কোন সময়ই ছিল না। তার বস জনাব কার্সভিলের কাছ থেকে তিনি টেনেটুনে যেটুকু সময় বাঁচাতে পারতেন, তার পুরোটাই নিজের স্ত্রী এগনেসকে দিয়ে দিতে হতো। কেবলমাত্র কাজে আসা যাওয়ার পথে যেটুকু্মাত্র সময় পেতেন, তা পুরোটাই তিনি পড়ার কাজে ব্যয় করতেন।

সৃষ্টিকর্তাও ষড়যন্ত্র করে একজোড়া ক্ষীণদৃষ্টির চোখ দিয়ে তাকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। বেচারা হেনরী চোখের সামনে থাকা তার হাতটাকেও ঠিকমত দেখতে পেতেন না। যখন তিনি বেশ ছোট ছিলেন, তখন তার বাবা-মা তাকে একপ্রকার গর্দভ বলেই মনে করেছিলেন। যখন বুঝতে পারলেন যে, সমস্যাটি আসলে হেনরীর চোখে তখন অবশেষে তারা চশমার ব্যবস্থা করলেন।

হেনরী ব্যাংকে চাকরি করতেন। তিনি কখনোই সময়ের সাথে পেরে উঠতেন না। তার হাতে নিজের জন্য কখনোই যথেষ্ট সময় থাকতো না। অবস্থা দেখে শুনে তার নিজের কাছেও মনে হতে লাগলো, তিনি হয়ত জীবনে কখনোই তার শখ পূরণ করতে পারবেন না।
তখনই এমন এক ঘটনা ঘটলো যা সবকিছুকে একেবারে বদলে দিলো।

হেনরী যখন ইস্টাসাইড ব্যাংক এণ্ড ট্রাস্ট’র ভোল্টে ছিলেন, তখনই ঘটনাটা ঘটেছিল।
ঐদিন সকালে তিনি একটা ম্যাগাজিন সংগ্রহ করে এনেছিলেন। নিজের কাজ থেকে কিছুটা সময় চুরি করে সেই ম্যাগাজিনের কয়েকটি পাতা পড়ার জন্য তিনি ভল্টে ঢুকেছিলেন। বস জনাব কার্সভিলকে অযুহাত দেখিয়েছিলেন যে, উচ্চশ্রেণির কাস্টমার এসে বড় অংকের টাকা উঠিয়ে নিয়ে যায়। তাই কিছু বেশি টাকা ক্যাশ হিসেবে রাখা প্রয়োজন।

ভল্টের আবছা আলোর নিরাপদ কুঠুরীতে বসে তিনি তার কোটের ভেতর থেকে বের করে আনলেন পকেট সাইজের ম্যাগাজিনটি। তার চোখে মুখে জ্বলজ্বল করতে লাগলো আনন্দমাখা পরিতৃপ্তি।
প্রগাঢ় প্রশান্তিতে তখন তিনি সবেমাত্র ম্যাগাজিনটির একটি আর্টিকেল খুলে বসেছেন। আর্টিকেলটির নামটা ভারী চমকপ্রদ, ‘নতুন অস্ত্রশস্ত্রাদি এবং সেগুলোর ব্যবহার’।

এমন সময় প্রচণ্ড এক আওয়াজে তার কানে রীতিমত তালা লেগে গেল। তার কাছে মনে হলো, যেন পুরো পৃথিবীটা ভেঙ্গে পড়েছে। ভল্টের ভেতর এবং বাইরে পুরো জায়গা জুড়ে একইসাথে সেই শব্দ রীতিমত কাঁপিয়ে দিয়ে গেল চারপাশ।

কনক্রিটের মেঝে যেন উঁচু হয়ে উপরে উঠে গিয়েছে আর ছাদ একেবারে ঢালু হয়ে ধেয়ে এসেছে তার দিকে। সেই মুহুর্তেই হেনরীর মনে পড়লো একটির বইয়ের কথা যা কোন একসময় তিনি পড়তে আরম্ভ করেছিলেন। বইটির নাম ছিল, ‘কূপ এবং দোলক’। সেই উন্মত্ত সময়েও তার অনুতাপ হতে থাকলো এই ভেবে যে, বইটি তিনি শেষ করতে পারেননি। কীভাবে লেখক সেই অন্ধকার কূপ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন, সেটা তিনি শেষপর্যন্ত জানতে পারেননি।

আচমকাই সবকিছুই যেন শান্ত আর সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিল। তীব্র অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল চারপাশ। সেই প্রচণ্ড শব্দে হেনরীও তার সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছিলেন।
..................................................................
যখন তিনি সংজ্ঞা ফিরে পেলেন, বুঝতে পারলেন যে ‘ইস্টসাইড ব্যাংক এণ্ড ট্রাস্ট’র সাথে নিশ্চয়ই ভয়ানক একটা কিছু হয়েছে।
ভল্টের শক্ত মজবুত স্টিলের দরজা দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে গিয়েছিল। মেঝেটা অদ্ভূত এক কোণে বেঁকে গিয়েছিল। আর ছাদ যেন এর ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল।

হেনরী সাবধানে উঠে দাঁড়ালেন। হাত এবং পা নাড়াচাড়া করে দেখলেন যে, সবকিছু জায়গামত ঠিকঠাক আছে কী না। অবশেষে নিশ্চিত হলেন যে, সবকিছুই জায়গামত আছে। কোনোকিছু ভেঙ্গে যায়নি।
এরপরে অতি সতর্কতার সাথে তিনি তার চোখে হাত দিলেন। তার মহামূল্যবান চশমাটিও জায়গামতই আছে। যাক! ধন্যবাদ ঈশ্বর!
চশমাছাড়া তিনি কিছুতেই এই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ভল্ট থেকে বেরুতে পারতেন না। মনে মনে তিনি অনেকবার চশমার অতিরিক্ত কপি করে নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু তা আর করে ওঠা হয়নি এতদিন।

হেনরী চোখ থেকে চশমাটাকে খুলে নিলেন। মুহুর্তেই ঘরটি তার কাছে এক অস্পষ্ট দাগে পরিণত হলো। হেনরী একটি গোলাপি ঝলক দেখতে পেলেন। তিনি বুঝতে পারলেন যে, সেটি তার হাত। যখন তিনি পকেট থেকে রুমাল বের করে চশমার লেন্সটিকে মুছতে লাগলেন, তার মনে হলো যেন একটা সাদা বিন্দু এসে গোলাপি ঝলকটার সাথে মিলিত হলো।

চশমাটাকে আবার যখন তিনি সস্থানে বসিয়ে দিলেন সেটি তার নাকের উপরে একটু পিছলে গেল। কিছুক্ষণ ধরে তিনি সেটিকে শক্তভাবে জায়গামত বসানোর চেষ্টা করলেন।
যদিও তার সচেতন ভাবনায় তখনো উপলব্ধিটুকু পুরোপুরি আসছিল না, তবু তিনি যেন আচমকাই বুঝতে পারলেন যে খুব খুব ভয়ানক একটা কিছু ঘটেছে। খুব সাংঘাতিক একটা কিছু। যা কিনা বয়লার ফেটে পড়া অথবা গ্যস চেম্বার বিস্ফোরিত হওয়ার চেয়েও ভয়াবহ। আর তা এতটাই ভয়াবহ যেমনটা আগে কখনো ঘটেনি।

তার এমনটা মনে হলো কারণ সবকিছুই যেন হঠাৎ একেবারে শুনশান হয়ে পড়েছিল। কোন সাইরেনের আওয়াজ নেই, লোকজনের ছুটোছুটি, চিৎকার...কিছুই নেই। শুধুমাত্র দীর্ঘ সময় ব্যাপি একটা অশুভ আর অস্বস্তিকর নীরবতায় ছেয়ে ছিল চারপাশ।

হেনরী ঢালু মেঝের ওপরে একরকম হামাগুড়ি দিয়ে ভল্ট থেকে বেরিয়ে এলেন। উঁচুনীচু মেঝে দিয়ে টেনে হিঁচড়ে তিনি কোনমতে এলিভেটরের কাছে এগিয়ে গেলেন। একটি গাড়ি দুমড়ে মুচড়ে তার খাদের ভেতরে আটকে ছিল। দেখে মনে হচ্ছিলো, ঠিক যেন একটি বাতিল করে দেওয়া বাদ্যযন্ত্র। গাড়িটার ভেতরে একটা কিছু ছিল। হেনরী সেদিকে তাকাতে পারছিলেন না। এমন কিছু যা হয়ত একসময় একজন অথবা একদল মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন...কিন্তু বর্তমানে সেটা যে কী তা আর কিছুমাত্র বোঝার উপায় নেই।

হেনরী অসুস্থ বোধ করতে লাগলেন। টলমলে পায়ে কোনমতে তিনি সিঁড়ি’র দিকে ছুটে গেলেন।
সিঁড়িগুলো তখনো সেখানে ছিল ঠিকই, কিন্তু একটার ওপরে আরেকটা রীতিমত দলা পাকিয়ে ছিল। সেই সিঁড়ি বেয়ে ওঠা ঠিক যেন কোনো পাহাড়চূড়ায় ওঠার মতোই ব্যাপার হবে।

ব্যাংকের লবির বিশাল কক্ষটিতে তখন নিশ্ছিদ্র নীরবতা। ওপরের সিলিং ধ্বসে পড়েছে। আর কড়িকাঠের ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো ঢুকে কক্ষটিকে আশ্চর্য এক প্রশান্তিময় অবয়ব এনে দিয়েছে। রঙিন সূর্যের দীপ্যমান ছটা এসে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো শুনশান লবিটাকে। এখানে সেখানে গাদাগাদি করে পড়ে রয়েছে দলাপাকানো মাংসপিণ্ড। সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে রাখার প্রানান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন হেনরী। এই ভয়ানক পরিস্থিতি তাকে রীতিমত অসুস্থ করে তুলছিল।
কিছু একটা অবশ্যই করতে হবে। কারণ এটা একটা ভয়াবহ ঘটনা। আবার আজকে সোমবারের মাঝামাঝি। জনাব কার্সভিল নিশ্চয়ই করনীয় কী সেই ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

এসব চিন্তা করে হেনরি তার বস জনাব কার্সভিলের নাম ধরে ডাকলেন। প্রথমে আস্তে, তারপরে যথেষ্ট উঁচুস্বরে। তার গলার স্বর নিজের কাছেই ফ্যাঁসফ্যাঁসে শোনালো। আর তার একটু পরেই বিশাল এক মার্বেল ব্লকের নীচে তিনি একটি হাত আর কাঁধ আবিষ্কার করলেন। পরনের জামার বোতামের গর্তগুলোতে সাদা রঙের সুতার কাজ। ঠিক এমনই একটি জামা আজ জনাব কার্সভিল পরে এসেছিলেন। সেই হাতটির তৃতীয় আঙ্গুলে একটি নামাঙ্কিত বিশাল আংটি। হেনরী বুঝতে পারলেন এই আংটির মালিকও জনাব কার্সভিল।

অসাড় হয়ে আসা অনুভূতি দিয়ে একসময় হেনরী বুঝতে পারলেন যে, মার্বেল ব্লকটির নীচে যে শরীরটা নিথর হয়ে পড়ে আছে...সেটার মালিকও জনাব কার্সভিল ছাড়া অন্য কেউ নন।

হেনরী এতক্ষণে এক তীব্র সত্যিকারের বেদনা অনুভব করলেন। জনাব কার্সভিল মারা গিয়েছেন এবং সেই সাথে মারা গেছেন এই অফিসের সমস্ত কর্মকর্তা কর্মচারী। জনাব উইকিলসন, জনাব এমোরি, জনাব পৃথার্ড...সেই সাথে পিট, র্যা লফ, জেনকিন্স, এবং হান্টার। রক্ষী প্যাট এবং দারোয়ান উইলি...একজন মানুষও আর জীবিত নেই, যার কাছে হেনরী ‘ইস্টসাইড ব্যাংক এণ্ড ট্রাস্ট’র ব্যাপারে কী করা যায় সেটা নিয়ে আলাপ করতে পারেন। অবশ্য ব্যাংকের ভালো মন্দ নিয়ে এই মুহুর্তে হেনরী মোটেও ভাবছেন না। তিনি তখন সম্পূর্ণ অন্য কিছুর ব্যাপারে চিন্তা করছিলেন।

স্তুপ হয়ে থাকা ইটের ওপর দিয়ে খুব সাবধানে ওপরে উঠতে লাগলেন হেনরী। হঠাৎ তার পায়ের নীচে কুড়মুড় শব্দ করে কিছু একটা দলিত মথিত হলো। হেনরী দাঁতে দাঁতে চেপে নিজের বমি আটকানোর চেষ্টা করলেন।
একসময় অনেক সাধ্য সাধনা করে অবশেষে তিনি ব্যাংকের বাইরে বের হয়ে আসতে সক্ষম হলেন। বাইরে বেরিয়েই তার মনে হলো, রাস্তার অবস্থা ভেতরের চেয়ে কিছুমাত্র কম খারাপ নয়। চারপাশে তীব্র সূর্যরশ্মি। ছড়ানো ছিটানো কংক্রিটের ওপরে দিয়ে তিনি একরকম হামাগুড়ি দিয়ে এগুতে লাগলেন। চারপাশে থমকে আছে প্রচণ্ড অশুভ একটা অনুভূতি। এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অদ্ভূত বিকৃত গতিবিহীন দলাপাকানো মাংসপিণ্ড। হেনরী তার চোখ দুটোকে কোথাও যেন ফেলতে পারছিলেন না। তীব্র এক ব্যথায় তার ভেতরটা মুচড়ে যাচ্ছিলো।
এই সময় হঠাৎ করেই তার এগনেসকে মনে পড়লো। নিজেকে নিজেই বললেন, তার তো এখন এগনেসের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত, তাই না?
তখনই তার মনে পড়লো একটি পোস্টারের কথা। তাতে লেখা ছিল, ‘জরুরী প্রয়োজনের সময় টেলিফোন ব্যবহার করবেন না। আপনার প্রিয়জনেরা সেইরকম নিরাপদেই আছেন, ঠিক যেমনটা এই মুহুর্তে আপনি আছেন।’
তিনি এগনেসের ব্যাপারে নিজের মতো করে কল্পনা করে নিলেন।

দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়িগুলোর দিকে তিনি অবাক বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইলেন। চারচাকার এই যানগুলো যেন মৃত শক্ত হয়ে যাওয়া প্রাণির মতোই আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। এই মুহুর্তে কোনোভাবেই তিনি এগনেসের কাছে পৌঁছতে পারবেন না। সে যদি সেই বিশেষ মুহুর্তটিতে নিরাপদ থেকে থাকে, তাহলে এখনো সে নিরাপদেই আছে...আর তা না হলে...। তিনি ভালোমতই বুঝতে পারছিলেন, এগনেস মোটেও নিরাপদে নেই।

তিনি আরো বুঝতে পারছিলেন যে, অনেক দূর দূর অবধি কেউ নিরাপদে নেই। হয়ত এই প্রদেশ অথবা এই দেশ এমনকি এই পৃথিবীতেই কেউ নিরাপদে নেই। এটা এমনই এক ভয়াবহ চিন্তা যে হেনরী জোর করে নিজের মনকে সেই চিন্তা থেকে সরিয়ে রাখতে চাইলেন। তিনি এগনেসের ভাবনাতেই তার মনকে আটকে রাখার চেষ্টা করে যেতে লাগলেন।

আজ যখন সবকিছু চুকেবুকেই গেছে, সেজন্যই যেন তার কাছে মনে হতে লাগলো যে এগনেস বউ হিসেবে খারাপ ছিল না। বর্তমান সময়ে মানুষ আর পড়ালেখার জন্য সময় বের করতে পারে না। তাই এগনেসেরও দোষ দেওয়া যায় না। বাড়ি, ব্যাংক আর উঠোনটুকুর মধ্যেই তার সবকিছু সীমাবদ্ধ ছিল।
ব্রিজ খেলার জন্য ছিল জন, ক্যানাস্টার জন্য গ্রেসন আর হেঁয়ালিভরা গল্পের জন্য ছিল শ্যারড। আর ছিল টেলিভিশন। এগনেস টেলিভিশন দেখতে ভালোবাসতো। কিন্তু সে কখনো একা একা টেলিভিশন দেখতে চাইতো না। হেনরীকে সবসময় তাকে সঙ্গ দিতে হতো।
এমনকি একটা সংবাদপত্র পড়ার সময়টুকুও হেনরী পেতেন না। গতরাতে সংবাদপত্র নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি হেনরীর মনে পড়ে গেল।

একটা সংবাদপত্র হাতে নিয়ে হেনরী তার চেয়ারে আরাম করে বসেছিলেন। এই ভেবে ভয়েও ছিলেন যে, একটু খানি ক্যাঁচক্যাঁচ আওয়াজ হলেই এগনেস বুঝে যাবে যে, তিনি পড়ার জন্য কিছুক্ষণের বিরতি নিয়েছেন। পেপারের একটুখানি কড়কড় আওয়াজও এগনেসের কাছে শিঙ্গা বাজানোর মতো একটা ভয়াবহ আওয়াজ বলে মনে হবে।
হেনরী তড়িঘড়ি করে সংবাদপত্রের হেডলাইনগুলোর দিকে চোখ বুলিয়ে নিলেন। প্রথম পাতায় বড় বড় হরফে লেখা ছিল, ‘সম্মেলনে ভাঙ্গন আসন্ন’। এখন পুরো আর্টিকেল পড়ার মতো সময় হেনরীর মোটেও নেই।

তিনি চটজলদি দ্বিতীয় পাতায় চলে গেলেন। ‘কিছুদিনের মধ্যেই সোলন যুদ্ধের আশঙ্কা করছেন’। তিনি দ্রুতবেগে পাতা উল্টিয়ে যেতে লাগলেন। এখান ওখান থেকে একটু আধটু করে পড়তে লাগলেন। যেকোন একটা আর্টিকেলে বেশি সময় দেওয়ার মতো সাহস তিনি করে উঠতে পারলেন না।

একেবারে শেষ পাতায় একটা সংক্ষিপ্ত আর্টিকেল ছাপা হয়েছিল, ‘ইউক্যাটানে প্রাগৈতিহাসিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে’। হেনরী মনে মনে একটু হাসলেন আর ভাবলেন, এটা নিশ্চয়ই খুবই আকর্ষণীয় একটা আর্টিকেল হবে। তাকে এটা অবশ্যই পুরোটা পড়তে হবে। এই ভেবে তিনি অতি সাবধানে সংবাদপত্রটিকে চারভাঁজ করে রাখলেন।
ঠিক এমন সময়ই এগনেসের আওয়াজ শোনা গেল। ‘হেনরীইইইইইইই!’ বলতে বলেতেই এগনেস হেনরীর ওপরে একরকম ঝাঁপিয়ে পড়লো।

হেনরীর হাত থেকে সংবাদপত্রটিকে ছিনিয়ে নিয়ে এগনেস তা ফায়ারপ্লেসের আগুনে ফেলে দিলো। দুঃখিত চোখ নিয়ে হেনরী দেখতে পেলেন মুহুর্তেই সংবাদপত্রটির ওপরে দপ করে শিখা জ্বলে উঠলো। দপদপিয়ে তার ‘না পড়তে পারা’ সেই আর্টিকেলটিকে একসময় আগুনের লেলিহান শিখা পেঁচিয়ে ধরলো। এগনেস বলতে থাকলো,
‘হেনরী, আজ রাত হচ্ছে জনের ব্রিজ খেলার রাত। তারা আর কিছুক্ষণের মধ্যেই এখানে চলে আসবে। আমি এখনো পোশাক আশাক পড়ে তৈরি হতে পারিনি। আর তুমি কী না এখানে বসে পড়ছো!’

শেষ শব্দটি সে এমন জোর দিয়ে উচ্চারণ করলো, যেন হেনরী নোংরা কিছু একটা করছিলেন। নিজের কথার সাথে সে আরো যোগ করলো,
‘যাও গিয়ে তাড়াতাড়ি শেভ করে নাও। দেখতে পাও না, জনের থুতনি কেমন মসৃণ!’

কথা শেষ করে এগনেস সটান ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। যাওয়ার আগে একবার অনুশোচনা ভরে ফায়ারপ্লেসের আগুনের দিকে তাকালো। সেদিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
‘হায় হায়! সেই সংবাদপত্রে তো আমার টেলিভিশনের অনুষ্ঠানসূচী ছিল! আচ্ছা থাক...জনদের ফিরে যাওয়ার পরে এমনিতেই আর কোনো কিছু করার সময় থাকবে না। কিন্তু অনেক রাতের সিনেমা...ও! হেনরী বসে থেক না! জলদি করো!’

হেনরী এখন তাড়াহুড়া করছেন। বড্ড বেশি তাড়াহুড়া করছেন। তাড়াহুড়া করতে গিয়ে তার পা কেটে গিয়েছে। স্টিলের একটি বাঁকানো পাতের সাথে চোট খেয়ে তার পা কেটেছে। পাতটি সম্ভবত একসময় গাড়ির হাতল বা ঐ জাতীয় কিছু একটা ছিল।
হেনরীর মাথায় ধনুষ্টঙ্কার অথবা গ্যাংগ্রিন এসবের চিন্তা খেলে গেল। আর সেসব চিন্তা মাথায় আসতেই তিনি তার রুমাল দিয়ে ক্ষতস্থানটি বেঁধে নিলেন।

তার হাত থরথর করে কাঁপছিল। মনে মনে তিনি ফিরে গেলেন গতকাল রাতের সেই আগুনের শিখার কাছে...যার লকলকে আগুনে তার সংবাদপত্রটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল।
তার মনে হলো, এখন তিনি ইচ্ছেমত যত খুশি তত সংবাদপত্র পড়তে পারবেন। কিন্তু পড়ার জন্য কোনো সংবাদপত্রই এখন আর পাওয়া যাবে না।

রাস্তার অপরপাশে যে পাথরের স্তুপ জমা হয়ে আছে, সেখানেই আজ সকাল পর্যন্ত গেজেট ভবনটা ছিল। এখন তা পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপ।
ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে যে, সেখানে আর কোনোদিনই কোনো নতুন সংবাদপত্র প্রকাশিত হবে না। আর কোনো টেলিভিশনের অনুষ্ঠানসূচী প্রকাশিত হবে না। এগনেসের নিশ্চয়ই ভীষণ মন খারাপ হবে। আর তখনই সাথে সাথে এটাও মনে হলো, নিশ্চয়ই আর কোনো টেলিভিশনও থাকবে না।
তিনি হাসতে চাইলেন, কিন্তু পারলেন না। হাসিটা যেন ঠিক যুতসই হলো না।
যে ভবনটিকে তিনি খুঁজছিলেন তা অবশেষে দেখতে পেলেন। কিন্তু ছাইরঙ্গা সীমানাটি একেবারেই বদলে গিয়েছে। বিশাল বৃত্তাকার ডোমটি এখন একটি ভগ্নদশা অর্ধবৃত্তাকার ডোমে পরিণত হয়েছে। এর অর্ধেক অংশ একেবারেই উধাও হয়ে গিয়েছে। ভবনটির বৃহৎ একটি বর্ধিত অংশ ভেঙ্গে গিয়ে ভবনটির ওপরেই পড়ে রয়েছে।

হঠাৎ এক ভীষণ ভীতি এসে গ্রাস করে ফেললো হেনরী বেমিসকে। তবে কি সবকিছুই নিশ্চিন্ন হয়ে গিয়েছে? একটা কোনো প্রাণীও কি জীবিত নেই? এই পুরো অঞ্চলজুড়ে তিনিই কি একমাত্র জীবিত ব্যক্তি?
প্রচণ্ড এক অসহায় কান্নায় তার চোখজোড়া প্লাবিত হলো। কষ্টভরা হৃদয়ে তিনি ব্যাকুল হয়ে জরাজীর্ণ শহরের চূর্ণবিচূর্ণ পথঘাট হাতড়ে খুঁজে ফিরতে লাগলেন।
..........................................................................................
ভবনটি যখন সম্পূর্ণ অবস্থাতে ছিল তিনি সেই সময়টাকে কল্পনা করতে লাগলেন। এর সুপ্রশস্ত দরজার সামনে অনেকদিন রাতে চলার পথে তিনি দাঁড়িয়ে পড়তেন। সেইসব উষ্ণ রাতগুলোর কথা তার মনে পড়ে গেল। ভবনটির দরজা হাট করে খোলা থাকতো, আর তিনি ভেতরে বসে থাকা মানুষগুলোকে দেখতে পেতেন।

একগাদা বই পাশে নিয়ে সাধারণ কাঠের টেবিল-চেয়ারে বসে মানুষগুলো মগ্ন হয়ে সময় কাটাতো। তার কাছে তখন মনে হতো, কী অদ্ভূত দারুণ এক ব্যাপার এই পাবলিক লাইব্রেরি! এখানে যে কেউ যখন খুশি তখন এসে ইচ্ছেমত পড়তে পারে।

ভেতরে ঢোকার জন্য তিনি অনেকবার আকুল হয়েছেন। খোলা দরজা দিয়ে তিনি মানুষগুলোকে দেখতেন আর মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করতেন তাদের কার্যাবলী। দরজার কাছের এক টেবিলে বসে থাকতেন তেলচিটচিটে পোশাকের একজন লোক। রাতের পরে রাত অনেক পরিশ্রম করে তিনি পড়াশুনা করতেন। কোনো টেকনিক্যাল জার্ণাল হবে হয়ত...হয়ত সেটা পড়া তার জন্য বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। তবু তিনি পড়তেন, হয়ত উন্নত ভবিষ্যতের আশায়।

দরজার অপরপাশে বসে থাকতেন একজন বয়ষ্ক বেশ শিক্ষিত ভদ্রলোক। আয়েশ করে তিনি বইয়ের পাতা উল্টাতেন আর তার ঠোঁটজোড়া অল্প অল্প নড়তো। যেমনভাবে তার ঠোঁটজোড়াও অল্প অল্প নড়ে। সেই ভদ্রলোকের কাছে খুব বেশি সময় আর অবশিষ্ট ছিল না। কিন্তু তার সময়গুলোকে তিনি দামী কাজে একেবারে তার ইচ্ছেমত ব্যয় করতে পারতেন।

হেনরী কোনোদিনই ভেতরে ঢুকতে পারেননি। তার ঢোকা হয়ে ওঠেনি। একদিন অনেক আশা নিয়ে তিনি ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। প্রায় দরজার কাছে পৌঁছেও গিয়েছিলেন। তখনই তার স্ত্রী এগনেসের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। সেই সাথে মনে পড়ে গিয়েছিল তার একরাশ প্রশ্ন আর প্রচণ্ড চিৎকার চেঁচামেচির কথাও।
সাথে সাথেই তিনি ঘুরে গিয়েছিলেন। তার আর সেদিন লাইব্রেরিতে ঢোকা হয়নি।

তিনি আজ লাইব্রেরিতে ঢুকতে যাচ্ছেন। যদিও তাকে হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হচ্ছে। ছুরিকাহতের মতো তার হৃৎপিণ্ড দ্রুতবেগে ওঠানামা করছে। তার হাত কেটে রক্ত ঝরছে। পায়ের ক্ষতস্থানে বেঁধে রাখা রুমালটি রক্তে ভিজে তার ট্রাইজার চটচটে হয়ে গিয়েছে।
প্রচণ্ড বেগে তার পাজোড়া কাঁপছিল। কিন্তু হেনরী এসব ব্যাপারকে মোটেও পাত্তা দিলেন না। অবশেষে তিনি তার গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছেন।

দরজাবিহীন প্রবেশদ্বারে তখনো কিছু শব্দ বোঝা যাচ্ছিল। পা...ব........লা...ই...ব্রে...। বাকিগুলো ছুটে গিয়েছিল।
পুরো জায়গাটা ঠিক যেন একটা কসাইখানার রূপ নিয়েছে। বইয়ের শেলফগুলো উলটে পড়ে আছে। সেগুলো ভেঙ্গে গুড়িয়ে একেবারে দুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে। আর তার ভেতরের মহামূল্যবান সম্পদগুলো এলোমেলো ভাবে পুরো মেঝে জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। মহা উল্লসিত হয়ে হেনরী লক্ষ্য করলেন যে, অসংখ্য বই তখনো মোটামোটি আস্ত অবস্থাতে ছিল। সেগুলো পড়ার উপযোগী অবস্থায় ছিল।

হেনরী বইয়ের স্তুপের মধ্যে হাঁটু ডুবিয়ে বসলেন। বইয়ের স্তুপ যেন ঢেউয়ের মতো এসে আলিঙ্গন করলো তাকে। তিনি একটি বই হাতে তুলে নিলেন। ‘উইলিয়াম শেকসপিয়ারের নির্বাচিত রচনাবলী’। তিনি বইটিকে পাশে রাখলেন। এটা একসময় অবশ্যই তিনি পড়ে নেবেন। আরেকটি বই হাতে তুলে নিলেন তিনি, ‘স্পিনোজা’। বইটিকে এপাশ ওপাশে উল্টেপাল্টে দেখে আরেকটা বই উঠিয়ে নিলেন। তারপরে আরেকটা...আবার আরেকটা...।
সিদ্ধান্তে আসতে পারলেন না, কোন বইটা তিনি আগে পড়বেন। এত অসংখ্য বই চারিদিকে!

নিজেকে তার একজন ক্ষুধার্ত মানুষের মতো মনে হচ্ছিলো, যার চারপাশে অসংখ্য সুস্বাদু খাবার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। উন্মত্ত আনন্দে তিনি কখনো এটা একটু চেখে দেখছিলেন, কখনো ওটা।
অবশেষে তিনি সুস্থির হয়ে বসলেন। বইয়ের বিশাল স্তুপের মধ্য থেকে তিনি একটি ভলিউম বাছাই করে নিলেন। একটি উলটে থাকা শেল্ফের ওপরে আরাম করে বসে তিনি বইটিকে চোখের সামনে খুলে ধরলেন।
হেনরী বেমিসের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।

এমন সময় পাথরের গুড়গুড় আওয়াজ শোনা যেতে লাগলো। বোমার আঘাত হানার পরের মুহুর্তের সেই প্রচণ্ড আওয়াজের সাথে তিনি মুহুর্তকাল এই আওয়াজের তুলনা করে দেখলেন। যে শেল্ফের ওপরে হেনরী বসেছিলেন, তার এক পাশের কোনা থেকে আওয়াজটি শোনা যাচ্ছিলো। আচমকা শেল্ফটি নড়ে উঠলো আর তিনিও টাল সামলাতে না পেরে ছিটকে একপাশে পড়ে গেলেন।

চশমাটি তার নাকের পাশ থেকে পিছলিয়ে সরে গেল এবং এক সময় টুংটাং শব্দ করে নীচে পড়ে গেল।
তিনি ঝুঁকে মেঝেতে বসে পড়লেন। অন্ধের মতো হামাগুড়ি দিয়ে এগুতে লাগলেন এবং অবশেষে এক সময় তিনি চশমার অবশিষ্ট অংশটুকু খুঁজে পেলেন।

পুরো শহরের আকস্মিক প্রচণ্ড ধ্বংস যেন একটি ক্ষুদ্র, অতি সামান্য ক্ষয়ের কাছে পরাজিত হয়ে গেল। আর এই ক্ষুদ্র ধ্বংসটুকুর একমাত্র ভুক্তভোগী হলেন হেনরী বেমিস নিজেই।
চোখের সামনে খুলে রাখা বইয়ের ঝাপ্সা হয়ে আসা পৃষ্ঠাটির দিকে তিনি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলেন।
তার চোখ দিয়ে অশ্রুর ধারা গড়িয়ে পড়তে লাগলো।
(ছবিসূত্রঃগুগল। এই গল্প অনুসারে নির্মিত সিনেমা থেকে নেওয়া।)

মূল গল্প- টাইম এনাফ এ্যাট লাস্ট
মূল লেখক- লিন ভেনাবল
অনুবাদ-ফাহ্‌মিদা বারী
লেখক পরিচিতি- প্রকৃত নাম মেরিলিন ভেনাবল। একজন মার্কিন লেখিকা। তিনি লিন ভেনাবল ছদ্মনামে লিখতেন।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:২৩
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×