somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নামাজ সম্পর্কে মুসলিমদের ৫ টি ভূল ধারনা!!

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

★ ১. দেহ নড়লেই নামাজ নষ্ট:
অকারণ নড়াচড়া নামাজের খুশু, খুজু নষ্ট করে, এর মানে এই নয় যে প্রয়োজন বোধেও নড়া যাবেনা। কখনো সেজদার জায়গা থেকে পাথর সরানোর দরকার হতে পারে, আর পুতে থাকা পাথর সরানোর উপায় কি? অথবা গর্ত? নির্দিধায় সরে বামে বা ডানে, সামনে বা পিছনে কিছুটা সরে যেতে পারেন, তবে বার বার নয়। কাঠ মার্কা পাথর হয়ে স্টিল ভাব নিতে গেলেও তো নামাজে আপনার সমস্যা হবে। আপনি পেছনের কাতারে একা আসা কেঊ আপনাকে টেনে নিলে যেতে পারেন, কোলে নিতে পারেন বাচ্চাকেও, আবার দরজা লাগিয়ে নামাজ পড়ছেন, কেঊ ডাকলে খুলে দিতে পারেন দরজাটিও। নামাজ ভংগের কোন কাজ না করলে কোন সমস্যা নাই। সাহু সেজদা প্রযোজ্য না।

★ ২. কথা বললেই নামাজ নষ্ট:
নামাজ পড়ার সময় নামাজ এর বাইরে কোন কথা বললে নামাজ ভংগ হবে, কিন্তু আপনার আম্মা যদি আপনাকে ডাকেন, আর আপনি নামাজে আছেন কিন্তু আপনার আম্মা রা জানেন না, তবে ডাকে সংক্ষেপে সাড়া দিতে পারেন। নামাজ পড়ে আসছি বলতে পারেন। ছোট বাচ্চাকে সংক্ষেপে বলতে পারেন "বসে থাকো", তবে বার বার নয়।

★ ৩. আশ পাশে তাকালেই নামাজ শেষ:
হাদীস শরীফে নামাজে আশ পাশে তাকানো নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু সবক্ষেত্রে নয়। আশ পাশ থেকে কোন সাপ, বিচ্ছু ইত্যাদি যেতে দেখলে তা মেরে আবার নামাজে দাঁড়াতে পারেন। নয়তো তা অন্য কারো ক্ষতি করতে পারে যে তা দেখেনি। তাছাড়া মোবাইল বেজে উঠলে এক হাত দিয়ে বের করে কেটে দেওয়াতে কোন ক্ষতি নেই। বরং না বের করলে ফোন বাজতেই থাকলে অন্য সবার মনোযোগ নষ্ট হবে। যাতে বার বার না হয় তাই প্রথমবার ই ফোন বন্ধ করে দিন কোন সমস্যা নেই। সাহু সেজদা দিতে হবেনা।
আবার যদি ১ বা ২ বা ৩ রাকাতের আগেই দুই দিকে সালাম ফিরিয়ে ফেলেন, নামাজ ভাঙার কোন কাজ না হয়ে থাকলে নামাজ প্রথম থেকে পড়তে হবেনা, দাঁড়িয়ে বাকিটা পড়ে নিন। এমনকি মসজিদ থেকে বাড়িতে এলেও প্রথম থেকে নয়, বাকী থাকা টা পড়লে হবে। এই দুই সময় সাহু সেজদা দিতে হবে।

★ ৪. একটু ত্রুটি হলেই সাহু সেজদা দিতে হবে:
নামাজে ওয়াজিব কাজ বাদ পড়লে বা অতিরিক্ত হইলে অথবা ভুলের সন্দেহ হইলে সাহু সেজদা দিতে হয়, নামাজ ফিরে প্রথম থেকে পড়া লাগেনা। তাই বলে এই ভুল যদি এমন সময় করেন যখন আপনি কোন ইমামের পেছনে নামাজ রত অবস্থায় আছেন। তাহলে সাহু সেজদা দিতে হবেনা। আর একা থাকা অবস্থায় রুকুর যায়গায় সেজদার তাসবিহ, সেজদার যায়গার রুকুর তাসবিহ পড়লেও সাহু সেজদা দিতে হবেনা। কারণ উভয় জায়গায় যে কোনটি পড়া যায়, আমাদের দেশে প্রচলিত তাসবীহ ছাড়া যে কোন দোয়া পড়া যায়। যেমন "আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাআফুআন্নি"। যা সাধারণত আমরা রমজানে ইফতারের সময় পড়ি।

★ ৫. নামাজের পদ্ধতি একটাই:
অনেকে সড়ক পথে বা নৌ পথে যাতায়াত ও ভ্রমনের কালে নামাজ আদায় করেন না, হয়তোবা জানেন না যে নামাজ সব জায়গাতে পড়া যায়। হয়তো এটাই জানেন যে নামাজ শুধু ওযু ছাড়া হয়না (অথচ পানি না পেলে তায়াম্মুমে নামাজ হতে পারে), তারা জানেন শুধু পশ্চিম দিকেই ফিরে, দাঁড়িয়ে, রুকু সিজদাতেই নামাজ হতে পারে। অথচ বাস, সি এন জি, জিপে থেকেও নামাজ পড়া যায়, আরোও নামাজ পড়া যায় পানির ভেতর কাজে থাকা অবস্থায় এমনকি যদি বুক বা গলা পর্যন্ত ডুবে থাকে তবু। আর মাটি পবিত্র, তাই গায়ে মাটি লেগে থাকলেও পড়া যায়।। আমি বা আপনি যে আল্লাহর প্রতি প্রকৃতপক্ষেই অনুগত, তার প্রমান এসবের মাধ্যমেই দিতে পারি, আর এতে আছে অন্য ধরণের শান্তি। সুখে থাকলে, পরিবেশ পেলে নামাজ পড়বো আর একটু এদিক ওদিক গেলে পড়বোনা। তাহলে হলো? আল্লাহ রহমান রহিম, নামাজের সময় আমার ও আপনার চেষ্টা তিনি কবুল করতেই পারেন। নামাজ খাটের উপর হবে, নামাজ মনে মনে, ইশারায় কিভাবে পড়তে হয় তা পরে প্রশ্ন করে জেনে নিতে পারবেন।
তবে উড়ন্ত বিমান, চলমান হেলিকপ্টারে নামাজ হবেনা। কারণ সেজদা মাটির সাথে যুক্ত থাকা শর্ত।
আজ আর নয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভালো রাখুন। আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১১
৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×