somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে যায় লঙ্কায়: শ্রীলঙ্কা সফর/৮

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার পথ কষ্টসাধ্য হলেও নিচে নামার পথ নাকি সকল ক্ষেত্রে এবং সব অর্থেই অনেক সোজা। সিগিরিয়ার চূড়া থেকে নেমে আসাটাও তুলনামূলকভাবে সহজ বলেই মনে হলো। মূল আরোহণ পথ দিয়ে নিচে নামার ব্যবস্থা নেই। সিংহের থাবা থেকেই একটা বিকল্প পথ প্রায় কোনো রকম ঘোরপ্যাঁচ ছাড়াই খাড়া নেমে গেছে সমতলের কাছাকাছি। ইস্পাতের সিঁড়ির পাশে যথারীতি রেলিং আছে আর পাথরের সিঁড়ির পাশে রয়েছে পাথরের দেয়াল। তবে এ পথে পাথরের ধাপগুলো অমসৃণ এবং কোথাও কোথাও যথেষ্ট এবড়ো থেবড়ো। দুএকটা জায়গায় সিঁড়ি থেকে খসে গেছে ছোট একটা দুটো পাথর।

অনূঢ়া আগেই ফোন করে জানিয়েছিল প্রধান প্রবেশ পথে নয় ওরা গাড়ি নিয়ে পাহাড়ের বাঁ দিকে থাকবে। এ পথে অকেটা কম হাঁটতে হবে। আমরা নির্দেশনা অনুসারে বাঁয়ের পথ ধরলাম। এখানে সিগিরিয়া প্রাসাদ দুর্গের ঠিক বাইরে বেশ বড় এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে পর্যটকদের জন্যে অস্থায়ী বাজার। মাটি চীনামাটি বাঁশ কাঠ কাগজের নানা ধরণের সুভ্যেনিয়ারে ঠাসা এ সব দোকানের দিকে নজর দেবার মতো অবস্থা কারোরই ছিল না। দুশ মিটার উচ্চতায় সিগিরিয়ার শীর্ষে ওঠানামা করে সবার অবস্থাই কাহিল। তাছাড়া ঘড়ির কাঁটা অনুসারে লাঞ্চের সময় পার হয়ে গেছে। অতএব ‘মিউজিয়াম’ চিহ্নিত মূল্যবান টিকেটের শেষ মুড়িটা অব্যবহৃত রেখে রওনা দিলাম খাবারের খোঁজে।

হাবারানার পেরেরা এ্যান্ড সন্স চেইন ফুড শপ পর্যন্ত পৌঁছাবার আগে কাছেই একটা জায়গায় গাড়ি থামিয়ে ছিল ভা-ারি। কিন্তু অনূঢ়া নেমে একটু উঁকি দিয়েই ফিরে এলো। এরপর একটানে প্রায় পনের কিলোমিটার দূরে হাবারানা শহর পেরিয়ে পেরেরায় এসে দাঁড়ালো। শ্রীলঙ্কার অন্যান্য শহরে এবং চলার পথেও পরবর্তীতে বহুবার পেরেরা এ্যান্ড সন্স চোখে পড়ছে। হাবারানা ক্যান্ডি হাইওয়ের উপরে এই রেস্তোরা কাম ফুডশপ অনেকটা আমাদের হাইওয়ের পাশের রেস্টুরেন্টের মতো। এখানে অবশ্য পার্কিংএর জায়গা বাদ দিয়ে রেস্টুরেন্ট চত্বরের দুই দিক একেবারেই খোলা। আমরা যখন পেরেরায় ঢুকেছি তখন লাঞ্চ আওয়ার প্রায় শেষ তবে রেস্তোরা জুড়ে অতিথিদের আনাগোনা তখন পর্যন্ত নেহায়েত কম নয। বুফে লাঞ্চ বা ডিনারে শেষ বেলায় যোগ দিলে যা হয়! অনেক আইটেমই তলানিতে এসে ঠেকেছে এবং সম্ভবত দু একটা আইটেম পুরোপুরি শেষও হয়ে গেছে।

আমরা প্রচলিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে যথারীতি সাবান দিয়ে হাত মুখ ধুয়ে প্রসাধন কক্ষে ঝোলানো এক সারি আয়নায় চেহারা দেখে চুল ঠিক করে প্লেট হাতে টেবিল থেকে খাবার তুলতে গেলাম। ততোক্ষণে কিছু কিছু ডিস রিফিল হয়ে গেছে। যেগুলো পুনর্ভরণ সম্ভব হয়নি সেগুলো আর নতুন করে ভরে ওঠার আশা পরিত্যাগ করে আমরা অল্পেই সন্তুষ্ট ভাব নিয়ে একটা লম্বা টেবিলে এসে বসলাম। নয়ন অবশ্য খুব সহজে ছেড়ে দিল না। বিল যখন তাকেই পরিশোধ করতে হবে, অতএব সে ম্যানেজারের সাথে কিছুটা দর কষাকষি করে তারপরে প্লেট হাতে টেবিলে এসে বসলো। নয়নের হৈ চৈ-এর ফলে কিছুটা কাজ হয়েছিল মনে হলো। আমি যখন প্রায় শূন্য পাত্র থেকে ফলের টুকরো খুঁটে তুলতে চেষ্টা করছিলাম, তখন পেছনে দাঁড়ানো ছেলেটি বললো, ‘একটু অপেক্ষা করো, তোমাদের জন্যে নতুন করে ফল কাটা হচ্ছে।’


আমাদের খুব বেশি অপেক্ষা করার সময় ছিল না। দুপুরের পরে হিড়িদুয়ানায় শ্রীলঙ্কার একটি গ্রাম দেখতে যাবার কথা। এখান থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরে সেই গ্রামে যেতে হলে খানিকটা পথ পায়ে হেঁটে যেতে হবে। তারপরে নৌকায় নদী পার হয়ে আদিবাসীদের গ্রাম। পশ্চিমের পর্যটকেরা অবশ্য গরুর গাড়িতে চেপে গ্রামের কাঁচা রাস্তার পথটুকু পাড়ি দিতে পছন্দ করেন। আমরা ছোট বয়সে গরু মহিষের গাড়িতে চড়ে বহুবার বহুদূরের পথ পাড়ি দিয়েছি। কাজেই বিদেশে এসে শখ করে গরুর গাড়িতে চড়ার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু এই অনীহা যে শেষপর্যন্ত অনিবার্য হয়ে উঠবে তা জানতাম না।


পেরেরা থেকে গাড়িতে উঠে খানিক দূর এগোবার পরে দেখা গেল ডালা ভর্তি রাম্বুতান সাজিয়ে ফলওয়ালা পথের পাশে দাঁড়িয়ে আছে ক্রেতার অপেক্ষায়। লম্বা নরম কাঁটাযুক্ত অনেকটা লিচুর মতো দেখতে এই ফল মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অনেক দেশেই বেশ জনপ্রিয়। আজকাল বাংলাদেশেও এর চাষ হচ্ছে শুনেছি। লাল টকটকে রসালো রাম্বুতানের হাতছানি উপেক্ষা করা গেল না। গাড়ি থামিয়ে রাম্বুতানÑ যার নতুন নাম দেয়া হলো ‘রাম বোতাম’Ñ কিনে আবার চলতে শুরু করলাম। আরও অনেকটা পথ সামনে এগোবার পরে সিটের নিচ থেকে পানির বোতল বের করার সময় হঠাৎ লক্ষ করলাম আমার ক্যামেরার ব্যাগটা নেই। হ্যান্ডিক্যামের মাঝারি সাইজের কালো ব্যাগ, টুপ করে কোথাও পড়ে হারাবার কথা নয়। ভালো করে খুঁজে দেখা হলো। নাÑ সিটের উপরে নিচে, সামনে পেছনে কোথাও নেই। আমরা ততোক্ষণে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার চলে এসেছি।

দীপু নিশ্চিত করে বললো, পেরেরা এ্যান্ড সন্সে যখন আমরা খেতে নেমেছি, তখন পর্যন্ত ব্যাগটা আমার কাঁধে ছিল। তবে ওঠার সময় ছিল কিনা সেটা সে খেয়াল করেনি। নয়ন গাড়ি থামাতে বললো। পথের পাশে গাড়ি থামিয়ে ব্যাপারটা অনূঢ়াকে বুঝিয়ে বলা হলো। অনূঢ়া জানতে চাইলো, রেস্টুরেন্টের বিলের কাগজটা আছে কিনা। হিসাব নিকাশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিল-ভাউচার-টিকেট-মানি রিসিট কোনোটাই ফেলে দেয়ার কথা নয়। নয়ন মুহূর্তের মধ্যেই পেরেরা চেইন ফুড শপের বিলটা অনূঢ়াকে হস্তান্তর করলো। গাড়িতে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় অনূঢ়া একবার থেমে ক্যামেরা ব্রান্ড, মডেল এবং ব্যাগটা কেমন ছিল ইত্যাদি জিজ্ঞেস করলো। কথা শেষ করে জানালো, ম্যানেজারের সাথে কথা হয়েছে ওরা খোঁজ নিয়ে শিগগিরই জানাবে। গাড়ির এসি বন্ধ করে কেউ কেউ রাস্তায় নেমে গেল। অনূঢ়াও গাড়ি থেকে নেমে হাঁটাহাটি শুরু করলো। আমি ভাবছিলাম, ক্যামেরাÑ তা যে ব্যান্ডের এবং যে মডেলের অর্থাৎ যতো মূল্যবানই হোক আবার কেনা যেতে পারে। কিন্তু মেমোরি কার্ডে গত কয়েকদিনে যে দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে তা আর কখনো কোনো মূল্যেই ফিরে পাওয়া যাবে না। এই একটি চিন্তা থেকেই আমি যেনো খানিকটা হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছিলাম।

একটু পরেই বেজে উঠলো অনূঢ়ার হাতের মোবাইল ফোন। সে যতোক্ষণ কথা বলছিল, সবার উদ্বিগ্ন দৃষ্টি তার দিকে। সবশেষে তার মুখে শোনা গেল সেই পরিচিত শব্দ ’হারি হারি!’ অর্থাৎ ‘ওকে ওকে! ঠিক আছে।’ এরপর মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে বললো, ‘ক্যামেরাটা পাওয়া গেছে। লেট আস গো ব্যাক।’ হাবারানার পথে গাড়ি ঘুরিয়ে নেয়ার পরপরই শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। বৃষ্টির মধ্যে আবার ত্রিশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পেরেরার চেইন ফুড শপে পৌঁছালাম। বয়সে এবং নামে নবীন ম্যানেজার ক্যামেরাটা বেশ আনুষ্ঠানিকভাবে নয়নের হাতে তুলে দিলেন। অমিত তার স্টিল ক্যামেরায় তুলে রাখলো এই অভাবনীয় দৃশ্যের ছবি। এরপর নবীন আমাকে বললেন, ‘দেখে নিন সব কিছু ঠিক আছে কিনা!’ দেখে নেবার কিছু ছিল না, তারপরেও তাঁর অনুরোধে ব্যাগের চেইন খুলে একবার চোখের দেখা দেখলাম। ধন্যবাদ জানিয়ে বললাম, ‘সব ঠিক আছে।’ তিনি জানালেন বেসিনে হাত মুখ ধোয়ার সময় ব্যাগটা আমি সেখানেই ফেলে এসেছিলাম। রেস্তোরার যে ছেলেটি ব্যাগটা ম্যানেজারের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল নয়ন তার হাতে একটা একশ রূপির নোট ধরিয়ে দিল। ম্যানেজারকে আমরা যে যার মতো অনেক ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যখন গাড়িতে উঠলাম তখনও বৃষ্টি হচ্ছে।


গাড়িতে ওঠার পরে পামেলা বললো, ‘নয়ন তো এই লোকটার সাথেই প্রায় ঝগড়া বাধিয়ে বসেছিল!’ আমার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হলো, পেরেরার ম্যানেজার লোকটি আসলেই প্রফেশনাল। তার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সে আমাদের ব্যবহারের কথা মনে রাখেনি। পামেলার কথা শেষ হতে না হতেই মাহবুবা জোর দিয়ে বললো, ‘এই জায়গাটার নামই হারাবা না, সেই কারণেই ক্যামেরাটা হারায়নি। এখানে শেষপর্যন্ত কিছুই হারাবে না।’ দীপুও সাথে সাথে সমর্থন ঘোষণা করে বললো, ‘আসল কথা হচ্ছে এখানে কেউ কিছু হারাবা না, হারাতে চাইলেও হারাবা না।’ আমরা বাংলায় কথা বললেও বারবার উচ্চরিত ‘হারাবা না’ শব্দটি অনূঢ়া ঠিকই খেয়াল করেছে। তাই সংশোধন করে দিয়ে বললো, ‘হাবারানা, নেম অফ দিস প্লেস ইজ হাবারানা।’
‘ইয়েস, হারি হারি। নেম অফ দিস প্লেস ইজ হাবারানা!’


ত্রিশ কিলোমিটার পথ সামনে পেছনে আসা যাওয়া করে ক্যামেরা উদ্ধার পর্ব শেষ হতেই দুপুর গড়িয়ে বিকেল। এ ছাড়া আধা ঘণ্টার ঘন বর্ষণে গ্রামের লাল মাটির রাস্তার অবস্থা কি দাঁড়িয়েছে তা নিয়ে গাইড এবং গাড়ি চালকের মধ্যে কিছুক্ষণ আলাপ আলোচনা শেষে অনূঢ়া বেশ দ্বিধান্বিত হয়ে জানালো, ‘রাস্তার অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, তাতে এ সময় রওনা দিয়ে হিড়িদুয়ানার সেই গ্রামে পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে।’

অতএব সিদ্ধান্ত হলো, চল্লিশ কিলোমিটার দূরের পূর্বপরিকল্পিত গ্রামে না গিয়ে কাছাকাছি কোনো একটা গ্রাম থেকে ঘুরে আসা যায়। একটু পরেই হাবারানা ত্রিনকোমালি সড়ক থেকে আমরা বাঁয়ে নেমে গেলাম। গ্রামের ভেতর দিয়ে চলে গেছে অপরিসর পিচঢালা পথ। রাস্তাটা চওড়া না হলেও একটা বাস অথবা মাইক্রোবাস চলার জন্যে যথেষ্ট। গ্রামের বাড়িগুলো একটা থেকে অন্যটা বেশ দূরে দূরে । এই বিচ্ছিন্ন বসবাস থেকেও অনুমান করা যায় শ্রীলঙ্কা খুব ঘন বসতির দেশ নয়। মাঝে মাঝে দু একটা ফসলের ক্ষেত দেখা দিয়েই মিলিয়ে যায়। ধান কিংবা আখ ক্ষেতের চেয়ে ধইঞ্চা এবং বুনো ঘাসসহ নাম জানা আগাছার জঙ্গলই বেশি করে চোখে পড়ে। দু একটা বাড়ির সামনে পুরোনো ট্যাক্সি এবং ভাঙাচোরা মিনিবাস দেখা গেলেও পথে মানুষের চলাচল খুবই কম।


আমরা একটা সবুজ রঙের অটো রিক্সাকে পাশ কাটিয়ে যেখানে এসে দাঁড়ালাম সে জায়গাটা একটা বাঁধের মতো। একটা পায়ে চলার পথ বাঁ দিকে গ্রামের গভীরে ঢুকে গেছে, কিন্তু গাড়ি চলাচলের রাস্তা এখানেই শেষ। বাঁধের গায়ে বেয়ে উপরে উঠে দেখা গেল ওপারে বিস্তৃত এক বিল বর্ষার পানিতে থৈ থৈ করছে। ডান দিকে যতোদূর দৃষ্টি যায় ততো দূরই সেই বিলের সীমানা, তার ওপারে ছোট ছোট পাহাড়ের সারি। বাঁ দিকে বিলের বিস্তার ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে একটা খালের আকার ধারণ করে গ্রামের প্রান্তে এসে ঠেকেছে। জল থৈ থৈ বিল বিকেলের বাতাসে ঢেউয়ের দোলায় আন্দোলিত হচ্ছে। গ্রামের কাছাকাছি বদ্ধ জলাশয় জুড়ে জমেছে কচুরি পানা আর সেখানে ফুটে আছে অসংখ্য বেগুনি ফুল। নীল রঙের এক জোড়া নৌকা জমাট কচুরি পানার ফাঁদে এমনভাবে আটকে পড়েছে খুব সহজে তারা এখান থেকে বেরোতে পারবে বলে মনে হয় না।


খাল যেখানে গ্রামের সীমানা ছুঁয়েছে সেখানে খানিকটা জায়গার কচুরি পানা সরিয়ে ¯œানের জায়গা করে নিয়েছে গ্রামের মেয়েরা। আমাদের দৃষ্টি সীমার মধ্যেই কয়েকজন গ্রামীণ নারী ঘাটে বসে তাঁদের বৈকালিক ¯œান সমাপন করছিলেন। বেশ দূরে থেকে হলেও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মেয়েদের গোসলের দৃশ্য দেখাটা কোনো শোভন কাজ নয়। দেরি না করে বাঁধের উপর দিয়ে আমরা বাঁ দিকে গ্রামের পথ ধরলাম।


বহুদিন এমন নিরব নির্জন গ্রাম দেখিনি। দেশের গ্রামগুলোতে জন মানুষের সরব উপস্থিতি অনেক বেশি হলেও এখনো কিছু গ্রাম নিশ্চয়ই আছে যেখানে এখনো পায়ে চলা পথের দু পাশে চোখে পড়ে অযতেœ বেড়ে ওঠা বাঁশ-বেত- বৈঁচি কিংবা বন তুলশির ঝোপ। গ্রামের খড়ের চালে ছাওয়া মাটির বাড়িকে ঘিরে রয়েছে তাল তমাল, নারিকেল সুপারি অথবা জাম জারুলের ছায়া। পাখি ডাকে। এ সব গ্রামের পানা পুকুরে ফুটে থাকে অসংখ্য বেগুনি ফুল, হয়তো ভোর বেলা হয়তো সুবাস ছড়ায় শেফালি বকুল। কিন্তু কোনো কিছুই আমাদের দেখার সময় নেই, শোনার ফুরসৎ নেই।

পুরোপুরি সন্ধ্যা নামার আগেই রওনা হলাম হাবারানার পথে। ফেরার সময় আমার মনে হলো হিড়িদুয়ানায় না যেতে পারাটা একদিক থেকে ভালোই হয়েছে। বিদেশীদের, বিশেষ করে শ্বেতাঙ্গ পর্যটকদের দেখাবার জন্যে এক ধরণের সাজানো গ্রাম থাকে। সেই রকম একটা পূর্ব প্রস্তুত কৃত্রিম গ্রামের চেয়ে এক বিকেলের হঠাৎ দেখা এই গ্রাম দেশে ফেলে আসা নিজেদের শৈশব কৈশোরের স্মৃতির কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছে।

চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:০৩
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×